গল্পঃ প্রতিঘাত । পর্ব- ০৩
সময় গুলো খুব ভালো কাটছিলো|আমিও তার ভালোবাসায় সারা না দিয়ে পারলাম না|
আমাকে নিয়ে তার কত শত পাগলামি|
যখনি আমাদের দেখা হতো,আমাকে নতুন আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতো|
এরই মধ্যে আমার এইচ এস সি শেষ হলো|এখন শুধু রেজাল্ট এর অপেক্ষা|
অভ্র ও আমাকে খুব একটা সময় দিতে পারছিলো না|বাবা চাচাদের রাজনীতির অনেক কিছু ও সামলায়|তাই বেশিরভাগ সময় ঢাকা থাকতে হয় |
তবে আমার কোনো অভিযোগ নেই|লোকটা আমাকে খুব ভালোবাসে |সপ্তাহে দুই একবার কল করে এই যা|
দেখতে দেখতে আমার রেজাল্ট বের হলো,4.83
জি পি এ নিয়ে পাশ করলাম|আলহামদুলিল্লাহ|
অভ্রর পেইন নেয়ার পরে ও রেজাল্ট মোটামুটি ভালোই হলো|
৪বছর রিলেসন খুব ভালোই চলছিল|অনার্স লাস্ট ইয়ার এ ওঠার পর অভ্র কেমন বদলে গেলো |আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যেতাম যে ,অভ্র আমাকে ইগনোর করছে|
সহ্য করতে না পেরে আজ জোর করেই দেখা করলাম তার বাসার পাশের পার্ক এ |
বাকি সব আপনাদের জানা|
বর্তমান,,, আমি এখনো ঐখানেই বসে আছি| সন্ধ্যা হয়ে আসছে | নড়াচড়া করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি |বাড়িতে গিয়ে কি বলবো,যে আম্মু আমি ঠোকে গেছি |
আমার ভালোবাসা খুব যত্ন করে আমাকে ভেঙে চূরে শেষ করে দিয়েছে|যাকে মনের ঘরে জায়গা দিয়েছিলাম সে আমার মন ভেঙে সেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে|(চিৎকার করে কান্না করে )
মনে হলো আমার সামনে কেউ হাটু গেড়ে বসলো…
মাথা তুলে তাকিয়েই তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লাম|এইটাই আমার কষ্ট ভাগ করার জায়গা |আমার বেস্টু,মেঘালয় আহমেদ|
মেঘ-কি হয়েছে নূর ?কান্না করছিস কেন ? কে কি বলছে ?আমার ভয় হচ্ছে নূর….প্লিজ স্পিক্ আপ|
আমি- আমার ভালোবাসা হেরে গেছে মেঘ |আমি হেরে গেছি|আজ আমার ভালোবাসা আমার কাছ থেকে মুক্তি নিয়ে চলে গেছে …..আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে|বিড়বিড় করতে করতে ঐখানেই অজ্ঞান হয়ে গেলো নূর |
নূরকে সেন্সলেস হতে দেখে মেঘ মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে গেলো|কোনো কিছুই যেন মাথায় ঢুকছে না|কি বললো এই সব ও |
তৎক্ষণাৎ হুস ফিরলো যে নূর সেন্স হারিয়ে ফেলেছে|কোলে করে ছুটলো গাড়ির দিকে|
(মেঘ হচ্ছে নূর এর ক্লাস মেট প্লাস বেস্টফ্রেন্ড|আর অভ্রর চাচাতো ভাই|বাকিটা পরে জানবেন )
মেঘ ড্রাইভ করতে করতে কল করলো অভ্রর কাছে |
দুই বার রিং হওয়ার পর অভ্র কল রিসিভ করলো|
অভ্র–হে মেঘ বল….
মেঘ- ভাই,নূর আর তোমার মধ্যে কি হয়েছে?আমি নূর কে পার্কে পেলাম|কিসব বলছিলো আর কান্না করছিলো|কান্না করতে করতে সেন্সলেস হয়ে গেছে |আমি ওকে নিয়ে হাসপাতাল যাচ্ছি|
অভ্র-হোয়াট???আমি আসছি…
এই বলে অভ্র কল কেটে দিলো| তাড়াতাড়ি টি শার্ট পরে বের হতে নিলেই পেছন থেকে দুটি হাত তাকে জড়িয়ে ধরলো…সাথে সাথে অভ্র চোখ বন্ধ করে ফেললো|রাগে ওর মাথা ফেটে যাচ্ছে|
অভ্র-what the hell nilima…leave me.
নীলিমা-উফফফ জান,মাত্র তো আসলে,আবার কোথায় যাচ্ছ|
অভ্র-আমার একটা ইম্পর্টেন্ট কাজ আছে |প্লিজ ছাড়ো
নীলিমা-তোমার এই কাজ কবে শেষ হবে বোলো তো…আমার কাছে আসলেই কাজ আর কাজ|হাহ..
অভ্র – তোমার কাছেই ফিরে আসব|একটু ওয়েইট করো|
নীলিমা কে কোনো ভাবে ম্যানেজ করে অভ্র বেরিয়ে যায়|
এইদিকে নীলিমা রাগে ফুঁসছে….মেঘ আর অভ্রের সব কথা ও শুনেছে |
যত যাই হোক,,,আমি অভ্র কে ছাড়ছি না|এই বলে হাসিতে ফেটে পড়লো নীলিমা|
(নীলিমা হচ্ছে অভ্রর খালাতো বোন,অভ্র আর অভ্রর পাওয়ার সব চাই ওর,তাই ও অভ্রকে বিয়ে করতে চায়)
অভ্র যতক্ষণে হসপিটাল পৌঁছায় ততক্ষনে নূর কে ডাক্তার চেক করছে|
মেঘ এর কাছে যেতেই ডাক্তার বের হলো কেবিন থেকে,
দুই জন ই গেলো জিজ্ঞাস করতে,
মেঘ-নূর এর কি অবস্থা?(অস্থির হয়ে )
ডাক্তার-শক এর কারণে জ্ঞান হারিয়েছে|রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে;কিছুক্ষন এর মধ্যে জ্ঞান আসবে|চিন্তার কিছু নেই|ওনার খেয়াল রাখবেন স্যার|
অভ্রর দিকে তাকিয়ে এই কথা বলে ডাক্তার চলে গেলো|
অভ্র এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে,
মেঘ ও কিছু বলছে না|বোঝার চেষ্টা করছে আসল ঘটনা কি….
নার্স বের হয়ে বললো রুগীর জ্ঞান ফিরেছে..
সাথে সাথে দুই জন ই কেবিনে ঝড়ের গতিতে প্রবেশ করলো|
নূর চোখ খুলেই দুই জনকে দেখতে পেলো…
চলবে …
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com