Breaking News

গল্পঃ বড্ড আদরে । পর্ব- ৮


আপনি অনেক বুদ্দু! কিছুই বুঝেন না দাঁড়ান দেখাচ্ছি,
বলেই আমার শার্টের কলার ধরে টেনে দুজনের ঠোঁট এক করে দিল।
পিচ্চিটার এমন কাজ দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম।
হঠাৎ করে পিচ্চিটা যে এভাবে আমায় কিস করে দিবে সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি।
পিচ্চিটা আমাকে ছাড়ছেই না, মাথার পিছনের চুল শক্ত করে ধরে আছে।
অনেক কষ্টে পিচ্চিটার থেকে নিজেকে মুক্ত করলাম আর বললাম,
– তোমার মাথা ঠিক আছে? এভাবে কেউ কিস করে, ছিই!
– মাথা ঠিকই আছে, আইসক্রিম পরিষ্কার করার জন্য এর চেয়ে আর ভালো কোনো উপায় নাই!
আর ছিঃ করছেন কেনো! কিসটা কি ভালো লাগেনি?
– তাই বলে কিস করতে হবে! হাত দিয়ে পরিষ্কার করা যায় না?
– না, যায় না!
বুঝতে পারলাম পিচ্চিটার সাথে কথা বলে পাড়বো না আর এখানে থাকাও ঠিক হবে না,
কিছু কাপল আমাদের বসে বসে দেখছে। লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে তাই তো বললাম,
– একটু পরে সন্ধ্যা হয়ে যাবে, চলো বাসায় ফিরে যায়?
– এতো অস্থির হচ্ছেন কেনো? এখনো তো ঠিক করে ঘুরাই হয়নি?
– তো আর কি বাকি রইছে!
– আমি এখন ফুচকা খাবো?
.
বলেই আমার হাত ধরে টেনে একটা ফুচকার দোকানীর কাছে নিয়ে গেল।
এক প্লেট ফুচকা অর্ডার দিয়ে দুজনে বসে রইলাম।
একটা বাচ্চা ছেলে এসে কিছুক্ষণ পর ফুচকা দিয়ে গেল।
ইভা গফ গফ করে ফুচকা খেতে শুরু করলো,
আমায় অবশ্যই একটা বলে ছিল ফুচকা খেতে কিন্তু আমি খাইনি।
পিচ্চিটার জন্য আরেক প্লেট ফুচকা অর্ডার দিতে হলো।
প্রায় দুই প্লেট ফুচকা খেয়ে ইভা আর খেতে চাইলো না। ফুচকার বিল মিটিয়ে ইভাকে বললাম,
– অনেক ঘুরেছি এখন চলো বাসায় যাই?
– না! এখন দুজনে দুলনাই চড়বো?
– এখানে দুলনা পাবে কোথায়!
– এইতো এইদিকে, চলেন না গিয়ে দুলনাই চড়ে আসি?
– না, দুলনাই চড়লে মাথা ঘুরবে চলো বাসায় যাই!
– না, আমি যাবো না!
আমি এখন দুলনাই চড়বোই,
আপনি আমায় দুলনাই না চড়ালে আম্মুর কাছে বিচার দিব আপনার নামে হুম!
আমি বুঝিনা পিচ্চিটা আম্মুর ভয় কেনো দেখায়! আমি যে আম্মুকে ভয় পায়,
এটাই বা পিচ্চিটা কি করে জানলো! কিছু বলা যায় না, বললেই আম্মুর কাছে বিচার দিব!
পিচ্চিটার এতো প্যারা আর নিতে পারতেছি না।
পিচ্চিটার সাথে দুলনার দিকে যেতে লাগলাম, পিচ্চিটা আমার বাঁ হাত জড়িয়ে হাঁটতে ছিল।
দুজনের জন্য দুটা দুলনার টিকেট কিনলাম। আমি দুলনায় চড়তে চাইনি,
পিচ্চিটার জন্য চড়তে হচ্ছে!
দুলনা ছেড়ে দিল, পিচ্চিটা ভয় পেয়ে শক্ত করে আমায় জড়িয়ে ধরলো।
মনের মাঝে এক অন্যরকম অনুভূতি বয়তে লাগলো।
দুলনা থেকে নেমে আর কিছুক্ষণ ঘুরা-ঘুরি করে ইভাদের বাসায় ফিরে গেলাম।
রাতে ডিনার করে ড্রয়িংরুমে বসে ছিলাম এমন সময় ইভার দুই কাজিন নুসরাত
আর ঝুমুর এসে দুই পাশে সোফায় বসে পড়লো। তখনি পিচ্চিটা কোথা থেকে উড়ে
এসে সামনে হাজির হয়ে গেল আর বলল,
– রাত অনেক হয়ছে, ঘুমাবেন কখন?
.
– তুমি গিয়ে ঘুমাও আমি ওদের সাথে একটু কথা বলে আসি।
– আমি একা ঘুমাতে পারবো না! আসেন বলছি নয়তো আমি আম্মুর…
পিচ্চিটাকে বাক্য শেষ করতে দিলাম! বুঝতে পারলাম, পিচ্চিটা চাইনা আমি তার কাজিনদের সাথে কথা বলি। পিচ্চিটার বাধ্য হয়ে ওর সাথে ঘুমাতে চলে গেলাম। শিড়ি দিয়ে উঠার সময় পায়ে ব্যথা পেয়ে পিচ্চিটা বসে পড়লো।
– এখন আবার কি হলো বসে পড়লে কেনো?
– দেখছেন না, পায়ে ব্যথা পাইছি!
– কই দেখি, বেশি ব্যথা পাইছো?
– না, আপনার হাত দেন? ধরে নিয়ে যান আমাকে।
বুঝতে আর বাকি রইলো পিচ্চিটা যে অভিনয় করছে। পিচ্চিটা আমার হাত ধরে এমন ভাবে হাঁটছে রাত পেড়িয়ে দিন হয়ে যাবে রুমে যেতে। পিচ্চিটাকে চমকে দিয়ে, কোলে করে রুমে নিয়ে যেতে লাগলাম। নিচ থেকে ইভার কাজিন বলে উঠে, দুলাভাই সাবধানে অস্থির হওয়ার কিছু নেই।
.
পিচ্চিটা আমার গলা জড়িয়ে ধরে আছে মনে হয়না লজ্জা পায়ছে।
রুমে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দিলাম তখনি আমাকে বলে,
মাঝে মাঝে আপনি অনেক লক্ষ্মী জামাই হয়ে যান।
আমি আর কথা বাড়াইনি শুয়ে পড়লাম পিচ্চিটার পাশে।
পিচ্চিটা জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেল,
আমি চোখ বুঝে পিচ্চিটাকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে,
দুজনে রেডি হয়ে সবাইকে বলে আমাদের বাসায় চলে এলাম।
বাসায় এসেই অফিসে চলে যেতে হলো অফিসে একটু কাজ ছিল,
অফিসের কাজ শেষ করে দুপুরবেলা বাসায় গেলাম।
ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে বসতেই আম্মু বলল,
– ইথান, ইভার তো এখনো লেখাপড়া শেষ হয়নি!
ইভাকে কি কলেজে ভর্তি করা দরকার না?
– ইভাকে জিগ্যেস করে দেখো, সে কলেজে ভর্তি হবে কি না।
– ইভা মামুণি তুমি কি বলো?
– আম্মু আপনার যেটা ভালো মনে হয় সেটাই করুণ। ( ইভা )
– ইথান, তাহলে কাল ইভাকে নিয়ে পাশের একটা কলেজে ভর্তি করিয়ে দিস।
– আচ্ছা।
.
খাবার শেষ করে রেডি হয়ে অফিসে গেলাম।
অফিস শেষ করে রাতে বাসায় গিয়ে দেখি পিচ্চিটা এখনো খাইনি।
ফ্রেশ হয়ে এসে পিচ্চিটাকে খাইয়ে,
নিজেও খেয়ে নিলাম। রাত অনেক হয়েছে দুজনে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে পিচ্চিটাকে নিয়ে পাশের একটা কলেজে চলে গেলাম।
এই কলেজে আমিও দীর্ঘদিন পড়ালেখা করেছি তাই কলেজের প্রিন্সিপাল আমাকে চিনে,
উনার সাথে ইভার বিষয়ে কথা বলে ইভাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দিলাম।
পিচ্চিটাকে ক্লাস চিনিয়ে বাসায় রেখে অফিসে চলে গেলাম।
অফিসে অনেক কাজের চাপ,
আব্বুও দেশে নেই! অফিসের কাজের জন্য দেশের বাহিরে গেছে তাই অফিসের সব কাজ আমাকেই করতে হচ্ছিল।
পরেরদিন সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলাম এমন সময় খেয়াল করলাম পিচ্চিটা এসে আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে তা দেখে বললাম,
– কিছু বলবে?
– হুম!
– কি বলবে, বলো?
– আপনি তো অফিসে যাচ্ছেন, যাওয়ার পথে আমাকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে যাবেন? একা যেতে ইচ্ছে করছে না।
– আচ্ছা, তুমি রেডি হয়ে আসো! আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করতেছি।
– থ্যাংক ইউ!
বলেই আমার গালে একটা কিস করে দৌড়ে চলে গেল।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com