বিশ্বাসঘাতক। পর্ব - ০৯
আবির সিগারেট টা ফেলে দিয়ে হাতে ব্লেড নিয়ে ঘরের দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা মারলো। নীলা বিছানা থেকে নেমে এসে দরজা খুলে দিতেই দেখলো নীল।নীল বলল
– এতক্ষন লাগে দরজা খুলতে?নীলা নীলের কথা শুনে সাথে সাথে নিজের মুখ চেপে ধরলো। কারন নীলের মুখ থেকে খুব বাজে গন্ধ বের হচ্ছে আর যেটা সহ্য করতে পারছে না নীলা। নীলা বলল.
– নীল তুমি ড্রিংক করেছো?
– হ্যাঁ করেছি তো? শুধু ড্রিংক নয় সিগারেট ও খেয়েছি!নীলের কথা শুনে নীলা কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। নীলা বলল
– এসব কোন ধরনের অভদ্রতা নীল? আজ আমাদের ফুলসজ্জা আর তুমি এসব কি শুরু করেছো? ছি কি দুর্গন্ধ বের হচ্ছে তোমার মুখ থেকে!
– তোমার কাছে দুর্গন্ধ হতে পারে কিন্তু আমার কাছে এটা সুগন্ধ।.নীলের কথাবার্তা শুনে নীলা এতটাই অবাক হয়েছে যে বিশ্বাস করতে কস্ট হচ্ছে। যে ছেলেটা ড্রিংক কখনও করেনা আর সে আজকের মত একটা দিনে ড্রিংক করছে।আবির ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে নীলাকে বিছানার মধ্যে শুয়ে দিলো আর নীলা কে বিছানার মধ্যে উপুর করে চেপে ধরলো।.
নীলা বুঝতে পারছে না এখন কি হতে চলেছে।তারপর আবির ব্লেড টা বের করে নীলার পিঠের নিচে কাপড় টা সরিয়ে ব্লেড দিয়ে কাটতে লাগলো। টপটপ করে রক্ত পড়ছে পিঠ বেয়ে। নীলা ব্যাথায় চিৎকার করতে লাগলো আর বলল.
– নীল প্লিজ স্টপ দিস! কি পাগলামি শুরু করেছো। আমি তোমার স্ত্রী আমার সাথে কেনো এমন করছো?
– আমি তো জানি নীলা তুমি আমার স্ত্রী। আমি যে তোমাকে খুব ভালোবাসি আর সেই জন্যই তো এমন করছি!
– এটা কোন ধরনের ভালোবাসা নীল? রক্ত ঝরিয়ে কখনও ভালোবাসা হয় না!
.নীলার চিৎকার আবির সহ্য করতে পারছে না। তাই কাপড় দিয়ে নীলার মুখটা বেধে ফেলল আর ব্লেড দিয়ে নীলার পিঠ টা ক্ষত বিক্ষত করতে লাগলো। আবিরের চোখ থেকে টপ টপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে। চোখের পানি গুলো নীলার শরীরের রক্তের সাথে মিশে যাচ্ছে। আবির ব্লেড চালানো বন্ধ করে মোবাইলটা দিয়ে একটা ফটো তুলল। তারপর নীলা কে ছেড়ে দিলো আর মুখের বাঁধন খুলে দিলো। নীলাকে ফটোটা দেখিয়ে আবির বলল,
– দেখো নীলা দেখো আমি তোমাকে কত ভালোবাসি?নীলা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। সেখানে লেখা i love you। আবির বলল…
– দেখেছো তোমায় কতটা ভালোবাসি। আর এই ভালোবাসা প্রমান করার জন্য তোমার পিঠে একটা চিহ্ন রেখে দিলাম।
… নীলা ফুলসজ্জার রাতে নীলার কাছ থেকে এমন কিছু মোটেও আশা করেনি। নীলা পিঠ ব্যাথায় জ্বলে যাচ্ছে। কিছুক্ষন পর আবির এসে নীলার কাটা স্থানে তুলো দিয়ে ভালো করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। আর বলল.
– অনেক কস্ট পেয়েছো এখন ঘুমাও অনেক রাত হয়েছে?.কথাটা বলেই আবির ঘর থেকে বের হয়ে আবার ছাদে গিয়ে সিগারেট ধরালো। আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো। কারন সে আজ তার ভালোবাসার গায়ে আঘাত করেছে। একদিক দিয়ে আবির নিজেকে শক্তকরে বলল, বেশ করেছি আমি আমার সাথে ঘটে যাওয়া সব কিছুর প্রতিশোধ নিচ্ছি। তারপর চোখ মুছে আবার ঘরে গেলো আবির।.
আবির ঘরে গিয়ে দেখতে পেলো নীলা কাঁদছে। আবির এতক্ষনে নীলাকে খুব ভালো করে দেখলো, লাল শাড়ী পরেছে, হাতে অনেকগুলো চুড়ী, চোখে কাজল, আর বেশ সুন্দর সুন্দর অলংকার পরিধান করেছে। সব মিলিয়ে নীলাকে সুন্দর লাগছিলো। আবির একটা জিনিস খুব ভালো করে লক্ষ্য করলো আর তা হলো নীলার চোখের কাজল। কাজল গুলো চোখের জলে কেমন ধুয়ে যাচ্ছে। আবির বিছানায় উঠে শুয়ে পড়লো নীলার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের জল গুলো মুছে দেবার জন্য হাত বাড়ালো আর অমনি নীলা বলল.
– খবরদার তুমি আমাকে ছুবে না? এতদিন আমার পিছনে ঘুরে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে ছিলে আর আজ আমি তোমার আসল চেহারা দেখতে পাচ্ছি।
– কি দেখতে পাচ্ছ তুমি?
– দেখতে পাচ্ছি আমার সামনে একটা পশুকে যে কিনা ফুলসজ্জার রাতে তার স্ত্রীকে ব্লেড দিয়ে রক্তাক্ত করে।
.আবির কিছু না বলে জোর করে নীলার চোখের জল মুছে দিলো। আর নীলাকে নিজের বুকের মধ্যে জরিয়ে রেখে ঘুমাতে চেস্টা করলো কিন্তু নীলা বার বার নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো আবিরের কাছ থেকে।আবির ও আর জোর করলো না। পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো ।.
সকাল বেলা নীলা ঘুম থেকে উঠে ব্যাগ গোছাতে লাগলো। নীলা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো যে সে আর নীলের কাছে থাকবে না।ভুল করেছে নীলকে বিয়ে করে।ব্যাগটা গোছানো শেষ করে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবে, সেই সময়ে আবির ঘুম থেকে উঠে নীলার হাত টেনে বলল,
– কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি?
– আমার যেখানে ইচ্ছে আমি সেখানে যাবো তাতে তোমার কি? আমি থাকব না তোমার সাথে আমি আমার বাবা মায়ের কাছে চলে যাবো।
,নীলার কথাগুলো একমনে শুনলো আবির। নীলার হাত টা ছেড়ে দিয়ে দুই গালে দুইটা করে মোট চার টা ঠাসস ঠাসস করে থাপ্পর বসিয়ে দিলো। নীলা গালে হাত দিয়ে অশ্রুভেজা চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে নীলের দিকে। আবির বলল,
– এটা তোমার বাবার বাড়ি না। এটা হলো তোমার স্বামির বাড়ি। আর এই বাড়িতে আমি যা বলব তাই হবে। ব্যাগ রেখে এখুনি রান্না ঘরে চলে গিয়ে সকালের নাশতা তৈরি করো। মনে রেখো যদি একটু এদিক ওদিক হয় তাহলে এর পরিনতি খুব ভয়াবহ হবে!,নীলা ব্যাগ রেখে কাঁদতে কাঁদতে রান্না ঘরে চলে গেলো। আর খাবার জন্য রুটি বানাতে লাগলো। নীলা আল্লাহকে বলল,হে আল্লাহ আমার সাথে এমন কেনো হচ্ছে?আমি আর নিতে পারছি না। তুমি আমাকে তোমার কাছেই তুলে নাও?,নীলার দেড়ি হচ্ছে দেখে আবির জোরে চিৎকার দিয়ে বলল,
– কি হচ্ছে টা কি? এতক্ষন লাগে নাশতা বানাতে তারাতারি নিয়ে এসো?আবিরের কথা শুনে নীলা তারাতারি নাশতা বানিয়ে আনলো। আবির বলল,
– খাইয়ে দাও?
– কেনো তোমার হাত নেই নিজে খাও?নীলার কথা শুনে আবির নীলার দুই গালে দুইটা হাত রেখে খুব নরম সুরে বলল
– তুমি যদি এখন আমাকে খাইয়ে না দাও তাহলে কি করবো জানো? তোমার শরীরের সমস্ত জামা কাপড় খুলে তোমাকে এই বাড়ি থেকে বের করে দিবো।তখন কেমন লাগবে বলতে পারো,আবিরের কথা শুনে নীলা ভাবতে লাগলো এই ছেলের উপর কোন বিশ্বাস নাই। এমনটা করতেও পারে তার চেয়ে বরং যা বলছে তাই করি। নীলা নিজে হাতে আবিরকে খাইয়ে দিতে লাগলো। আর আবির খেতে লাগলো। আজ অনেকদিন পর নীলার হাতে খাচ্ছে আবির। আবিরের চোখ থেকে পানি বের হচ্ছে মনে পরে যাচ্ছে সেদিনের কথা যেদিন আবিরের শরীরে খুব জ্বর ছিলো কোনভাবেই আবির খেতে চাচ্ছিলো না পরে নীলা জোর করে খাইয়ে দেয় আবিরকে।,
আবিরের কান্না দেখে নীলা মনে মনে বলে
– গুন্ডা, সাইকো বদমাইস একটা, আবার কান্নাও করা হচ্ছে।,আবির খাওয়া শেষ করে নীলাকে বলল
– তুমি খেয়ে নাও?নীলা কথা না বারিয়ে খেয়ে নিলো। আবির রুমে এসে নিজে নিজে বলতে লাগল, আমি কি নীলার সাথে এমনটা আচরন করা ঠিক করছি? পরক্ষনে আবার ভাবলো হ্যাঁ আমি ঠিক ই করছি।,নীলা খাওয়া শেষ করে রুমে আসতেই তার মোবাইল টা বেজে উঠলো দেখলো তানিয়া কল করেছে ফোন ধরলো নীলা। তানিয়া বলল
– কিরে ফুলসজ্জা কেমন হলো?তানিয়ার কথা শুনে ইতু অনেক কস্টে কান্না আটকে বলল.
.- ভালো খুব ভালো। আচ্ছা আমি এখন রাখি পরে ফোন দিবো।,সাথে সাথে কল কেটে দিলো নীলা আর কান্নায় ভেঙে পরলো। পিঠ টা এখন ও ব্যাথা করছে নীলার। আর বিয়ের জামা কাপড় গুলো পড়ে আছে এখন ও। আবির নীলাকে বলল,
– শুনো বাথেরুমে গিয়ে স্নান করে কাপড় চেঞ্জ করো। এক কাপড়ে কতক্ষন আর থাকবে?
– সেটা আমার ব্যাপার আমি এক কাপরে কতক্ষন থাকব কি থাকব না।নীলা কথা শুনে আবিরের মেজাজটাই বিগড়ে গেলো। আবারো বলল
– নীলা যাও স্নান করো?নীলার জেদের বসে বলল
– না করব না স্নান কি করতে পারবে তুমি? মারবে আমাকে মারো মেরেই ফেলো আমাকে? (কাঁদতে কাঁদতে বলল)
– নীলা আই এ্যাম সরি! তোমার সাথে এমন করাটা আমার ঠিক হয়নি প্লিজ।
– রাখো তোমার সরি! এই তোমার ভালোবাসা? বিয়ের আগে কুত্তার মতো আমার পিছনে লেগে ছিলে আর বলতে খুব ভালোবাসি। আর এখন রাক্ষসের মতো আচরন করছো। আমি জানতাম না যে তুমি এমন হবে শুধু মাত্র বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তোমার মতো একটা পশুকে বিয়ে করেছি!,নীলার যখন আবিরকে পশু বলে আখ্যায়িত করলো তখন আবিরের খুব খারাপ লাগলো আর বলল
– তুমি আমাকে ভুল ভাবছো আসলে আমি প্রতি…..আবির প্রতিশোধ কথাটা বলতে গিয়ে থেমে গেলো আর ভাবলো এ আমি কি করছিলাম। এখুনি তো সব শেষ করে ফেলছিলাম। নীলা বলল,
– কি বলতে চাচ্ছিলে?
– না কই কিছু না। তুমি যাও ফ্রেস হয়ে নাও?
– কতবার বলব যে এসব আমি করতে পারব না। কথা কানে যায় না তোর?,
নীলার কথা শুনে এবার আবির বিছানা থেকে উঠে নীলার কাছে চলে গেলো।
নীলার শাড়ীটা একটা টান মেরে খুলে ফেলল।
নীলা নিজেকে ছাড়ানোর চেস্টা করলো কিন্তু পেরে উঠলো না।
এক এক করে নীলার শরীরের সমস্ত কাপর খুলে ফেলল
আর নীলার চোখ বেঁধে নীলাকে ধর্ষন করলো আবিরের শরীর যাতে দেখতে না পায়
তাই আবির নীলার চোখ বেঁধে ফেলে।
আবিরের শরীরের কাটা দাগ গুলো নীলা দেখলে বুঝে যাবে সে আবির।
আবির নীলাকে ছেড়ে দিয়ে জামা প্যান্ট পড়ে নীলার চোখের বাঁধন খুলে দিল।
নীলা নিজেকে খুব অসহায় ভাবছে নিজেকে। জোরে কান্না শুরু করলো নীলা।
এমনটা করবে তা মোটেও জানা ছিলো না নীলার।আবির বলল…,
– দেখি এবার কি করে স্নান না করো?,আবিরের কথার আর কোন উওর দিলো না নীলা।
আবির ঘর থেকে চলে গেলো ছাদে।নীলা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো।
নীলা নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।
আজ নীলার সব শেষ তাই আর বেঁচে থাকতে চায় না।তাই সুইসাইড এটেন্ড করার জন্য তৈরী হলো নীলা।,
আবির ছাদে গিয়ে সিগারেটে টান দিতে থাকলো। পকেটের ভিতর মোবাইল টা বেজে উঠলো।
আবির বিরক্তি নিয়ে বললএ সময় আবার কে ফোন করলো?
তারপর ফোন টা বের করে স্ক্রিনের দিকে চেয়ে থাকলো ভাবলো ফোন ধরবে কি ধরবে না।
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com