Breaking News

গল্পঃ রক্তাক্ত লাশ । পর্ব - ০৭


তাশফিঃ ফাজলামি করবেন না একদম।
আমিঃ ফাজলামি না সিরিয়াসলি বলছি।
তাশফিঃ একবার বিশ্বাস করেছি। আপনি আমাকে যেভাবে ঠকিয়েছেন। তারপর আর আপনাকে মেনে সম্ভব না।
আমিঃ তাশফি প্লিজ যা হবার হয়েছে। একবার তো দেখা করো
তাশফিঃ আচ্ছা ঠিক আছে কাল দেখা করছি।
বলেই ফোন রেখে দিল।
কষ্ট পামু কি খুশিই হইলাম। যাক দেখা করতে তো রাজি হয়েছে। বাকিটা ইনশাল্লাহ রাজি করাতে পারব।
পরদিন,,
বিকাল বেলা অফিস থেকে সোজা জায়গামত রেষ্টুরেন্টে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি তাশফি বসে আছে।
আমিঃ হাই
তাশফি কিছু বলল না।
আমিঃ সরি দেরি হয়ে গেল। কাজ ছিল তো হাতে তাই
তাশফিঃ বলতে হবেনা। এসব অভ্যাস আগেও দেখেছি।
আমিঃ রাগ করো না।
তাশফিঃ রাগ করার আমি কেউ না। বলেন কেন ডেকেছেন
আমিঃ কি খাবে?
তাশফিঃ আমি খাওয়ার জন্য আসিনাই। কি বলতে ডেকেছেন তাহা বলুন
আমিঃ এখনও রেগেই আছ। রেগে থাকলে বলব কেমনে?
তাশফিঃ আমি রেগে নেই। আপনি বলুন
আমিঃ তোমার হাত টা ধরতে পারি?
তাশফিঃ নাহ।
আমিঃ ভালোবাসো না?
তাশফিঃ ভালোবাসা? ভালোবাসার কি বুঝেন আপনি?
আমি একটা হাসি দিলাম।
তাশফিঃ হাসবেন না।
আমিঃ I Love you..
তাশফিঃ অভাক হলাম। এতদিন পর এসে বলছেন ভালোবাসেন। এতদিন কোথায় ছিল ভালোবাসা?
আমিঃ ভালোবাসা জায়গামতোই ছিল। শুধু বুঝতে দেড়ি হয়ে গেছে। প্লিজ আগে যা ঘটেছে ভূলে যাও। আমরা ডিরেক্ট বিয়ে করব ফেলব। রাজি হয়ে যাও
তাশফিঃ কি মনে হয় ভালোবাসা এতই সহজ? যখন ইচ্ছে ছাড়বেন। আবার ইচ্ছেমত চলে আসবেন?
আমিঃ তুমি বুঝতেছ না।
তাশফিঃ আমি বুঝে কাজ নেই। good bye..
ও দাঁড়িয়ে গেল।
তাশফিঃ আর ডিস্টার্ব করবেন না আমাকে।
বলেই হাটা ধরল।
আমি বসে রইলাম। ঠিক কিভাবে বুঝাব মাথায় আসছিল না।
শাওনঃ দোস্ত মন খারাপ করিস না। আর তুই সব খুলে কেন বললি না? কি পরিস্থিতির মধ্যে তুই ছিলি সব বলতি। তাহলেই তো হত। আই এম সিউর ও তোকে এখনও ভালোবাসে
আমিঃ ওসব বলতে পারব না। আমি চাইনা কেউ আমাকে sympathy দেখাক।
তুষারঃ ভালোবাসা পেতে হলে কখনও কখনও নদীতেও ঝাপ দিতে হয়।
আমিঃ ফালতু কথা বলিস না। পারলে ভালো কোনো প্ল্যান দে।
রাতে বাসায় বসে বসে ভাবছি কি করা যায়। তখনি চিন্তা করলাম তাশফি কে সব বলেই দেই। যেই ভাবা সেই কাজ।
সব সুন্দর করে লিখলাম। তারপর এসএমএসে পাঠিয়ে দিলাম।
কিছুক্ষন পরই কল আসল। খুশি খুশি রিসিভ করলাম।
আমিঃ জানতাম তুমি কল দিবে। এবার বুঝছ তো আমি কি কেন করছি?
তাশফিঃ আপনার কি মনে এইসব অভিনয়ে আমার মন গলে যাবে?
আমিঃ আমি অভিনয় করছি না। কি করে যে তোমাকে বুঝাই
তাশফিঃ আমি পুতুল নই। যে চাইলেন খেললেন আবার ফেলে দিলেন।
আমিঃ এখানে খেলা পুতুল কেন আসছে বুঝিনা। তোমার জ্ঞান বুদ্ধি কি লোপ পেয়েছে?
তাশফিঃ হ্যা হয়েছে। আপনি ডিস্টার্ব করবেন না আমাকে।
আমিঃ তাশফি
তাশফিঃ আমার বয়ফ্রেন্ড আছে। সো এবার আশা করি আর ডিস্টার্ব করবেন না।
আমিঃ কিহ? মজা করো না। আমি জানি তুমি এখনও আমাকেই ভালোবাসো।
তাশফিঃ না বাসিনা। আর মজাও করছিনা। এতদিন ছেলেটাকে জুলিয়ে রেখেছিলাম। আপনি ছেড়ে দিছেন তাই একসেপ্ট করে নিছি ওরে।
আমার মুখ বন্ধ হয়ে গেল। কি বলব মাথায় আসছিল না।
তাশফিঃ ভালো থাকবেন।
বলেই ফোন কেটে দিল।
এই মেয়েকে আর কিভাবে বুঝাব। যা করছি তার উল্টো টা ভাবছে। এখন আবার বয়ফ্রেন্ড নাটক।
শাওন কে কল দিয়ে সব বললাম। নিপাকে দিয়ে সব খোজ নিতে বললাম। আসলেই ম্যাটার সিরিয়াস কিনা।
পরদিন,,,
শাওনঃ ধুর মেয়ে তোরে মিথ্যা বলেছে। যদি কেউ থাকত তাহলে নিপা অবশ্যই জানত।
আমিঃ সিউর তুই কেউ নাই?
শাওনঃ ১০০% সিউর।
তুষারঃ প্রেমের নরা জলে ডুবেনা। আর ঘুরিস না। ছ্যাসরামি করে লাভ হবেনা। এ মেয়ে আর তোর হবেনা। তুই যাই করবি এখন অভিনয় ভাববে শুধু।
শাওনঃ আমারও কেন জানি তাই মনে হচ্ছে। ছ্যাসরামি করা বাদ দে। অনেক তো করলি।
আমিঃ যখন ভালোবাসতাম না তখন আমার ছিল। এখন যখন সত্যি সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছি আমার হবেনা? দোস্ত সত্যি সত্যি এই মুহুর্তে তাশফি ছাড়া অন্য কিছু কল্পনা করতে পারছিনা।
কিছুক্ষন নিরবতা ।
তুষারঃ I have an idea
শাওনঃ কি যলদি বল
ও সব বলল।
শাওনঃ পাগল হয়েছিস পরে হিতে বিপরিত হতে পারে। পুলিশ ও চলে আসতে পারে
তুষারঃ তাহলে এই ছ্যাসরামি করে লাভ নাই। মেয়ে ওরে ভালোবাসেনা এখন আর। যদি ভালোই বাসত তাহলে এভাবে ওরে ঘুরাতো না। এই টা করলেই একমাত্র যদি ভাগ্যজোরে মেয়ে ওর হয়। আর নাহলে এই ছ্যাসরামি করেই যাইতে পারবে কিছু হবেনা।
আমিঃ ছ্যাসরামি ছাড়া ভালোবাসা হয়না রে।
তুষারঃ এখন তুই করবি কিনা বল।
আমিঃ ১০০% তবে দুদিন পর করব। তার আগে তাশফি কে ঈমোশনালি আরেকবার চেষ্টা করব। নাহলে এই বুদ্ধি। আমার মন বলছে ও আমাকে ভালোবাসে। এখন আমার পরিক্ষা নিচ্ছে। যতই হোক একবার ধোকা দিছি বলে কথা।
প্ল্যান মত পরদিন তাশফির ভার্সিটির সামনে চলে গেলাম।
তাশফি বেড় হতেই ওর সামনে দাঁড়ালাম।
তাশফিঃ আবার আপনি? ডিস্টার্ব করতে না নিষেধ করেছি। পিছু করছেন কেন?
আমিঃ না করে যাব কোথায়? তুমি ছাড়া তো এ মন কিছু বুঝেনা।
তাশফিঃ ভালো লাগছেনা এসব। প্লিজ। আমার বয়ফ্রেন্ড আছে বলেছিই তো।
আমিঃ নাই আমি জানি। আর থাকলেও কিছু যায় আসেনা। তোমাকে আমার লাগবে। ভালোবাসি ভালোবাসব। আপন করেই ছাড়ব
তাশফিঃ বলেছি বয়ফ্রেন্ড আছে।
আমিঃ আবারও
তাশফিঃ ধুর
বলেই হাটা ধরল।
আমি তাশফির হাত ধরলাম। তারপর বাংলা স্টাইল।
আমিঃ যদি না পাই তোরে আমি যাব কিন্তু মরে
না পাত্তাই দিল। হাত ছাড়িয়ে রিকশা নিয়ে চলে গেল। মন খারাপ করে দারিয়ে রইলাম। এর ঘৃণা মনে আমার জন্য।
ঈমার্জেন্সি কেবিনে শুয়ে আছি
শাওন তাশফি কে খবর পাঠাল। সবাইকে অভাক করে দিয়ে তাশফি এসে হাজির হলো।
তুষারঃ তুমি এসেছ? দেখেছ পাগল টা কি করে ফেলেছে?
শাওনঃ আর কতদিন পিছে ঘুরাবা? ও সত্যিই তোমাকে খুব ভালোবাসে। আমি বুঝিয়েছি নিপা বুঝাইল। তুমি বুঝলেনা। এই অঘটনের জন্যই অপেক্ষা করছিলে তাই না? এবার খুশি তো।
আমি তখনি আস্তে আস্তে,
আমিঃ তাশফি তাশফি ভালোবাসি ভালোবাসি
তাশফি আসল। আমার পাশে বসল। আমার কপালে হাত দিল। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
শাওনঃ এবার তো বলে দাও ভালোবাসো। যদি ভালোবেসে থাকো।
তাশফি হঠাৎ চলে গেল।
রেষ্টুরেন্টে আমি আর তাশফি মুখোমুখি বসে আছি। আমার মনে তো মহা খুশি খুশি লাগছে। ফাইনালি তাশফিকে রাজি করাতে পেরেছি।
আমিঃ তো বলো
তাশফিঃ হ্যা বলব তো। তার আগে এটা দেখো তো একটু
আমিঃ কি?
মোবাইল থেকে একটা ভিডিও দেখাল। দেখে আমি অভাক হয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম।
তাশফিঃ দাড়ালে কেন বসো। ছিহ ছিহ আর কত মেয়েকে ঠকাবে? মেয়েদের এতই সস্তা মনে হয়?
আমিঃ দেখো তাশফি
তাশফিঃ দেখছি। বলেই ব্যাগ থেকে একটা কার্ড বেড় করে হাতে ধরিয়ে দিল।
খুলে দেখি বিয়ের কার্ড। তাও তাশফির বিয়ে।
আমিঃ তাশফি প্লিজ আমার কথা শুনো। আমাকে কিছু বলতে তো দিবা
তাশফিঃ আর কিছু বলতেও চাইনা। শুনতেও চাইনা। চাইলে বিয়েতে আসিয়েন আর না আসলেও চলবে।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com