Breaking News

গল্পঃ লুডু স্টার ভালোবাসা । মাহাবুবা জাহান

সামিহা একটার পর একটা ড্রেস আয়নার সামনে ধরে দেখছে।
কোন ড্রেসটা আজকে পরবে সে বুঝতেছে না।
একটা ও ভালো ড্রেস নেই তার।
উফ কি পরে আজকে সে নীড়ের সাথে দেখা করতে যাবে?
হুম নীড়!!!
নীড়ের সাথে সামিহার পরিচয় লুডু স্টার গেমস এর মাধ্যমে।
এখন নীড় সামিহার লুডু পার্টনার।
প্রায় পরিচয়ের ৩ মাস পর নীড়ের সাথে দেখে করছে।
তাও বিশেষ উপলক্ষে গত কাল ২জনেই এই প্রথম লুডুতে টাইটান ব্যাজ + ৩০ হাজার জেমস জিতছে।
এই জয় উৎযাপন করার জন্য ওর সাথে দেখা করা।
এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো।
কলিংবেলের শব্দে সামিহার ধ্যান ফিরলো।
কিছুক্ষণ পর দোলা (সামিহার বেস্ট ফ্রেন্ড) রুমে ঢুকে
দোলা: কিরে এই সব কি করছিস ভুতনী?
সব ড্রেস ফ্লোরে ফালায় রাখছিস কেন?
আর রেডি হবি কখন?
সামিহা: ধূর চামচিকা কি রেডি হবো!
কোন ড্রেস পরবো সেটাই তো বুঝতেছি না।
আবার রেডি হবো!?
একটা ও ভালো ড্রেস নেই আমার।
দোলা: এতো ড্রেস যার সে কি না বলে একটা ও ভালো ড্রেস নাই!?
এটাই মেয়েদের স্বভাব আলমারি ভর্তি ড্রেস থাকার পর ও বলে আমার একটা ও ভালো ড্রেস নাই!
সামিহা: আরে গোবরের পদ্ম ফুল তুই কে রে?
তুই কি মেয়ে না?
নাকি এলিয়েন?
দোল: জিব্বাহ্ কামড় দিয়ে।
হুম আমি ও মেয়ে কিন্তু আমি তোর মতো এতো ড্রেস থাকার পর ও বলি না আমার ভালো ড্রেস নাই।
সামিহা: তুই ভালো খারাপের বুঝিস কি?
দোলা: হুম আমি বুঝি না।
আপনিই সব বুঝেন।
এখন শুন সব গুলা ড্রেস তো সুন্দর, আর তুই তো এমনি অনেক সুন্দর যেটা পরবি সেটাতেই তোকে অনেক সুন্দর লাগবে।
সামিহা: আরে শুটকি আমাকে তোর পাম দিতে হবে না।
কোন ড্রেস পারবো সেটা বল।
দোলা একটা ড্রেস সামিহার সামনে ধরে সামিহাকে আয়নার সামনে নিয়ে লাল কালো সমন্বয়ের এই ড্রেসটা পর।
সামিহা দোলার হাত থেকে ড্রেসটা নিয়ে দোলার গালে একটা চুমু দিয়ে এতোখন কই ছিলি একটু আগে আসলেই তো পারতি তাহলে এতোখনে রেডি হয়ে যেতাম।
দোলা: হুম হইছে এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়।
সামিহা: ওকে বেবি।
তুমি ড্রেস গুলা গুছায় আলমারিতে তুলে রাখো, না হলে আম্মু দেখলে বকা দিবে।
দোলা: তুমি কি আমাকে চাকর পাইছো যে এখন আমি তোমার ড্রেস গুছাবো?
সামিহা ওয়াশরুম থেকে আমি জানি বাবু তুমি এখন আমার ড্রেস গুলা গুছায়তেছ।
তুমি তো আমার বোনের মতো কিন্তু অন্য মায়ের পেটের তাই আমাকে কিছু বলা লাগে না তার আগেই তুমি বুঝে যাও।
দোলা: ড্রেস গুলা আলমারিতে রাখতে রাখতে হইছে তোর এই ইমোশনাল ব্লাকমেইল বন্ধ কর।
আমি তোর কোন ড্রেস গুছাতে পারবো না।
তুই বাহির হয়ে সব গুলা গুছাবি।
সামিহা: আমার লক্ষ্মী বাবুনীটা, এমন করে না প্লিজ।
তুমি একটু গুছায় রাখো আমি আগামীকাল তোমার বাসায় যেয়ে তোমার সব কাপড় গুছায় দিবো।
দোলা: আরে ছাগলী ৫মিনিট চুপ করে তাড়াতাড়ি বের হয়।
আমাদের যেতে হবে।
তোমার লুডু পার্টনার আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছে।
সামিহা: আচ্ছা দাদীমা বের হইতেছি।
দোলা কাপড় গুলা গুছিয়ে সামিহার সাজার জন্য এক জোড়া ঝুমকা, লাল কাঁচের চুড়ি, লাল রংয়ের লিপস্টিক আর কাজল বের করে রাখলো।
সামিহা মেয়েটার গায়ের রং শ্যামলা হলে ও মেয়েটার চেহারায় একটা মায়া আছে।
ভারী মেকআপ বা মেকআপ ছাড়াই হাল্কা সাজে মেয়েটাকে সুন্দর লাগে।
সামিহা মেয়েটা বের হয়ে পাগল হয়ে যাবে কোনটা রেখে কোনটা পরবে, কিভাবে সাজবে, কি করবে তা ঠিক করতে পারবে না।
পরে দোলাকেই সবটা করতে হবে।
তাই আগেই সব করে রাখলো।
সামিহা ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে সব কাপড় গুছানো দেখে আর ড্রেসিংটেবিল ওপর সব রাখা দেখে দোলাকে জড়িয়ে ধরে তুই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বান্ধবী।
দোলা: সামিহার নাকটা টেনে দিয়ে হইছে বুচুনী।
আমাকে আর পাম দিতে হবে না তাহলে আমি ফুলে ফেটে যাবো।
এখন দয়া করে রেডি হয়।
সামিহাকে এতো আগ্রহ নিয়ে রেডি হতে দেখেই দোলার মুখ ফসকে বের হয়ে গেল-
দোলা: আচ্ছা সামু তুই যখন তোর যখন আরাফের সাথে রিলেশন ছিল আর যখন ওর সাথে দেখা করতে যেতি তখন তো এতো কিছু ভাবতি না।
সব সময় যেভাবে থাকতি সেভাবে চলে যেতি।
আর আজকে নীড়ের সাথে দেখা করার সময় এতো কিছু কেন করতেছিস?
সামিহা চোখে কাজল পরতেছিল।
দোলার হাত থেকে কাজলটা পরে গেল।
সামিহার কাজল কালো চোখে পানি জমতে লাগলো দোলার কথায়।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com