স্বপ্নের ক্রাশ । সত্য ঘটনা অবলম্বনে । পর্ব -০৫
ছাদে গিয়ে দেখলো,
আরোহি রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থেকে কান্না করছে
আহানঃ এই পাগলি মেয়ে কান্না করছো কেন?
আরোহিঃ
.
আহানঃ দেখি হাত দেখি [জোর করে হাতটা দেখলাম। দেখলাম অনেকটা ফুলে গেছে। নিহাকে তুলে আছাড় মারতে ইচ্ছা করছে ] চলো, তোমার হাতে আবার ব্যান্ডেস করতে হবে
আরোহিঃ না থাক। লাগবেনা
আহানঃ এক থাপ্পড় মারবো। তখন লাগবে
আরোহীঃ আমি বাসায় গিয়ে ব্যান্ডিস করে নিব
.
আহানঃ সত্যি তো?
আরোহিঃ মিথ্যা কখন বললাম
আহানঃ ঐ আমার উপর পড়ার সময়ই শুধু একটু আরটু মিথ্যা বলে ফেলো
আরোহিঃ মোটেও না
আহানঃ মোটেও হ্যা
আরোহিঃ দেখো জালাবা না
আহানঃ কই আমি আবার কখন কিভাবে কাকে জালালাম??? আমার কাছে না দিয়াশলাই আছে আর না আগুন আছে
.
আরোহিঃ তবে রে,, দেখাচ্ছি কিভাবে জালায়
°° বলেই আরোহি আহানের পেছনে ধাওয়া করতে লাগলো আর আহান continuously আরোহিকে ক্ষেপাতে থাকলো। হঠাৎ আহান ধপাস আর তা দেখে আরোহি হাসতে হসতে শেষ
.
আহানঃ (মনে মনে) তোমাকে এভাবে হাসাতে আমি হাজার বার পড়তে রাজি
_____একটুপর আহান আর আরোহি একসাথে নিচে নেমে এলো। আরোহি বাসায় চলে এলো।
.
°°°ধীরে ধীরে আহান আরোহির অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গেলো…
কয়েকদিন পর আহান আরোহি ছাদে বসে গল্প করছে। আরোহি কোনো কিছু নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত। তাই আহান জিজ্ঞেস করলো,
আহানঃ কি হলো? কি ভাবছো??
আরোহিঃ আচ্ছা সবাই তোমার উপর crush খায় কেন??
আহানঃ আমি কি জানি!! নিজের মুখে নিজের তারিফ মানায় না কেন আমাকে দেখে কেন crush খাবে না? কি নাই আমার?
আরোহিঃ তুমি দেখতে ঠিকঠাক
আহানঃ [ just ঠিকঠাক ] আর
আরোহিঃ আর তো কিছুই না।
আহানঃ (এই মেয়ে বলে কি আমি কলেজে গানে চ্যাম্পিয়ন, খেলাধুলায়ও, বাবার টাকা আছে, দেখতেও তো মাশাল্লাহ মেয়েরা আর কি চায়!!! ) আরোহি
আরোহিঃ হুম
আহানঃ তুমি কি জানো তুমি একটা পাগলি
আরোহিঃ আর তুই একটা ধলা বানর, কালা কুমির, পঁচা শামুক, চিকেন তান্দুরি, পঁচা শুটকি etc etc..
আহানঃ ডিরেক্ট তুই আর এগুলা গালি ছিলো!!
আরোহিঃ তাও টেস্টি গালি দিছি
আহানঃ thank you meri maa
আরোহিঃ God bless you my son
আহানঃ আমি তোমার ছেলে কবে থেকে
আরোহিঃ যেদিন থেকে আমি তোমার মা
আহানঃ মাফ করো আমায়
আরোহিঃ আচ্ছা আচ্ছা। উফফফ একদিন তোমার মত পাগলের সাথে থাকতে থাকতে আমিই হাফ পাগল হয়ে যাবো
আহানঃ what!!! I think এইটা আমার বলা উচিত
আরোহিঃ well, I will নেভার মাইন্ড
আহানঃ (মনে মনে) মাইন্ড তো আমার করার কথা..
আরোহিঃ আচ্ছা তোমার নাম কি? আমি তো এখনও তোমার নামটাই জানি না
.
আহানঃ whaatttt, , [আমার আর কত অবাক হওয়া বাকি আছে আমি সেটাই ভাবছি। এই মেয়ে আমাকে একের পর এক সারপ্রাইজ করছে ]
আরোহিঃ হুম। কি নাম তোমার?
আহানঃ আমার নাম আ..
নিহাঃ বেবিইইইই তুমি এখানে কি কর? চলো আমরা আজকে ঘুরবো
আরোহিঃ [ও নাম বলার আগেই নিহা হাজির। হুহ প্রব্লেম একটা। আচ্ছা নিহাকে ওর সাথে দেখলে আমার খারাপ লাগে কেন? ]
.
_____ক্লাস শেষে,
সায়র আরোহির হাত টেনে একটা ফাকা রুমে নিয়ে গেলো,
আরোহিঃ আরে!! করছেন কি? ছাড়ুন আমায়
সায়রঃ আমি ধরলেই তোমার সমস্যা আর সব সময় যে ওর সাথে লেগে থাক তখন কিছু হয় না?
আরোহিঃ মোটেও আমরা লেগে থাকি না। আমরা খুব ভালো ফ্রেন্ড
সায়রঃ আমি পাগল না যে আমাকে বোঝাবা আমি তাই মেনে নিব। আমার চোখ আছে, আমারও বোঝার ক্ষমতা আছে তোমাদের মধ্যে কি চলছে আমি বুঝছি না ভেবেছো?
আরোহিঃ কি তখন থেকে বাজে বকছেন আপনি
সায়রঃ বাজে আমি বকছি না তুমি বকছ। যে ছেলে কোনো মেয়েকে পাত্তা দেয় না সে তোমার সাথে সব সময় লেগে থাকে একে কি বলবা তুমি?
আরোহিঃ আমরা ভালো ফ্রেন্ড
সায়রঃ ওহ প্লিজ আরোহি you are not a child. দেখ ওর তো গার্লফ্রেন্ডও আছে, নিহা। I like you আরোহি। তোমার জন্য আমি ওর থেকে বেটার [বলেই চলে আসলাম]
.
আরোহিঃ (ভাবছে মনে মনে) সত্যিই তো। ও আমাকে এত প্রায়রিটি দেয় কেন? না না ও আমাকে পছন্দ করতে পারে না। ওর তো গার্ল ফ্রেন্ড আছে। নিহা। আর আমি শুধু আহানের। আমি কাউকে হার্ট করতে পারব না
[ ছাগল কোথাকার, ঐটাই যে আহান এইটা বুঝেনা। গাধি একটা। অবশ্য ওকে গাধি আমিই বানিয়েছি ]
.
আহান জানালার কাছে দাঁড়িয়ে সব শুনলো।
আহানঃ এখন আমাকেই কিছু করতে হবে নয়তো এই মেয়ে বুঝবে না।।
এইদিকে অরণি, ” Oh thank God .. অবশেষে RJর ডিটেইলস পাওয়া গেলো .. কালকে থেকে আমার প্লান শুরু আগে আগে দেখো হোতা হ্যয় কিয়া“
.
….পরের দিন ….
অর্ণবের বাড়ির সামনে,
অরনিঃ সময় তো হয়ে এলো।। অর্ণব এখনও বের হয় না কেন? ৩০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছি আচ্ছা অর্ণব আজ কলেজে যাবে তো?? না কি ও কলেজে লেট করে যায়? হতেও পারে। এত রাত করে রেডিও শো করলে তো সকালে লেট উঠবেই। আর একটু ওয়েট করি?
.
অর্ণবের মাঃ বাবু তুমি খেয়ে তারপর বের হবে, নয়তো আজ তোমার কলেজে যাওয়া বন্ধ
.
অর্ণবঃ আমার লক্ষি মা প্লিজ দেখো আজকে কত্ত লেট হয়ে গেছি তার উপর আজকে একটা অনেক ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে. প্লিজ প্লিজ কালকে সিওর খেয়ে যাবো।
.
অর্ণবের মাঃ যেদিন তোর বউ আসবে সেদিন দেখবো কিভাবে না খেয়ে বের হোস
.
অর্ণবঃ আজকে প্লিজ রাগ করো না, উম্মম্মমাহহ লাভ ইউ মা, টাটা
.
°°°°অর্ণব বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছে,,
অরনিঃ ওহ at last আসছেন উনি। এবার শুরু করি আমার ড্রামা [ হঠাৎ করে ওর গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। ও ব্রেক করার আগেই বসে পড়লাম, actually এতক্ষণ ওয়েট করছিলাম তাই তাড়াতাড়ি করে ফেলেছি ]
.
অর্ণবঃ [গাড়ি নিয়ে বের হলাম আর হঠাৎ সামনে কেউ চলে আসায় জোরে ব্রেক করলাম। কিন্তু কেন যেন মনে হলো আমি ব্রেক করার আগেই ও বসে পড়েছে ]
.
অরনিঃ[ হায় আল্লাহ, নাটক করতে গিয়ে সত্যি সত্যি আমার পায়ে লেগেছে দেখছি, তাই হঠাৎ করে বসে পড়েছি] আম্মুউউউউ গোওওও আমি মনে হয় খোড়া হয়ে গেলাম। আমার এখন কি হবে গোওও,, এখন আমার আর বিয়ে হবে না
.
°° অর্ণব গাড়ি থেকে নেমে অরনির কাছে গিয়ে,
অর্ণবঃ আপনি ঠিক আছেন তো? [ দেখলাম কচি বাচ্চার মতো একটা মেয়ে একদম ফুলের পাপড়ির মতো লাল লাল ঠোঁট, গোলাপি গাল, ফর্সা, একটা হালকা পিংক কালারের একটা ড্রেস পরেছে যা ওর সাথে একদম মিশে গেছে ]
.
অরনিঃ [ওহ মাই গড!! কি জোস দেখতে প্রায় ৬ ফুট হবে, উজ্জ্বল শ্যামলা, জিন্স, অ্যাস কালারের টি- শার্ট তার উপর একটা ব্লাক কালারের শার্ট পরেছে, হাতা ফোল্ড করা, সব বোতাম খোলা, চুলগুলো এলোমেলোভাবে স্টাইল করা, উফফফ হায় মে মার যাবা ]
.
অর্ণবঃ এই যে হ্যালো? আপনি ঠিক আছেন?
অরনিঃ একদম ঠিক নাই। আমার পা টা মনে হয় গেলো এখন আমার কি হবে?
অর্ণবঃ কিচ্ছু হবে না
অরনিঃ উউহহহ বললেই হলো নাকি? আমি জানি এখন আমার বিয়ে হবে না। কে করবে এই খোড়া মেয়েকে বিয়ে? আপনি করবে বিয়ে?
অর্ণবঃ [ কি বলে এই মেয়ে!! কি মেয়েরে বাবা] দেখি কি হয়েছে [ওর পা দেখতে গেলাম]
.
অরনিঃ আহহহ [ প্রচন্ড ব্যাথা করছে ]
অর্ণবঃ Don’t cry আমি এক্ষুনি ঠিক করে দিচ্ছি [ ওর কান্নাটা কেন যেন সহ্য হচ্ছে না,,, দেখলাম ওর পা মচকে গেছে, তাই পা জোরে ঘুরিয়ে ঠিক করে দিলাম, আর ও ব্যাথায় চোখ মুখ কুচকে আমার শার্ট চেপে ধরেছে ]
.
অরনিঃ আহহহ, আম্মুউউ আমার পা মনে হয় এইবার সত্যিই গেলো
অর্ণবঃ জি না। আপনার পা এইবার ঠিক হয়ে গেছে। নড়িয়ে দেখুন
অরনিঃ না, ব্যাথা করবে
অর্ণবঃ করবে না। ট্রাই তো কর
অরনিঃ [ নাড়িয়ে দেখলাম, সত্যি ব্যাথা গায়েব, একদম মুভির মতো, তাই খুশিতে ভুলে ওর গালে একটা কিস করে দিলাম ] ওয়াও, উম্মম্মায়ায়াহহহ
অর্ণবঃ
অরনিঃ সরি সরি সরি [ বলে উঠে দিলাম এক দৌড় ]
অর্ণবঃ হলো টা কি??? আর এই মেয়েও এভাবে দৌড় দিলো স্ট্রেঞ্জ
।
অরনিঃ [এবার ওর সামনে যাবো কি করে আমার সব প্লান শেষ + আমাদের crush গুলা আর আমাদের হলো না ] কি লজ্জা কি লজ্জা ছিঃ অরনি এটা তুই কিভাবে করলি??? কি ভাবলো ও আমাকে?
.
অর্ণবঃ পাগলি ভেবেছি
অরনিঃ [পেছনে ঘুরে দেখি উনি] আ. আআ.. আপনি!!
অর্ণবঃ [ ওকে খুজতে গিয়ে দেখলাম ও গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে কি যেন ভাবছে, পরে ওর কথাগুলো শুনে বুঝলাম ও লজ্জা পেয়েছে ] হুম আমি। থাক আর লজ্জা পেয়োনা। অলরেডি লজ্জায় তুমি পুরো লাল লাল হয়ে গেছো।
অরনিঃ আসলে পা ঠিক হয়ে যাওয়ায় খুশিতে ভুল করে
অর্ণবঃ ইটস ওকে, আমি কিছু মনে করিনি
অরনিঃ থ্যাংকস
অর্ণবঃ তা কোথায় যাচ্ছো?
অরনিঃ কোচিং-এ
অর্ণবঃ চলো তোমাকে এগিয়ে দিই
অরনিঃ না না আমি একা যেতে পারবো
অর্ণবঃ কেন? আমি গেলে কোনো সমস্যা?
অরনিঃ না তা না [ বরং আপনি গেলে তো আমি সেলিব্রিটি হয়ে যাবো]
অর্ণবঃ তাহলে চলো
অরনিঃ ওকে
°°° অর্ণব অরনিকে ওর কোচিং-এ পৌঁছে দিতে গেলো, আর অর্ণবের মা বারান্দা থেকে সব দেখলো
অর্ণবের মাঃ তাহলে বৌমা পেয়ে গেছি
.
________কলেজে,,
আরোহি ক্লাসে যাওয়ার জন্য বারান্দা দিয়ে হেটে যাচ্ছিলো, হঠাৎ
– আপু এটা আপনাকে দিতে বলেছে
আরোহিঃ কে? আরেএ বলে তো যাও [ ছেলেটা কিছু না বলে একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো]
.. কগজে লিখা,
” ছাদে এসো”
আরোহিঃ আজব তো কে লিখলো এটা। যাওয়াটা কি ঠিক হবে? থাক না হয় যাবো না, কে না কে ডেকেছে, হুহ
°°°° আবার আরেকটে ছেলে এসে আরেকটা কাগজ দিয়ে চলে গেলো,, এটাতে লিখা,
” না আসলে কিন্তু তুলে নিয়ে আসবো”
আরোহিঃ একি গুন্ডা রে বাবা, যাই গিয়ে দেখেই আসি……………
.
ছাদে এলাম,, এসে আমি তো থ এত্তত্তত্তগুলা সুন্দর করে ছাদটা সাজানো হয়েছে। সাদা বেলুন, লাল বেলুন, লাল গোলাপ আর লাল কাপড় দিয়ে সাজানো ছাদটা। বলে বোঝাতে পরবো না কতোটা সুন্দর, হঠাৎ করে সামনে ও এলো ( ও টা হলো আহান)
আরোনিঃ ওহ তুমি? এগুলোর মানে কি?
.
আহানঃ ( ওর সামনে হাটু গেরে বসে) জানিনা কিভাবে কখন কেন, কিন্তু আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি । I Love You Arohi, প্লিজ আমার হয়ে যাও
.
আরোহিঃ (ওর কথা শুনে আমি স্তব্ধ, কি বলব ওকে আমি? ও যে আমার অনেক ভালো ফ্রেন্ড, তবুও সাহস করে বললাম) I’m sorry, আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না, আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি
.
আহানঃ [ওর কথা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো, মনে হচ্ছে পায়ের নিচে থেকে মাটি সরে গেলো ]
.
to be continued…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com