Breaking News

অদ্ভুত বাসর রাত । পর্ব -০৭

আবির কিছু বলার চেষ্টা করছিলো কিন্তু কিছু বলার আগেই এক লাথি দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিলো।
আবিরকে ফেলানোর সময় নীলার একদম ভয় লাগলো না।
কারন সে তার শত্রুকে বিনাশ করে দিয়েছে।তবে তার মনের ভিতর ভয় জেগে উঠলো।
যে কেও এই বিষয় টের পেয়ে যেতে পারে তাই তাকে তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যেতে হবে।
হঠাৎ খেয়াল করলো তার মাথা ঘেমে গিয়েছে।
ঘাম মুছতেই হাতে আবিরের রক্ত লেগে গেলো।
পরক্ষণেই আবিরের কথাটা তার বেশ মনে পড়লো।
যতই সে খারাপ হোক কিন্তু তার একটু কষ্টের কারন হয়ে উঠেনি।
এখন সে রাহাতের এর কাছে যাবে কারন আগে থেকেই সে রাহাতকে জানিয়ে রেখেছে।
কিন্তু সে জানতো না রাহাত আজ তাকে ছেড়ে যেতে এসেছে।
পা টা এগোতেই হঠাৎ পায়ে কিছু একটার আঘাত পেলো।
তাকিয়ে দেখে একটা চিঠি মোড়ানো রয়েছে।
চিঠিটা হাতে নিয়ে খুলতেই সে বেশ অবাক হলো কারন চিঠির ভিতর রয়েছে একটা হিরার আংটি।
সেটা দেখে নীলা অবাক হয়ে যাই।চিঠিটা খুলে পরতে শুরু করল।

প্রিয় নীলা,,

জানি তুমি আমাকে একদম ভালোবাসোনা।
কিন্তু আমি জানি তুমি একদিন অবশ্যই আমাকে ভালোবাসবে।
গিফট টা তোমার জন্য।আমি শুনেছি রাতে তুমি তোমার প্রেমিকের কাছে এটা বায়না করেছিলে
কিন্তু সে তোমাকে দিতে পারেনি।তাই আশা করি এটা তুমি গ্রহন করবে।
জানি তুমি আজকে হইতো আমাকে,,,,আর কিছু চিঠিতে পেলোনা সে।ধপাস করে ফ্লোরে বসে পড়লো।
অদ্ভুত ভাবে ভাবতে শুরু করলো তাহলে কি আবির??
না এটা কিভাবে হতে পারে সে,তো আমার সামনেই আমাকে মারার প্লান করেছিলো।
হইতো আজকে রাতে এভাবে গিফট দিয়ে বোকা,বানানোর চেষ্টা করবে ভেবেছিলো।
সে আবার আবিরকে দোষ দিয়ে আর সেখানে দাড়ালো না।
চুপিচুপি রুম থেকে ব্যাগ নিয়ে রাতের আধারে বেরিয়ে পড়লো।
নির্জন রাতে একটা মেয়ে তার স্বামীকে শুধু একটা সন্দেহের কারনে খুন করলো।
অন্যদিকে ছাদ থেকে পরে গিয়ে ওখানেই নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে লাগলো আবির।
কিন্তু ভাগ্য ক্রমে সেখান দিয়ে কয়েকজন লোক যেতেই আবিরকে দেখে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাই।
নীলা একটা গাড়ি করে বেশ সাজুগুজু করে রাহাতের এর বাসাই যেতে লাগলো।
রাহাত বুদ্ধি করে তার বউকে তার বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।
বাড়িটা আগে থেকেই রেডি করে রেখেছে কারন সে নীলার দেহ টা ভোগ করার জন্য আর সইতে পারছিলো না।

নীলার হাত পা একদম ঠান্ডা হয়ে আসছিলো।
কখনো নিজে হাতে খুন করেনি কিন্তু খুনিদের চেয়েও বেশি পাষান।
অটো থেকে নেমে রাহাতের এর বাসাই যেতে লাগলো।
তাড়াতাড়ি গিয়ে কলিং বেল চাপতেই রাহাত বিছানা,
থেকে নেমে দরজা খুলেই নীলাকে জরিয়ে ধরলো।
ব্যাগটা ফেলে দিয়ে নীলাকে উচু করে বিছানাই ফেলে দিলো।নীলার তখন ইনজয় করার কোন ইচ্ছাই নেই তবুও প্রেমিকের কাছে কিছু বলতে পারলো না।
রাজ এসেই নীলার শাড়িটা খুলে ফেললো।নীলার ঠোট কামড়ে ধরে নীলাকে একদম বস্থহীন করে ফেললো।

মেয়েদের কি সভাব??হইতো সব মেয়েরাই এমন।তাদের ইচ্ছামতো যা খুশি তাই করতে পারে।
একজনের দেহ নিয়ে আরেকজনকে দেহ প্রদান করছে।
বেশ উত্তেজিত হয়ে রাহাত নীলাকে ভোগ করতে লাগলো।আজকে নীলার কোনো ফিলিংস না দেখে,,,
-কি হলো বেবি?আজকে এতো রাতে ফোন দিয়ে বললে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে অথছ এসেই মুখ গোমড়া করে আছো।

 রাহাত আমি আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছি।হঠাৎ এই কথা শুনে রাহাত বেশ ভয় পেয়ে গেলো।কারন প্রথম থেকেই সে নীলার ভিতর একটা ভয় কাজ করতে দেখেছে তাই কথাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নিলো।তাড়াতাড়ি করে বিছানা থেকে উঠে পড়লো।নীলার দিকে বেশ অবাক হয়ে গেলো।
 কিহ? নিজের স্বামীকে খুন করেছো??

 হ্যাঁ।আবিরকে আমার একদম ভালো লাগেনা।তাই তোমার কাছে চলে এলাম।
সেই ছেলের ছবি আছে??নীলা মোবাইল বের করে ছবি সামনে ধরতেই নীলা বিছানা থেকে এক লাফ দিয়ে উঠে পড়লো।ছবিটা দেখামাত্র রাহাতের এর গলা শুকিয়ে গেলো।
 কি কি কি তু তু মি একে মেরেছো??
হ্যাঁ রাহাতকে,মেরে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছি।
 নী নী নীলা তুমি কি আবিরকে কে চি চিনো????
 তুমি এভাবে কথা বলছো কেন?? ও তো একটা মদনের চেয়েও বেশি মদন।
ভুল দেখেছো তুমি ওকে।(চিৎকার দিয়ে)রাহাতের এর চাল চলন দেখে নীলা রাহাতের এর কাছে গিয়ে দাড়ালো।

 কি হয়েছে রাহাত তুমি আবিরকে দেখে এমন ভয় পাচ্ছো কেন?? কে ও??নীলার কথা শুনে রাহাত টেবিল থেকে এক গ্লাস জল টপটপ করে গিলে ফেললো।জানালার পাশে গিয়ে দাড়ালো বেশ উদাস হয়ে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে,,,,
 নীলা এই ছেলেটার যে বর্ণনা তুমি দিলে সেটা পুরোপুরি ভুল।তুমি যা শুনেছো যা দেখেছো সেটার একটাও সত্য নয়।এ হলো সেই আবির যাকে দেখে এই পুরো শহরের মানুষ ভয়ে থরথর করে কাপে।জানতেও চাও ওর আসল পরিচয়???,
দু বছর আগের ঘটনা যখন আমি ওর দলের সাধারণ একজম কর্মচারির চাকরি করতাম।বাবার থেকে পুরো ক্ষমতা হাতে পেয়ে পুরো শহরটা সে তার হাতের মুঠোই করে নিয়েছিলো।খুন করাটা তার প্রতিদিনের একটা রুটিন ছিলো।অফিস থেকে দোকান সবাইকে তার জন্য কর দিতে হতো।কিন্তু আবির তার মা কে খুব ভালোবাসতো।হঠাৎ একদিন,,,,,

মা মা কোথায় গেলে তাড়াতাড়ি আসো।এই পাঞ্জাবী টা পড়তে পারছি না।
তুই কবে বড় হবি বলতো??আজকে তোর জন্য মেয়ে দেখতে যাবো অথছ পাঞ্জাবী এখনো গায়ে দিলিনা।
—- মা তুমি পড়িয়ে দাও।হইতো তার মায়ের থেকে এটাই তার শেষ ডাক ছিলো।সেদিন আমি বাড়িতে তাদের জন্য গাড়ি ঠিক করেছিলাম।যেখানে সে আমার বস ছিলো।ভাগ্যক্রমে বস এর গাড়ির ড্রাইভার এ আমাকে নেওয়া হয়।গাড়িতে উঠার আগে সবাইকে কতো খুশি দেখেছিলাম।কিন্তু সবারি শত্রু থাকে যারা সুযোগ পেলেই সেটা ব্যবহার করে।গাড়িটা যখন রাস্তাই বেরিয়ে পড়ে যখন শত্রুরা পথে বোম ঠিক করে রাখে আর সেই বোমটা বস এর গাড়িতে না লেগে তার মায়ের গাড়িতে ব্লাস্ট হয়।আমি সেদিন দেখেছিলাম বস এর কান্নাটা।যেটা দেখে আমিও বুঝেছিলাম যে যত বড়ই সন্ত্রাসী হোক না কেন তারা তাদের মা বাবাকে খুব ভালোবাসে।সেদিন থেকেই বস পুরোটা বদলে যাই।যদিও সেখানে পুরোটা দোস ছিলো পাত্রি পক্ষের।কারন তারা যদি এই সময় টা না ঠিক করতো তাহলে তাদের জীবনে এমন টা কখনোই ঘটতো না।,,কথাটা নিরিবিলি রাহাত বলে যাচ্ছে আর নীলা বিছানাই বসে চুপ করে শুনছে।সে বুঝতে পেরেছে সেদিন তারা তাকেই দেখতে গিয়েছিলো কিন্তু সে শুনেছে তাদের নাকি এক্সিডেন্ট হয়েছে।কথাটা শেষ করে রাহাত নীলার সামনে দাড়িয়ে পড়লো।

নীলা এতো গুলো কথা তোমাকে বলার একটাই কারন।সেটা হলো আমি তোমাকে মেনে নিতে পারবো না।কারন আমারো একটা সংসার রয়েছে আর আমি আমার বউকে খুব ভালোবাসি।তোমার সাথে তো শুধু টাইমপাস করতাম।আর তুমি এখন একটা খুনি তাই,তোমাকে মেনে নেওয়া অসম্ভব।রাহাত এর কথা শুনে নীলার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।কারন তার রাহাত কে ছাড়া ভরসা করার মতো কেও নেও।যার জন্য এতোকিছু করলো সেই এখন এই রকম প্রতারণা করলো??নীলা দৌড়ে গিয়ে,,,
কি বলছো এসব?? তোমাকে ছাড়া আমি যাবো কোথাই??
জানিনা তবে আজকে তোমাকে এই কথা বলার জন্য আমি বাসাই ডেকেছিলাম।আর যে নিজের স্বামীকে খুন করতে পারে সে একদিন আমাকেও তো মেরে ফেলতে পারে।
রাহাত তুমি এটা করতে পারোনা।(কান্না করতে করতে)

দেখ নীলা তোমাকে সুন্দর ভাবে বলছি এক্ষুনি তুমি আমার বাসা থেকে বের হয়ে যাবে।
নাহলে আমি কিন্তু ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবো।আর হ্যা শুনো,,
তোমার ভিতর শুধু অহংকার এ ভরতি যার কখনো সুখি হতে পারোনি।
নীলা কেঁদে কেঁদে রাহাতের এর পা ধরতে লাগলো
কিন্তু রাহাত নীলাকে বাসা থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলো।
বাসা থেকে পড়তেই মাথাই আঘাত লাগতেই চিৎকার দিয়ে উঠলো।
সে বুঝতে পেরেছে আবির তাকে কতোটা ভালোবাসতো।তাহলে ফোনের ব্যাপারটা???
কে সে ফোন ওয়ালা আর তাকে আবির কেন বারবার হাসপাতাল নিয়ে যেতো??
তাকিয়ে দেখে বাসা থেকে ফোন আসছে সে বুঝতে পেরেছে ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু তাকে জানতেই হবে হসপিটালের সাথে তার কি সম্পর্ক??
যেটা তাকে একমাত্র সেই ডাক্তার ওই দিতে পারে।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com