Breaking News

স্বামী | পর্ব -০৬

প্রায় ৪/৫ মিনিট দুজনে এই অবস্থায় ছিলো।
তাদের মাঝে এবার বেঘাত ঘটে দরজা টুকার আওয়াজে।
ভাবি ভাবি!!! ( তনু)
তিথি রিদয় কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে চুল গুলা ঠিক করে নেয়। তারপর দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।( পায়ের ব্যাথাটা একটু কম হলেও পুরো পুরি হাটতে পারছিলো না)
ভাবি তোমার ছোট ভাই এসেছে।( তনু)
তিথি কান্না মাখা হাসি দিয়ে দৌড়ে যায় তার ভাই এর কাছে। তন্ময় ভাই আমার বলেই তন্ময় কে জরিয়ে ধরে তিথি।( তার পায়ের ব্যাথা যেনো চলে গেছে)
তন্ময় ও কাদঁছে , কাদঁবেইনা কেন জন্মের পর থেকে তিথি কে ছাড়া থাকেনি। মায়ের থেকে তিথির কাছেই আদরটা বেশি পেয়েছে তন্ময়।
.
তিথি তন্ময় কে ছেড়ে চোখ মুছতে মুছতে বললো। একা একা কি করে এলিরে তুই!!!!
তন্ময় এবার এক মুখ হাসি নিয়ে বললো। বারে আমি বড় হয়েগেছি আপু আমি নিজেই এসেছি।
তাই নাকি বলেই দুজন খুব হাসছে।
তন্ময় এবার খেয়াল করলো পিছনে একজন দারিয়ে আছে। তার শার্ট এর বোতাম খোলা হাতাটার বোতাম ও খোলা পাগল এর মত সব চুল এলোমেলো করে রেখেছে। তন্ময় এর এবার বুঝতে বাকি রইলো না এটা তার দুলাভাই।
তিথি তন্ময় এর চোখ অনুসরন করে দেখলো রিদয় দারিয়ে আছে।
তিথি তন্ময় এর কাছ থেকে সরে রিদয় এর কাছে এসে বলতে লাগলো একটু আগেই না কত সুন্দর করে চুল গুলা ঠিক করে দিলাম আবার কেন শার্ট টা এলোমেলো করেছেন!!!( রাগি রাগি গলায়)
রিদয় মুখটা কালো করে বললো বারে তুমি ওভাবে চলে এলে কেন! আমিতো তোমার আদরই করতে—…….! বলা শেষ করতে না দিয়ে রিদয় এর মুখ চেপে ধরেছে তিথি। নয়তো এই তার ইজ্জত বলতে কিছু রাখবে না
তিথি এবার হাতটা সরিয়ে বললো। তন্ময় এই তোর দুলাভাই।
.
তন্ময় ভয় পাচ্ছে কারন এতো পাগল। (যদি মেরে টেরে দেয় না বাবা এর কাছে যাবো না মনে মনে ভাবছে তন্ময়)
তন্ময় আমতা আমতা করে বললো হ্যা চিনি।
রিদয় এবার তিথি এর কাছ থেকে তন্ময় এর কাছে গিয়ে বললো কে গো তুমি!!!
তিথি পিছন থেকে এসে বললো এ আমার ভাই। রিদয় ও হুম হুম হুম বলে উঠলো। (যেনো সব বুঝে গেছে)
তন্ময়কে হাতে ধরে রিদয় বললো। তুমি তাহলে আমার ভালো বৌ এর ভাই। তাহলে তোমায় ভালো ভাই বলে ডাকি!!!!
তন্ময় এবার হেসে দিলো। (নাহ জতটা সাংঘাতিক পাগল ভেবেছি ততো টুকু নয় মনে মনে)
রিদয় এর মা এসে ওকে নাস্তা দিতে বলে। এবং অনেক খাতির যত্ন পেয়েছে সে এখানে।
তিথি এবার পায়ের ব্যাথাটা অনুভব করছে অনেক টুকু ফুলে গেছে।
তাই আস্তে করে চেয়ার এ বসে তন্ময় কে যত্ন করে খাওয়াচ্ছে।
তন্ময় এবার খেতে খেতে বললো আজ কি কোন অনুষ্ঠান রে আপু!!!!
না কেন বলতো?(তিথি)
.
না এত খাবার তো তাই( তন্ময়)
তিথি হাসি দিয়ে তন্ময় এর চুল এলোমেলো করে বলে হুম। এখানে রোজ এমন সব রান্নাই হয়।
তিথি আবার বলে উঠলো বাড়িতে কি জানে তুই এখানে!!!
না আপু আমাদের স্কুল থেকে সবাই রাঙ্গামাটিএ ঘুরতে যাচ্ছে। আর আমিও তাই বলে বাড়ি থেকে টাকা নিয়েছিলাম। কিন্তু ওখানে না গিয়ে তোমার কাছে চলে এসেছি। ( এক গাল হাসি দিয়ে তন্ময়)
ওহহ!!!!ভাবলাম হয়তো বাবা তোকে পাঠিয়েছে।( মন টা খারাপ করে)
আচ্ছা তাহলে এখানে কয়েক দিন থাকবি তো // (তিথি)
হ্যা আপু ৩ দিন আছি।(তন্ময়)
এর মধ্যে রিদয় এসে তন্ময় কে বলে উঠলো। এই ভালো ভাই চলো না দুজন এ খেলা করি।
তন্ময় হাসি দিয়ে বললো ওকে দুলাভাই।
.
সারা দিন রিদয় তন্ময় এর সাথে মাস্তিতে মেতে ছিলো।
তিথি রিদয় এর ডাক্তারের কাছে যাওয়ার ডেটটা ৩ দিন পিছিয়ে দিলো। একে তো পায়ের যা অবস্থা
দ্বিতীয় ভাইকে পেয়ে এক মিনিট এর জন্য ছাড়তে চায় না তিথি।
রাতে খাওয়া শেষ করে রিদয় ওর রুম চলে গেলো গেম খেলতে খেলতে। এদিকে তন্ময় একটু পড়াশুনা করবে। কারন সামনে তার পরিক্ষা সে বরাবরই ভালো ছাএ। তাই পড়াশুনায় কোন ফাঁকি দেয় না।
তিথি এবার নিজের রুমে যেতে লজ্জা পাচ্ছে সকাল এর কথা ভেবে।
এখন যদি উনি আবার কাছে আসেন তাহলে!!
না না আমি তো মরেই যাবো।
ভাবতে ভাবতে রুম এ ঢুকে যায় তিথি।
.
রিদয় এক মনে মোবাইলে গেম খেলেই যাচ্ছে। কে আসলো তাতে কোন খেয়াল তার নেই।
তিথি এবার একটু বড় করে শান্তির নিশ্বাস নিলো আর একটু হতাশ ও হল। কি না কি ভাবলো আর কি হল!!!
সকালে তন্ময় বসে একটা অংক করছিলো তবে কিছুতেই পেরে উঠতে পারছিলো না।
রিদয় পিছন থেকে এসেনতার কাছ থেকে খাতা নিয়ে সুন্দর করে অংক করে যাচ্ছে। এতে তন্ময় ও তিথি হা হয়ে ছিলো। এভাবেই আরো ২ দিন কেটে গেলো।
তন্ময় ও চলে গেছে। তন্ময় ও তিথি এর চেয়ে রিদয় কেদেঁছে বেশি তিথি এর শাড়ির আচলে মুখ ঢেকে।
এর পর সবাই নিজের কান্না ভুলে রিদয় কে শান্ত করায় ব্যস্ত হয়ে পরেছিলো।
তিথির পা টা এখন পুরা পুরি সুস্থ।
তাই সে কাল ডাক্তার এর কাছে জাওয়ার প্ল্যান করলো। তার শাশুরির কাছ থেকে ডাক্তার এর নাম্বার ও ঠিকানা নিয়ে নেয়।
.
কদিন ধরে রিদয় এর পাগলামু একটু কমে গিয়েছে। এখন আর বেশি পাগলামি করে না কিন্তু রাত এ তিথি একটু রুম থেকে বের হল রান্না ঘর থেকে পানি আনতে।
পানি এনে রুম এ ঢুকতেই দেখে রিদয় পানির সাথে কিছু একট গিলে ফেলেছে।
পাশে রহিম চাচা ও দারানো ছিলো।
তিথি দ্রুত হেটে রিদয় এর কাছে গিয়ে বললো কি খাচ্ছেন??
রহিম হচকিয়ে উঠে বললো না না বৌ মা পানি চেয়েছিলো তাই এনে দিলাম!!
তিথির রহিম এর কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো।
রহিম রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই। তিথি রিদয় এর হাত নিজের মাথায় দিয়ে বললো কি খেয়েছেন সত্যি বলুন তো।
রিদয় আর কথা বলে না। তিথি আবার জানতে চাইলো। রিদয় এবার বললো ভালো বৌ চাচা আমাকে একটা মিষ্টি দিয়েছিলো ওটা না খুব তিতা ছিলো। আমার বমিও আসছিলো। তাও খেয়েছি চাচা বলেছে এটা খেতে পারলে নাকি আমায় কাল কে রসগোল্লা এনে দেবে।
.
[ অত এব এখানে লেখকের ই রসগোল্লা পছন্দ তাই রসগোল্লা দিলাম,☺️]
তিথি রিদয় এর দিকে চেয়ে মাথায় হাত দিয়ে বললো আপনার রসগোল্লা পছন্দ বুঝি??
রিদয় মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে দেয়।
শোনেন, কেউ কিছু খেতে দিলে আমায় না জানিয়ে খাবেন না।
আমি আপনায় কালকে রসগোল্লা বানিয়ে দেবো। (তিথি হালকা হেসে বললো)
রিদয় মাথা নাড়িয়ে দিয়ে বললো ও ভালো বৌ ঘুম পাচ্ছে তো!!
তিথি রিদয় কে খাটে শুইয়ে দিয়ে নিজেও ওর পাশে শুয়ে মাথায় হাত বুলাচ্ছিলো,
রিদয় তিথিকে জাপটে ধরে শুয়ে পরলো।
একটু পর তিথিও ঘুমের দেশে চলে গেলো।
সকালে নাস্তার পর্ব শেষ করে তিথি রিদয় কে রেডি করাবে তাই আগে গোসল করাতে নিয়ে গেলো।
রিদয় কে গোসল করাতে করাতে মনে হল রিদয় তার দিকেই চেয়ে আছে। তিথি তার পিঠ ভালো করে ঘষে দিচ্ছে আর রিদয় তিথি কে দেখছে।
.
তিথি বুকে সাবান লাগাতে এলে রিদয় সাবান টা হাত
থেকে নিয়ে তিতিল এর শাড়ি সরিয়ে তার পেটে লাগিয়ে দিলো। তিথি পুরো অবাক হয়ে গেছে।
তিথি কিছু বলবে তার আগেই রিদয় তিথি কে জরিয়ে ধরে তার
বাহুডোরে নেয় আরঠোট এ গভির ভাবে পাগলের মত কিস করতে থাকে।
তিথি চোখ বন্ধ করে তার স্বামীর ছোয়া অনুভব করছে। সে যেনো সুখের দেশে তলিয়ে যাচ্ছে।
একটু পর রিদয় তিথি কে ছেড়ে দিয়ে বললো। দেখলে ভালো বৌ আমি ও আদর করতে শিখে গেছি। (বুকা মার্কা হাসি দিয়ে)
.
তিথি হা হয়ে রয়েছে রিদয় এর কান্ডে। এইতো বেশ ভালো ছিলো তাহলে এখন কি হল!!
তিথি ও রিদয় এর শরির পুরো ভিজে গেছে।
মুখটা মলিন করে রিদয় কে গোসল করিয়ে নিজেও গোসল টা শেরে নিলো।
বের হতে হতে কত কিছু ভাবছে তিতিল। এই মানুষ টা কি কখনই আমায় কাছে টেনে নেবে না!!
নাকি বুঝেই না নাকি বুঝতে চায় না। আজকেই ডাক্তার এর কাছে গেলে সব বোঝা যাবে।
প্রায় ২ ঘন্টা ধরে তিথি ও রিদয় বসে আছে।ডাক্তার এর চেম্বার এ কারন ডাক্তার রিদয় এর কিছু টেস্ট দিয়েছে তারই রিপোর্ট এর অপেক্ষা করছিলো তিতিল।
.
বাড়িতে এসে তিথির মনে শান্তি নেই। কারন ডাক্তার এর বলা কথা গুলো সে মানতে পারছে না।
ডাক্তারের চেম্বারে বসে ডাক্তার এর রিপোর্ট গুলার কথা শুনে তিথব অবাক হয়ে যাচ্ছে।
ডাক্তার বলছে রিদয় এর তেমন কোন মেন্টালি সমস্যা নেই। তবে ২ বছর ধরে তাকে এমন কিছু মেডিসিন খাওয়ানো হচ্ছে। যাতে সে মাথা যন্ত্রনা শয্য করতে না পেরে পাগলামো করে এবং সব ভুলে পাগল দের মতই আচরন করে।
তিথি বসে আছে খাটে রিদয় তার মায়ের কাছে গল্প শুনছে আর রসগোল্লা খাচ্ছে। (তিথি রসগোল্লা বানিয়েছিলো রিদয় এর জন্য)
তিথির মনে হাজার চিন্তা কে এমন হতে পারে যে উনাকে পাগল করে রাখছে!!!
কে কে!!!
.
রহিম চাচা!!!
হ্যা রহিম চাচাকে আমার সন্দেহ হচ্ছে। যে করেই হোক উনার রুমটা চেক করতে হবে।
রহিম তাদের বাড়ির গ্যারেজ এর পিছনের রুমটায় থাকে। বৌ নেই একটা মাএ ছেলে নিলয় আর সে।
তিথি এবার নিজেকে শক্ত করে রহিম এর রুম টা চেক করবে ভেবে উঠে দারিয়েছে। যদি উনি সব করে থাকেন। তাহলে কেন করছে তাও খুজে বের করতে হবে।
.
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com