Breaking News

লিলা খেলা । নীল কাব্য

তৃনা তার স্বামীর ২য় স্ত্রী। তিনি আমাকে বিয়ে করেছেন শুধু মাত্র তার শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য। এই জিনিসটা সে খুব ভাল ভাবে বুঝতে পারে আমার স্বামীর ১ম স্ত্রীর সাথে তার ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার বিয়ের পাঁচ মাস আগেই তাদের ডিভোর্স হয়েছে।তাদের ডিভোর্স কেন হয়েছে, কি কারনে হয়েছে সেটা কেউ জানেনা। আমি অনেক কেই জিজ্ঞাসা করেছি কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারেনি৷ আমার শাশুড়ী মা কেউ জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কোন লাভ হয়নি। তিনিও কিছু জানেননা।
আমার বিয়ে হয়েছে এক মাস আগে। এই এক মাসে আমার যা মনে হয়েছে আমার স্বামী এখনো তার ১ম স্ত্রীকে ভুলতে পারেনি৷ এখনো তিনি তার ১ম স্ত্রীকে ভালবাসেন।
তার ১ম স্ত্রীর নাম ছিল তুলি। রাতুল ( আমার স্বামী) আর তুলি টানা দুই বছর প্রেমের পর বিয়ে করেন৷ তারা দুজন দুজনকে খুব ভালবাসতো৷ পরিবারের অমতে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর তুলিকে নিয়ে সরাসরি বাসায় নিয়ে আসে৷ আমার শশুর শাশুড়ী কোন উপায় না পেয়ে তাদের মেনে নেন। শত হলেও তাদের এক মাত্র ছেলে। একমাত্র ছেলেকে তো ফেলে দিতে পারেননা। তাদের বিবাহিত জীবন ছিল দুই বছর। যেই দুইটা বছর তুলি এবাড়িতে ছিল সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। রাতুল আর তুলির মধ্যে নাকি ঝগড়াও হতো না। তারা দুজন সব সময় হাসি খুসি থাকতেন। দুজন দুজনকে সব সময় সঙ্গ দিতেন।
কিন্তু হঠাৎ করেই কি হয়ে গেল কেউ জানেনা।
তুলি চলে গেল তার বাবার বাড়িতে। তার কিছু দিন পরেই ডিভোর্স হয়ে গেল।
এই সব কিছুই আমার শোনা কথা। আমার শাশুড়ী বলেছেন।
নিজের মা কোন দিন সন্তানের সম্পর্কে খারাপ কিছু বলবে না।
তাই আমি রাতুলের দূর সম্পর্কের এক ভাবির কাছে এটা নিয়ে
জানতে চাওয়াতে তিনিও এই সেইম কথাই বললেন। রাতুল মাঝে মাঝে
ঘুমের ঘোরে তুলি তুলি বলে নিজে নিজেই বিড় বিড় করে।
রাতুলের বুকের ঠিক বা পাশটাতে এখনো তুলি নামের ট্যাটু করা আছে৷ তাদের বিয়ের কিছু দিন পর তুলির জন্মদিনে তুলিকে সারপ্রাইজ দিতেই রাতুল ট্যাটু করেছিল। এখনো সেটা সেভাবেই রয়ে গেছে।
যদি তারা দুজন দুজনকে এতই ভালবাসতো তাহলে কেন তাদের ডিভোর্স হয়ে গেল।
রাতুলের মধ্যে কোন সমস্যা না থাকলে কেন তার প্রথম স্ত্রীর সাথে তার ডিভোর্স হল।
কিছুই জানিনা। এই ডিভোর্সের পিছনে কিছু একটা তো আছে।
কোন না কোন রহস্য নিশ্চিই আছে এর ভিতর।
তৃনা খুবি গরিব পরিবারের মেয়ে। দিন এনে দিন খায় এমন অবস্থা৷ কোন ভাই নেই।
তিন বোন৷ বাবা মা আর তিন বোন নিয়ে খুব অভাবের সংসার ছিল আমাদের। আমিই বড় মেয়ে।
রাতুলের মত এত বড় পরিবার থেকে যখন আমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসে,
বাবা সাথে সাথেই হ্যা বলে দিয়েছেন।
আমাকে বা মাকে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করেননি।
এত বড় পরিবারে আমি বউ হয়ে যাবো এটাই তো আমার ভাগ্য।
বিয়েতে আমার বাবাকে এক পয়সাও খরচ করতে হয়নি।
সব কিছুই রাতুলের পরিবার থেকে দিয়েছেন।
আমাকে দামি দামি শাড়ি গয়না দিয়ে তারাই সাজিয়ে বউ করে এনেছেন।
আমার বাবাকে এক লাক্ষ টাকাও দিয়েছেন।
ছোট বেলা থেকে শুনে এসেছি মেয়ের বিয়েতে মেয়ের বাবাকে ছেলে পক্ষকে যৌতুক দিতে হয়।
কিন্তু আমার বিয়েতে সবটাই হল উলটা। মেয়ের বাবাই ছেলে পক্ষ থেকে যৌতুক পেল।
রাতুল যদি আমাকে কোন দিন ভাল নাও বাসে তবুও আমার এখানে থাকতে হবে।
কারন আমার যাবার কোন জায়গা নেই। বাবার কাছে গেলে বাবা বলবেন আমি কেন চলে এলাম।
ভালবাসা তো গরিবের জন্য না। আমাকে দুমোঠা খেতে দিচ্ছে ঠিক ঠাক ভাবে থাকতে দিচ্ছে এটাই তো বেশি।
আবার ভালবাসা!!!! ভালবাসা হচ্ছে বড়লোকের জিনিস।
আমি প্রায় প্রতিদিনই এইসব কথা ভাবি। সারাদিন করার মত কোন কাজ নেই তো তাই।
কাজ থাকবেই বা কি করে।
বাড়িতে কাজ করার জন্য তিন জন বুয়া আছে।
আমাকে কোন কিছু করতেই হয়না। আমার নিজের চা টাও বুয়া আসে দিয়ে যায়।
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com