কবিতা - চম্পা ফুল
চম্পা ফুল
কলমে -নির্জনা বড়ুয়া
মানবী হয়ে জম্ন নিল এক ফুল।
নাম রাখলো তারা চম্পা
অনেকই ভালবাসে ডাকতো চম্পা ফুল
নাম ফুলের নাম হলেও,
কিন্তু সেই জানতো না জম্ন নিয়ে করেছে ভুল ।
তার মা বাবার ছিল মতের অমিল
চরমশঅশান্তি ।
দারিদ্রতা ছিল নিত্য সঙ্গী ।
এভাবে খেয়ে না খেয়ে চম্পার দিন যায় ।
যৌবনে সেই হয়েছে ভীষণ রপবর্তী
ধবধবে তার সাদা গায়ের রং
আর রেশমি কালো চুল
সব মিলিয়ে দেখায় ভীষণ মায়াবতী
অনেকেই বলে এই রুপের জন্য
সেই হবে স্বামীর ঘরে
রাজরানী।
সব শুনে চম্পা ও আশায় বাঁধে বুক।
স্বামী দূর করবে সব দুঃখ।
স্বামীর ঘরে পেঠ ভরে খাবে
স্বামী রাখবে থাকে সুখে।
এইটুকু তার চাওয়া
সেই কি আর জানতো এক জীবনে সব হয় না পাওয়া ।।!
একদিন চম্পার ফুটলো বিয়ের ফুল
তখনও সেই চিন্তা করেনি
বিয়ে তাঁর জীবনে ঠিক নাকি ভুল ।।
বিয়ের সাজে পড়ে বেনারসি শাড়ি
স্বামী নিয়ে গেল শ্বশুরবাড়ি
চম্পা ভাবে এইবার সুখ পাখি
দিবে না আর ফাঁকি ।
রাজপুত্রের মতো দেখতে তাঁর বর
চম্পা ভাবেনি কোনদিন
তার বর আনবে তার জন্য
যমদূতের খবর ।
কিছু দিন যেতে না যেতে
চম্পা বুঝতে পারে
তার স্বামীর আসল রুপ
স্বামী তার ভীষণ মেজাজী
কারণে-অকারণে করে তাকে দোষী
যখন তখন করে মারামারি ।
তবু ও চম্পা থাকে চুপ
কারণ সেই নারী
বিয়ের পর স্বামী
তার কাছে দামি ।
খেয়ে না খেয়ে দিন যায় তার
দিন দিন বৃদ্ধি পায়
স্বামীর অত্যাচার ।
মাটির শরীর কত আর সই
এইবার চম্পা করে প্রতিবাদ ।
স্বামী আর করলো না দেরি
চম্পা কে পাঠিয়ে দিল
বাপের বাড়ি ।
রুগ্ন-ভগ্ন জরাজীর্ণ
শরীর নিয়ে চম্পা ফিরলো
বাবার বাড়ি ।
কিন্তু চম্পাকে বাবার বাড়ির লোকজন
আর সমাজ
বুজিয়ে দেয় বিয়ের পর বাবার বাড়ি থাকা
বড় অপরাধ ।
বাবার বাড়ির লোকজন আর আত্মীয় স্বজনের
কটু কথা ।
চম্পার মনে লাগে ব্যাথা ।
সেই ভাবে তার জীবনে
দেখা দেবে কি আর
সুখ পাখি? !
নাই তার জীবনে শিক্ষার আলো,আর অর্থ শক্তি
নাই কোন প্রিয় মানুষের ভালোবাসার হাত
কিভাবে দূর করবে তাঁর মনের আঘাত ।
কোথায় পাবে এই কষ্ট থেকে মুক্তি ।!
শরীর কি বুজে আর এত কিছু
তীব্র ব্যাথায় ঘুম ভাঙ্গে তার সকালে
সবাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে ছুটে ।
ডাক্তার নিয়ে আর আসলো তার জন্য এক
সুখবর ।
এইবার দূর হবে তার দুঃখ কষ্ট
স্বামী করবে না আর অত্যাচার
মুক্তির বার্তা নিয়ে আসলো
মরণ – ব্যাধি ক্যান্সার
দিশেহারা হয়ে বাবা
খবর দিল শুশুর বাড়ি ।
চম্পার বাবা ভাবে
মিলেমিশে যদি কিছু করতে পারি ।
এই খবর শুনে চম্পার স্বামী ভীষণ খুশি ।
সেই জানিয়ে দিল চম্পার জন্য
নাই তার কর্তব্যে
সেই আনবে নতুন বৌ।
এই কথা শুনে চম্পার ভেঙে যায় আশা
সেই ভেবেছিল জীবনে শেষ সময়ে একটু পাবে
স্বামীর ভালবাসা ।
মৃত্যুর পথযাত্রী চম্পা আজ
সেজেছে নতুন রুপে
চম্পার নেই আগের মাথার চুল
গায়ের রং ও হয়েছে মলিন।
তবু ও দেখাচ্ছে তাকে মায়াবতী ।
কারণ সেই পড়ে ছে সাদা শাড়ি ।
এই বার তৈরি চম্পা
দেবে পরপারে পাড়ি।
চম্পা আজ ভীষণ খুশি
ক্যানসার নিয়ে আসলো তার মুক্তি ।
চম্পার জন্য প্রার্থনা
পরবর্তী জম্নে
জম্ন হোক সত্যিকারের চম্পা ফুল হয়ে
ফোটে উঠুক কোনও রাজার বাগানে
সেখানে থাকবে
মালির যতনে।
না হয় জম্ন হোক
কোনও পুঁজারির গাছে
সাজিয়ে রাখবে তাকে দেবতার আসনে ।।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com