বিশ্বাসঘাতক । পর্ব -০৪
আবিরের চাকরী চলে গেছে তা আবির ভাবতে পারছে না। চাকরী চলে যাওয়ার মতো কোন রিজন খুজে পাচ্ছে না আবির।.
– ম্যাডাম এবারের মতো প্লিজ ক্ষমা দিন আর এমন কোনদিন ও হবেনা? (আবির)
– দেখুন মিস্টার আমার কোন করার নেই উপর থেকে অর্ডার এসেছে আপনাকে চাকরীতে না রাখার! I am sorry! (নীলা)
– ম্যাডাম প্লিজ! (হাত জোর করে)
– আপনি এখন আসতে পারেন?.
আবির কোন ভাবেই অফিস থেকে চলে আসতে চাইছিলো না।
পরে কোন উপায়না পেয়ে নীলা সিকিউরিটির সাহায্য নিলো।
সিকিউরিটি আবিরকে টেনে হিছরে বের করে দিলো অফিস থেকো ।
এসব দৃশ্যপাঠ তানিয়া দেখে হাসতে লাগলো। আর মনে মনে বলতে লাগলো.
– বেচারা আবির তোর জন্য আমার বড্ডমায়া হচ্ছে কিন্তু কি করবো বল?
তুই তো আমার ভালোবাসা বুঝিস নাই।
আমি তোকে খুব ভালোবেসে ছিলাম আর তুই কিনা নীলার সাথে ঘর সাজানোর প্লান করিছ।
দেখ এখন কেমন লাগে?।
এদিকে নীলা আবিরকে বের করে দিয়ে অফিসে বসে বসে চোখের পানি মুছতেছে।
নীলা নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলো..
– আমি এটা করতে পারলাম?কিন্ত পরক্ষনেই আবার। আবিরের উপররাগ উঠলো আর বলল
– বেশ করেছি বের করেছি! আমার সাথে বেঈমানী তাই না?
এবার বুঝো মজা।.আবির নীলা ও তানিয়া একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারে না।
নীলা ও আবিরের মাঝে প্রেম ভালোবাসা নামক জিনিসটির জন্ম হয় আর তা
দেখে তানিয়া তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে। কারন তানিয়া ও আবিরের প্রতি দুর্বল ছিলো
কিন্তু তা আবির বোঝার বিন্দু মাত্র ও চেস্টা করেনি শুধু তানিয়া কে আবির
একটা ভালো বন্ধুমনে করতো।
আবির ও নীলার মধ্যেকার খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরী হয় আর এই সম্পর্ক
তানিয়া কোন ভাবেই মেনে নিতে পারে না। তাই এদের ভালোবাসার মাঝে ফাটল
সৃস্টি করার জন্য তানিয়া প্লান করে মেয়ে লাগিয়ে আবিরের সাথে বাজে ভিডিও
বানায় আর তা নীলা কে দেখায়। এবং নীলাকে বাধ্য করায় যে আবির একটা ঠক
প্রতারক কেবল মাত্র নীলার সাথে প্রেমের নাটক করে চলেছে।নীলা তানিয়াী সবকথা
বিশ্বাস করে আবিরকে ভুল বুঝে।আর এখান থেকেই শুরু হয় এই গল্পের কাহিনি।
আবির অফিস থেকে বাসায় চলে যায়।বাসায় গিয়ে ঘরের দরজা লাগিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে।
তার সাথে যা হচ্ছে তা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না। আর এসব যে তানিয়ার প্লানিং তা কেউ টেরও পায় না।
কিছুদিন পর….
আবির তার বোনের ডিভোর্স টা আটকাতে পারে না কোনমতেই। আবিরের পরিবারের খুব খারাপ অবস্থা। আবিরের চাকরীটা দিয়ে তাদের সংসার চলোতো কিন্তু সেই চাকরীটাই তো আর নেই। আবির একেরপর একক চাকরী খুঁজতে থাকে কিন্তু কোথাও চাকরী নামক জিনিসটার দেখা মেলে না। একদিকে মা,বাবা আর এবং বোনের সংসার সব গুলো জেনো এলোমেলো দেখছে আবির । আবির যখনই কিছু করতে যায় ঠিক তখনই তানিয়া দুস্টু বুদ্ধি লাগায় নীলার মাথায় আর নীলার এতটাই বেশি ক্ষমতা যে যার জন্য আবিরকে নানান দিক দিয়ে আঘাত করতে থাকে।.
নীলা ও আবিরের মধ্যেকার ফাটল ধরিয়ে তানিয়া নতুন বয়ফ্রেন্ডের সাথে নতুন জীবন শুরু করতে লাগলো।আবির আর সহ্য করতে পারছে না এসব।সুইসাইড করার সিদ্ধান্ত নিলো কিন্তু পরক্ষনই ভাবলো পরিবারের কথা সে ছাড়া আর কেউ নেই পাশে দাঁড়াবার মতো।সুইসাইডের চিন্তা নিমিষেই দুর হয়ে গেলো। আর এদিকে নীলা আবিরকে কস্ট দিয়ে তার থেকে বেশি কস্ট নিজে পাচ্ছে। এমন কোন রাত নেই যে নীলা আবিরের জন্য কাঁদেনা।প্রতি রাতেই নেশা করে নীলা, যত রকম নেশা জাতিয় দ্রব্য আছে তার সব গুলোই সেবন করে। নিজের চেহারার প্রতি বিন্দুমাত্র ও মায়া নেই নীলার । এর পরিনতি কি তা জানা নেই নীলার ।
শুধু নীলার একটাই ইচ্ছা আর তা হলো আবিরের প্রতিশোধ নেওয়া।।এদিকে তানিয়ার মাথায় আবার খারাপ চিন্তা ভাবনা ভর করলো। আবিরের কিউট সুন্দর আর হ্যান্ডসাম একটা ছেলে।অনেক মেয়েই তার পিছনে দৌড়ায় তারমধ্যে তানিয়া ও পরেছিলো । তানিয়া মনে মনে বলল
– আবির তোর সুন্দর চেহারার জন্য অনেক মেয়েকেই পাত্তাই দিস নাই তাই না?এমনকি তুই আমাকে ও কখনও আমার ভালোবাসা বোঝার চেস্টা মাত্র করিস নি।তোকে যখন আমি পাবই না তখন তোরঐ সুন্দর চেহারা ও আমি রাখবো না।এসব বলতে থাকলো তানিয়া। আর মনেমনে সিদ্ধান্ত নিলো আবিরের সুন্দর চেহারা অসুন্দর করবে আর তা যে ভাবেই হোকনা কেনো।
.রাত প্রায় ২ টা বাজে নীলা ছাদের উপর বসে ড্রিংক করছে আর চোখ থেকে জলগড়িয়ে গড়িয়ে পরছে। ভাবছে আবিরের কথা,আবিরের সাথে কাটানো সেই মধুময় সময়ের কথা। নীলা আনমনে বলছে..আবির তুমি না খুব ভালো ছিলে আর আমাকে খুব ভালোবাসতে কিন্ত সেই আমাকে ফেলে কেনো অন্য মেয়েদের সাথে এ্যাফেয়ার তোমার? কেনো অন্য সবমেয়েদের শরীর নিয়ে খেলো তুমি?এসব চিন্তা ভাবনা করছে নীলা আর সেই ভাবনার ঘর কাটলো মোবাইলে রিংটনশুনে, নীলা মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখলো তানিয়া কল করেছে। কল টা ধরে কানে রাখতেই ওপাশ থেকে তানিয়া বলে উঠলো.
-নীলা জানিস আবির ইদানিং কি কিকরে বেরাচ্ছে? (তানিয়া)
– কি? (অবাক হয়ে নীলা)
– আবির তার সুন্দর চেহারার জন্য অনেক অনেক প্রেম করছে জানিস ই তো ওর জন্য কত মেয়েই না পাগল ছিলো।
– হ্যা তো কি হইছে বলবি আমাকে?
– দেখ নীলা আবির খুব খারাপ একটা ছেলেতার প্রমাণ তুই পেয়েছিস তা আর নতুনকরে তোকে বলতে হবেনা নিশ্চয়ই।আর আবির যা শুরু করেছে ইদানিংএকেক দিন একেকটা মেয়ের সাথে..
– কি বলছিস তুই?
– হ্যা নীলা আমি ঠিক ই বলছি?
– বিশ্বাস না হলে নিজে দেখিস?
– আমি কিছু দেখতে চাই না কিন্তু এর শেষ দেখতে চাই আমি ওর সুন্দর চেহারাই শেষ করে ফেলব। (নীলা)
– কি বলছিস তুই নীলা? কিন্ত কিভাবে? (তানিয়া)
– কিভাবে আবার এসিড মেরে!
.নীলার কথা শুনে তানিয়া জেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেলো। তানিয়া এটাই তো চাইছিলো। খুশিতে লাফালাফি করতে থাকলো তানিয়া। কারন তার স্বপ্ন পুরন হতে চলেছে-
নীলা কি বলছিস এসব তুই? এসিড মারবি মানে? তুই তোর ভালোবাসার উপর এসিড মারতে পারবি? (তানিয়া)
– হ্যাঁ পারবো আর আমি ভালোবাসি না ঐ পশুটাকে।
– কিন্ত নীলা
নীলা তানিয়ার কথা থামিয়ে দিয়ে বলল
– কোন কিন্তু না। তুই কাল সন্ধায় চলে আয় আমি কালকেই ওর জীবনের ইতি টেনে দিবো!
(নীলা).কথাটা বলে নীলা ফোন কেটে দিয়ে একটা সিগারেট ধরালো
আর তাতে মনের সুখে টান দিতে লাগলো।
আশে পাশের সব কিছু জেনো এলোমেলো দেখাচ্ছে নীলার ।
নীলা ভাবছে কালকে আমি আমার ভালোবাসার সাথে বেঈমানী করার শেষ প্রতিশোধ টা নিয়েই ছাড়বো
চলবে..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com