Breaking News

শেষ বিকেলের রোদ । পর্ব -১০



আলিয়ার রেডি হচ্ছে। কালো শার্ট, অফহোয়াইট প্যান্ট পড়েছে সে। শার্টের কলারের কাছে একটু পারফিউম লাগিয়ে নেয়, ঘড়িটা পড়ে সানগ্লাসটা হাতে নিয়ে বেরোনোর সময় জিনাত এসে ওর সামনে দাঁড়ায়। আলিয়ারের কপাল একটু কুঁচকে যায়।
জিনাত বলল,
“আমি রেডি। আমাকে কেমন লাগছে?”
আলিয়ার ওর আপাদমস্তক দেখে, জিনাত সবুজ সুতির শাড়ি পড়েছে। আলিয়ার আরেকটু কপাল কুঁচকে বলল,
“কোথায় যাবি?”
“শপিং এ।”
আলিয়ার হেয়ালি করে বলে,
“ওহ, যা।”
জিনাত মুখ গোমরা করে ফেলে। আলিয়ার রুমে থেকে বেরিয়ে ডাইনিং এ যায়। জিনাতও ওর পিছুপিছু যায়। মিসেস আছিয়া সকালের খাবার সাজাচ্ছে।
আলিয়ার বলল,
“আম্মু, আমি বেরোচ্ছি।”
“খাবি না?”
আলিয়ার নিজের ফোন দেখতে দেখতে বলে,
“আমি বাইরে খেয়ে নিবো।”
“সকালে না খেয়ে বেরোবি?”
“একদিন ঘরে না খেলে কিছু হবে না।”
“এসব আমাকে শিখাবি না, চুপচাপ খেতে বস।”
“আম্মু, প্লিজ। খুব তাড়া আছে।”
“আচ্ছা, ঠিক আছে।”
জিনাত একগাল হেসে বলল,
“আচ্ছা, চাচীআম্মু। আমরা আসি।”
আলিয়ার ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
“তুই একা যাবি?”
“ওমা একা কেন? তুই থাকবি তো।”
বলেই আলিয়ারের বামহাত জড়িয়ে ধরে জিনাত।
আলিয়ার ওকে ঝারি মেরে সরিয়ে দিয়ে বলে,
“কিসব বলছিস? আমি অন্যকাজে যাচ্ছি, তোকে নিয়ে শপিং এ যাচ্ছি না।”
“কোনো কাজ নেই, আগে আমি তারপর সব কাজ।”
“দেখ জিনাত মাথা গরম করাবি না।”
জিনাত মুচকি হেসে বলল,
“এমা, আমি তোর মাথা কখন গরম করলাম। চল, দেরি হয়ে যাচ্ছে। আজকের জন্য কত প্ল্যান আমার!”
বলেই আলিয়ারের হাত আবার জড়িয়ে ধরে।
আলিয়ার ধমক দিয়ে বলে,
“জিনাত”
আলিয়ার বেশ জোরেই কথাটা বলে। জিনাত চুপসে সরে দাঁড়ায়। ইব্রাহীম, আহমেদ, সুলতানা, জেরিন রুম থেকে বেরিয়ে আসে। জিনাত একবার সবার দিকে তাকিয়ে তারপর মাথানিচু করে নেয়।
ইব্রাহীম আলিয়ারকে বলে,
“কি হয়েছে, আলি? সকাল সকাল বাসায় গণ্ডগোল করছিস কেন?”
আলিয়ার একবার সুলতানা ও আহমেদের দিকে তাকিয়ে বলে,
“আব্বু, জিনাত আমার সাথে শপিং এ যেতে চাচ্ছে। কিন্তু আমার কাজ আছে।”
“শুক্রবারে কি কাজ আছে তোমার, আলি?”(সুলতানা)
সুলতানার কথায় স্পষ্ট রাগ বোঝা যাচ্ছে। আলিয়ার জোরে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলে,
“আমার কাজ আছে আর খুব তাড়াও আছে, চাচী?”
“কাজ আছে না বলে ওকে নিয়ে যাবে না বললেই হতো।”
বলেই সুলতানা রুমে চলে যায়।
আলিয়ার ইব্রাহীমের দিকে তাকালে ইব্রাহীম ওকে বলে,
“আজ অফিসে কোনো কাজ নেই এটা আমি জানি। হয়তো তুমি বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে যাবে। বন্ধুদের পরিবর্তে জিনাতকে নিয়ে যাও।”
“আমি পারবো না।”
“আলিয়ার, যা বলছি শুনো। যাও, জিনাতকে নিয়ে শপিং করে আসো।”
“বাবা, আমি পারবো না। কেন বুঝতে চাইছো না?”
কথাটা বলার সাথে সাথেই আলিয়ারের ডানগালে একটা চড় বসিয়ে দেয় ইব্রাহীম। আছিয়া চমকে উঠেন। একমাত্র ছেলে হওয়ায় কোনোদিন ওকে মারেনি ইব্রাহীম। খুব আদরে আদরে বড় হয়েছে সে।
আলিয়ার মাথানিচু করে ফেলে। ইব্রাহীম ধমক দিয়ে বলে,
“আমার মুখের উপর কথা বলছো তুমি? এতো বড় সাহস তোমার। একে তো আমাদের না জানিয়ে…”
বলেই থামে সে।
আলিয়ার মাথানিচু করেই বলে,
“কি করেছি তোমাদের না জানিয়ে?”
“জিনাতকে নিয়ে শপিং এ যাও।”(কথা ঘুরানোর জন্য বলল)
আছিয়া এগিয়ে এসে বলল,
“কেন ছেলেটাকে জোর করছো? ওর যদি ইচ্ছে না করে তো ওর পরিবর্তে অন্য কেউ যাবে।”
ইব্রাহীম চেঁচিয়ে উঠে বলে,
“তুমি চুপ করো, আছিয়া। যা বুঝো না, তা নিয়ে কথা বলো না।”
আছিয়া চুপ করে।
এমনসময় আলিয়ারের ফোনে কল করে মুগ্ধ। আলিয়ার স্ক্রিনের মুগ্ধের নাম্বার দেখেই মুখে হাসি ফুটে উঠে। সবার উদ্দেশ্যে বলে,
“একটু কথা বলে নিই।”
আলিয়ার নিজের রুমে চলে যায়। কল রিসিভ করে আলিয়ার বলল,
“ভাই, তোকে অনেক অনেক থ্যাংকস। আরেকটা হেল্প করতে পারবি?”
“আমি তো কি হেল্প করলাম যে থ্যাংকস দিলি?”
“করেছিস রে ভাই, করেছিস। কত বড় হেল্প করেছিস তা আমি বলে বোঝাতে পারবো না। আরেকটা হেল্প করবি?”
“কি হেল্প?”
“জিনাতকে নিয়ে শপিং এ যাবি। আমি আমার কার্ড দিয়ে দিবো।”
এতো মেঘ না চাইতেই জল। মুগ্ধ মুচকি হাসি
দিয়ে বলল,
“এটা কোনো ব্যাপার নাকি? পিচ্চি একটা মেয়েকে খেলনা কিনে দিবো, এটা নরমাল ব্যাপার।”
“ওক্কে, বাদ্রার।”
“কোথায় আসবো?”
“শান্তিনগর মোড়ে থাক, আমি আসছি।”
“ওকে।”
আলিয়ার ফোন পকেটে ঢুকিয়ে নিচে যায়। জিনাত রেগে রুমে চলে যাচ্ছিল, আলিয়ার ওর হাত ধরে বলে,
“কিরে শপিং এ যাবি না?”
“জুতো মেরে গরু দান করছিস?”
আলিয়ার বাঁকা হেসে বলল,
“গরু মেরে জুতা দান করব থুরি কিনে দিবো, চল।”
ইব্রাহীমের দিকে তাকিয়ে বলল,
“নিয়ে যাচ্ছি, দেখো। আর চাচীকেও বলে দিও।”
ইব্রাহীম ওর দিকে তাকালে ও হেসে বলল,
“তোমার কার্ডটা দাও।”
“কার্ড?”
“হুম, এতো আপ্যায়ন করে মেয়েকে আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছো আর আমি নিজের টাকায় ওকে শপিং করে দিবো নাকি? কার্ড দাও।”
ইব্রাহীম ওকে কার্ড দিয়ে দেয়।
আলিয়ার ইব্রাহীম ও আছিয়ার উদ্দেশ্যে বলে,
“শাঁকচুন্নি নিয়ে যাচ্ছি, দোয়া করো।”
ইব্রাহীমের উত্তরের অপেক্ষা না করে আলিয়ার বেরিয়ে যায়। জিনাতকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয় সে।
অন্যদিকে,
মুগ্ধ ঘুম থেকে উঠে আলিয়ারকে কল করেছিল। যখন জানতে পারলো আজ জিনাতকে নিয়ে শপিং এ যেতে হবে তখন তাড়াহুড়ো করে দাঁত ব্রাশ করে, গোসল করে। কফি রঙের শার্ট আর ব্লু জিন্স পড়ে নেয়। আজ সে শ্যাম্পু করায় চুলগুলো এক্সট্রা সিল্কি লাগছে।
মুগ্ধ রুম থেকে বেরিয়ে দেখে শুভ আর ওর বাবা-মা ডাইনিং এ খেতে বসেছে। ওর মা মুচকি হেসে বলল,
“আমি এক্ষুণি তোকে ডাকতে যাচ্ছিলাম। আয়, খেতে বস।”
“খাওয়ার সময় নেই মা, খুব তাড়া।”
“খুব তাড়া বলেই সকাল ৯:৩০ টায় ঘুম ভাঙলো?”
মুগ্ধ ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে আলিয়ারের ম্যাসেজ,
“আমরা বেরিয়েছি।”
মুগ্ধ হেসে মাকে বলল,
“আম্মু, খুব জরুরি কাজে যাচ্ছি। সফল হলে এবারে বিয়ে করবো, এবার যেতে দাও?”
মুগ্ধের মা খুশিতে মুগ্ধকে জড়িয়ে ধরে, তারপর ওর কপালে চুমো দিয়ে বলে,
“আচ্ছা, বাবা যা। তবে আর আটকাচ্ছি না।”
মুগ্ধ হেসে বেরিয়ে যায়।
ওর পরিবারের সবাই এমনই, বাইরে থেকে কেউ এসব দেখলে পাগল ভাবে সবাইকে। মুগ্ধের মা ছেলের বিয়ের কথাতেই খুশি হয় আর মুগ্ধ প্রায়ই এই কথা বলে মাকে বোকা বানায়।
—————————-
তুবা আজ খুব করে সেজেছে। জলপাই রঙের জামদানী শাড়ি পড়েছে সে, চুলগুলো হাফ স্ট্রেট করে ছেড়ে দিয়েছে, মুখে মেকআপ লাগিয়েছে তবে বেশি নয়, হাতে জলপাই রঙের চুড়ি পড়েছে, কানে মাঝারি ঝুমকা।
তুবা রুম থেকে উঁকি মেরে দেখছে বাইরে কেউ আছে কিনা। যদি সবাই জিজ্ঞাসা করে এতো সেজেছে কেন? কি বলবে সে?
এমনসময় অনু এসে দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকে, তুবা সরে দাঁড়ায়। অনু ওকে ভালো করে দেখে মুচকি হেসে গান গাওয়া শুরু করে,
“কতদিন পর এলে তুমি কাছে
দেখ আর কেউ নেই শুধু তুমি পাশে,
জানি না কেন এতো ভালো লাগে তোমাকে
মন যেন বলে শুধু তোমাতে হারাতে।”
তুবা ওকে ধাক্কা দিয়ে বলে,
“কিসব বলছো?”
“গান গাইছি।”
“সরো, বেরোবো।”
“কোথায় যাওয়া হচ্ছে? কার সাথে দেখা করতে?”
“ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে যাচ্ছি।”
অনু তুবার সামনে এসে কাঁধ দুহাত জড়িয়ে ধরে বলল,
“আমিও একসময় এভাবে শাড়ি পড়ে, সেজেগুজে বেরোতাম, কেন জানো?”
তুবা ওর দিকে তাকালে অনু বলল,
“তোমার ভাইয়ের সাথে দেখা করতে।”
তুবার গাল লাল রং ধারন করে। এভাবে বিষয়টা অনু বুঝে যাবে তা ও ভাবেনি। তুবা একটা ঢোক গিলে বলল,
“আমার দেরি হচ্ছে।”
অনুকে সরিয়ে দিয়ে বাইরে আসে তুবা। বেরিয়েই তাজিমের সামনে পড়ে। তাজিমকে দেখে ওর আত্মা খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগান। অনুও পিছুপিছু বেরিয়ে আসে। অনুর হাতে ওর ব্যাগ।
তাজিম তুবাকে বলল,
“কোথায় যাচ্ছিস রে?”
“বন্ধুদের সাথে ঘুরতে।”
“শাড়ি পড়ে ঘুরাঘুরির অভ্যাস তো নেই।”
“হয়ে যাবে, আমি যাই?”
তাজিম ঠোঁট বাকিয়ে মাথা উপর নিচে ঝাঁকিয়ে বলে,
“যা, তবে তাড়াতাড়ি আসিস।”
“ওক্কে।”
তুবা অনুর হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে বেরিয়ে যায়।
৩০ মিনিট পর,
আলিয়ার শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছে জিনাতকে বলে,
“গাড়ি থেকে নেমে যা।”
“কেন? গাড়ি খারাপ নাকি?”
“না, অন্য গাড়িতে যাবি।”
জিনাত কপাল কুঁচকে বলল,
“অন্যগাড়ি মানে? আমি এই গাড়িতেই যাবো।”
“ওকে, তবে আমি গেলাম।”
আলিয়ার নেমে দাঁড়ায়, জিনাতও নামে। মুগ্ধ এসে আলিয়ারের সামনে বাইক থামায়। আলিয়ার জিনাতের দিকে তাকিয়ে একটা টেডি হাসি দেয়।
জিনাত রেগে বলে,
“এই বলদ এখানে কেন?”
“ছি, কিসব বলছিস বোন? আমি তোকে এই শিক্ষা দিয়েছি? এসব বলে ভাইয়াকে অপমান করিস না প্লিজ।”
আলিয়ারের এমন কথায় খুবই অপমানবোধ করে জিনাত। আজ বাদে কাল যার সাথে ওর বাগদান হবে, তাকে ও বোন বলছে?
আলিয়ার বলে,
“মুগ্ধ তোকে নিয়ে যাবে, যা। আর মুগ্ধ এই নে কার্ড।”(কার্ডটা এগিয়ে দেয়)
মুগ্ধ মুচকি হেসে বলল,
“টাকা আছে আমার কাছে।”
আলিয়ার মুগ্ধের কানের কাছে গিয়ে বলে,
“কার্ড বাবার, নিয়ে যা।”
মুগ্ধ কার্ডটা নিয়ে নেয়।
জিনাতের দিকে ফিরে বলে,
“কি হলো? এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? যা।”
জিনাতের চোখে পানি ছলছল করছে। আলিয়ার ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে,
“বাসায় কেউ যদি এই কথাটা জানে, তবে তোর সাথে কথা বলা এন্ড নেক্সট টাইম ঘুরতে যাওয়া বন্ধ। শুধু তাই নয়, তোকে বিয়ে দিয়ে দিবো। যা এখন, ভাগ।”
জিনাত কাঁপাকাঁপা গলায় বলল,
“না আনলেই পারতি, এভাবে ঠকালি?”
“যা শু।”
আলিয়ার গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
জিনাত এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। মুগ্ধ বলে,
“ম্যাডাম, উঠুন।”
মুগ্ধের দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে জিনাত বলে,
“সব আপনার জন্য হয়েছে।”
মুগ্ধ ঠোঁট উল্টে বাচ্চা বাচ্চা ফেশ করে বলে,
“যা বাবা, যত দোষ সব এই নন্দঘোষের?”
জিনাত বাইকে উঠে বসলে মুগ্ধ বলল,
“ধরে বসুন, নাহলে পড়ে যাবেন।”
“আপনাকে ধরবো? কখনোই না।”
“আপনার ইচ্ছা।”
মুগ্ধ বাইক স্টার্ট দিলে জিনাত পেছনের দিকে হেলে পড়ে যেতে নিলে মুগ্ধের কোমড় জড়িয়ে ধরে সে। মুগ্ধ মুচকি হাসে, এই হাসিটা খুব রহস্যময়।
আলিয়ার যায় ধানমন্ডিতে, তুবার বাসা সেখানেই। আলিয়ার গিয়ে দেখে তুবা একদম গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আলিয়ার গাড়ি থামালে চুপচাপ গাড়িতে উঠে পড়ে। আলিয়ার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
তুবার দিকে একবার আড়চোখে তাকিয়ে বলে,
“দাঁতের জোর আছে আপনার, ম্যাডাম। কালকে তো সবার কথার তোপে পড়তে হয়েছিল।”
“কেন?”
“আজব, আমি ভদ্র ছেলে। কখনো কারো সাথে মারামারি করি নাই, আর আমার হাতে দাঁতের ছাপ। বিষয়টা অদ্ভুত না?”
তুবা হেসে দেয়। আলিয়ার বলে,
“শুনবে না আমি কি উত্তর দিয়েছি?”
“কি দিয়েছেন?”
“বলেছি বেড়ালে কামড় দিয়েছে।”
তুবা চোখমুখ কুঁচকে বলে,
“বেড়াল? কামড় দিলাম আমি আর আপনি বললেন বেড়াল? (একটু থেমে) তারমানে আপনি আমাকে বেড়াল বলেছেন?”
আলিয়ার এতোক্ষণ মুচকি মুচকি হাসছিল। এখন জোরে হেসে দেয়। তুবা ওর হাতে কিছুক্ষণ কিলঘুষি দেয়, ওকে ধাক্কা মারে। তারপর গাল ফুলিয়ে থাকে।
আলিয়ার একহাতে ড্রাইভিং করছে আর অন্যহাতে তুবার হাত ধরে বলে,
“এতো সহজে মানুষ রাগে?”
“আপনি আমাকে বেড়াল বললেন।”
“ওহ, আমি ভুলে গেছিলাম তুমি মানুষ না বেড়াল।”
আলিয়ার আবারো হেসে দেয়। তুবা ওর চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে নিয়ে নিজে পড়ে বলে,
“কেমন লাগছে?”
“পুরাই বেড়াল।”
আলিয়ার হেসে দিলে তুবা ওর সানগ্লাসটা জানলা দিয়ে ফেলে দেয়। আলিয়ার গাড়ির ব্রেক কষে। তুবাকে বলে,
“আমার নতুন সানগ্লাস ছিল।”
তুবা বেশ ভাব নিয়ে সিটে হেলান দিয়ে বসে বলল,
“So what, a cat can do it.”
“তুমি ক্যাট কে বলল? তুমি তো বেড়াল।”
“আপনি হুলো, মোটা হুলো।”
আলিয়ার কপাল কুঁচকায়। তুবা খুব উৎসাহ নিয়ে বলে,
“সত্যি পদ্মাপারে নিয়ে যাবেন?”
“চেয়েছিলাম।”
“চেয়েছিলেন মানে? এখন চান না বুঝি?”
“না।”
“আচ্ছা, সরি।”
“বেড়াল বলে ক্ষমা করলাম।”
তুবা এবারে আর রাগে না। রাগলেও প্রকাশ করে না। কারণ জানে আলিয়ার আবারো তাকে বলবে ‘বেড়াল’।
.
চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com