গোধূলীর আলোয়। মৌসুমী । পর্ব -৫০
সায়নের আজকাল; না, আজকাল না! অনুর সাথে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই আয়মানদের বাসায়
যেতে কেমন অস্বস্থি লাগে। কেমন লজ্বা টাইপ অনুভূতি হয় ভেতরে ভেতরে।
আগে যেমন নিঃসংকচে আয়মানদের বাসায় যখন তখন যেতো, এখন তা হয় না!
শ্বশুরবাড়ি বলেই হয়তো এমন মনে হয়। আগে ছিলো
বন্ধুর বাড়ি আর এখন বন্ধুর বাড়ি সাথে শ্বশুরবাড়ি।
এই যে এখন সে যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ি, একদিক দিয়ে ভালো লাগছে অন্যদিক দিকে জড়তা কাজ করছে মনের মধ্যে। ভয় তো আছেই। ভয়টা অবশ্য অনুর সাথে এক বিছানায় থাকা নিয়ে।
ইদানিং সে অনুর সাথে এক বিছানায় ঘুমাইনা। ঘুমাতে পারেনা তাই সে সোফায় ঘুমাই।
গেস্টরুমেও কোন কোন রাতে গিয়ে থাকে তবে এসব লুকিয়েই করে।
বাসার বাকি সদস্যরা যেনো টের না পায় সেভাবে থাকে।
টের পেলে সবাই অনেক উল্টাপাল্টা কিছু ভেবে ফেলবে সাথে টেনশন ও করবে সবাই ওদের বিবাহিত জীবন নিয়ে।
সায়ন আজ ভেবেই রেখেছে, সে এখন আয়মানদের বাসায় মানে তার শ্বশুড়ের বাসায় গিয়ে
সবার সাথে যা কথাবার্তা বলার বলবে, খাবে তারপর সবার অনুমতি নিয়ে নিজের বাসায় চলে আসবে।
রাতে থাকবেনা। রাতে থাকা মানে, অনুর সাথে থাকা, একটা বেড শেয়ার করা।
অনুর রুমে বড় কোন সোফা নাই! সোফা থাকলে সে সেখানে দিব্যি ঘুমাতে পারতো কিন্তু নাই যেহেতু,
সেহেতু সেখানে থাকার প্রশ্নই আসে না। কে বলতে পারে কখন কি অঘটন সে ঘটিয়ে ফেলে অনুর সাথে।
অনু এমনিই তাকে স্বামী হিসেবে মেনে নেয়নি
এর মধ্যে সে যদি ঘোরের বশে উল্টাপাল্টা কিছু করে ফেলে তখন অনু
তার ওপর আরো রেগে যাবে সেইটা সায়ন মেনে নিতে পারবেনা।
সায়ন চলে এসেছে অনুদের বাসার সামনে।
বাইক নিয়ে সে আয়মানদের গ্যারেজে মানে আয়মানের বাইক যেখানে থাকে
সেখানে তার বাইকটা রেখে দিলো এরপর বাসার দরজার দিকে তাকালো।
দরজাটা লাগানো আছে। সায়নকে গিয়ে এখন কলিংবেল চাপতে হবে
এরপর কেউ একজন দরজা খুলে দিবে। আচ্ছা অনু যদি দরজাটা খুলে কেমন হবে?
ভাবছে সায়ন। সায়নের দিকে কিছুক্ষণ কি অনু তাকিয়ে থেকে একটা লজ্জ্বার হাসি দিবে।
নাকি দরজা খুলে একটা রাগি লুক দিয়ে বলবে,
“আপনাকে আম্মা আসতে বলেছে বলেই আসতে হবে? তখন আমি আসতে বলেছিলাম তখন আসলেন না কেনো? আমার কথার দাম কেনো দিলেন না?”
সায়ন গিয়ে কলিংবেল চাপলো, ভেতরে অনেক মানুষ আছে হয়তো, হৈ হুল্লা শুনা যাচ্ছে। বাচ্চাদের চিৎকার ভেসে আসছে। সায়ন কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে আবার কলিংবেল চাপলো। হ্যাঁ দরজা খুলেছে তবে অনু নয়! খুলেছে আয়মান।
“আরে ব্যাটা, আসতে এতো লেইট ক্যান? আয় আয়, নিবিড়রাও আসছে। ইসতিয়াকরাও আসবে।”
সায়ন ভেতরে গেলো। বসার ঘরের সোফায় পায়ের ওপরে পা তুলে পা ঝুঁকাতে ঝুঁকাতে টিভি দেখছেন আয়মানের আব্বা আজহার সিদ্দিক। বিজ্ঞাপন দেখছেন তিনি।
“ঝলমলে কালো চুল দেখো ঝলমলে কালো চুল।
কিউট কিউট কিউট শ্যাম্পু, ঝলমলে কালো চুল।”
বিজ্ঞাপনের তালে তালেই আয়মানের আব্বা পা দুলাচ্ছে। সায়ন গিয়ে সালাম দিলো আয়মানের আব্বাকে।
“আসসালামু আলাইকুম আব্বা!” সায়ন আগে আয়মানের আব্বা-আম্মাকে আঙ্কেল-আন্টি বলেই সম্বোধন করতো কিন্তু বিয়ের পরেরদিন এই বাড়িতে আসার পর আয়মানের আব্বাকে কোন এক কথায় আঙ্কেল বলতেই আয়মানের দাদি বলেছিলো,
“হ্যারে ছুড়া, তুই এখনো আমার ব্যাটাকে আঙ্কেল বলে ডাকবি? আব্বা বল আব্বা। অনুর আব্বা মানে এখন থেকে আমার ব্যাটা তোরও আব্বা।”
সাথে সাথে অনুর মা’ও বলেছিলো,
“আমাদের আঙ্কেল-আন্টি বললে জব’ই দিবোনা। না শোনার ভান করে থাকবো।”
সেই থেকে সায়ন এখন তাদের আব্বা-আম্মা বলেই ডাকে তবে কম ডাকাই হয়।
আয়মানের আব্বা টিভি থেকে চোখ সড়িয়ে এক গাল হেসে বললেন,
“ওয়ালাইকুম আসসালাম! বসো বসো সায়ন। এখন আসছো?”
“জ্বি, একটু কাজ ছিলো সেইটা সেড়েই আসছি।”
“ভালো ভালো। বসো, দাড়িয়ে ক্যান?”
সায়ন বসলো। আয়মান কোথায় গিয়েছিলো, এসে সায়নের পাশে বসলো। সায়ন আয়মানকে বললো,
“নিবিড়রা আসছে, দেখছিনা যে?”
“মেজো দুলাভাইয়ের সাথে আড্ডা দিচ্ছে দোতলায়।”
“ওহ আচ্ছা। চল আমরাও সেখানেই গিয়ে বসি।”
“চল, এখানে থাকলে আব্বার টিভি দেখতে সমস্যা হবে।”
দোতলায় যাওয়ার সময় সায়ন আশেপাশে অনুকে খুঁজলো। অনুর চাঁদমুখটা অনেকক্ষণ দেখা হয়নি তার। অনু আশেপাশে নাই। সায়ন আয়মানের সাথে দোতলায় আসলো।
অনু রান্নাঘরে ছিলো। মিথিলা গিয়ে অনুকে বললো,
“সায়ন ভাইয়া আসলো ননদিনী।”
সায়ন আসলো কথাটা শুনে অনুর মুখ অদ্ভুতভাবে লাল হয়ে উঠলো, চোখে খুশির বাতি জ্বলে উঠলো। মিথিলা সেসব খেয়াল করে বললো,
“দেখা করবানা? তোমাকে খুঁজছিলো মনে হলো। আশেপাশে চোখ বুলাচ্ছিলো।”
অনু মিথিলার দিকে এক নজর তাকিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে বললো,
“দেখা করার কি আছে! কয়েক ঘন্টা আগেই তো ওর সামনেই ছিলাম, ওর বাসায় ছিলাম।”
“তারপরো, বেচারা হয়তো তোমাকে দেখতে চাচ্ছে। তোমার ভাইয়ার সাথে দোতলায় গেছে, চা নিয়ে যাও নাহয়।”
“পারবোনা, আমার কাজ আছে।”
“সব পারবে, যাওতো।”
মিথিলা চা’য়ের পানি একটা পাতিলে বসালো। অনু বললো,
“আমি করছি দাও।”
অনু চা বানালো, দুধ চা। চা বানানো হলে সে একটা ট্রে তে কাপগুলো সাজিয়ে নিয়ে দোতলার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো তখনি মিথিলা বললো,
“দাঁড়াও, এভাবে যাবে? মুখটা ধুয়ে নাও। চুলটা ঠিক করে আসো।”
“আরে ধুর, ভাবি আমি কি অন্য মানুষের সামনে যাচ্ছি বলো।”
“তারপরো, পুরুষমানুষ বাইরে থেকে এসে বউ’কে একটু অন্যরকম ছিমছাম দেখতে চাই।”
“তুমি এত কিছু জানলে কোথায় থেকে বলতো? তোমার বিয়ে হওয়া তো বেশিদিন হয়নি!”
“আমাকে আমার তিন ননদ এসব শিখিয়েছে আমার বিয়ের পর ননদিনী।”
“ওহ তাই বলো। তিন শিক্ষিকা তো আছেই আমাদের, এরা আবার ওসবে খুব অভিজ্ঞ।”
“হুম।”
অনু মিথিলার কথা মত একটু নিজেকে পরিপাটি করে তারপর চা নিয়ে গেলো দোতলায়।
দোতলায় যেতেই সায়নের সাথে অনুর চোখাচোখি হয়ে গেলো।
অনু একবার তাকিয়ে চোখ সড়িয়ে নিলো কিন্তু সায়ন হ্যাবলার মত তাকিয়েই রইলো অনুর দিকে।
অনু সবাইকে চা দিতে দিতে আড়চোখে সায়নকে দেখলো। মনে মনে বললো,
“হ্যাবলা বহুত দেখেছি, এর মত হাবল আমি আমার জীবনে দ্বিতীয়টি দেখিনি।
দেখো কেমন সবার সামনে চেয়ে আছে, মনে হচ্ছে কোনদিন দেখেনি আমাকে।
আমার যে ভীষণ লজ্জ্বা লাগছে ওর এই চাহনীতে হ্যাবলাটাকি বুঝছে না! বুঝবে ক্যামনে, হাবল যে।”
অনুর মেজো দুলাভাই হঠাৎ করে গলা খ্যাকাড়ি দিলো। দুষ্টু হাসি হেসে সায়নকে উদ্দেশ্য করে বললো,
“আমার ছোট ‘ভাইরা’ মনে হয় আমার ছোট শালীকে বহুকাল দেখেনি!”
অনুর মেজো দুলাভাইয়ের কথার সারমর্ম বুঝে উপস্থিত সবাই হেসে উঠলো। হাসলোনা শুধু অনু আর সায়ন। দুজনের অবস্থা লজ্জ্বায় মরি মরি!
অনু চটপট সবাইকে চা দিয়ে নিচে চলে আসলো সাথে সায়নকে গামলা ভর্তি গালি দিতে দিতে।
রাতের খাবার খাওয়া শেষ হতেই সায়ন অনুর দাদিকে বললো,
“দাদি আমায় বাসায় যেতে হবে, সকালে এক জায়গায় যাওয়া লাগবে।” মিথ্যা কথা, কোথাও যাওয়ার নাই সায়নের। সে অনুর সাছে এক বিছানায় থাকবেনা তাই পালাতে চাচ্ছে।
“এখান থেকেই যাবা।” বললেন অনুর মা।”
“না আম্মা, বাসায় যাই।”
আয়মান বললো,
“নিবিড়রাও থাকছে, তুই যাবি কেনো? কোথাও যাওয়ার থাকলে এখান থেকেই যাস।”
“নিবিড় বললো,
“আরে থাক, আমরাও কাল সকালে যাবো। পরশু যাবো মাহিদের বাড়ি।”
“না, আসলে!”
আয়মানের দাদি বললেন,
“আসলে নকলে রাখ ছুড়া। বউ রেখে থাকবি কিভাবে একা একা, তার থেকে এইখানে থাক।”
এতগুলো মানুষের মধ্যে অনুর দাদির কথা শুনে সায়ন আরো একবার লজ্জ্বায় মাথা নিচু করে নিলো। নিচু স্বরে বললো,
“সমস্যা নাই দাদি।”
অনুর দাদি অনুকে বললেন,
“ওই ছুড়ি, তোর বর চলে যাচ্ছে, যাইতে নিষেধ কর। আমাদের কথা না শুনলেও তোর কথা ফেলবেনা।”
অনু ওর মা’য়ের দিকে তাকালো তারপর আয়মানের দিকে তাকালো।
অনুর মা বললেন,
“এত রাতে আর যেওনা বাবা, থেকে যাও।” তারপর অনুর দাদির দিকে তাকিয়ে অনুর মা বললেন,
“আমি রান্নাঘরের অবস্থা দেখে আসি মা। আপনি ঔষুধ খেয়ে নেন।” অনুর মা রান্নাঘরে চলে গেলো। বুঝতে পারছে তার মেয়ে আর মেয়ে জামাই তাকে লজ্জ্বা পাচ্ছে।
আয়মান ও সায়নকে বললো,
“থেকে যা রাতটা।” তারপর আয়মান ও মিথিলাকে বললো,
“মিথিলা রুমে চলো, আমার হেডফোনটা খুঁজে দাও, পাচ্ছিনা।”
মিথিলা বুঝতে পারলো, আয়মান এখানে থাকতে চাচ্ছেনা কারণ অনু লজ্জ্বা পাচ্ছে আয়মানের সামনে কথা বলতে। হাজার হলেও বড় ভাই বলে কথা।
অনু এবার কথা বললো, সায়নকে বললো,
“সবাই যখন থাকতে বলছে তখন থাকেন।”
সায়নের কি হলো কে জানে। সে দুষ্টুমীর ছলে বললো,
“সবাই বলছে আর তুমি? তুমি বলছোনা কেনো? তুমি বললেই থাকবো।”
অনু চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে বললো,
“বললাম তো থাকতে, দাদি বলিনি বলো?”
অনুর দাদি মিটিমিটি হাসছে। সায়ন বললো,
“সবাই বললো আর দাদি তোমাকে বলতে বললো বলেই তুমি বলেছো নিজের মন থেকে বলোনি।”
“কি আশ্চর্য, বললাম তো। একই হলো।”
“কই একি হলো।”
“ধুর, থাকলে থাকেন নাহলে হাঁটেন এখান থেকে।”
অনু উঠে চলে গেলো বসার ঘর থেকে। অনুর দাদি সায়নকে বললেন,
“যা,ঘরে যা। আমিও যাই ঘুমাতে।”
নিবিড় এতক্ষণ মাহির সাথে বসে কথা বলছিলো, সায়নকে বললো,
“যাও ভাই, বউয়ের কাছে যাও। আমরা যাই শুতে, চলো মাহি।”
নিবিড় আর মাহি চলে গেলো, সায়ন ও আর দাঁড়ালো না। অনুর রুমে গিয়ে শব্দ করে দরজা বন্ধ করলো। অনু চুল বাঁধছিলো, শব্দ শুনে পেছন ফিরে তাকালো তারপর আবার নিজের কাজে ব্যস্ত হলো।
নিলয়ের হঠাৎ করে ভিষণ হাঁটু কাঁপছে। নুসরাতের সামনে যেতেও লজ্জ্বা লাগছে। জীবনে প্রথম বাসররাত আজ তার, কোথায় বীর পুরুষের মত নিজের বউয়ের সামনে যাবে, ঘোমটার তল থেকে বউটার মুখটা তুলে বলবে,
“মা শা আল্লাহ! মা শা আল্লাহ! খুব সুন্দর তুমি বউ! না, সুন্দর না! সুন্দরী হবে। খুব সুন্দরী তুমি বউ! তোমার রুপে আমি ঝলসে যাচ্ছি। আহা! আহা! কত শান্তি।”
তারপর বউয়ের হাত ধরবে। হাতের উল্টো পিঠে একটা চুমু খাবে চটাস করে; তা না করে সে দরজার সামনে দাড়িয়ে কাঁপছে।
“কি ব্যাপার দেবর সাহেব, ভিতরে না গিয়ে বাইরে কেনো গো? ভয় লাগছে নাকি ভিতরে যেতে?
ভয় লাগারি কথা, ভিতরে আগুন বসে আছে। অবশ্য যতই আগুন থাকুক, তোমার কিছু হবে
বলে মনে হয়না, আমার মনে হয় তোমার মধ্যে কোন ফিলিংসই নাই,
থাকলে আমার মত সুন্দরী, হট একটা মেয়ে নিজে যেচে তোমার কাছে যেতে চাই তাও তুমি পাত্তাই দাও না।”
ঝুমঝুমি টিটকারির সুরে দাঁত ক্যাঁলিয়ে বললো নিলয়কে।
ঝুমঝুমির কথাগুলোর জবাব দিতে ইচ্ছা করলো নিলয়ের কিন্তু সে জবাব দিতে পারলোনা তার আগেই নিলয়ের ভাই নিশান এসে উপস্থিত হলো সেখানে।
“কিরে, কি কথা হচ্ছে এখানে?”
ঝুমঝুমি নিশানের গাঁ ঘেসে দাঁড়ালো, তারপর বললো,
“তেমন কিছু না, চলো রুমে যাই।”
ঝুমঝুমি নিশানকে নিয়ে রুমে যেতে যেতে পেছন ফিরে নিলয়কে চোখ টিপি মারলো।
নিলয় ঝুমঝুমির থেকে চোখ সড়িয়ে ওর ঘরের দরজা খুললো।
ওর হাঁটু কাঁপা থেমে গেছে।
নুসরাত এতক্ষণ একা একা বসে ঝিমাচ্ছিলো। এতদূর জার্ণি করে এসে শরীর তার খুবই ক্লান্ত।
নিলয় এতক্ষণ আসছিলোনা দেখে সে শুয়ে পড়তেও পারছিলোনা।
দরজা খোলার শব্দ পেয়ে এবার সে মাথা তুলে দরজার দিকে তাকালো।
নিলয়কে আসতে দেখে নুসরাতের ঝিমানি পালিয়ে গেলো, সে ভালো হয়ে বসলো।
এদিকে নুসরাতের কাছে এসে আবার নিলয়ের হাঁটু কাঁপতে শুরু করেছে।
এতদিন যতই হিরোগিরি করুক না কেনো আজ যেনো তার সব ফুস হয়ে গেছে।
বার বার নার্ভাস হয়ে যাচ্ছে। নার্ভাস হওয়ার কারণে পানির পিপাসাও পেয়ে গেলো নিলয়ের।
সে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো রুমে পানি আনা আছে কিনা। আছে পানি টেবিলের ওপরে।
কাঁপা পায়ে টেবিলের কাছে গিয়ে গ্লাসে পানি ঢাললো নিলয়।
পানি ঢালার সময় তার হাত ও কাঁপছিলো। কাঁপা হাতেই সে এবার গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেলো।
পানি এভাবে আরো দুই গ্লাস খাওয়ার পর নিজের মনকে সাহস দিয়ে সে নুসরাতের কাছে গিয়ে বসলো।
বাংলা সিনেমার নায়িকাদের মতই নুসরাত বিরাট ঘোমটা টেনে বসে আছে।
নিলয় নুসরাতের আরেকটু কাছে সড়ে গেলো। সড়ে গিয়ে নুসরাতের ঘোমটাটা তুললো।
নুসরাত চোখ বন্ধ করে আছে। নিলয় কিছু বলার জন্য মুখ খুললো কিন্তু কি আশ্চর্য নিলয় কথা বলতে পারছেনা।
মুখ নাড়াচ্ছে কিন্তু কথাগুলো গলার কাছে এসেই যেনো থেমে যাচ্ছে।
অনেক্ষণ চেষ্টা করলো নিলয় কিছু বলার জন্য পরে এক সময় সফল হলো।
নিলয় নুসরাতের দিকে তাকিয়ে বললো,
পানি খাবে?
পানি খাবে’ কথাটা নুসরাতের কানে যেতেই নুসরাত চোখ খুলে বড় বড় চোখে নিলয়ের দিকে তাকালো।
নিলয় আবার বললো..
“পানি খাবে?”
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com