শেষ বিকেলের রোদ । পর্ব -২১
মুগ্ধের বাসায় এসে উপস্থিত হয়েছে জিনাত। মুগ্ধ এখনো বাসায় এসে পৌঁছায়নি। দরজার সামনের তালা দেখে জিনাত চুপচাপ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। জিনাতের হাতে একটা ব্যাগ, তাতে করে মুগ্ধ জন্য খাবার নিয়ে এসেছে সে।
কিছুক্ষণ পর প্রত্যাশা কল করে ওকে। রিসিভ করে বলে,
“আমি ফ্ল্যাটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।”
প্রত্যাশা ভাব নিয়ে বলল,
“আর আমরা বাসার সামনে।”
“তোরা কয়জন আছিস?”
প্রত্যাশা হো হো করে হেসে বলে,
“আছি ১০-১২ জন, ওই মুগ্ধকে ধরলে না ভর্তা বানিয়ে ফেলবো।”
জিনাত কিছুক্ষণ ভেবে বলে,
“আমি ইশারা না দেওয়া পর্যন্ত তোরা কোন স্টেপ নিবিনা।”
“ঠিক আছে।”
রাত সাড়ে আটটায়, মুগ্ধ বাসায় আসে। ফ্ল্যাটের সামনে জিনাত তো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বেশ অবাক হয় সে, সাথে রাগও ওঠে। জিনাত ওকে দেখে দাঁত কেলিয়ে থাকে।
মুগ্ধ গিয়ে ফ্ল্যাটের তালা খুলতে খুলতে বলে,
“তোমাকে না এখানে আসতে নিষেধ করেছিলাম? কেন এসেছো?”
জিনাত গাল ফুলিয়ে বলে,
“খাবার নিয়ে এসেছি।”
“কেন? আমি আনতে বলেছিলাম?”
মুগ্ধ কিছুটা ধমক দিয়ে কথাটা বলে।
জিনাত মুগ্ধের শার্ট খামচে ধরে বলল,
“এমন করছো কেন? আমি কি পর?”
মুগ্ধ একবার জিনাতের হাতের দিকে তাকায়। তারপর বলে,
“হাত সরাও।”
চুপচাপ ফ্ল্যাটে ঢুকে যায় মুগ্ধ, জিনাতও পিছু পিছু ঢুকে।
মুগ্ধ বলে,
“খাবার এনেছ ভালো কথা, এখানে রেখে চলে যাও। একা যেতে না পারলে, চলো আমি পৌঁছে দিয়ে আসি।”
জিনাত ঠোঁট উল্টে বাচ্চাদের মত করে বলে,
“কিছুক্ষণ থাকি না তোমার ফ্ল্যাটটা দেখবো।”
মুগ্ধ ধমক দিয়ে বলে,
“১ মিনিটও থাকবে না। ফ্ল্যাট দেখতে হলে, অন্য একদিন এসে দেখো।”
“না, আমি আজকেই দেখবো।”
জোর গলায় কথাটা বলে জিনাত।
“ঠিক আছে, তুমি থাকো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।”
বলেই মুগ্ধ নিজের রুমে চলে যায়।
জিনাত প্রত্যাশাকে কল দিয়ে বলে,
“তাড়াতাড়ি উপরে আয়, মুগ্ধ ফ্রেশ হতে গেছে. এখনই তোদের ফ্ল্যাটে ঢুকতে হবে।”
“আসছি।”
৫ মিনিট পর প্রত্যাশা এবং ওর গ্যাং উপরে আসে, এসেই জিনাতকে মিসড কল দেয়। জিনাত বুঝতে পারে প্রত্যাশা সবাইকে নিয়ে এসেছে।
জিনাত দরজা খুলে বলে,
“তাড়াতাড়ি যে যার মত লুকিয়ে যা।”
সঙ্গে সঙ্গেই কেউ স্টোররুমে, কেউ মুগ্ধের মায়ের রুমে, কেউ শুভর রুমে, কেউ আবার গেস্টরুমে, একজন তো কমন টয়লেটেও লুকায়, আরেকজন সোফার পেছনের ফাঁকা জায়গায় লুকায়, আরেকজন ঢুকে ডাইনিং টেবিলের নিচে আর দুজন দরজার বাইরে থাকে। প্রত্যাশা ও আরেকজন মেয়ে ফ্ল্যাটের বাইরে দাঁড়িয়েছে, আরো দুজনকে বাসার সামনে রেখে এসেছে। এ পর্যন্ত পুরো কাজ ওদের পরিকল্পনা মতোই হয়েছে।
অন্যদিকে,
আলিয়ার ডাক্তারের কাছে এসেছে। ডাক্তারকে ওর শারীরিক সম্পূর্ণ অবস্থা জানানোর পর ডাক্তার ওকে কিছু টেস্ট করাতে দেয়, সাথে কিছু ওষুধও দেয়। আলিয়ার প্রেসক্রিপশনগুলো হাতে নিয়ে ডাক্তারের ভিজিট দিয়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসে।
ডাক্তার যতটুকু বলেছে তাতে ওর মনে হচ্ছে ওর কিডনিতে কোনো সমস্যা আছে। বাসায় এখনই সব জানানো যাবে না বলেই সিদ্ধান্ত নেয় আলিয়ার, আগে টেস্ট করিয়ে শিউর হতে হবে। আবার আগামীকাল সকালে গ্রামের বাড়িতে যাবে সবাই, আলিয়ার চায় না এ মুহূর্তে সবাইকে চিন্তায় ফেলতে।
এসব ভাবছে আর ড্রাইভিং করছে আলিয়ার। এমনসময় ওর ফোনে কল দেয় তুবা। আলিয়ারের কানে ব্লুটুথ ছিল, সেটা অন করে বলে,
“হ্যালো।”
তুবা চুপ করে আছে। আলিয়ার আবারো বলে,
“হ্যালো।”
এবারেও কোনো জবাব পায় না। আলিয়ার একপাশে গাড়িটা পার্ক করে ফোন হাতে নিয়ে দেখে তুবা কল দিয়েছে।
আলিয়ার বলে,
“তুবা, কথা বলছো না কেন?”
তুবা নিঃশব্দে কাঁদছে, ওর কান্নার শব্দ আলিয়ারের কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না। নিজেকে সামলে নিয়ে তুবা বলল,
“জিনাতের সাথে আপনার কি সম্পর্ক?”
আলিয়ার কিছু ঘাবড়ে যায়। তুবা চেঁচিয়ে বলে,
“কি হলো? চুপ করে আছেন কেন?”
বলেই জোরে কান্না শুরু করে দেয় তুবা।
আলিয়ার একটা বড় নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
“জিনাতের সাথে আমার বিয়ের কথা হয়েছিল, কিন্তু বিয়ের দিন আমি বিয়েটা ভেঙে দেই।”
“আপনি মত না দিলে কি করে বিয়ের কথা পাকা হয়?”
“তুবা আমি তোমাকে সবটাই বুঝিয়ে বলবো, আমি বাসায় যাই।”
তুবা আবারো চেঁচিয়ে উঠে,
“মিথ্যা বলছেন আপনি? আপনার সাথে জিনাতের বিয়ে পাকা হয়ে আছে আর আপনি তাতে মতও দিয়েছেন। আপনি আমাকে মিথ্যা বলেছেন। কেন আলিয়ার?”
আলিয়ার অবাক হয়ে শুনছে তুবার কথা। এসব কথা তুবাকে কে বলল? এই কথায় এমনভাবে মসলা মিশালো কে? জিনাত? আলিয়ারের সন্দেহের তীর জিনাতের দিকেই যায়।
তুবা আবারো বলে,
“চুপ করে থাকা সম্মতির লক্ষণ আলিয়ার। আপনি তাই করলেন।”
বলেই কলটা কেটে দেয় তুবা। আলিয়ারকে কোনো কথা বলারও সুযোগ দেয় না সে।
আলিয়ার কয়েকবার কল দিলেও তুবা রিসিভ করে না। কিছুক্ষণ পর ফোন সুইচ স্টপ দেখায়।
আলিয়ার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“জিনাত, কাজটা ঠিক করিসনি।”
আলিয়ার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
রাত ১০ টা,
মুগ্ধ রাতের খাবার খাচ্ছে। জিনাত জেদ ধরে এখনো আছে ওর বাসায়। মুগ্ধের সাথে একইসাথে খেতে বসেছে সে।
খাওয়ার মাঝে মুগ্ধ বলল,
“বিরিয়ানি ভালোই রান্না করো।”
“আর চিকেন রেজালা?”
“ওটাও ভালো হয়েছে।”
মুগ্ধের জন্য বিরিয়ানি ও চিকেন রেজালা তৈরি করে এনেছে জিনাত। খাওয়া শেষে হাত ধুয়ে দুজনের প্লেট, বাটি সব ধুয়ে নেয় মুগ্ধ।
তারপর ডাইনিং টেবিল পরিষ্কার করতে গেলে জিনাত চেঁচিয়ে উঠে বলে,
“আমি পরিষ্কার করছি।”
মুগ্ধ ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
“ইটস ওকে, আমি করে নিবো।”
“না, আমি করি।”
মুগ্ধের হাত থেকে কাপড়টা নিয়ে টেবিল মুছতে থাকে জিনাত। মুগ্ধের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।
মুগ্ধ গিয়ে ড্রইংরুমে সোফায় বসে। বসার সময় সোফার পেছনে মেয়ের চুল দেখে সে।
একবার জিনাতের দিকে তাকিয়ে দেখে জিনাত ডাইনিং টেবিলের নিচে কি যেন দেখছে।
মুগ্ধ সোফায় শুয়ে পড়ে। এখান থেকে ডাইনিং টেবিল স্পষ্ট দেখা যায়।
টেবিলের নিচে যে একজন আছে তা ঠিকই বুঝতে পারে মুগ্ধ।
তারমানে জিনাত এ পর্যন্ত যা যা বলেছে সব মিথ্যা। মুগ্ধকে বিপদে ফেলতে এখানে এসেছে জিনাত।
মুগ্ধ নিজের রুমে গিয়ে একটা লাঠি নিয়ে বেরিয়ে আসে। জিনাত ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
“আমাকে মারবেন নাকি?”
রান্নাঘর থেকে মাংস কাটার ছুড়িটা নিয়ে আসে মুগ্ধ। জিনাত এবারে ভয় পেয়ে যায়। মুগ্ধ ছুড়িটা এনে সোজা জিনাতের গলায় ধরে।
জিনাত চেঁচিয়ে উঠে,
“মুগ্ধ।”
মুগ্ধ রাগে গিড়গিড় করে বলল,
“চুপ, তোমার সাঙ্গপাঙ্গদের বেরিয়ে আসতে বলো।”
জিনাত আমতাআমতা করে বলে,
“কোথায় আমার সাঙ্গপাঙ্গ?”
মুগ্ধ ছুড়িটা একটু চেপে ধরে বলল,
“ন্যাকামি না করে যা বলছি তাই করো।”
জিনাত খুব কষ্টে একটা ঢোক গিলে বলে,
“সবাই বেরিয়ে আয়।”
একজন দুজন করে সবাই বেরিয়ে আসে। মুগ্ধ জিনাতের গলা থেকে ছুড়িটা সরিয়ে নিয়ে লাঠিটা হাতে মুঠ করে ধরে বলল,
“এতোজন কেন এসেছে?”
সবাই মাথানিচু করে আছে। জিনাত একটা ঢোক গিলে জোরপূর্বক হেসে বলে,
“ওরা আপনার সাথে দেখা করতে এসেছে।”
মুগ্ধ ওর দিকে একটু এগিয়ে যায়। মুগ্ধের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে জিনাতের কথা ওর মোটেও বিশ্বাস হয়নি। জিনাতের একদম সামনে দাঁড়িয়ে ধমক দিয়ে বলে,
“কেন এসেছে ওরা? সত্যি করে বলো।”
জিনাত দুপা পিছনে সরে গিয়ে বলল,
“আ.. আসলে…”
জিনাত থেমে গেলে মুগ্ধ একবার সবার দিকে তাকায়। সবাই মাথানিচু করে আছে। একজন ফোন বের করলে মুগ্ধ ছোঁ মেরে তা নিয়ে নেয়।
তারপর চিৎকার করে বলল,
“আসলে কি?”
“আ..”
জিনাতের মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হচ্ছে না।
বাইরে দাঁড়ানো প্রত্যাশা বুঝতে পারে ভিতরে কোনো গড়মিল হয়েছে। সে দরজা ধাক্কা দিয়ে বলে,
“জিনাত তুই ঠিক আছিস তো।”
মুগ্ধ গিয়ে দরজা খুলে বলে,
“ওয়েলকাম ম্যাডাম।”
প্রত্যাশা ও ওর সাথে থাকা একজন মেয়ে মুগ্ধকে মারতে গেলে মুগ্ধ সরে যায়। দুজনেই ভিতরে এসে জুতার বক্সের উপর পড়ে।
মুগ্ধ দরজা লাগিয়ে বাঁকা হাসে,
“সানাইয়ের পো ও এসে গেছে।”
প্রত্যাশা জিনাতের দিকে তাকিয়ে আছে। জিনাত কাঁদোকাঁদো চোখে মুগ্ধকে দেখছে। প্রত্যাশা বাকিদের দিকে তাকালে একজন ইশারা বোঝায় যে ওরা ধরা পড়ে গেছে।
মুগ্ধ লাঠিটা ঘুরাতে ঘুরাতে ড্রইংরুমের সোফায় বসে সবাইকে বলে,
“এখানে আসো।”
সবাই ড্রইংরুমে আসে, শুধু জিনাত বাদে। মুগ্ধ জিনাতকে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে বলে,
“তুমিও এসো।”
কিছুক্ষণ পর জিনাতও এসে দাঁড়ায়। মুগ্ধ লাঠিটা দিয়ে ফ্লোরে ঠকঠক শব্দ করতে করতে বলল,
“মাস্টারমাইন্ড কে?”
একজন প্রত্যাশার দিকে ইশারা করলে মুগ্ধ প্রত্যাশার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। প্রত্যাশা আমতাআমতা করে বলে,
“দেখুন মিস্টার মুগ্ধ, আমার গায়ে টাচ করলে ওরা সবাই আপনাকে মেরে ফেলবে।”
মুগ্ধ মাথানিচু করে আলতো হেসে বলে,
“আমি অযথা কোনো মেয়ের গায়ে টাচ করি না। তো এমন প্ল্যানিং এর কারণ কি?”
প্রত্যাশার সরাসরি জবাব,
“আমাদের বান্ধুবি একজনকে ভালোবাসবে আর আমরা তার চরিত্র বিচার করবো না? তাই জিনাতকে বললাম আগে…”
কথা শেষ হওয়ার আগেই প্রত্যাশার গালে একচড় বসিয়ে দেয় মুগ্ধ। সবাই চমকে উঠে। জিনাত কিছু বলতে নিলে মুগ্ধ হাতের ইশারায় ওকে চুপ থাকতে বলে।
তারপর সবার উদ্দেশ্যে বলে,
“আসতে পারেন আপনারা।”
প্রত্যাশাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“কাউকে অযথা সন্দেহ করবেন না, অভ্যাস বদলান না হলে ভবিষ্যতে সমস্যা হবে।”
প্রত্যাশা মাথানিচু করে বলে,
“সরি।”
“এসব শুনতে চাই না, আসতে পারেন।”
সবাই বেরিয়ে গেলেও জিনাত এখনো বের হয়নি। মুগ্ধ বলে,
“আপনিও আসতে পারেন।”
“মুগ্ধ..”
জিনাতকে থামিয়ে দিয়ে মুগ্ধ বলে,
“গুড নাইট।”
জিনাত বেরিয়ে যেতে নিলে মুগ্ধ ওকে ডেকে বলে,
“আপনার ব্যাগ আর বক্সটাও নিয়ে নিন।”
জিনাত একবার ওর দিকে তাকায়। তারপর চুপচাপ বেরিয়ে যায়। মুগ্ধ এতোক্ষণ রেগে থাকলেও ওরা বেরিয়ে যাওয়ার পরই কান্না করে দেয়। ছেলেদের কান্নাটা এমনই, সকলের আড়ালে চুপিচুপি।
পরেরদিন,
সকালের নাস্তা করে ইব্রাহিম, আছিয়া, আহমেদ ও সুলতানা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেছে। আলিয়ার নাস্তা না করেই অফিসে চলে গেছে। মনমেজাজ কোনোটাই ভালো নেই ওর। গতরাত থেকে শতখানেক বার তুবাকে কল করেছে সে।
জিনাত জেরিনকে কলেজে দিয়ে ভার্সিটিতে যায়। ওর মন খারাপ থাকলেই কি?
সকালে সকলের জন্য নাস্তা বানানো,
ব্যাগ গুছিয়ে সবার প্রয়োজনীয় জিনিসটা ঠিকঠাক দিয়ে দেয়ার দায়িত্ব তো ওর উপরই।
আর তাছাড়া গতরাতের পুরো ঘটনার জন্য ও নিজেই দায়ী।
কখনোই আর প্রত্যাশার সাথে কিছু শেয়ার করবে না জিনাত।
আলিয়ার অফিসে না গিয়ে ভার্সিটির সামনেই এসেছে।
তুবা রিকশা থেকে নেমে ওকে দেখেও না দেখার ভাণ করে চলে যেতে নিলে আলিয়ার গিয়ে ওর হাত ধরে।
তুবা খুব রাগী কন্ঠে বলল,
“হাত ছাড়ুন।”
.
আলিয়ার কোনো কথা না বলে ওকে নিয়ে ভীর থেকে একটু দূরে নিয়ে যায়। যদিও এখানেও অনেক মানুষ আছে।
তুবা রাগী চোখে আলিয়ারের দিকে তাকিয়ে আছে। আলিয়ার বলে,
“পুরো ঘটনাটা তো শুনবে নাকি? আর তোমার সাথে আমার অনেক ইম্পরট্যান্ট কথা আছে।”
“আপনার কোনো কথাই আমি আর বিশ্বাস করি না।”
“কে তোমাকে এতো মিথ্যা বলেছে?”
“যে বলেছে সে মিথ্যাবাদী নয়।”
আলিয়ার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তুবাকে পুরো ঘটনা খুলে বলে। কি করে জিনাতের সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়েছিল, কি করেছিল বাড়ির লোকজন আর কিভাবে বিয়েটা ভেঙে গেল।
জিনাত গাড়ি থেকে নেমেই আলিয়ারকে একটা মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখে। ভালো করে দেখে সে, হ্যাঁ ছেলেটা আলিয়ারই। তবে মেয়েটা কে? তুবার কেবল পিছনটাই দেখছে জিনাত। জিনাত দাঁড়ায় মেয়েটার চেহারা দেখার জন্য।
আলিয়ার পুরো ঘটনা বললেও তুবা একটা কথাও বলে না। আলিয়ার বলে,
“তুমি কি আমার কথা বুঝেছো?”
আলিয়ারের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে তুবা বলে,
“জি, ভালো থাকবেন আর সুখী হন জিনাতের সাথে।”
তুবা ভার্সিটির দিকে চলে যায়। আলিয়ার বুঝতে পারে ও এতোক্ষণ উলুবনে মুক্তো ছড়িয়েছে, তুবা কিছুই বোঝার চেষ্টা করেনি।
তুবা ফিরলেই জিনাত ওর চেহারা দেখে। তুবাকে চিনতে পারে সে। এই মেয়ের সাথেই কথা হয়েছিল ওর। কিন্তু আলিয়ার তুবাকে কি করে চেনে? জিনাত এসব ভাবতে ভাবতেই ভার্সিটিতে ঢুকে পড়ে।
.
চলবে….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com