Breaking News

গল্পটা ভালোবাসার । পর্ব -০২


ভাইয়া এতো মানুষের ভিতরে কিভাবে জামাকাপড় খুলবো?(মাথা নিচু করে)
—কিহ জামাকাপড় খুলতে যাবেন কেন?(আবির)
—আপনি তো নিজেই বললেন তাদের সবকিছু খুলে দেখাতে হবে।নীলিমার কথা শুনে আবির কিছুক্ষন নীলিমার দিকে তাকিয়ে থাকার পর খুব জোরে হাসতে শুরু করলো।পাশ থেকে জলের বোতলটা তার দিকে এগিয়ে দিলো।নীলিমা জলটুকু মুখে দিতেই,,
—নীলিমা তোমাকে আমি ঐ রকম খারাপ কিছু বলিনি।আমি জানতে চাইছি তোমার সাথে এমন কি ঘটেছে যেটার জন্য তুমি দেহ বিক্রি করবে?নীলিমা আবিরের কথাই খমকে দাড়ালো।হটাৎ এমন একটা প্রশ্ন শুনে তার ভিতরটা কেমন যেন একটা অস্থিরতার কাজ করছিলো।
—তেমন কিছুনা।আমার এটি পছন্দ হয়ে তাই।
—তোমার পছন্দ হলে তো হবে না।আচ্ছা এটা বলো তুমি কয়জনের সাথে রাত কাটিয়েছো?
—অনেকের সাথে(চোখ ভরা জল নিয়ে)
—কতজন তোমাকে টাকার বিনিময়ে ভোগ করেছে?
—শতশত লোক(হাতদুটো শক্ত করে চেপে রেখে)
—তোমার সাথে কি কখনো একসাথে একধিক কেউ মিলন করেছে?এবারের কথাটা শুনে নীলিমা আর কান্নাটা চেপে রাখতে পারলো না।চুপিচুপি কান্নাটা তার বেড়ে গেলো।ভাবতেও পারেনি তাকে এভাবে এতোটা নিচু হতে হবে।নিজের চোখদুটো মুছে নিজেকে ঠিক করে নিলো নীলিমা।
—দেখুন আপনি আমাকে এভাবে অপমান করতে পারেন না।আমি যার সাথে থাকি না কেন তাতে আপনার কি?(ফুফিয়ে ফুফিয়ে)
—তাহলে মিথ্যা বলছেন কেন?সত্যিটা বলুন?
—আপনার কাজ আমাকে ট্রেনিং দেওয়া এর বেশী কিছু কেন জানতে চাইবেন?
—এটা আমাকে জানতেই হবে।আমি কখনো কাউকে বিনা কারনে তার পবিত্রতা নষ্ট করাতে পারিনা।
—আমি ট্রেনিং নিতে রাজি তবুও কিছু বলতে পারবো না।আবির হতাশ হয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।এতোকিছু বলার পরেও কেন মেয়েটি তার মিথ্যা কথাগুলো স্বীকার করছিলো না?এবার তাকে একটু বেশি খারাপ হতে হবে।
—নীলিমা ধরো তোমাকে আমি কারো সাথে পাঠালাম তখন হঠাৎ তার সাথে যাবার পর তোমার কিছু হয়ে গেলো তখন আমার কি হবে?কথাটা শুনে নীলিমা কিছু বলছে না।তাকে আর কতো অপমান সহ্য করতে হবে?এই ছেলেটা তাকে কেন এতো প্রশ্ন করছে?চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে একটা নিরব গাছের নিচে চলে গেলো।চোখটা বন্ধ করে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে রইলো।আবির নীলিমার পাশে গিয়ে তার মায়াবী মুখটা দেখতে লাগলো।মেয়েটা কেন এতো মায়াবী?চুপ করে সে ওর পাশে বসে পড়লো।
—আপনি জানতে চান না আমি কেন এমন?তাহলে শুনুন ঘটনাটা,,,আমি নীলিমা।এবার অনার্সে পড়াশোনা করছি।পিতাবিহিন একটা ছোট্ট পরিবারে আমার জন্ম।মা এ হলো আমার সব।টিউশনির টাকা দিয়ে আমাদের কষ্টের সংসারটা খুব সুন্দরভাবেই কেটে যেতো।কিন্তু কথাই আছেনা গরীবের ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরাই।ঠিক তেমনি একটা অসহ্য রোগ আমাকে বাচিয়ে রাখতে চায়না।আমার মাথাই প্রচন্ড ব্যথা করে যেটা কখনো সাড়াতে পারিনি।টাকা পয়সা নেই বলে কোনদিন হসপিতালে যেতে পারিনি।কোনরকম বাচার জন্য বাড়ির পাশের একটা দোকান থেকে 2 টাকার ব্যথার বড়ি কিনে খেতাম।কিন্তু সেই দোকানদার খুব খারাপ ছিলো।সবসময় আমাকে খারাপ নজরে দেখতো।হটাৎ.কথাগুলো বলতেই থেমে গেলো সে।আবির নীলিমার থেমে যাওয়াতে খেয়াল করলো মেয়েটি তার বুক ভিজিয়ে দিয়েছে।হাতদুটো সে নিজেই ধরে রেখেছে।তার মনে হচ্ছিলো মেয়েটি যেন তার কাছে অভিমান করছিলো।রুমাল বের করে চারুর চোখদুটো মুছে দিয়ে আবারো তার বুকে রেখে দিলো।
—তারপর কি হয়েছিলো?
—হঠাৎ একদিন সন্ধাই আমার মাথাটা প্রচন্ড ব্যথাই কাতর হয়ে যাই।অনিচ্ছা সত্বেও আমি ওই দোকানে চলে যাই।খুব ভয় করছিলো কিন্তু আমি তখন নিরুপাই ছিলাম।ধীরে ধীরে দোকানে গিয়ে দেখি দোকানটা একদম ফাকা।দোকানদার আমাকে দেখেই চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছিলো কিন্তু পরক্ষনেই বললো তার কাছে নাকি ঔষুধ নেই।আমার তখন মাথাই কাজ করছিলো না।আমি তখন যেকোন ব্যথা কমানোর ওষুধ চাইতেই সে বললো একটা ওষুধ আছে।আমি চাইতেই সে গ্লাসে মিশিয়ে দিলো।কিন্তু সেটি খাবার পর হঠাৎ করেই আমি মাটিতে পড়ে বেহুশ হয়ে গেলাম।আবির নীলিমার কথাগুলো শুনার পাশাপাশি তার চুলগুলো ঠিক করে রাখছিলো।সে নীলিমার শরীরের কাপুনিটা টের পাচ্ছিলো।এই শীতেও নীলিমার শরীরের প্রচন্ড জ্বর এর আভাস পাচ্ছিলো।ফোলা ফোলা লাল চোখদুটোর দিকে তাকিয়ে আবারো সে নীলিমার কথাই মনোযোগ দিলো।
—বেহুশ হবার পরে আমি বুঝতে পারিনি কি হয়েছিলো আমার সাথে।আমি যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন নিজেকে আবিষ্কার করলাম একটা ঘরে।কিন্তু পরক্ষনেই নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।নিজের শরীর শুধু একটা চাদর দিয়ে ঢাকা ছিলো।তখন নিজেকে শেষ করার অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।যখন নিজের ইজ্জতটুকু রাখতে পারলাম না তখন ভালো সেজে লাভ কি?
নীলিমার মুখ দিয়ে আর কিছু বেরোলো না।এদিকে শেষ কথাগুলো শুনে আবির নিজের চোখের কোনার পানিটুকু মুছে নিলো।সে বোঝেনা কি করে মানুষ এতো খারাপ হতে পারে?একটা মেয়েকে কিভাবে ভোগের পাত্র বানিয়ে নেই।নীলিমার ব্যথাগুলো সে বুঝতে পেরেছে।কিছুক্ষন দুজনেই চুপ করে রইলো।নীলিমাকে বুক থেকে সরিয়ে দাড়িয়ে পড়লো।তার মনে হলো নীলিমার এখন একটা মানুষের ভালোবাসা প্রয়োজন।তবে নীলিমাকে তার আসল পরিচয় বুঝতে দেওয়া যাবেনা।
—নীলিমা তুমি অবশ্যই পারবে শুধু তুমি নিজের উপর বিশ্বাস রাখো।
—আচ্ছা ভাইয়া তাহলে কি আমাকে নিবেন?(চোখমুখ মুছতে মুছতে)
—হ্যাঁ তুমি এখন আমার সাথে একটু ঘুরে আসবা।
—কোথাই যাবো?
—তোমাকে কিছু পরিবেশের মেয়েদের দেখাবো তারপর তোমাকে আমার বাসাই নিয়ে যাবো।
—কিন্তু…..
—কোনো কিন্তু না তবে এখানে এভাবে একলা একটা ঘুরবে ন।তাহলে বিপদ হতে পারে।এই নাও আমার হাতে হাত রাখো।হাতটা ধরবো কি না?কথাটা ভাবতেই নীলিমার মনে পড়ে গেলো তাকে সবাই ছুতে পারবে তাহলে হাতটি ধরলে কি এমন হবে?কাপাকাপা হাত দুটো অনিচ্ছা সত্তেও আবিরের হাতে রেখে সামনে এগোতে শুরু করলো।হাতদুটো আবিট চেপে ধরতেই নীলিমা কেমন যেন একটা শিহরন অনুভব করলো।আবিরের চোখদুটো তার মনে একটা আশার আলো খুজে দিয়েছে।পথে হাটছে অথচো তাদের দুজনেরই মনে হচ্ছে না তারা এভাবে একসাথে অপরিচিত হয়েও চলছে।নীলিমার হাতের আঙুলগুলো আবির ইচ্ছে করেই তার আঙুলের মাঝে ঢুকিয়ে নিলো।মুচকি হাসি দিয়ে সে নীলিমার দিকে তাকাতেই নীলিমা লজ্জাই মাথা নিচু করে নিলো।দুজনেই খুশি মনে সামনে এগোতেই রইলো।আবির একটু দুষ্টামি করে নীলিমার হাতগুলো বারবার একবার এদিক আবার ওদিক করছে।কিছুক্ষন হাটার পর নীলিমার কথাই আবির বাস্তবে ফিরে আসে।
—ভাইয়া দেখুন ওই খানে কি হচ্ছে?
—কি হচ্ছে?
—দেখুন মেয়েটার চারপাশে দাড়িয়ে ছেলেরা ডিস্টার্ব করছে।ওরাতো মেয়েটার ওড়নাটা.,,
চলবে

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com