বিশ্বাসঘাতক । পর্ব -০৩
আমি প্রতিশোধ নিচ্ছি প্রতিশোধ? তুমি আমার ভালোবাসায় ধোঁকা দিয়েছো তাই তার প্রতিশোধ নিচ্ছি। আমায় ছাড়ো আবির? ( নীলা)
– না ছাড়বো না। কি অপরাধ আমার যার কারনে তুমি এমন করছো?
আমার সারা শরীরে আঘাত করেও তোমার সাধ মিটেনি।
তারপর ও কেনো আমার বোনের সুখের সংসার ভাঙতে চাইছো?
– তুমি আমার সুখ কেড়ে নিয়েছো আর আমি তোমার, তোমার গোটা পরিবারের সুখ কেড়ে নিবো।
আবির ছাড়ো আমাকে। আমাকে তুমি স্পর্শ ও করবা না?।
আবির শক্ত করে আঁকড়ে ধরে আছে নীলাকে আর নীলা নিজেকে ছাড়ানোর ব্যার্থ চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বেশ কিছুক্ষন দুজনের লড়াই চলল
এক পর্যায়ে নীলা আবিরকে ধাক্কা মেরে মেঝোতে ফেলে দিয়ে আবার ড্রিংক আর সিগারেটে টান দিতে লাগলো।
আবির উঠে গিয়ে নীলাকে একটা থাপ্পর মেরে সিগারেট টা আবার ফেলে দিলো।
নীলা গালে হাত দিয়ে আবিরের দিকে চেয়ে আছে।
আবির যে তার গালে থাপ্পর মেরেছে তা বিশ্বাস না হচ্ছে নীলার।
আবির চিৎকার করে বলল….
– বন্ধ করো এসব? প্লিজ স্টপ দিস!আমি আর পারছি না। (আবির)আবিরের কথা শুনে নীলা বলল…
– মাত্র তো শুরু আর তাতেই বন্ধ করতে বলছো? আমার ভালোবাসার সাথে বেইমানীর প্রতিশোধ আমি নিয়েই ছাড়বো। (নীলা)
– আমি তোমার সাথে কোন বেইমানী করিনি নীলা প্লিজ আমার কথা টা শুনো তোমার কোথাও একটা ভুল হচ্ছে?
– আবির তুমি আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যাও তোমার মুখ আমি দেখতে চাই না?.
টেবিলের উপরে থাকা ফল কাটা ছুড়ি টা হাতে নিলো নীলা। আর কাঁদতে কাঁদতে আবিরকে বলল..
– কি হলো যাচ্ছো না কেনো?প্লিজ আমার সামনে থেকে যাও তুমি?
তুমি না গেলে এই ছুড়িটা দিয়ে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো। (নীলা).
নীলার কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে আবির তার ঘর থেকে বের হয়ে আসে।
হিসাব মেলাতে পারছে না আবির চোখ মুছতে মুছতে বাসার দিকে হাটতে থাকলো।.
আবিরকে বের করে দিয়ে নীলা ফ্লোরে পরে ডুকরে ডুকরে কাঁদছে আজ তার কান্না কেউ শুনতে পাচ্ছে না।
আবিরকে উদ্দেশ্য করে মনে মনে নীলা বলল” কি ভুল করেছি আমি?
আবির তুমি আমার সাথে কেনো এমনটা করলে আমাকে ভালোবাসা সত্যেও
তুমি অন্য মেয়েদের সাথে কেমন করে রাত কাটাও?তোমার কি আমার কথা একটু ও মনে হয় না।
এতদিনের ভালোবাসা এভাবে শেষ করে দিলে।
এসব ভাবতে ভাবতে বিছানার উপরে থাকা মোবাইল টা বেজে উঠলো
মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে তানিয়ার কল। নীলা নিজেকে
সামলিয়ে নিয়ে কল টা ধরে বেশ কিছুক্ষন কথা বলে তানিয়ার সাথে।
আবির অসুস্থ থাকা সত্ত্যেও পরেরদিন অফিসে গেলো। ওহহ আপনাদের তো বলা হয়নি,
নীলা, আবির, ও তানিয়া এরা একই অফিসে চাকরি করে নীলা হলো অফিসের বস ।
আবির অফিসে প্রবেশ করে তানিয়ার কাছে গেলো কারন তানিয়া হলো আবিরের বেস্ট ফ্রেন্ড।
আবির নীলার কাছে গেলো গিয়ে দেখে তানিয়া মনখারাপ করে বসে আছে।.
– কিরে তোর তো কখনও মন খারাপ থাকে না আজ কি হলো যে মন খারাপ করে আছিস? (আবির )
– না এমনি ভালো লাগছিলো না। তুই যা তোর কাজে যা? (তানিয়া)
– ওকে ওকে যাচ্ছি কারো সাথে আমি জোর করে কথা বলব না।
– আচ্ছা শোন?
– হ্যা বল?
– বস তোকে ডেকেছে?.আবির তানিয়ার কথা শুনে সোজা বসের রুমে চলে গেলো। আর সামনের চেয়ারটায় বসলো।
– কি ব্যাপার আপনি আমার রুমে প্রবেশ করেছেন অথচ আমার পারমিশন ছাড়াই? (নীলা)
– তুমি ই তো আমাকে ডেকেছো তাই আর বলার কি আছে? (আবির)
– শাট আপ মিস্টার আবির! (ধমক দিয়ে)এটা আপনার বাসা বা গোয়াল ঘর নাএটা হলো অফিস
আর এখানকার কিছু নিয়মকানুন আছে আপনি তো তার কোনটাই মানেন না।
(নীলা).আবির নীলার কথা শুনে কিছুটা অবাক হলো আর কেনই বা হবে কারন
এর আগেও নীলার রুমে কতবার যে না বলে প্রবেশ করেছে তার খেয়াল নেই।
অফিস চলাকালীন অবস্থায় কতবার যে নীলার সাথে গল্প, দুস্টুমি করেছে তার খেয়াল নেই।
কখন ও পারমিশন নিতে হয়নি তাই আজকেও পারমিশন ছাড়াই প্রবেশ করেছে আবির ।
কিন্তু আজ হঠাৎ এমন করে বলবে তা জানা ছিলো না আবিরের।.
– কি হলো চুপ করে আছেন কেনো? (নীলা)আবির কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
– সরি ম্যাডাম আর এমন হবে না। (আবির)
– শেষ বার বলছি আর এমন জেনো না হয়?
– ঠিক আছে ম্যাডাম আর এমন হবে না কখনও।নীলা আবিরকে কিছু কাজ দিলো
আর সেগুলো করতে বলল। আবির চেয়ে আছে নীলার দিকে লক্ষ্য করছে
গোলাপি কালারের ঠোট দুটো কেমন কালো বর্ণধারন করেছে। চোখের নিচ দিয়েও
কালোদাগ কেটে গেছে । আবিরের বুঝতে বাকি
রইলো না যে সিগারেট খেয়ে আর না ঘুমিয়ে এমনটা হয়েছে।.
– কি হলো আপনাকে না কাজে যেতে বলেছি তারপর ও কেনো এখানে দারিয়ে আছেন যান কাজে যান?
(ধমক দিয়ে বলল নীলা)আবির আর কিছু না বলেই বসের রুম থেকে বের হয়ে নিজের কাজের জায়গায় গিয়ে কাজ করতে লাগলো।
আবির কাজ করছে অফিসের একটা৷ মেয়ে আবিরের কাছে এসে কথা বলা শুরু করলো।
মেয়েটার সাথে একটু হাসাহাসি করেই কথা বলল আবির।
– হ্যালো তানিয়া? (নীলা)
– হ্যা বল কি হয়েছে? (তানিয়া)
– এক্ষুনি আবিরকে আমার রুমে পাঠিয়ে দে?
– কেনো আবার কি হলো?
– না কিচ্ছু হয়নি তবে এবার হবে।
– কি হবে?
– এসব তোর না জানলেও চলবে তোকে যেটা বললাম সেটা কর?
– আচ্ছা ঠিক আছে !.তানিয়া আবিরকে আবার নীলার রুমে যেতে বলল। আবির নীলার রুমের দরজায় গিয়ে বলল..
– আসতে পারি ম্যাডাম? (আবির)
– হ্যাঁ আসুন। (নীলা)আবির ভিতরে ঢুকে নীলার সামনে রাখা চেয়ারটায় বসবে বলে নীলস কে বলল.
.- ম্যাডাম চেয়ারে বসতে বলবেন না?..আবিরের কথা শুনে নীলা রাগি লুক নিয়ে তাকালো আবিরের দিকে। তারপর বলল…
– বসতে হবে না তার চেয়ে বরং আপনি বাসায় গিয়ে বসুন একবারে।লীলার কথা শুনে আবির কিছুটা অবাক হলো আর বলল.
.- ঠিক বুঝলাম না ম্যাডাম?
– ওকে আমি বুঝাচ্ছি তাহলে। আপনার আর এই চাকরী টা নেই আপনার চাকরী চলে গেছে তাই বললাম একবারে বাসায় গিয়েই বসুন।.
বসের কথা শুনে আবির বিশ্বাস করতে পারছে না যে তার চাকরী নেই ।
– কি বলছেন ম্যাডাম এসব? চাকরী নে ইমানে?
-হ্যা ঠিক ই বলছি। আপনার নামে কমপ্লেইন এসেছে তাই আপনাকে এই চাকরীটা আজকেই ছাড়তে হবে মিস্টার আবির আর হ্যাঁ এ মাসের বেতন টাও পাবেন না। আপনি এখন আসতে পারেন? (নীলা)
– ম্যাডাম প্লিজ এমন বলবেন না?আমার এই চাকরী টা না থাকলে আমার পরিবার কে নিয়ে পথে বসতে হবে প্লিজ ম্যাডাম এমন বলবেন না? (করুন সুরে বলল)
– Shut up, আর একটা কথাও না Get Out (ধমক দিয়ে).
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com