Breaking News

সে আসবেই | পর্ব -০৫



(আয়ান একটু ঘাবড়ে গিয়ে তারপর গলাটা ভালোভাবে ঝেরে বলল)
— না, আ… আ… আমি কেন ভয় পাবো। আমি ভয় পাওয়ার মত কিছু করেছি নাকি?
— আয়ান , যদি তোর কথা সত্যি হয়, তাহলে তো ভালো।
আর যদি তোর কথা সত্যি না হয়, তাহলে দেখে নিস। সে আসবে.
…মাথায় রাখো আয়ান , তার খুনের বদলা নিতে অবশ্যই সে আসবেই..
…… ( এইটা বলেই মিলি ফোন কেটে দেয়।
আয়ান একটু ঘাবড়ে যায় এরকম কথা শুনে।
মিলি কার কথা বলে, কে আসবে? মেঘলা ? ধুরর, এসব কি ভাবছি আমি। মেঘলা কেন ফিরে আসবে।
সে তো মারা গেছে, একজন মৃত মানুষ কিভাবে জীবিত হয়।
এসব আজাইরা প্যাচাল বলে হুদাই আমার মাথাটা খাচ্চে মিলি ।
এমনিতেই ড্রিংক করেছি, সেজন্য হয়তো চোখে ভুলভাল দেখছি।
আসলে তেমন কিছু না। এমনটা ভেবে আয়ান আবার গাড়ি চালাতে শুরু করে। অবশেষে বাসায় পৌছায় আয়ান । আরে…! এইটা কি, আজব তো? আমার রুমের সকল আসবাবপত্র এভাবে এলোমেলো কেন। আয়ান কিছুটা কনফিউজ হয়ে যায়। আয়ান জোরে চিৎকার দিয়ে বলে)
— আম্মু…? আম্মু, আমার রুমের সব গুলো এভাবে এলোমেলো কেন? (আয়ানের আম্মু দৌড়ে এসে বলল)
— কই দেখি তো? আরে..! সবগুলো তো সত্যি সত্যিই এলোমেলো করা। রুমের মধ্যে তো কেউ আসেনি, তাহলে রুমের এমন অবস্থা করেছে কে।
— আমি কি করে বলবো, তোমরাও না..? যাকে পাবে, তাকেই বাসার মধ্যে প্রবেশ করতে দাও।
এখন আমার রুমের এ অবস্থা কেন?
তাড়াতাড়ি রুম গোছাও, আমি বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসতেছি।
( আয়ান ওর আম্মুকে অর্ডার দিয়ে বাথরুমে চলে গেল। ড্রিংক করেছে, একটু মাতাল,
সেজন্য হয়তো খারাপ ব্যবহার করছে তার আম্মুর সাথে।
মাতাল জেনে আয়ানের আম্মুও মাথার মধ্যে তেমনটা নেয়নি।
পরে আয়ানের আম্মু এবং কাজের মেয়ে মিলে আয়ানের রুমটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলে।
আয়ান বাথরুম থেকে গোসলটা সেরে নেয়।
গোসল শেষে বাথরুম থেকে বের হয়ে দরজাটা বন্ধ করে ফেলে।
যখনই আয়ান আলমারি থেকে জামা কাপড় নেবে,
ঠিক তখনই বাথরুমের ভেতর থেকে আয়ান অনুভব করলো,
একটা শব্দ ভেসে আসছে।আয়ান অবাক হয়ে যায়,
এই মাত্র সে বাথরুম থেকে বের হলো,
কিছু তো দেখেনি, তাহলে আওয়াজ হচ্ছে কিসের।
আয়ান ধীরে ধীরে বাথরুমের দরজার দিকে এগোয়।
এরপর বাথরুমের দরজাটা খুলতেই দেখে টিউবওয়েল টা চালু করা।
আয়ান নিজের হাতে টিউবওয়েল বন্ধ করেছে, তাহলে আবার চালু হয়েছে কিভাবে।
আবার ভাবে,হয়তো মনের ভুল ছিল, হয়তো মনের ভুলে চালু করে দিয়ে এসেছিলো।
এমনি এমনি তো এইটা চালু হবার কথা না।
আয়ান আবারও গিয়ে সেই টিউবওয়েল অফ করে দেয়।
তারপর নিজের রুমে আসতেই আয়ান ঘাবড়ে যায়। সে দেখে টিভি টা অটোমেটিক চালু হয়ে আছে।
আয়ান বেশ অবাক হয়ে যায়।আরে! টিভি আবার চালু করলো কে।
রুমের মধ্যে তো কেউ আসেনি। তাহলে টিভি চালু হয়ে গেছে কিভাবে।
আয়ান এবার একটু একটু ভয় পেয়ে যায়। এরকম অদ্ভুত ঘটনা কেন ঘটছে, তার সাথে?
অন্যদিকে রনি তার বাসায় গিয়ে ফ্রেশ না হয়েই শুয়ে পড়ল। শরীরটা অনেক ক্লান্ত,
সেজন্য আর গোসল করেনি। সকালে গোসল করবে ভেবে সে শুয়ে পড়ল।
কিছুক্ষন পর হঠাৎ একটা মেয়ের কান্নার শব্দ।
রনি এক লাফ দিয়ে বিছানা থেকে দাঁড়িয়ে গেল।
কান্নার শব্দটা কোথায় হলো রনি ঠিক বুঝতে পারেনি।
পরিবেশ আবার নিস্তেজ হওয়ার পর রনি আর তেমন কিছু ভাবেনি,
হয়তো সে ভুল শুনেছে। আবার রনি বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল।
তখনই রনি খেয়াল করল উপর থেকে কিছু খচখচ করছে।
রনি উপরে তাকাতেই প্রচন্ডরকমের ভয় পেয় যায়।
ওর রুমের সিলিং এর মধ্যে একটা ছায়ামূর্তি দেখা যাচ্ছে।
ছায়ামূর্তিটি দেখে রনি বিছানা থেকে এক লাফে উঠে,
জোরে একটা চিৎকার দিয়ে দরজা খুলে বের হয়ে যায়।
দরজার বাইরে আসতেই রনির আব্বু আম্মু সবাই জিজ্ঞেস করল)
–কিরে, কি হয়েছে? এভাবে ভয় পেয়েছিস কেন!
–আম্মু, আম্মু, সিলিং এর উপর একটা ছায়ামূর্তি দেখা যাচ্ছে। আমি স্পষ্ট দেখেছি।
আমার রুমের মধ্যে ভূত প্রবেশ করেছে ( ভয়ের স্বরে)
–কি বলছিস তুই এসব, রাতে যাত্তসব উল্টাপাল্টা ছাইপাশ খেয়ে এখন উল্টাপাল্টা বকছিস।
গিয়ে ঘুমা।আর ছায়ামূর্তি দেখা যাবে কোথা থেকে, আর ভূত?
ভূত আসবে কোথাকে? ভূত বলতে কিছু আছে নাকি ।
— আম্মু আমি সত্যি দেখেছি, তোমরা বিশ্বাস না করলে এসে দেখতে পারো।
(সবাই মিলে রনির সাথে রনির রুমের মধ্যে গেল। গিয়ে দেখল কিছুই নেই,
তারপর রনির আব্বু আম্মু রনির দিকে একটু চোখ রাঙিয়ে বলল)
— এরকম উল্টাপাল্টা কাজ করবি না আর।একটু শান্তিতে ঘুমাতে দে।
কে জানে,কি সব খেয়ে আসিস।
( সবাই রুম থেকে বের হওয়ার পর রনি ভাবতে লাগলো, আমি কি ভুল দেখেছি?
নাকি সত্যিই ছিলো কিছু।নাহ,আম্মুর কথাই সত্য হবে।ভূত বলতে কিছু নেই।
এরপর রনি বিছানায় গিয়ে আবার শুয়ে পড়ল। এমন সময়ে রনি অনুভব করল,
রনির পিঠের মধ্যে কারো হাতের স্পর্শ।রনি চোখটা ধপাস করে মেলে ঠিকই,
কিন্তু সে একটুও নড়াচড়া করছে না। ভয়ে তার হৃদপিণ্ড ধপ ধপ করে কাঁপছে।
হাতটি রনির পিঠ থেকে, ধীরে ধীরে মাথার দিকে এগোচ্ছে।
রনি এবার অনেকটাই ভয় পেয়ে যায়, এরপর হুট করে মাথা ঘুরে দেখল,
কেউই নেই। তার রনি ভয়ে কাপতে থাকে,তাহলে তার পিঠের মধ্যে হাতে দিয়ে স্পর্শ করল কে?
অন্যদিকে আসিফ বাসায় যাচ্ছে, এখনো রাস্তার মধ্যে।
আসিফ যে রাস্তা দিয়ে বাসার দিকে যাচ্ছে, সেই রাস্তার দু’পাশে অনেক গাছপালা দিয়ে ভরা।
বলতে গেলে রাতের কাল সে রাস্তাটা পুরো জঙ্গলের মতো হয়ে যায়।
মনে হয় কোন জঙ্গলের মধ্যে অবস্থান করছে কেউ।
আসিফ হাঁটার সময় খেয়াল করলো, একটি মেয়ে রাস্তার পাশে বসে আছে।
রকি ভাবলো, হয়তো আশেপাশের কোন মেয়ে হবে।
তবে এত রাতে এ নির্জন জায়গায় কেন উনি।
আশেপাশে কেউ নেই, দেখি,
গিয়ে মেয়েটিকে পটাতে পারি কিনা। আসিফ ধীরে ধীরে মেয়েটির দিকে এগিয়ে যায়।
মেয়েটি রাস্তায় বসে, একটি গাছের সাথে হেলান দিয়ে আছে।
মাথাটা নিচু করা, হাত দুটো হাটুর উপরে পেচিয়ে রেখেছে। আসিফ বললো)
চলবে..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com