দুই মেরু । পর্ব - ০৫

হতভম্ব হয়ে এলিনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আদি

…তার পাশেই কাচুমুচু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে এলিনা আর তার হাসবেন্ড…

কিছুক্ষন আগে….

আদির নিজেকে খুব এক লাগছিলো বাসায়,,সব কিছু খালি খালি,,কিছু একটার শুন্যতায় দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো তার,,,এই শুন্যতা নিধির তা সে খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে,,নিধি তাকে এভাবে ছেড়ে যেতে পারে বিশ্বাসই হচ্ছে না তার,,,রাগ আর কষ্ট দুইটাই চেপে ধরেছে তাকে,,,,এই মুহূর্তে নিজের পাশ কাউকে খুব করে দরকার,,

বন্ধুদের কাছে যাওয়া যাবে না,,গেলেই ওরা নিধির বেপারে জানতে চাইবে,,কোনো ভাবেই কাউকে নিধির কথা জানতে দেয়া যাবে না,,,সবাই ছিঃ ছিঃ করবে,,,নিজের ইমেজ কিছুতেই নষ্ট করতে চায়না সে…

তাই এই খারাপ সময় এলিনার কথাই মাথায় এলো আদির….

দু একবার এলিনাকে বাসার সামনে ড্রপ করেছে সে…তাই বাসা চিনতে অসুবিধা হবে না…শুনেছে এলিনা একাই থাকে..তাই তার সাথে সময় কাটিয়ে মুড ঠিক করার প্ল্যান করে বাসা থেকে বেরিয়ে পরে আদি…

বাসার সামনে গিয়ে কলিং বেল বাজাতেই দরজা খুলে দেয় এক সুদর্শন পুরুষ…

কপাল কুঁচকে আসে আদির…এই বাসায়

তো এলিনা একা থাকে,তাহলে এই ছেলে কে??

ভাবনার মাঝেই এলিনার গলা পাওয়া যায়,,

~ বেবি কে এসেছে??তাড়াতড়ি আসো তো…আমি একা আর এইসব করতে পারছি না…

কথা গুলো বলতে বলতে দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো এলিনা…

আদিকে এইখানে দেখে হচকচিয়ে যায় সে…ভয়ার্তো চোখে তাকালো সামনের যুবকের দিকে…

দুই জনের এমন অদ্ভুত রিএকশনে কপাল কুঁচকে আসে যুবকের..এলিনার থেকে চোখ সরিয়ে আদির দিকে তাকালো সে…ভদ্রতার সাথে জিজ্ঞেস করলো,

~জি কাকে চাই?

আদি কৌতুহূলবসত জানতে চাইলো..

~আপনি কে?

লোকটি একটু বিরক্ত হলো মনে হয়….তার বাসায় এসে তাকেই জিজ্ঞেস করছে আপনি কে?কি একটা অবস্থা…

~ আরে আজব তো…আমার বাসায় এসে আমাকেই জিজ্ঞেস করছেন আমি কে?(বিরক্ত হয়ে)

~কিন্তু এটা তো এলিনার বাসা..(অবাক হয়ে )

~জি এইটা এলিনার ও বাসা..

~তাহলে আপনি এলিনার কি হন??(কৌতূহলি চোখে)

এলিনা ভয়ে ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা..আজকে সব ফাঁস হয়ে যাবে বুঝতে পারছে সে..এতদিন আদির টাকার জন্য আদির সাথে ছিল সে….সুজুক বুঝে নিধিকে সরিয়ে বিয়েও করে নিতো আদিকে…এখন মনে হচ্ছে সব পরিকল্পনা মাঠে মারা গেলো…একুল অকুল দুই কুলই গেলো..জুবায়ের (এলিনার স্বামী)জানলে খুন করে ফেলবে তাকে…

~আমি এলিনার হাসবেন্ড…আপনি এলিনার পরিচিত?আসুন,ভিতরে আসুন প্লিজ..

হাসিমুখে আদিকে ভিতরে আসতে বললো জুবায়ের….

বর্তমানে,,,,

রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে আদি এলিনার দিকে….

আজ নিধির পছন্দ মতো সব কিছু রান্না হয়েছে..সায়ান নিজের হাতে কাচ্চি বিরিয়ানি রান্না করেছে…সাথে আয়ান ও ছিল…আজ দুই ভাই মাইল মহিলা কমিটিকে ছুটি দিয়েছে…এই নিয়ে কয়েক দফা হাসাহাসি হয়ে গেছে মেয়েদের মধ্যে…

সায়ানের আম্মু কয়েকবার এসেছিলেন হেল্প করতে কিন্তু তারা নিতে নারাজ….তাদের ভাষ্য মতে তারা দুনিয়ার পুরুস্কার প্রাপ্ত শ্রেষ্ঠ সেফ…তাদের কারো সাহাজ্যের প্রয়োজন নেই…

চোখে কালা চশমা পরে কোমরে গামছা বেঁধে জুনিয়র সেফ এর ভূমিকা পালন করছে আয়ান…

সায়ান কপাল কুঁচকে ছিল কিছুক্ষন তাকে দেখে…এই ছেলেটা সব কিছুতে বাড়াবাড়ি না করলে ভালো লাগে না…এইযে কি সুন্দর করে জোকার সেজে বসে আছে..এই নিয়ে মহিলা কমিটি আরো বেশি হাসাহাসি করছে…যেন হেসে হেসেই আজ দুনিয়া জয় করে ফেলবে…

অথচ যাকে নিয়ে এতো হাসা তার কোনো হেলদোল নেই…কার্টুন একটা…

বিড়বিড় করে আবার রান্নায় মন দিলো সায়ান…নিধি এখনো ঘুম থেকে ওঠেনি….ও ওঠার আগেই রান্না শেষ করতে হবে…সায়ান চায় না নিধি এইসব জানুক…থাকনা কিছু যত্ন আড়ালে…

(ভাইরে ভাই…আদি যদি জানতো তার এতো হেটার্স আছে বেচারা এমনেই মরে যাইতো….যাইহোক আপনাদের এতো সুন্দর মতামতের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আর ভালোবাসা…ছোট বলে লজ্জা দিবেন না)

চলবে…