গল্পটা ভালোবাসার । পর্ব -০৩
ভাইয়া দেখুন ওইখানে কি করছে?
—কি করছে শুনি?
—কতোগুলো ছেলে মিলে একটা মেয়েকে ঘিরে মেয়েটাকে উক্তত করছে আর মেয়েটার ওড়নাটা কেড়ে নিয়েছে।আবির নীলিমার কথা শুনে পাশে তাকাতেই দেখে মেয়েটার অবস্থা বেহাল।দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটা গরীব ঘরের।এখন সে নীলিমার সামনে কিছু করতেও পারবে না কারন নীলিমার কাছে সে একটা খারাপ ছেলে হিসেবে পরিচিত।কিছু করলে তার উপর নীলিমা সন্দেহ করবে।
—এই মেয়েটা ঠিক তোমার মতোই নতুন তাই সহজে মানিয়ে নিতে পারছে না।
—তাহলে রুমে নিয়ে যাক।রাস্তাই এভাবে কষ্ট দেওয়াটা ঠিক না।
—টাকার কাছে সবাই হার মেনে নেই।এই মেয়েটাই দেখবা দু দিন পর ছেলেদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।নীলিমা আবিরের কথাগুলো সহজেই বিশ্বাস করে নিলো।ওদিকে আবির ইশারাই ছেলেগুলোকে হাত নাড়াতেই সবাই ভয়ে পালিয়ে গেলো।কিন্তু যে যত ভালো হোক না কেন?তার ভিতরেও একটা নেশা কাজ করে।আবিরের ফিলিংসটা নীলিমার প্রতি ধীরে ধীরে বাড়তে রইলো।আশেপাশের সবকিছু ঘুড়িয়ে এনে নীলিমাকে তার বাসাই নিয়ে আনলো।সে তার নিজের বাসাতে থাকে না।তাই ভাড়া নেওয়া তার রুমে চলে এলো।নীলিমা খেয়াল করলো তার ফ্লাটে অনেক মেয়েরা দাড়িয়ে আছে।নীলিমা বলতে লাগলো,
।
—আপনার ফ্লাটে এতো মেয়ে কেন?
।
—সবাই তোমার মতোই ট্রেনিং নিচ্ছে।
ও এদেরকে দেখে আমার সেটা মনে হয় না।এরা বেশ ভদ্র ঘরের মেয়ে মনে হচ্ছে।
হ্যা তুমি ঠিক বলেছো নীলিমা।এরা উচু বংশের মেয়ে।এখানে এসে ওরা আমাকে টাকা দিয়ে ওদের জন্য একটা করে বেছে নিয়ে ফুর্তি করে।নীলিমা শুধু অবাক হয়ে সবাইকে দেখছিলো।সে খেয়াল করলো সেখানে অনেক বিবাহিতাও রয়েছে।তবে তারকাছে ফ্লাট দেখে বিশ্বাস হচ্ছে না,,এমন একটা বিল্ডিং এ আদান প্রদানের কাজ করে?আবির সোজা নীলিমাকে নিয়ে একটু ভিতর গিয়ে বেশ সুন্দর একটা রুমে চলে গেলো।রুমটা অনেক সুন্দর জিনিসে সাজানো যেটা নীলিমা জীবনে কখনো দেখেনি।নীলিমার চারদিকে এমন অবাকের মতো তাকিয়ে থাকতে দেখতে আবিরের কেমন যেন লাগছিলো।এতো মেয়েকে ভালো করেছে কিন্তু কখনো কোনো মেয়েকে খারাপ উদ্দেশ্য স্পর্শ করেনি।.
চুপিচুপি নীলিমার পিছনে গিয়ে দাড়িয়ে পড়লো।পিছন থেকে নীলিমার কোমরটা আলতো করে দু হাত দিয়ে টেনে নিয়ে তার বুকে টেনে নিলো।হটাৎ আবিরের এমন আচরন দেখে নীলিমা বেশ ভিত হয়ে গেলো।রুমে আনতে না আনতেই শুরু করে দিয়েছে।ইচ্ছে থাকা না সত্তেও ইচ্ছার বিরুদ্ধে সে নিজেকে মানিয়ে রাখলো।তাকে ভীত হলে চলবে না।তাকে খারাপ মেয়ে হতেই হবে।কিন্তু আবিরের স্পর্শটা তাকে কেমন যেন শিহরিত করছিলো।হাতটা যখনি নাভির কাছে নিয়ে নীলার কোমরটা পুরোপুরি চেপে ধরে মুখটা গলার কাছে নিলো।নীলা আর তাকে নিয়ন্তন করতে পারছিলো না।তার ভিতরে একটা জোড়ালো নিঃশ্বাস বইতে শুরু করলো।
চোখটা নিমিশেই বন্ধ করে আবিরের পরম ছোয়াগুলো অনুভব করতে থাকলো।আবির নিজেকে একদম দমিয়ে রাখতে পারছিলো।ছেড়ে দিতে চাইছে কিন্তু তার হাত পা গুলো নীলিমাকে ছাড়তেই চাইছে না।নীলিমাকে এক টানে সে ঘুরিয়ে তার বুকে টেনে নিলো।চুলগুলো দ্রুত ঘুরতেই আবিরের চোখমুখ ঢেকে দিলো।নীলিমার চোখের দিকে তাকিয়ে সে আর থাকতেই পারছিলো না।এতো সুন্দর একটা চেহারা কিভাবে তৈরি হয়েছে?নীলিমার মুখে টোল পড়েছে।মুখটা নীলিমার ঠিক ঠোটের ১ ইন্চি দুরে রেখে নীলিমার নাকের নিচের তিলটা দেখছিলো।হাতটা মুখে লাগাতে না চাইতেও হটাৎ মুখটা শক্ত করে চেপে ধরে আলতো করে নীলিমার ঠোটটা চেপে ধরলো।হটাৎ কিছু একটার টানে এক ঝটকাই সে নীলিমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।আবির স্পস্ট টের পেয়েছে।
কিস করাতে নীলিমা ভয়ে কাপছিলো।যে মেয়ে তাকে এতোটা বিশ্বাস করেছে আর এখন তাকেই ব্যবহার করা হচ্ছে?নিজের মাথাই হাত দিয়ে চিন্তার ভিতর পড়ে গেলো।কিন্তু নীলিমা কি ভাবলো?এভাবে ধাক্কা দেওয়াতে সে কি বুঝলো?ভাবাটা শেষ না হতেই তার মনে হলো কেউ একজন আবারো তার ঠোটটা চেপে ধরেছে।চোখটা খুলতেই পারছিলো না।তবুও চোখটা খুলে নীলিমার চোখের দিকে তাকালো।
এমন একটা পরিস্থিতিতে আবির নিজেই ভয় পেয়ে গেলো।
সে নীলিমার চোখে স্পষ্ট জল দেখতে পেয়েছে।হটাৎ করে নীলিমার কি হয়ে গেলো?
নাকি নীলিমা তাকে সত্যিই তার দেহটা ব্যবহার করতে দিবে?
নীলিমা থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিলো।নীলিমার চোখের জলটা তার চোখটাই জল এনে দিলো।
সে রুমে আর থাকতে পারলো না।নিজেকে খুব নিচু মনে হতে লাগলো নীলিমার কাছে।
রুম থেকে বের হওয়ার সময় না তাকিয়ে বললো,,
তোমার ভিতর প্রচুর উওেজনা আছে।তবে এভাবে এতো মায়াবী ভাবে তাকানো যাবে না।
আর চোখে জল আনলে কিন্তু তোমাকে ট্রেনিং এ রাখা যাবেনা।
আবির কথাটা বলে উত্তরের আশাই দাড়িয়ে রইলো।কিন্তু কোনো উত্তর না পেয়ে চলে যেতেই,,
ভাইয়া একটু দাড়ান?(গলার ভারি করে)কথাটা শোনামাত্র আবির দাড়িয়ে গেলো।
সে জানতো না এমন কি রয়েছে নীলিমার ভিতর।
তবে নীলিমার কোন কথাই তার কাছে পৌছাতে সময় লাগেনা।
সে দাড়িয়ে থাকতেই নীলিমা মুখটা নিচু করে পকেট থেকে খুচরা ৬০০ টাকা তার হাতে রেখে দিলো।
টাকাটা হাতে পেয়ে সে নীলিমার চোখের দিকে তাকালো।
নীলিমার চোখ থেকে ফোটা ফোটা জল বেরোচ্ছে।
হটাৎ করে নীলিমার এমন আচরনে সে বেশ অবাক হয়ে পড়লো।
নীলিমা আমাকে টাকা দিচ্ছো কেন?
কি ব্যাপার কথা বলছো না যে?নীলিমা কোনো জবাব না পেয়ে সে বুঝতে পারলো না নীলিমা তাকে কি বোঝাতে চাইছে।টাকাগুলো সে একটু ভালো করে চেয়ে দেখলো।টাকাটা একটু ভিজে গিয়েছে যেটা দেখে তার বুঝতে বাকি রইলো না যে, নীলিমা এই টাকাটা অনেক আগেই হাতে রেখেছিলো।কিন্তু টাকাগুলো কেন তাকে দেওয়া হলো??নীলিমার কাধে হাত রেখে জানার চেষ্টা করলেও নীলিমা বলছিলো না।রেগে গিয়ে সে নীলিমাকে ধমক দিয়ে কয়েকটা ঝাকুনি দিতেই কান্নাভেজা কন্ঠে তার গলা থেকে বেরিয়ে এলো,,
— ভাইয়া আমি আজ দু দিন কিছুই খাইনি।ম্যথা ব্যথাটাও শুরু করেছে।আমার কাছে আপনাকে দেবার মতো কিছুই নেই।এই টাকাগুলো সেদিন দু জনের থেকে টিউশনি করে পেয়েছি।এর চেয়ে আর ১ টাকাও বেশি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।আপনি যদি চান তাহলে আপনাকে আমি সব দিবো শুধু আপনি আমাকে এখানে থাকতে দিন।(ফুফিয়ে ফুফিয়ে)
..এখন আর আবির রুমে নেই।সে রাস্তাই চলে এসেছে।এই শীতেও তার গা গরমে ভিজে যাচ্ছে।
তার হাত পা গুলো এখনো কাপছে।একটা মেয়ে কিভাবে এতোটা কষ্ট ভোগ করতে পারে?
সে ভাবতেও পারেনি ৬০০ টাকা দিয়ে মেয়েটি কি করতো?
চোখ থেকে জলটা মুছে নিলো।তার সেই দৃশ্যটা একদম ভাবতে ইচ্ছে করছিলো না।
যখন নীলিমা টাকাগুলো দিয়ে তার পা ঝাপটে ধরে কাদতে কাদতে কথা গুলো বললো।তাহলে কি এরা,,
চলবে
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com