আমার পথ চলায় তুমি । আয়াৎ
এই মেয়েকে আমার বাড়িতে আমি এক মিনিট ও দেখতে চায় না তাড়াতাড়ি বিদায় করো।
– আয়মান এইসব কি বলছিস।দেখছিস মেয়েটা বিপদে পরছে তারপর ও।
-দেখো মা আমি কোনো কথায় শুনতে চায় না এই বেয়দব মেয়েটাকে আমি আমার চোখের সামনে আর দেখতে চায় না।
-দেখ আয়মান তোর কথা শুনে মেয়েটা কান্না করছে।
-মা ওসব নেকা কান্না বুঝছো, নাটক করছে। তুমি তো জানো না মেয়েটা কতো বেয়দপ, আমি জানি বুঝছো।
মেয়েটি আর সহ্য করতে না পেরে কান্না কান্না কন্ঠে বলে…
-অনেক হয়ছে এখন থামেন
আমি তো আপনাদের বলি নাই আমাকে বাঁচিয়ে নিজেদের সাথে আনতে তাহলে কেনো নিয়ে এলেন
মরেই তো যাচ্ছিলাম। মরতে ও তো দিলেন না আর নিজেদের বাসায় এনে অপমান করছেন। আর মিস্টার আপনি শুনেন আমি কোনো নাটক করছি না আর আপনাদের বাসায় থাকার ও কোনো ইচ্ছা নেই। যে বাসায় আপনার মতো বেয়দপ থাকে সেখানে আমার থাকার কোনো ইচ্ছায় নাই।
মেয়েটির কথা শুনে আয়মান রেগে যায়।
আয়মান: এই মেয়ে একটা চড় মারবো
আমি বেয়দপ নাকি তুমি।
আয়মানের কথা শুনে তার মা তাকে জোরে ঝাড়ি দেয়ে।
আয়মানের মা: আর একটা কথা ও বলবে না আয়মান।
মেয়েটি আয়মানের মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে….
মেয়েটি: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য আর আপনার সাথে নিয়ে আসার জন্য। তবে আমার ও আত্নসম্মান আছে তাই আমি আর আপনার বাসায় থাকবো না এখনি চলে যাবো। এতো কিছুর জন্য ধন্যবাদ।
এই বলে মেয়েটি তাদের বাসা থেকে বের হতে যাবে তখনি আয়মানের মা পিছন থেকে ডাকে।
মেয়েটি ও পিছনে তাকায়।
আয়মানের মা: আজ রাতটা থেকে যাও।
মেয়েটি: না আন্টি।
আয়মানের মা: আবার তেমন কিছু……
মেয়েটি তাকে আর না বলতে দিয়ে নিজেই বলে…
মেয়েটি: আন্টি জীবন মানুষকে খুব কম ২য় বার সুযোগ দেয় আর আমি তা পেয়েছি তাই আগের মতো ভুল আমি আর করবো না।
আয়মানের মা: হুমম আর এমন ভুল করো না। আচ্ছা তোমার নামটা তো বলে যাও।
মেয়েটি: আমার নাম অহনা।
এই বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
মধ্য রাত চারদিকে অন্ধকার আর রাস্তায় পুরো নিরবতা বিরাজ করছে। অহনার এখন ভয় করছে। চারপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ কোথাও নেই। অহনা ভাবছে এখন সে কোথায় যাবে কি করবে। সব কিছু চিন্তা করতে করতে রাস্তার ধারে বসে পরে। অহনা আনমনে বসে বসে কি জেনো ভাবছিলো হঠাৎ তার দিকে তীব্র আলো এসে পরে। চোখে আলো পরার কারনে কিছু সে দেখতে পারছে না। শুধু বুঝতে পারছে কেউ তার দিকে আসছে। অহনা প্রচুর ভয় পাই আর ভয়ে সেখান থেকে পালানোর জন্য দৌড় দেয় তখনি পিছন থেকে কেউ তার হাত ধরে ফেলে তাতে অহনা এতোটাই ভয় পেয়ে যায় যে সাথে সাথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
অহনার জ্ঞান ফেরার পর দেখে সে একটা রুমে শুয়ে আছে। আর তার মুখে সকালের আলো এসে পরছে। অহনার কাল রাতের কথা মনে পরে যায় তাই তাড়াতাড়ি
বিছানা থেকে ওঠে বসে। তখনি রুমে কারো আসার শব্দে দরজার দিকে তাকায় আর তাকিয়ে দেখে সেই কাল কের আন্টি।
আয়মানের মা: ওঠে পরেছো।
অহনা: আমি এখানে কিভাবে আসলাম।
আয়মানের মা: আয়মান নিয়ে আসছে।
অহনা এই কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।
অহনা: সে নিজেই তো বের হয়ে যেতে বললো তাহলে আবার….
আয়মানের মা: এসব কথা বাদ দাও পরে বলবো এখন ফ্রেশ হয়ে খাবারটা খেয়ে নাও।
অহনা মাথা নাড়িয়ে আচ্ছা বলে।
অহনা বিছানা থেকে নামতে যাবে তখনি আয়মানের মা অহান হাতের দিকে তাকায় আর দেখে পুড়া দাগ হাতে।
আয়মানের মা: অহনা তোমার হাতে কি হয়ছে।
অহনা তার হাতের দিকে তাকিয়ে একটা বড় নিশ্বাস ছারে আর বলে।
অহনা: তেমন কিছু না এমনি পুড়ে গিয়েছিল।
আয়মানের মা: আচ্ছা যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।
অহনা ফ্রেশ হবার জন্য বাথরুমে যায় কিছু সময় পর ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নেয়। এরপর আয়মানের মা রুম থেকে চলে আসে।
অহনা মন খারাপ করে বেলকনিতে যায় আর বেলকনিতে দাড়িয়ে হাতের সেই পুড়ো দাগের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ছেরে দেয় আর অতীতে কথা মনে করতে থাকে।
অতীত….
তুই দেখতো কালো মুখপরী । তোর মতো মেয়ে কে কেউ বিয়ে করবে না বুঝেছিস।তোর মতো মেয়ে হলো বাবা মায়ের ঘাড়ের বোঝা। তাই তো তোর বাবা মা তোকে রেখে চলে গেছে। যতসব ঝামেলা আমাদের ওপর রেখে।
অহনা: মামি……[ চিল্লিয়ে বলে]
অহনার চিল্লানো দেখে তার মামি আরো রেগে যায়।
অহনার মামি: তুই আবার আমার ওপর রাগ দেখাস না। আমার খেয়ে আমার বাড়িতে থেকে তেজ দেখাস। তা এতো যদি তেজ তাহলে আমার বাড়ি ছেড়ে চলে যাস না কেনো রে মুখ পুরি। তুই চলে গেলে তো আমার ঝামেলা কমে। তোর মতো ঝামেলা আমার ঘাড়ে পড়ে আছে বিদায় ও হই না। বাবা – মা তো গেছে ছেড়ে। আমার ঘাড়ে এসে পরছে। কেনো যে তোর বাবা – মা তোরে জন্ম দিছিলো।
অহনা: দেখো মামি তোমায় অনেক বার বলেছি যে আমায় যা ইচ্ছা বলো কিন্তু আমার মৃত বাবা-মা কে নিয়ে কিছু বলবে না তাও বারবার বলো।
অহনার মামি: আবার মুখে মুখে কথা বলিস। আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।
এই বলে অহনার মামি রান্না ঘর থেকে গরম খুনতি এনে অহনার হাতে ধরে চাপ দেয়। অহনা জোরে চিৎকার করে কিন্তু চিৎকার শুনার মতো কেউ নেই। একজন আছে তার মামা। কিন্তু সে শুনে ও কিছু করতে পারবে না কারন সে অহনার মামীর সাথে কথায় পেরে ওঠে না। তাই তার মামার কষ্ট হলেও চুপ করে থাকেন। তবে লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক সাহায্য করে ।
অহনার মামি খুনতি নিয়ে চলে যাবার পর অহনা দৌড়ে তার রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে কান্না করতে থাকে।
একটু আগে…
অহনা সারাদিন না খেয়ে বাসার সব কাজ করে একটু খেতে বসেছিলো তখনি তার মামি তার সাথে এমন করলো।
অহনা কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে যায়। সন্ধ্যার সময় তার ঘুম ভাঙ্গে। ঘুম থেকে ওঠে তাড়াতাড়ি রান্না ঘরে চলে যায় সবার জন্য নাস্তা করতে। অহনার পুড়ে যাওয়া হাত নিয়ে কাজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তুবু ও কাজ করছে। অহনা জানে এখন কাজ না করলে আরো খারাপ কথা শুনতে হবে মামির কাছ থেকে।
সবার নাস্তা করে অহনা রাতের খাবার তৈরি করতে শুরু করে।
রাতে সবাই খাবার পর অহনা কষ্ট করে বাসার সব কাজ শেষ করে, খাবার খেয়ে নিজের রুমে যায় ঘুমানোর জন্য।
অহনা বিছানায় শুয়ে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ছেরে দেয়।
অহনা কান্না করতে করতে বলে…
চলবে…..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com