ভালোবাসি তাই । পর্ব -২২
হ্যাপী বার্থ ডে মালিহা।
আমার চোখ ধরে সায়ন ভাইয়া বলে উঠলো। আমিএকেবারেই ভুলে গেছি আজ আমার বার্থ ডে। আসলেসন্ধ্যাবেলা ইরাম ভাইয়া, মেহরাব ভাইয়ার এতসবকথার চক্করে একেবারে ভুলেই গেছিলাম আজ রাতবারোটার সময় আমার বার্থ ডে। সায়ন ভাইয়া এ প্রথমআমাকে সবার আগে উইশ করেছে। আমার মনটাখুশিতে ভরে গেল। কিন্তু আমি কিছুই বললাম না।সায়ন ভাইয়া চোখ ধরে রেখে আমার কাঁধে মুখ রেখেবলল,
” কল্পনায় নয়…..
বাস্তবে তোমাকে চাই।
তোমার মত নয়……
আমি তোমাকেই চাই।
আই লাভ ইউ মালিহা ।।। “
সায়ন ভাইয়ার এমন কবিতা শুনে আমার হার্ট বিট যেনঅনেক দ্রুত চলতে শুরু করলো। এত জোরে জোরেহৃৎপিন্ড চলছে যেন বুকের ভেতর ঢাক – ডুম ঢাক -ডুমকরে ঢোল বাজতে শুরু করেছে। সায়ন ভাইয়া আমারচোখ ছেড়ে দিয়ে সামনে এসে বলল,
– আই লাভ ইউ বলেছি রিপ্লাই দিবি না?
– নাহ দিব না।
– কেন?
– কারণ আমি ভালোবাসি না তাই।
– আচ্ছা আমি আপনাকে ভালোবাসি এটা তো বলবিনা। তাহলে বল আমি আপনাকে ভালোবাসি না।
– আমি আপনাকে ভালোবাসি,,,,,,,,
না বলার আগেই সায়ন ভাইয়া আমার মুখ চেপেধরলেন। আমি বিরক্ত চোখে সায়ন ভাইয়ার দিকেতাকাতেই দেখলাম ওনি বিশ্ব জয়ের হাসি হাসছেন।
– তুই নিজে মুখেই বললি তুই আমাকে ভালোবাসিস।
– আপনি এটা সিটিং করছেন।
– মোটেই না।
– সিটিং করছেন আপনি। আপনি খুব খারাপ সরুনআমার সামনে থেকে।
আমি চলে যেতে লাগলেই ওনি আমাকে টেনে এনেওনার সামনে দাঁড় করালেন।
– চলে গেলে গিপ্ট নিবে কে?
– আপনার গিপ্ট আমার লাগবেও না।
– এটা বললে তো হবে না তোর জন্য গিপ্ট এনেছিতোকে তো নিতেই হবে।
– আপনাকে কে বলছে গিপ্ট আনতে?
– যা বাবা গিপ্ট আনার কথা কি কেউ বলে দেয় নাকি?
– এতকিছু বলতে পারবো না।
– নে ধর এটার মধ্যে তোর সব গিপ্ট আমার পক্ষথেকে।
সায়ন ভাইয়া আমার দিকে একটা বক্স এগিয়ে দিয়েকথাটা বলল। আমি বক্সটা হাতে নিতেই সায়ন ভাইয়ারুম থেকে চলে গেল। আমার খুব কৌতূহল হচ্ছিলোবক্সের মধ্যে কি আছে সেটা দেখার জন্য। তাইদরজাটা একটু ভেজিয়ে আমি বক্স খুলে দেখতেলাগলাম কি আছে এর মধ্যে। বক্স খুলে আমার মুখপুরোই হা হয়ে গেছে। কারণ বক্সের মধ্যে প্রায় দশডজন বিভিন্ন কালারের কাঁচের চুড়ি আছে। এছাড়াওপ্রায় সবধরণের কসমেটিক্স আছে। যদিও আমারসাজতে ভালো লাগে না তবে চুড়ি পরতে খুব ভালোলাগে। বক্সের মধ্যে একটা চিরকুট আছে। সেটাতেলেখা আছে,
” নীল আকাশ ছুঁতে পারি যদি তুমি চাও
ঐ মেঘ হতে পারি যদি তুমি চাও
শুধু কথা দাও ভুলে যাবে না
একটু দুঃখ আমায় ছুঁবে না।
এই পৃথিবীর বিনিময়েও আমায় কখনো
ছেড়ে যাবে না।।। “
চিরকুটটা দেখে হ্যান্ড রাইটিংটা চেনা চেনা লাগছিল।তখনি মনে পড়লো কক্সবাজার যাওয়ার সময় যেএকটা জামা পার্সেলের মাধ্যমে আমি পেয়েছিলাম।সেই জামাটার সাথে এইরকম হাতের লেখারই একটাচিরকুট আমি পেয়েছিলাম। তার মানে জামাটাআমাকে সায়ন ভাইয়া পাঠিয়েছিল। কিন্তু তখন তোওনি আমাকে একেবারে সহ্যই করতে পারতেন নাতাহলে কেন পাঠিয়েছিলেন? কি জানি ওনি তোআবার ক্ষণে ক্ষণে রং বদলায় ওনাকে বুঝা বড়ইজটিল।।
সবাই আমাকে বার্থ ডে উইশ করার পর আপুরবানানো কেক দিয়ে রাতেই আমার বার্থ ডে সেলিব্রেটহয়ে যায়। সকালে সব আমার ফেবারিট রান্না হবে বলেআম্মু আমাকে জানায়। খুশির ঠেলায় আমি আম্মুকেজড়িয়ে ধরি। আম্মু আমার পিঠ চাপড়ে বলল পাগলিমেয়ে একটা। এটা শুনে আমার হাসি আরো বেড়েযায়।আম্মু এবার মুখটা গম্ভীর করে বলল,
– সায়নকে মাফ করে দে না। আর কত ছেলেটাকে কষ্টদিবি?
– তুমি ওনার কষ্ট দেখলে আমার কষ্ট দেখেছো?
– হুমম দেখেছি তো। সায়ন তো বারবার তোর কাছেক্ষমা চাইছে তবুও তুই জেদ ধরে বসে থাকবি?
– আম্মু এটা তোমার কাছে জেদ মনে হচ্ছে?
– তা নয়তো আরকি? কেউ ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমাকরে দেওয়া উচিত। তুই দেখছিস তো সায়ন প্রায় দিনরাত এখানেই পড়ে আছে শুধু তোর রাগ ভাঙানোরজন্য। আর তুই গোঁ ধরে বসে আছিস।
– তুমি মা হয়েও আমার কষ্টটা বুঝলে না। উল্টো সায়নভাইয়ার পক্ষ নিচ্ছো। ওনাকেও তো বুঝতে হবে নাকিযে ওনি যখন আমাকে মুখের উপর রিজেক্ট করতোআমার কেমন লাগতো তখন।
– সেটা বুঝানোর জন্য তুই এভাবে জেদ করবি?
– তুমি বারবার কেন জেদের কথা বলছো? এখানেজেদের কি আছে?
– পুরোটাই তোর জেদ।
এটা বলেই আম্মু রুমে চলে গেলেন। আমার কেনজানি খুব রাগ লাগলো। আমিও রুমে চলে এলাম।একদম ভালো লাগছে না আম্মু সায়ন ভাইয়ার হয়েকেন কথা বললো? থাকবোই না আমি এ বাড়িতে।তাহলে কারও এত কথা শুনতে হবে না। কালকেসকাল হলেই চলে যাবো যেদিকে চোখ যায়।।
চলবে,,,,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com