Breaking News

সে আসবেই | পর্ব- ০২



আয়ান, আমরা পালাবো কখন।
— আমরা তো পালাচ্ছি না বেবি?
–মানে কি আয়ান…?
–দাঁড়াও, এক্ষুণি বুঝতে পারবে। (সঙ্গে সঙ্গে রনি এবং রবি মেঘলার দুটো হাত ধরে জোর করে খাটের মধ্যে ফেলে দিল। আসিফ দৌড়ে এসে মেঘলার মুখ চেপে ধরলো। যাতে মেঘলা কোন কথা বা চিৎকার দিতে না পারে। মেঘলা গলাকাটা লাশের মত ধরফর করছে তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য। কিন্তু আয়ান তার বন্ধুদের নিয়ে নিশ্রংস ভাবে ধর্ষণ করে মেঘলাকে। একটা মুরগির বাচ্চাকে যখন জবাই করা হয়, তখন মুরগির বাচ্চাটি যেমন ছটফট করে, ঠিক তেমন ভাবে ছটপট করতে থাকে মেঘলা। কিন্তু আয়ান এবং তার বন্ধুদের কে আটকায়। তখন আয়ানের মুখ থেকে একটা কথাই বের হচ্ছে।)
— আমি বড় লোকের ছেলে, তোর মত একটা মেয়েকে আমি বিয়ে করবো কোন সাদ্ধে, তাছাড়া তোর বাচ্চা যদি আমি এখন নি, তাহলে আমার সম্মান ইজ্জত সব গুলো চলে যাবে। আমার অ্যাটিটিউড থাকবে না। যদি তোর লজ্জা থাকে, আর কোনদিন বাচ্চার দাবি নিয়ে আমার সামনে আসিস। (মেঘলা হাতজোড় করে আয়ানের কাছে অনুরোধ করতে লাগলো)
–আয়ান, আমি আর কোনদিন আমার বাচ্চার দাবি নিয়ে তোমার কাছে আসবো না,
তবুও প্লিজ, আমাকে ছেড়ে দাও..( কান্না করতে করতে মেঘলা এসব বললো।
দু চোখ দিয়ে পানি ঝরছিলো মেঘলার।আয়ান মেঘলাকে ছেড়ে দিয়েছে,
কিন্তু তার বন্ধুদেরকে ছাড়তে বলেনি। আয়ান রুম থেকে বের হয়ে গেল।
রুমের বাইরে এসে একটা সিগারেট ধরাতে যাবে, ঠিক তখনই রুমের ভিতর থেকে মেঘলার একটা চিৎকার।
আয়ান সিগারেট ফেলে দৌড়ে গিয়ে দেখল, তার বন্ধুরা মুখে হাত দিয়ে বসে আছে এবং রিয়া চোখ বন্ধ করে খাটের মধ্যে শুয়ে আছে। আয়ানের প্রশ্ন করাতে তার বন্ধুরা কোনও উত্তর দিচ্ছে না।
এর কারণ কি জানেন? কারণ হচ্ছে তাদের এমন কান্ডে মেঘলা মারা গেছে।
আয়ান নিশ্চিত হওয়ার জন্য মেঘলার নাকের মধ্যে হাত দিয়ে দেখে দম সত্যি সত্যি বন্ধ হয়ে গেছে।
এখন এই লাশকে নিয়ে তারা কি করবে?
একটা বেশ চিন্তায় পড়ে যায় তারা ৪ জন। এরপর আয়ান সবার উদ্দেশ্য করে বলল)
— এই লাশটি আমরা এখন যেভাবেই হোক লুকাতে হবে। নাহলে পুলিশ এর ঝামেলায় পড়তে হবে।
( তারা আর কিছু না ভেবে সোজা মেঘলার লাশটি বাড়ির বাইরে নিয়ে আসে।
কারের পিছনের ডগিতে মেঘলার মরদেহটি রাখে তারা।
তারপর তারা চার জন মিলেই রওনা হয়ে গেছে একটা নির্জন জায়গায়।
১ ঘন্টার মাথায় সেখানে অবস্থান ও করে। সেখানে গিয়ে মাটি খুঁড়ে,
পুঁতে ফেলে মেঘলার লাশ।আর দেরি না করে আয়ান , আসিফ, রবি,
রনি, তারা চারজন আবার গাড়ির মধ্যে বসে বাসার দিকে চলে আসে।
এদিকে মেঘলার বাড়িতে হইচই শুরু হয়ে যায়। মেঘলা বাড়িতে নেই, মেঘলা কোথায় গেছে,
এতক্ষণে সবাই থানায় গিয়ে ডায়েরী ও করে চলে এসেছে “মেঘলা নিখোঁজ”।
কারন এরকম একটা মেয়ে, কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে কখনও বের হয় না।
সেই মেয়ে এতক্ষণ হয়ে গেছে, বাড়িতে ফিরলোনা।
রাত প্রায় সাড়ে বারোটা ঘনিয়ে এসেছে।
অন্যদিকে আয়ান মেঘলার ব্যাগ এবং মোবাইল, দুইটাই ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসে।
যাতে করে কেউ সন্দেহ না করে তাদের উপর। সবাই হয়তো এটা ভাববেন,
রাস্তার মধ্যে কোন কিডন্যাপ কারীরা তাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে।
সাথে মেঘলার মোবাইল ফোন এবং ব্যাগ রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে চলে গেছে।
এরকমটা ভেবে আয়ান বাসায় চলে আসে।
পরের দিন সকালে ভার্সিটিতে অনেক হইচই শুরু হয়ে যায় মেঘলার ব্যাপারটা নিয়ে।
সবাই মাতামাতি করছে, এরকম একটা মেয়ে কিভাবে গায়েব হয়ে যেতে পারে।
তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করেছে মিলি।
কারণ তার আগেরদিন মেঘলা মিলিকে বলেছিল আয়ানের সাথে পালিয়ে বিয়ে করবে।
মিলি মনে মনে ভেবে নিয়েছিল হয়তো আয়ানের সাথে পালিয়ে গেছে মেঘলা।
কিন্তু আজকে আয়ানকে ভার্সিটিতে দেখে অবাক হয়ে যায় মিলি।মিলি সোজা গিয়ে আয়ানকে প্রশ্ন করল)
— আয়ান? মেঘলা তোমার সাথে পালানোর কথা তাই না? তাহলে এখন কোথায় সে।আর তুমি ভার্সিটিতে কি করছো?
— কি বলছো তুমি, মেঘলা আমার সাথে পালাবে কেন।
–নাটক করবা না আয়ান। পরশু রাতে মেঘলা আমাকে ফোন করেছিল, এবং সে আমাকে এটাও বলেছে যে কালকে তোমরা পালাচ্ছো। আমি তো ভেবেছিলাম তোমরা সত্যি সত্যি পালিয়ে গেছো। কিন্তু তুমি এখন কলেজে কি করছো। সত্যি করে বলো মেঘলা কোথায়।
— দেখ মিলি,পাগলের মতো কথাবার্তা বলবা না।এইটা ঠিক মেঘলা আমাকে পালানোর জন্য বলেছিল। কিন্তু সে আমার কাছে আসেনি, সে আসতেছে বলে ফোনটা কেটে দিলো, তারপর আমি আর তার দেখা পাইনি । তারপর তো সে নিখোঁজ।
— কি বলছো কি তুমি মেঘলা? তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ মেঘলা তোমার কাছে যাইনি?
–না, সে আমার কাছে আসেনি।
— তাহলে মেঘলা গেল কোথায়?
(আয়ানের জবাব শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় মিলি।মেঘলা আয়ানের সাথে পালানোর কথা। কিন্তু তার সাথে তো গেলো না।তাহলে যেতে পারে কোথায় মেঘলা।
এমন সময় আকাশে মেঘাচ্ছন্ন দেখা দিয়েছে। মেঘলা মেঘলা আকাশের মাঝে অনেক জোরে জোরে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। হঠাৎ করে আবহাওয়া এরকম বদলে যাওয়া অস্বাভাবিক ব্যাপার। তারপর..
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com