Breaking News

সে আসবেই | পর্ব-০৬



এই মেয়ে, এত রাতে এখানে কি করো, কোন সমস্যা হয়েছে? (মেয়েটি কোনও উত্তর দিচ্ছে না,
আসিফ ভাবলো, মেয়েটি হয়তো ওর সাথে কথা বলতে নারাজ,
তাই কিছু বলছে না।তবুও আসিফ আবারো প্রশ্ন করল, মেয়েটিকে বিরক্ত করার জন্য)
— এই মেয়ে, আমি তোমাকে কিছু প্রশ্ন করছি, উত্তর দিচ্ছ না কেন? দেখো?
মাথা খারাপ করবেনা, তোমার মাথা তুলো তো..? (কিন্তু না, মেয়েটি যেভাবে বসে ছিলো,
ঠিক সেভাবেই বসে আছে।কোন রকমই মেয়েটির মাথা উপরের দিকে উঠাচ্ছে না।
এবার বেশ রেগে যায় আসিফ।এত ভাবে বলছে মেয়েটিকে,
কিন্তু মেয়েটি মাথা তুলছে না? এদিকে আসিফ ড্রিংক করে এসেছে, এমনিই রাগ উঠে আছে।
এরপর রকি মেয়েটির মাথার মধ্যে হাত দিতে যাবে,
তখনি মেয়েটি মাথা তুলে আসিফ দিকে তাকায়।
মেয়েটির দিকে তাকাতেই আসিফ হাত পা কাঁপতে থাকে।মেয়েটির একটাও চোখ নেই।
চোখ বিহীন একটা মুখমণ্ডল তার দিকে তাকিয়ে আছে। বেশ ভয় পেয়ে যায় আসিফ ।
এরপর একটা চিৎকার দিয়ে দৌড় দেয় আসিফ ।
প্রায় 50-60 হাতের মত চলে গেল দৌড়ে।তারপর দেখলো সেই মেয়েটিই তার সামনে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। এইবার আসিফ আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়।
আসিফ তাড়াতাড়ি করে তার পকেট থেকে সিগারেট এবং ম্যাচ বের করে সিগারেট ধরিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পেল আশেপাশে কেউ নেই। এখন আসিফ মনে মনে ভাবছে, সে কি কোন ভূতের সম্মুখীন হয়েছে নাকি? তারপর আসিফ আর কিছু না ভেবে, জলদি বাসার দিকে এগুচ্ছে। মনের মধ্যে ভয় ঠিকই কাজ করতেছে।এমন সময় সে খেয়াল করল, রাস্তার পাশে যে গাছ গুলো আছে,সেই গাছের আড়াল থেকে কেউ যেন আসিফকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে। কিন্তু আসিফ সেই গাছগুলোর দিকে তাকাতেই খেয়াল করে, যে একটা মাথা গাছের আড়ালে লুকিয়ে গেছে। এবার আরো বেশি ভয় পেয়ে যায় আসিফ। সিগারেট হাতের মধ্যে থাকলে নাকি কোন অশরীর স্পর্শ করতে পারে না। এমনিতেই একটু ভীতু আসিফ , তারপরেও হাতের মধ্যে সিগারেট পেয়ে একটু সাহস পায়। সিগারেট খেতে খেতে অবশেষে আসিফ বাসায় পৌঁছে গেছে।
অন্যদিকে রবি বাসায় চলে এসেছে, এসে দেখে রবির খালাতো বোনরা সবাই তাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে।রবি তার খালাতো বোনকে পছন্দ করে সেই অনেক আগে থেকেই।তাই ভাবল, যাই হোক, আজকে খালাতো বোনকে নিয়ে মাস্তি হবে। রবি বাসায় আসতেই রবির খালা রবিকে বললো)
— কিরে, এত রাতে কোথা থেকে এসেছিস? বাহিরে এত কিসের আড্ডা
— না খালাম্মা, তেমন কিছু না। আজকে একটা পার্টি ছিল, পার্টি থেকে এসেছি।
–আজীবন কি পার্টি করে যাবি? জীবন সম্পর্কে কিছু ভাবিস না? লাইফে কিছু করার চিন্তা ভাবনা কর। এসব আড্ডা, বন্ধুবান্ধব বাদ দে।
–তুমিও না খালা, বাসায় আসছো একটু ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করবা,তা না,
উল্টা লেগে পড়েছো আমার পিছনে। রুমে যাবো, সরো তো..?
( রবির খালার কথাগুলো শুনে রবি একটু রেগে যায়। আচ্ছা..?
তার খালা তো কোন খারাপ কিছু বলেনি, কিন্তু এখনকার সময় আয়ান ,
রনি, রবি, আসিফ ,তাদের মত ছেলেদের এসব কথা খারাপ লাগে।
তাদের কাছে এসব কথা বিষের মত লাগে। কেন লাগে? কারণ, তারা ভাবে না,
তারা ভবিষ্যৎ ভাবে না, তারা নিজের লাইফ সম্পর্কে ভাবে।ওরা ভাবে,
বর্তমান যুগে কি হচ্ছে, আমার এখন কি আছে, আমি কি কি করতে পারি,
আমার পাওয়ার কতটুকু, আমার পাওয়ার আরও কিভাবে বাড়ানো যাবে।
এইসব নিয়েই বর্তমান ছেলেদের মন মানসিকতা। বড়দের কথা বিষের মত লাগলেও,
একসময়ে বড়দের কথাই কাজে লাগে। একসময় বড়দের কথার পিছনে, দৌড়াতে হয় আয়ান ,
আসিফ ,রবি, রনির মত হাজারো ছেলেরা।
এখানে আমি ছেলেদের insult করছিনা, আমি বর্তমান যুগের ব্যাপার নিয়ে কথা বললাম।
সব ছেলেরা এমন তা নয়।কিন্তু বেশিরভাগই এমন হয়ে থাকে আজকাল।
হয়তো এমন মন মানসিকতা থাকার কারণেই,
মেঘলার মতো একটা অসহায় মেয়েকে এভাবে মেরে ফেলতে দ্বিধা করেনি।
যাইহোক, গল্পের মোড় ঘুরে যাচ্ছে, তাই কথা না বাড়িয়ে আবারো গল্পের দিকে যাই।
রবি তার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল। রুম থেকে বের হতেই দেখলো,
রবির খালাতো বোন রবির বেডের মধ্যে বসে আছে। রবি খুশিতে আত্মহারা। ওয়হয়,
যেখানে আমি খালাতো বোনকে পটাতে যাব, সেখানে খালাতো বোন নিজেই আমার কাছে এসে ধরা দিল?
রবি দৌড়ে এসে দরজাটা ভেতর থেকে লক করে দেয়।রবির পরনে শুধু একটা গামছা ছিল।
উত্তেজনায় রবি ধীরে ধীরে তার খালাতো বোনের দিকে এগোচ্ছে।
কিন্তু একটা ব্যাপার খেয়াল করলো রবি।
তার খালাতো বোন কেমন একটা গম্ভীর মুখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
চোখ দুটো লাল, চুলগুলো যেন বাতাস বিহীন উড়ছে,
মুখের মধ্যে প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে,হাতের আঙ্গুল দিয়ে বিছানার চাদরটা যেন ছিড়ে ফেলছে।
রবি এসব ব্যাপার লক্ষ্য করলেও, সে ভাবে,
হয়তো খালাতো বোনের অভ্যাসটাই এরকম।
যখনই রবি তার খালাতো বোনকে স্পর্শ করবে,
ঠিক তখনি দরজার বাহির থেকে কেউ নক করতে লাগলো।
বাহিরে বারবার দরজা নক করছে দেখে রবি তার খালাতো বোনের দিকে তাকিয়ে বলল)
— একটু দাঁড়া প্লিজ, আমি গিয়ে দেখে আসি।তুমি এক কাজ করো,ব্যালকনিতে গিয়ে লুকিয়ে পড়ো।
( রবি তার খালাতো বোনের হাত ধরে, তাকে ব্যালকনিতে নিয়ে যায়।
এদিকে আর একটা ব্যাপার খেয়াল করলো রবি।রবি যে তার খালাতো বোনের হাত ধরে,
ঠিক তখনই রবি একটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব অনুভব করে। তাও ভাবে,গোসল করে এসেছে মাত্র,
হয়তো সেজন্যই ঠান্ডা অনুভব হয়েছে। রবি তারপর গিয়ে দরজাটা খুলতেই চমকে যায়।
দরজা খুলে দেখে তার খালাতো বোন দরজায় নক করেছিল। তাহলে এতক্ষণ তার সাথে কে ছিল….?
অন্যদিকে মিলির ফোনের মধ্যে ফোন আসে। মিলি মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে আয়ানের ফোন।
লিপি ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আয়ান কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল)
— মিলি,আমার সাথে সত্যি খুব অদ্ভুত ধরনের ঘটনা ঘটছে।
আমি বাথরুম থেকে গোসল করে এসেছি,
পেছনেই আমার বাথরুমে কিভাবে যেনো টিউবওয়েল চালু হয়ে গেছে।
আবার আমার টিভিটাও অটোমেটিক চালু হয়ে যাচ্ছে। এগুলো কি আমার মনের ভুল?
নাকি সত্যিই কিছু হচ্ছে?
(ফোনের ওপাশ থেকে মিলি আবারো জোরে হাসতে হাসতে উত্তর দিল)
— আমি বলেছিলাম না আয়ান …..? সে আসবেই…!
চলবে..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com