সত্য ঘটনা অবলম্বনে গল্পঃ খেলাঘর । ২য় পর্ব
রুম থেকে বেরিয়ে দেখি কাকলি বসে
গল্প করছে মায়ের সাথে…
আমাকে দেখেই উঠে এসে জড়িয়ে ধরলো..
কাকলি- কিরে আমাকে তো ভুলেই
গেছিস…সেই কখন থেকে অপেক্ষা
করছি..আমাদের বাড়ির রাস্তাটাও
মনে হয় ভুলে গেছিস..
আমি- নারে তেমন কিছু না…বুঝতেই তো
পারছিস কি অবস্থায় আছি..
বের হতে ইচ্ছা হয় না…
কাকলিও মন খারাপ করে ফেললো…সে জানে তার বান্ধবীর জীবনে অনেক ঝড় বয়ে
গেছে…তবুও মন মানতে চায় না…
-মন খারাপ করে থাকিস না…সব সময় আমাদের
সাথে ভালো হবে এমন না..মাঝে মাঝে কিছু খারাপের মধ্যে দিয়েও ভালো কিছু হয়…
-হুম…আল্লাহ সব দেখেন. তিনি আমাকে নিরাশ করবেন না….
কিছুক্ষন গল্প করে চলে গেলো কাকলি…
আগামী মাসে তার বিয়ে…
একসপ্তাহ আগে থেকেই যেতে বলেছে…
আজ দুই মাস হলো স্কুলে জয়েন করেছি …
এর মধ্যে কাকলির বিয়ে হয়ে গেছে..আমি অবশ্য যাই নি বিয়েতে…জানি ও খুব রাগ করেছে..কিন্তু আমার কিছু করার নেই..
ডিভোর্সি দেড় এইরকম অনুষ্ঠানে কেউ ভালো ভাবে দেখে না…
নিজেকে মানুষের আড্ডার টপিক বানাতে
ইচ্ছা হলো না…
স্কুলের সবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক…
বাচ্চাদের সাথে থাকলে নিজের সব কষ্ট ভুলে যাই..
সময় খুব ভালো কাটে..অন্ততো কেউ বাঁকা চোখে তাকায় না..
স্কুল শেষে রাস্তায় দেখা হলো শিশির ভাইয়ের সাথে..আমাদের স্কুলের ওনার এর ছেলে…
অস্ট্রেলিয়া থাকে…কিছু দিন হলো দেশে
এসেছে …
ঘুম ঘুম চোখে দাঁড়িয়ে বাড়ির গেটের সামনে..
দেখেই এগিয়ে এলো…
-কেমন আছো ফাইজা..
আমি একটু ইতস্তত ভাবেই বললাম ভালো আছি ভাইয়া..
উনি মুচকি হাসলো আমার দিকে তাকিয়ে…
-তা আমার লেডি দাবাং কেমন আছে…
কথাটা শুনে আমার দম ফাটানো হাসি আসলো..হাসি চেপে বললাম ভালো আছে ভাইয়া…
বেচারা করুন চোখে তাকিয়ে আমার দিকে…
আজ তার সোন্দর্জ তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে..
বেচারা….নিজের ছোট ভাইকে থাপ্পড় খেতে দেখে কেউ থাপ্পড় দেয়া মানুষের প্রেমে পরে যায় তাকে না দেখলে বুঝতাম না….
কিছুদিন আগের কথা………
স্কুল ছুটির পর মেয়েরা বের হচ্ছিলো….
এর মধ্যে ক্লাস ফাইভ এর একটা মেয়ে গেটে দাঁড়িয়ে তার বাবার জন্য অপেক্ষা করছিলো…
তখন আসে মুন্না….শিশির ভাইয়ার ছোট ভাই..এইবার এস এস সি দিবে…একটু দুস্টু প্রকৃতির ছেলে…
এসেই মেয়েটাকে বিরক্ত করছিলো….কখনো গাল টেনে দিচ্ছে..কখনো চুলের বেণী ধরে টানছে…
তখনি গেট থেকে বের হচ্ছিলো আমাদের দাবাং আপা..ওরফে পাখি…এইটা দেখে তার মোটেও সহ্য হলো না…সামনে গিয়ে জিজ্ঞাস করলো ঘটনা কি?
মেয়েটা বললো তাকে বিরক্ত করছে ভাইয়াটা…
পাখি মুন্নাকে বললো ওর সাথে এমন কেন করছো?
দেখছো না ছোট বাচ্চা মেয়েটা তোমাকে ভয় পাচ্ছে…
মুন্না হাসতে হাসতে বললো,ওর গাল চুলকাচ্ছিল তাই একটু চুলকে দিচ্ছিলাম….ব্যস…আমাদের দাবাং অপারও হাত চুলকাচ্ছিল তাই তার গাল লাল করে দিলো মুহূর্তেই..
মুন্না গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো চোখ লাল করে…
কিছুক্ষনের মধ্যে উপস্থিত হলো শিশির ভাইয়া আর তার বাবা…
সম্পর্কে আমাদের ওনার পাখির দূরসম্পর্কের মামা হয়…
এসেই জানতে চাইলো কি হয়েছে আম্মা,,,আপনি আমাদের ছোট জনাবের গাল লাল করেছেন কেন??
পাখি দু হাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে আছে…
যেন বেপারটা খুব স্বাভাবিক..
শিশির ভাইয়া বেপারটা বোঝার চেষ্টা করছে,,,,আত্মীয় হলেও সে কখনো পাখিকে সামনে সামনি দেখে নি…বেশির ভাগ সময় সে দেশের বাইরে থাকে..যখন দেশে আসে ঢাকার বাড়িতে থাকে…
গ্রামে কম আসে..যদিও গ্রাম বলা যায় না…
এখন মোটামুটি শহর ই বলা যায়…
মুন্না তো রেগে বোম হয়ে আছে,,,তাদের স্কুলের সামান্য টিচার হয়ে তার গায়ে হাত তোলে..কত বোরো সাহস…রেগে তার বাবাকে বলে,বাবা একে এখনই বের করে দাও..আমার গায়ে হাত তোলার সাহস কি পায়..আমি চাইলে যা ইচ্ছা করবো..যার গায়ে খুশি হাত দিবো..তার ক…
বাকিটা আর পুরো করতে পারলো না…তার আগেই আর একটা পড়লো গালে..এইবার ও পাখি থাপ্পড় দিয়ে আগের জায়গায় আগের মতো দাঁড়িয়ে..
শিশির ভাইয়া দাঁড়িয়ে গেছে …মামা হা করে তাকিয়ে…মুন্না তো এইবার কেঁদেই দিয়েছে লজ্জায়…
আমরা একপাশে দাঁড়িয়ে…
বাকিদের কাপাকাপি স্পষ্ট…..
মামা রেগে বললেন,,,তোমাকে আরো কয়েকটা দেয়া দরকার..দিন দিন অসভ্যের মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছ…
আজকে বাড়ি এসো..তোমার পিঠের ছাল তুলে নিবো বেয়াদব…
মামা বেরিয়ে গেলো…ছেলের জন্য তার যথেষ্ট লজ্জায় পড়তে হলো…
শিশির ভাই কিছু না বলে বসে আছে চুপচাপ…
এক ধেয়ানে পাখির দিকে তাকিয়ে…
পাখি এতে একটু বিরক্তই হলো মনে হয়…
একটু হেসে বললো,,এইভাবে কি দেখেন ?আপনার ও চাই নাকি..
আপনাদের লেখিকা অফা অসুস্থ…তাই দেরির জন্য কেউ বকা দিতে চাইলে দিতে পারেন…
আমি কিছু মনে করবো না…
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com