Breaking News

সে আসবেই । পর্ব - ০৮ এবং শেষ



ভুত? এটা মনে হয় পাগল হয়ে গিয়েছে। পাঠিয়েছে মোমবাতি ধরাতে, আর এসে বলে ভূত।
(এমন সময় যে জানালাটা অটোমেটিক খুলে গেছে, সে জানালা টা নিজে থেকে পিটাপিটি শুরু করেছে।
এটা দেখে এবার চারজনই ভয় পেয়ে যায়। তারপর তারা খেয়াল করল ব্যালকনিতে একটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে।ঠিক তাদের দিকে মুখ করে। মুখটা ঠিক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না, অন্ধকার এর মধ্যে জানালার পর্দাটা এপাশ ওপাশ করছে। হঠাৎ খেয়াল করলো, পর্দা এপাশ থেকে ওপাশে যাওয়ার সাথে সাথেই মেয়েটি গায়েব।
এবার তারা চারজন ভীষণ ভয় পেয়ে যায়। সবাই বুঝতে পেরেছে, সত্যিই বাড়িতে ভুত এর আগমন হয়েছে।
সবাই দৌড়ে পালাতে যাবে, এমন সময় দরজাটা বন্ধ হয়ে গেছে।
আয়ান এবার ভালোভাবে খেয়াল করল, এই রুমের মধ্যেই,তারা মেঘলাকে ধর্ষণ করে মেরেছিল।
আয়ান মনে মনে ভেবে নিয়েছে, এইটা হয়তো মেঘলা ছিল।
এরপর তারা জোরে চেঁচামেচি শুরু করছে।কিন্তু তাদের চিৎকার যেন রুমের বাহিরে যাচ্ছে না।
বাড়িতে আরো অনেক লোক আছে। কিন্তু কেউই এখন কোন কথা বলছে না কেন।
তারা এই ব্যাপারটা নিয়ে আরো বেশি চিন্তিত।এদিকে রবি তো কান্না করে দিয়েছে ভয়ে।
আয়ান জোরে জোরে দরজায় লাথি মারতে থাকে, কিন্তু না, দরজাটাও ভাঙছে না।
এটা কেমন পরিস্থিতিতে পড়ল তারা। এদিকে ঝড় ও শুরু হয়ে গেছে।
বাতাসটা ধীরে ধীরে আরো জোরে বইতে লাগলো।
রনি সাহস করে জানালাটা বন্ধ করে দিল।
কিন্তু বন্ধ করে, দুই পা পিছু আসতেই আবার জানালাটা খুলে যায়।আয়ান একটু আওয়াজ করে বলে)
— আরে ভাই, জানালাটা বন্ধ করে আয়।কিসের ভয়, এ…এ…এ.. এখানে কেউ নেই।
( রনি এবার কাঁদতে কাঁদতে জানলার দিকে এগোয়। এমন সময় খেয়াল করে, রনির সামনে মেঘলা দাঁড়িয়ে। মেঘলাকে দেখেই জবান বন্দী হয়ে যায় রনি। তার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। শরীরের শক্তি যেন চলে গেছে। রনি দৌড়ে, পিছু আসবে,তখনি মেঘলা গলা চেপে ধরে রনির অনেক জোরে। গলা চেপে ধরে ফ্লোর থেকে প্রায় দুই হাত উপরে তুলে ফেলে। মেঘলার হাত থেকে ছাড়ার জন্য অনেক জোরাজুরি করে রনি।
কিন্তু কিছুতেই ছাড়াতে পারছে না।
এদিকে বাকি তিনজন ভয়ে অনেক জোরে জোরে চিৎকার করছে।
কিন্তু না, মেঘলা ভয়ঙ্কর হুংকার ছেড়ে ছেড়ে রনির গলা চেপে আছে।
এরপর হঠাৎ করে মেঘলা অদৃশ্য হয়ে যায়। রনি ফ্লোর এর মধ্যে ধপাস করে পড়ে যায়।
আসিফ, রবি, আর রিয়াজ দৌড়ে গিয়ে রনিকে বলতে লাগলো)
–এই রনি, উঠ ( রনির কোন সাড়াশব্দ পাচ্ছে না তারা। আয়ান রনির নাকের মধ্যে হাত দিয়ে দেখে নিঃশ্বাস বন্ধ। রনি মারা গেছে। এমনটা দেখে সবাই ভয়ে পালাবে, নাকি রনির মৃত্যুতে কান্না করবে বুঝতে পারছে না। তারপর হঠাৎ করেই দরজাটা খুলে যায়। তারা তিনজন মিলে দরজা দিয়ে বের হয়ে যায় দৌড়ে।বের হওয়ার পর হঠাৎ খেয়াল করে আসিফ দাঁড়িয়ে গেছে। আসিফ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রবি এবং আয়ান বলল)
–কিরে, দাঁড়িয়ে আছিস কেন। আমরা পালাতে হবে।
(কিন্তু না, আসিফ এর কোন নড়াচড়া নাই। আসিফ নিচের দিকে তাকিয়ে যেন ভয়ঙ্কর হুঙ্কার ছাড়ছে। আয়ান আবার অনেকটাই রেগে যায়। এদিকে অনেক বিপদ, আর আসিফ এভাবে দাঁড়িয়ে আছে কেন। আয়ান আসিফ এর কাছে যেতেই আসিফ আয়ানের পেটের মধ্যে অনেক জোরে আঘাত করে। আয়ান উড়ে গিয়ে প্রায় 10-15 হাত পিছনে পড়ে যায়। তারপর রবি বলল)
— মেঘলা আসিফ এর শরীরে প্রবেশ করেছে।পালা আয়ান ।
( দেখতে দেখতে আসিফ হঠাৎ জোরে একটা চিৎকার দিতে লাগল।
এরপর এমনি এমনি আসিফ গলা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। আবার চোখ দিয়েও রক্ত ঝরছে।
এমন ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে আয়ান এবং রবি নিজেদেরকে কন্ট্রোল করতে পারছে না।
এই বুঝি তারা জ্ঞান হারাবে। তারপর দেখল আসিফ সবগুলো নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যাচ্ছে।
এমনটা দেখে রবি সাথে সাথে বমি করে দেয়।এরপর আবার রকির হাতের চামড়া গুলো ঝরে পড়তে থাকে।
চোখ দুটো হটাৎ আলগা হয়ে পড়ে যায়। এক সময়ে আসিফ ফ্লোরের মধ্যে পড়ে গেছে।
আসিফ পড়ার পরেই তারা খেয়াল করলো,
ওর শরীর থেকে মেঘলা ধোয়ায় পরিণত হয়ে বের হয়ে গেছে।
আয়ান মেঘলার কাছে হাতজোড় করে বলতে লাগলো)
— প্লিজ, আমাদেরকে ছেড়ে দাও। আমরা মানছি আমাদের ভুল হয়েছে। কিন্তু আমাকে ক্ষমা করে দাও। তুমি কি জানো না,আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। আমাকে এমন শাস্তি দিও না প্লিজ। আমি তোমার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাচ্ছি।
(মেঘলা কোন কথা বলছে না। তারপর হঠাৎ করে মেঘলা কান্না করতে লাগল। মেঘলার কান্না করা দেখে রবি এবং আয়ান অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে মেঘলার দিকে। আবার হঠাৎ করে জোরে জোরে হাসতে লাগল মেঘলা। ওর হাসি দেখে আয়ান এবং রবি দুজনেই প্রচুর ভয় পেয়ে যায়। এরপর মেঘলা বললো)
–তোমার মনে আছে আয়ান ..? যখন আমাকে তোমরা ধর্ষণ করেছিলে, তখন আমি তো তোমাকে বলেছিলাম, আমি আমার বাচ্চার দাবি নিয়ে কখনো তোমার কাছে আসব না। কিন্তু তুমি তো আমাকে ছেড়ে দাও নি, তুমি তোমার বন্ধুদের হাতে আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছো। তুমি জানো আয়ান ? আমার কতটা কষ্ট হয়েছিল? আমি ছোটবেলা থেকে এত বড় হয়েছিলাম, জীবনে কোনো কষ্ট পায়নি, যতটুকু কষ্ট আমি সেদিন পেয়েছি। আরে আয়ান ! কি ভুল ছিল আমার। ভালোবাসা কি অপরাধ?
–না মেঘলা, ভালোবাসা অপরাধ না। কিন্তু সত্যি আমি বুঝতে পারিনি আমি কি থেকে কি করেছি। আমি সত্যি এখনো বুঝতে পারছিনা, কিন্তু আমি যা করেছি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর কোনদিন আমি কোন মেয়ের সাথে এরকম আচরণ করব না। আর তোমার সাথে আমি যা করেছি, তার জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি। প্লিজ দয়া করে এবারের মতো আমাকে ছেড়ে দাও। দয়া করো আমাদেরকে। ( এরপর মেঘলা রেগে গিয়ে ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে তাকিয়েছে। মেঘলার রাগের সাথে সাথে বাড়ির ভিতর ও যেন অনেক জোরে জোরে হাওয়া বইতে লাগল।পুরো বাসা যেন থর থর করে কাঁপছে। আান মেঘলাকে বলল)
–এবার থামাও, এরকমটা করোনা। আমাদেরকে ছেড়ে দাও।
— ও আচ্ছা, তুমি বাঁচতে চাও? ঠিক আছে যাও। পালিয়ে যাও। ছেড়ে দিলাম তোমাকে। ( মেঘলার এমন কথা শুনে আয়ান এবং রবি দুজনে খুশি হয়ে যায়… তারপর দুজনই দ্বিতীয় তলা থেকে নিচের তলায় চলে আসে। এরপর যেই তারা দরজা দিয়ে বের হতে যাবে, এমন সময় দরজাটা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। সব গুলো কেমন নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। আয়ান এবং রবি আরো ভয় পেয়ে গেছে। সত্যি কি মেঘলা তাদের ছেড়ে দিয়েছে? হটাৎ টেবিলের উপর ফুলদানিটা কেমন থর থর করে কাঁপছে। আয়ান এবং রবি আবাক দৃষ্টিতে সে দৃশ্যটা দেখছে। হঠাৎ আবার থেমে যায়। তারপর তারা দেখল, মেঘলা তাদের সামনে ভাসমান হয়েছে। ফ্লোর থেকে প্রায় চার হাত উপরে। মেঘলাকে এমন অবস্থায় দেখে আয়ান এবং রবি আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়। এরপর আয়ান বলল)
–তুমি না আমাদেরকে ছেড়ে দিয়েছো? তুমি না বলেছ আমরা চলে যেতে? তাহলে এখন কেন আবার আমাদের আটকানো হচ্ছে।
— তোমার মনে আছে আয়ান? আমি যখন তোমাকে বলেছিলাম, আমাকে ছেড়ে দাও। তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়ে ছিলে ঠিকই, কিন্তু তোমার বন্ধুদের হাতে আবার দিয়ে দিয়েছিলে। এখন তুমি বুঝতে পারছো? বাঁচতে বাঁচতে আবার মৃত্যুর মুখে ঠেলে যাওয়া কতটা কষ্টকর?
— প্লিজ মেঘলা, আর আমাদেরকে কষ্ট দিওনা। আমি বুঝতে পেরেছি আমি কি ভুল করেছিলাম। এবারের মতো তো আমাদেরকে ছেড়ে দাও।
— শাস্তি তো তোমাদেরকে পেতেই হবে।
(এরপর মেঘলা তার হাতের মধ্যে একটি রড ভাসমান করল।
সেটা দেখে আয়ান এবং রবি দুজনে ভয় পেয়ে যায়।
মেঘলা রডটি ছুড়ে মারে রবির কপাল বরাবর।
রবির কপাল দিয়ে রড ঢুকে মাথার পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। সাথে সাথে রবি পড়ে যাবে ফ্লোরে।
এমন অবস্থা দেখে আয়ান ভয়ে কাপতে থাকে।
সে বাঁচার জন্য অনেক জোরে জোরে চিৎকার দিতে লাগলো।
কিন্তু না, বাড়িতে কারো কোন সাড়া শব্দ পাচ্ছেনা।
এটা কেমন ব্যাপার, বাড়িতে কেউ নেই কেন। আয়ান আবার দরজার সামনে থেকে দৌড়ে আর একটা রুমে গিয়ে চুপটি মেরে বসে আছে। দরজাও ভিতর থেকে বন্ধ করে দিয়েছে।
যেনো মেঘলা ভিতরে ঢুকতে না পারে।
দেওয়ালের সাথে মিশে আয়ান বসে বসে কান্না করতে লাগল। হঠাৎ খেয়াল করলো আয়ান পাশে কেউ বসে আছে। আয়ান সে দিকে তাকিয়ে দেখে মেঘলা তার দিকে তাকিয়ে আছে।
এখন মেঘলা অন্যরকম। ওর মুখের মধ্যে একটা মাংস পর্যন্ত নেই। সবগুলো যেন ঝরে গিয়েছে।
এরকম তখন হয়েছিল, যখন তাকে মাটির নিচে পাওয়া যায়।
মাটির নিচে থেকে যেভাবে পচেগলে গিয়েছিলো। ঠিক সেই রুপ নিয়ে বসে আছে মেঘলা।
মেঘলাকে দেখে আয়ান সেখান থেকে 5 হাত দৌড়ে চলে যায়।
এরপর মেঘাল আবার দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে বললো)
— কি আয়ান , আমাকে তো অনেক কষ্ট দিয়েছো। তোমার ও ঠিক সেই ভাবে মরতে হবে।
(তারপর হঠাৎ অদ্ভুতভাবে আয়ানের সামনে আগুন জ্বলে ওঠে।আয়ান ভয় পেয়ে যেনো এবার এমনিই মারা যাবে। মেঘলা তার হাতে আবার সেই রড ভাসমান করলো।রডটি আগুনের মধ্যে দিয়ে গরমে পুরো লাল করে নিয়েছে মেঘলা। এরপর আয়ান আবারো বললো)
— মেঘলা প্লিজ, আমাকে ছেড়ে দাও। আমাকে মৃত্যু ছাড়া অন্য যা কিছু করবে করো।কিন্তু আমাকে মেরে ফেলো না। প্লিজ মেঘলা।
— তোমাকে তো আমি মারবই, ঠিক সেইভাবে, যেভাবে আমি কষ্ট পেয়ে মরে ছিলাম।
( এরপর অদ্ভুতভাবে আয়ানের হাত পা গুলো অবশ হয়ে যায়। আয়ান নড়াচড়া করতে পারছে না।
মেঘলা সামনে এগিয়ে আয়ানের পুরুষাঙ্গের মধ্যে রড ধরে রাখে।
আশান কষ্টে, ব্যথায় অনেক জোরে চিৎকার দেয়।
সে চিৎকার টা এমন ভাবে দিয়েছিল, যদি চিৎকারটা কোন মানুষ শুনতে পেত,
তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার কান ফেটে রক্ত বের হতো। মেঘলা অনেক জোরে জোরে হাসতে থাকে,
হাসতে হাসতে বলে।)
— কেমন লাগছে আয়ান ?
(আয়ান কোন কথা বলতে পারছে না। শুধু কষ্টে চিৎকার করতে লাগলো। মেঘলা রড টি সরিয়ে নেয়।
তারপর মেঘাল, আয়ানের চোখের মধ্যে সেই রড ঢুকিয়ে দেয়।
এবার আয়ান ধরফর করতে করতে সেখানে লুটিয়ে পড়ে মারা যায়।
পরের দিন সকাল হতেই আসিফ বাড়িতে পুলিশ, ইউনিভারসিটির সব ছাত্রছাত্রী এসে উপস্থিত হয়। সবাই দেখল, চারজন চার জায়গায় পড়ে মরে আছে। বাড়িওয়ালাদের জিজ্ঞেস করতে সবাই বলল)
–রাতে তারা এসে রুমের মধ্যে পিকনিক করছিল। আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এরপর আমাদের আর কিছু মনে নেই। সকালে উঠে দেখি পুরো বাড়ির এই অবস্থা।
( এইটা কে করেছে, এই রহস্য কেও খুঁজে পায়নি।কারণ তাদের সাথে কারো কোন শত্রুতা নেই।
তাহলে তাদেরকে এত কষ্ট দিয়ে এভাবে কে মারতে পারে।
পুলিশ কোন সূত্র না পেয়ে তাদের লাশ মর্গে পাঠিয়ে দেয়। অন্যদিকে মিলি মনে মনে বলল)
–আমি জানি এগুলো কে করেছে, সে এসেছিলো,সে তার খুনের বদলা নিয়েছে।
সে আজ মুক্তি পেয়েছে।
( ,একটা মেয়ে যখন কাওকে ভালোবাসে,তখন তার সব কিছুই তাকে মেনে নেয়।
কিন্তু আমরা ছেলেরা কেনো সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের বাচার পথটুকু বন্ধ করে দি।
আমরা তো ইচ্ছে করলেই তাদের জীবন সুখের সাগরে ভাসাতে পারি।
তাহলে কেনো কস্টের সাগরে ভাসাই তাদের। সব ছেলেদের বলছিনা।যারা এসব করেছেন,
তারা দয়া করে এসব থেকে পিরে আসুন।আর বাকিরা প্লিজ,এসবে কখনো ঝড়াবেন না।
বুঝুন,মেয়েটির জায়গায় আপনার বোনকে বসিয়ে দেখুন।অনুভূতিটা ঠিকই বুঝতে পারবেন।
**সমাপ্ত**

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com