Breaking News

স্বামী | পর্ব -০৩

তিথি রিদয়ের হাত ধরে নিচে নেমে আসে, রিদয় এর মা হাতে হাত দেখে অনেক খুশি হয়।
সবাই এক সাথে বসেছে,তনু খাচ্ছে কম আর মোবাইল টিপছে বেশি,
তিথি তা দেখছে / রিদয় কে প্লেটে খাবার সাজিয়ে দিয়ে তিথি তনুর মোবাইল ছো মেরে নিয়ে গেলো,
ভাবি আমার ফোন (তনু)
আগে খেয়ে নাও তারপর পেয়ে যাবে, রিদয় এর মা মুচকি হাসি দিয়ে খেতে বসলো,
রিদয় খাবার সামনে নিয়ে হা হয়ে আছে, রিদয় এর মা ও চেয়ে রয়েছে,
কি হল খাচ্ছেন না কেন?(তিথি)
তনু বলে উঠলো ভাবি ভাইয়া তো হাত দিয়ে খেতে পারেনা।
ওহ আমি জানতাম না তো,?
বলেই তিথি রিদয় এর মুখের সামনে খাবার ধরে,
রিদয় এক গাল হাসি দিয়ে খাবার মুখে নিলো,
রহিম চাচা এসে বললো, দেও বৌ মা আমি ওকে খাইয়ে দেই, তুমি খাও।
.
না চাচা আমি পারবো, উনার সব দায়িত্ব যখন নিয়েছি আজ থেকে আমিই দেখবো সব। বলেই হেসে দিলো তিথি।
রহিম চাচার মনটা খারাপ হয়ে গেলো,
রহিম চাচার ছেলে নিলয় এসেছে তনুকে নিয়ে কলেজে যেতে,
তনু আর নিলয় এক কলেজ পরে‌ ও ভালো বন্ধু ২ জন।
তনু কোন রকম খেয়ে সবাই কে বায় বলে চলে গেলো,
রিদয় এর মা ও অফিস এর জন্য বেরিয়ে যেতে লাগলো,কারন এত বড় ব্যাবসা তারই সামলাতে হয়,
তিথি বলে উঠলো মা আপনি অফিস এ যাচ্ছেন??
.
রিদয় এর মা উদাস গলায় বললো হ্যা মা রিদয় এর বাবা মারা যাওয়ার পর তো সিয়াম ও রিদয় সব সামলাতো।
সিয়াম তো বিদেশে গিয়েছিলো একবার ব্যাবসার কাজে, গিয়ে এক ম্যাম বিয়ে করে ওখানেই সেটেল হয়ে গেছে,( সিয়াম রিদয় এর বড় ভাই)
ওখান কার ব্যাবসাটা ও দেখে আর এখান কারটা আমি। রিদয় তো এখন আর সুস্থ নয় অফিস করার মত।
মা উনি অফিস করতো( অবাক হয়ে তিথি)
হ্যা খুব ভালো সামলাতো লেখাপড়ায়ও খুব ভালো ছিলো সে।
বলেই রিদয় এর মা চলে গেলো।
রিদয় এর কোন কথায় কান নেই, এক মনে খাচ্ছে সে, খেতে খেতে বলছে‌।
তুমি না খুব ভালো গো, ভালো বৌ।
তিথি হাসি দিয়ে বললো হুম আমি কিন্তু বকাও দিতে পারি, কাল থেকে নিজের হাতে খাবেন,
রিদয় মুখটা মলিন করে বললো খেতে পারিনা তো!
আমি শিখাবো,(তিথি)
পিছন থেকে রহিম চাচা এসে বললো বৌমা তোমার সমস্যা হলে আমি ওরে খায়িয়ে দেবো।
ও নিজের হাতে খাইতে পারে না।
তিথি এবার বলে উঠলো, না চাচা আপনাকে তো বললাম আমার স্বামীর সব টা আমি বুঝবো।
আপনি আপনার কাজ করুন।
রহিম এবার এক প্রকার রাগ হয়েই চলে গেলো,
মালিক বলে কথা তাই আর কিছু বললো না,
রিদয় খাওয়া শেষ করে বললো ভালো বৌ,
আমি নিজের হাতে খাবো না। তুমি খাইয়ে দেবে। আর মাঝে মাঝে আমি নিজে খাবো।
তিথি আবার রিদয় এর মাথার চুল ঠিক করতে করতে বললো আচ্ছা জনাব তাই হবে।
(গালে চাপ দিয়ে)
তিথি সব গুছিয়ে কাজের লোক কে বলে দিলো দুপুর এর মেনু,
যেহেতু শাশুরি অফিস সামলাচ্ছে, আমি আপাতত ঘরটা সামলাতেই পারি।
তিথি নিজেই সব রান্না করতে চাইছিলো,
কিন্তু রিদয়কে দেখাশুনা করা বেশি দরকার।
তাই সব কাজ ২টা কাজের মেয়েকে বুঝিয়ে দিলো।
.
ও ভালো বৌ আমার না খুব ঘুম পাচ্ছে, সকালে এত জলদি উঠিয়ে দিলে ( মুখ বাকিয়ে রিদয়)
ছাদে চলুন( তিথি )
ওমা বললাম ঘুমাবো তুমি ছাদে যাবে( রিদয়)
হুম শুনবেন না আমার কথা( তিথি)
হ্যা সব শুনবো তুমি তো আমার ভালো বৌ।( রিদয়)
তিথি রিদয় কে নিয়ে শিড়ি দিয়ে উঠছে,
তোমার কষ্ট হচ্ছে ভালো বৌ সিরি দিয়ে উঠতে ( রিদয়)
হুম হচ্ছে তো ( তিতিল)
রিদয় এবার তিথি কে হঠাৎ করেই কোলে তুলে নিলো,
তিথি অবাক মাঝে মাঝে রিদয় এমন করে। যেনো মনে হয় ও পুরো সুস্থ। কিন্তু আবার তার এমন বোকা বোকা কথা। কোনটা বিশ্বাস করবে তিথি বুঝতে পারছে না।
রিদয় তিথিকে ছাদে নিয়ে নামিয়ে দেয়,
রিদয় হাপাচ্ছে, তিথি তার শাড়ির আচলটা দিয়ে রিদয় এর মুখটা মুছে দিলো।
ওমা দোলনা বলেই তিথি দোলনায় বসে পরলো,
রিদয় ও তিথি এর কাছে গিয়ে তার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো,
তিথি রিদয় এর মাথায় হাত বুলাচ্ছে,
আচ্ছা আপনি সুস্থ হয়ে গেলে আমায় মনে রাখবেন তো???( তিথি)
ওমা মনে কেনো রাখবো, আমার মনে এত জায়গা নেই তুমি আমার ঘরে থাকতে পারো অনেক জায়গা আছে( রিদয় চোখ বন্ধ করে)
.
তিথি রিদয় এর এমন পাগলামু উওর শুনে হেসে দিলো,
রিদয় চট করে উঠে বললো তোমার হাসিটা খুব সুন্দর ভালো বৌ!!
আপনার টাও খুব সুন্দর বলেই তিথব রিদয় এর দিকে এক মনে চেয়ে রয়েছে,
রিদয় এর চাহনিটা যেনো কেমন, নেশা নেশা ধরা ভাবে চেয়ে রয়েছে,
তিথি তো ভেবে পাচ্ছেনা উনি অসুস্থ কোথায়??
এবার রিদয় তিথি এর গালে এক চুমু বসিয়ে দেয়,
তিথি পুরো শক, এটা কি হল এখন,
এ কোন অনূভুতি ওনার ছোয়ায় এমন কাছে টানার মত এক আকর্ষন লাগছে কেনো,
তিথি চোখটা বুজে আছে,, রিদয় এবার বললো ও ভালো বৌ রুম এ চলো না,
কেনো রুম কেনো?( তিথি)
আমার না এখানে ভয় করে গো ( রিদয়)
ওহ আচ্ছা চলুন, বলেই দুজন নিচে নেমে গেলো,
তিথি রিদয় কে রুম এ বসিয়ে একটু রান্না ঘরে গেলো,
একটু পর রুম এ এসে দেখে রহিম চাচা রিদয় কে কি জেনো খেতে দিলো!!!
রহিম চাচা!!! ( তিথি)
রহিম এবার তিথি এর ডাকে ঘাবরে গেলো।
কি খাওয়াচ্ছেন ওকে??(তিথি)
না বৌ মা ওর ওর ও ও ঔষুধ( তুতলিয়ে রহিম)
ওহ আচ্ছা ওনার সব ওষুধ আর প্রেসকিপশন আমায় দিন, আমি সব দেখবো এখন( তিথি)
না বৌ মা তুমি পারবে না। ( রহিম এক প্রকার রাগ করেই)
বল্লাম না আমায় দিন সব, ( তিথি এর ধমকানিতে রহিম ঘর থেকে চলে গেলো)
তিথি আসলে এমন বেয়াদপ না যে বাবার বয়সি কারো সাথে এমন ব্যাবহার করবে, তবে এই রহিম চাচা টাকে তেমন সুবিধার বলে মনে হয় না,আর নিজের স্বামীর সুস্থতার জন্য সবই করতে হবে।
রিদয় কে সুস্থ করে তুলবেই সে।
ঔষধ খাওয়া একটু পরই রিদয় চিল্লাপাল্লা শুরু করে দেয়,
আর ঘরের সব আসবাব পত্র ভাঙ্গতে থাকে।
তিথি ভয়ে চুপসে আছে,এ কোন রুপ উনার,
এতক্ষন তো ভালো ছিলো কিন্তু এখন এমন করছে কেন??
তিথি গিয়ে রিদয় এর হাত ধরে বলে কি করছেন এসব ছারুন ব্যাথা পেয়ে যাবেন।
তিথি কে এক ঝটকায় ছারিয়ে দেয়। রিদয় এবার কাচের টেবিলটা ঘুসি মারে,
তার হাত দিয়ে রক্তে ভেসে যাচ্ছে,
তিথি এবার কোন উপায় না পেয়ে রহিম চাচা বলে চিৎকার করে উঠে,
রহিম এসে রিদয় কে এমন করতে দেখে দৌরে কোথা থেকে জেনো একটা ইনজেক্শন এনে তিথিকে রিদয় এর হাত চেপে ধরতে বলে,
তিথি কোন উপায় না দেখে রিদয় এর হাত চেপে ধরে আর রহিম চাচা ইমজেক্শন পুশ করে দেয়,
একটু পরেই রিদয় নিচে পরে যায়,
চিন্তা করোনা বৌ মা ঘুমের ইনজেক্শন দিছি। বলেই রিদয় কে বিছানায় শুইয়ে দিলো, তিথি দৌরে গিয়ে রিদয় এর হাত চেপে ধরে অনেক রক্ত পরেগেছে, রহিম চাচা ফাস্টবক্স এনে দিলে তিথি এক মনে রিদয় এর হাত বেনডেজ করে দিলো।
তিথি কাদতে কাদতে শেষ কি হল মানুষটার। এতক্ষন তো ঠিক ছিলো, ঔষুধ খাওয়ার পর থেকেই এমন কেন করছে উনি।
.
তিথি এর মনে হাজার প্রশ্ন??
কেন এমন করছে উনি/ রহিম চাচা কি ঔষধ খাওয়ায় আর উনার কোন ডাক্তার চিকিৎসা করে ।
সব দেখতে হবে আমায়,।।( মনে মনে)
তারপর রহিম চলে গেলো
তিথি বিছানা ছেড়ে উঠে আলমারিতে কি যেনো খুজতে থাকে,
অনেক খুজার পর কিছু ছবি আর কাগজ হাতে পরে তিথি এর হাতে, ছবি গুলো।
রিদয়ের পাশে একটা মেয়ে তার কোমর জরিয়ে দারানো রিদয়
কে এই মেয়ে আর রিদয় এমন ভাবে চেপে ধরে আছে কেন??
সব জানতে হবে আমায় আজ মা বাড়ি ফিরলেই।
কাগজ গুলা দেখে বুঝা জাচ্ছে রিদয় এর ডিগ্রির সার্টিফিকেট, আর কিছু মেডিকেল রিপোর্ট///
তিতিল এবার সব বুঝতে পেরেছে।।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com