স্বপ্নের ক্রাশ । সত্য ঘটনা অবলম্বনে । পর্ব -১০
অর্ণবঃ (তুমিই আমার অরনি। আমি সিউর ওর নাম্বারটা তুলে নিলাম,,,) তাহলে বন্ধুরা আজকে এখানেই শেষ করছি আজকের শো। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ
পরের দিন সকালে,
অরনির মাঃ এই অরনি, এইইইই উঠ বলছি,, সকাল থেকে দুইবোনকে ডাকছি,, কারও উঠার নাম নাই
অরনিঃ হুম মা এই তো আর একটু
অরনির মাঃ গত ৩০ মিনিট ধরেই আর একটু আর একটু করছিস
আরোহিঃ মাত্র ৩০ মিনিট হইছে,, তাতেই এমন কর কেন? আর ৩০ মিনিট,,, ( হঠাৎ মনে হলো বৃষ্টি হয়ে গেলো। কি ব্যাপার? জানালা তো লাগানো, তাহলে বৃষ্টি আসলো কিভাবে? চোখ খুলে দেখলাম মা আমাদের উপরে পানি ঢেলে দিয়েছেন…) আম্মুউউ
অরনির মাঃ এবার দেখি তোরা কিভাবে ঘুমাস
অরনিঃ তাই বলে তুমি এমন করবা?? তোমার ছোট্ট মেয়ে দুইটাকে তুমি এইভাবে কষ্ট দিলা
অরনির মাঃ থাক,, আর নাটক করতে হবে না। অলরেডি ৮ঃ৩০ বাজে
অরনিঃ কিইইহহহহ তুমি আমাকে আগে কেন ডাকোনি। আমার আজকে কোচিং-এ ৯ টায় পরীক্ষা আছে
আরোহিঃ আর আমার কলেজজজ
অরনির মাঃ আমি ডাকিনি???
অরনিঃ ( আম্মুর হাতে ঝাড়ু দেখে চুপ হয়ে গেলাম) না মানে, ঠিক আছে।। আমারই ভুল মানে আমাদেরই ভুল
আরোহিঃ টা টা ( বলেই বাথরুমে দিলাম দৌড়)
অরনিঃ এই আপু,, এটা ঠিক না।। আমি যাবো আগে
আরোহিঃ অন্যটা তে যা
অরনিঃ হুহ তুই আহানকে পাবি না অভিশাপ দিলাম
আরোহিঃ ( বাথরুম থেকে চিল্লিয়ে) আমি না পেলে তুইও অর্ণবকে পাবি না
অরনিঃ তাহলে অভিশাপ ক্যান্সেল ( রেডি হয়ে কোচিংএর জন্য বের হলাম)
রাস্তায়,,,,
অরনিঃ উফফফফ আজকে লেট হলো আর আজকেই কোনো রিক্সা নেই , হঠাৎ সামনে একটা গাড়ি এসে দাড়ালো।। উফফফফ এক-এ তো রিক্সা পাচ্ছি না, আবার সামনে গাড়ি এসে দাড়ালো ওখানে থেকে সরে একটু সামনে গেলাম,, একটু পরই গাড়িটাও সামনে এসে দাড়ালো,, সাথে সাথে ফোনে ম্যাসেজ আসলো,” গাড়িতে উঠো”… আজব তো চিনিনা জানিনা আর গাড়িতে উঠে যাব?? যদি আমাকে কিডন্যাপ করে নেয় আমরা তো বড়লোকও নই… তাই আবার আর একটু সামনে গিয়ে দাড়ালাম,, গাড়িটা আবার এগিয়ে আসলো।।
উফফফফ এবার গিয়ে বলেই ফেললাম,
” এই যে আপনার সমস্যা কি বলুন তো? তখন থেকে বিরক্ত করছেন একে তো রিক্সা পাচ্ছি না তারউপর আপনি জালাচ্ছেন আবার ম্যাসেজ ওহ হ্যা আমার নাম্বার কোথায় পেয়েছেন হ্যাঁ?? আমার উপর জাসুসি করছেন?? আমাকে কিডন্যাপ করবেন? আপনাকে তো আমি পুলিশে দিবো” হঠাৎ একটা আওয়াজ ভেসে উঠলো
– গাড়িতে এসে বসো। আমি বেত হতে পারবো না তাই বের হচ্ছি না
অরনিঃ কণ্ঠটা কোথাও একটা শুনেছি শুনেছি মনে হচ্ছে
অর্ণবঃ আপনার ভাবাভাবি শেষ হলে কি একটু আসবেন?
অরনিঃ (গাড়ির কাছে গিয়ে) একিইইইই আপনি!!!
অর্ণবঃ জি আমি,৷ এবার গাড়িতে বসো
অরনিঃ কেন?
অর্ণবঃ
অরনিঃ ওকে ওকে বসছি ( উফ অরনি কবে যে তোর বুদ্ধি হবে কে জানে, না দেখে এতো কিছু বলে দিলি এখন তো দেখে মনে হচ্ছে অনেক খেপে গেছে, খেপারই কথা। এখন কি করি!!?? কোথা ঘুরাতে হবে) আচ্ছা আপনি এদিকে হঠাৎ
অর্ণবঃ তোমার জন্যই তো এসেছিলাম আর তুমি আমাকে কিডন্যাপার বানিয়ে দিলে
অরনিঃ আমি কি জানি এটা আপনি
অর্ণবঃ
অরনিঃ ( অরনি খেপাচ্ছিস কেন কথা ঘুরা) আচ্ছা ম্যাসেজটা আপনি দিয়েছিলেন? আপনি আমার নাম্বার কোথায় পেলেন?
অর্ণবঃ কালকে রেডিওতে যখন কল দিয়েছিলে তখন
অরনিঃ ( আমি তো ভুলেই গেছিলাম শিট)
অর্ণবঃ (ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম লজ্জায় ওর গাল দুটো লাল হয়ে গেছে ওকে দেখেই আমার রাগ চলে গেলো। কিন্তু ও কেন লজ্জা পাচ্ছে,, লজ্জা তো আমার পাওয়া উচিত কালকের কথা গুলো বলার জন্য ) কিছু বলো
অরনিঃ আপনি গাড়ি থেকে বের হননি কেন? তাই তো আমি বুঝতে পারিনি?
অর্ণবঃ আসলে ওখানে কয়েকটা মেয়ে ছিলো যারা আমার ফ্যান। আমি বের হলে ওরা আমাকে ঘিরে ধরতো, আরও অনেক কিছুই হতো ( ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে) আরে তোমার কি হলো?
অরনিঃ কিছু না,, কোচিং এ চলে এসেছি। ধন্যবাদ আজকের জন্য ( বলেই গাড়ি থেকে বের হয়ে চলে এলাম,, আসলে ওর কথা শুনে কালকের ঐ মেয়েটার কথা মনে পড়ে গেলো, তার উপর এই মেয়ে গুলা। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে)
অর্ণবঃ হলোটা কি?? কালকেও রেগে কথা বললো। আবার আজকেও… আচ্ছা পরে জিজ্ঞেস করবো ( গাড়ি নিয়ে কলেজে এলাম)
আরোহিঃ ( আনমনে হাটছি আর ভাবছি) পরশু কলেজ প্রোগ্রাম।। ভয় লাগছে.. আমি ঠিক করে পারফর্ম করতে পারবো তো? অহি আমার কাছে আসলেই তো আমার হার্ট বিট বেড়ে যায়,, তার উপর এতো ক্রাউড হঠাৎ কারও সাথে ধাক্কা লাগলো) সরি
আহানঃ ( দেখলাম আরোহি আনমনে হাটছে। ওর সামনে এসে দাড়ালাম কিন্তু ওর কোনো খেয়াল নেই, তাক আমার সাথে ধাক্কা খেলো) কি ব্যাপার কি ভাবছো?
আরোহিঃ হু? না কিছু না
আহানঃ বলো
আরোহিঃ পরশুদিনের কথা।। আমি ঠিক মতো পারফর্ম করতে পারবো কি না টেনশন হচ্ছে
আহানঃ ধুর পাগলি টেনসন কোরো না। সব ঠিক হবে আর আমি আছি তো।
আরোহিঃ ওই টাই তো ভয়
আহানঃ কিহহহ
আরোহিঃ হায় আল্লাহ ভুল করে জোরে বলে ফেলেছি না না না কিছু না
আহানঃ আমি থাকলে ভয় মানে? আমাকে তোমার ভয় লাগে?
আরোহিঃ না না মানে হ্যাঁ
আহানঃ কেন ভয় লাগে?
আরোহিঃ জানি না, কিন্তু ভয় লাগে। অন্যরকম ভয়
আহানঃ যেমন
আরোহিঃ নার্ভাস লাগে, হাত পা ঠান্ডা হয়ে যায়
আহানঃ তাই
আরোহিঃ আমি আসি
আহানঃ দাড়াও।। এই চকলেটটা তো নিয়ে যাও
আরোহিঃ ??? ( জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি)
আহানঃ না মানে তোমার পছন্দ তাই নিয়ে এসেছিলাম
আরোহিঃ (হেসে ওর হাত থেকে চকলেট টা নিলাম) থ্যাংক ইউ ( চলে আসলাম)
আহানঃ তার মানে তুমি এই অহি কে ভালোবেসে ফেলেছো
আর বেশি দেরি করবো না। তুমি জলদি তোমার আহানকে পেয়ে যাবে…
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com