রাজশাহী বিভাগ/জেলা ভ্রমন গাইড
রাজশাহী জেলা
রাজশাহী উত্তরবঙ্গের একটি জেলা। এটি রাজশাহী বিভাগ-এর অন্তর্গত।
এই জেলার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলাে হলো: নাটোর, নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
সড়ক পথে ঢাকা থেকে এর দুরত্ব ২৭০ কিমি।
এই জেলার পশ্চিম প্রান্তে ভারতের সাথে সীমান্ত রয়েছে।
দেশের প্রধানতম নদী পদ্ম এই জেলার সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এই জেলার মােট আয়তন ২৪০৭.০১ বর্গকিলােমিটার।
রাজশাহী জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
ঐতিহ্যবাহী বাঘা শাহী মসজিদ, পদন্মা নদীর বাধ, বরেন্দ্র জাদুঘর, রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, রেশম গবেষণাগার, জিয়া পার্ক, পদ্মা গার্ডেন, বাঘা মসজিদ।
সাফিনা পার্ক
পার্কের ভেতরে দুইটি পুকুরের লেক ছাড়াও দর্শনার্থীদের পানিতে চলাচলের জন্য নৌকা রয়েছে।
পার্কের সমস্ত এলাকা জুড়ে ফুলের বাগানের সঙ্গে রয়েছে কৃত্রিম উপায়ে তৈরিকৃত বিভিন্ন জীবজন্তু।
শিশুদের বিনােদনের জন্য নগরদোলা, দোলনা, ট্রেনসহ বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা।
সভা-সমাবেশ, কনসার্ট ও গানবাজনার জন্য আন্তর্জাতিক মানের মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে।
পর্যটিকদের রাত্রী যাপনের জন্য পার্কটিতে বিলাসবহুল আবাসিক হােটেলের ব্যবস্থা রয়েছে।
১৩টি অত্যাধুনিক রুমের মধ্যে তিনটি সম্পূৃর্ণ শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত রুম।
পার্কের ভেতরে ২টি পিকনিক স্পট রয়েছে।
যাতায়াতঃ গােদাগাড়ী উপজেলার মােহনপুর ইউনিয়নে গােদাগাড়ী উপজেলা সদর
ডাইংপাড়ার পূর্বদিকে ৮ কিলােমিটার দূরে গােদাগাড়ী-আমনুরা সড়কের পার্শ্বে দিগরাম খেঁজরতলা।
এই খেঁজুরতলা সাফিনা পার্কে যাওয়ার সময় রাস্তার দুই ধারের ফসলের
যে সবুজের সমাহার ঘটেছে তা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়বে।
পুঠিয়া রাজবাড়ী
পুঠিয়া রাজবাড়ী বা পাঁচআনি জমিদারবাড়ী হচ্ছে মহারানী হেমন্তকুমারী দেবীর বাসভবন।
বাংলার প্রত্নতান্ত্বিক ঐতিহ্যের মধ্যে রাজশাহীর পুষঠিয়া রাজবাড়ী অন্যতম।
১৮৯৫ সালে মহারানী হেমন্তকুমারী দেবী আকর্ষনীয় ইন্দো ইউরােপীয় স্থাপতারীতিতে
আয়তাকার দ্বিতল বর্তমান রাজবাড়ীটি নির্মাণ করেন।
রাজশাহী জেলা সদর হতে ৩২ কিন্তমিত্ উত্তর- পূর্বে নাটোর মহাসড়ক অভিমুখে
পুঠিয়া অবস্থিত। বাসে করে দেশের যে কোন স্থান হতে পুষঠিয়া আসা যায় এবং ট্রেনে করে
নাটোর অথবা রাজশাহী নেমেও সড়কপথে সহজে আসা যায়।
সরমংলা ইকোপার্ক
রাজশাহী জেলার গােদাগাড়ী উপজেলায় অবস্থিত সরমংলা ইকো পার্কটি অবস্থিত।
২০০৩ সালের দিকে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে উপজেলার
নিতানন্দপুর থেকে হরিশংকরপুর পর্যন্ত ২৭ কিলােমিটার খাঁড়ি খনন করার পর খাড়ির
দুই পাড়ে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা রােপন করা হয়। গাছের মব্যে দিয়ে তৈরি
করা হয় সরু রাস্তা। ধান ও শাকসজির কলল চাষ হলেও মনে হবে শুধু সবুজেরই
সমাহার। এতটাই সবুজে ভরা যে সরমংলা এলাকাকে পর্যটকেরা গ্রীন হাউস হিসেবে
অভিহিত করে থাকে।
যাতায়াতঃ গােদাগাড়ী উপজেলার গােদাগাড়ী সদর ইউনিয়নে উপজেলার
ডাইংপাড়া মােড় থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার পূর্ব দিকে গোদাগাড়ী-আমনুরা সড়কের
পার্শ্বে প্রাৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সরমঙ্গলা ইকোপার্ক।
কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা
রাজশাহী শহরের রেসকোর্স ছিল পদ্মার পাড়ে।
এখন এই রেসকোর্স ময়দান রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা।
রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও
চিড়িয়াখানা সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে পার্কের প্রধান ফটকটিকে আধুনিকীকরণ এবং লেকের উপর দু’টি
কার্ড ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। উদ্যান ও চিড়িয়াখানার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজ
শেষ হলে এটি হবে দেশের অন্যতম চিত্তাকর্ষক একটি বিনোদন কেন্দ্র।
যাতায়াতঃ জিরােপয়েন্ট থেকে পশ্চিমদিকেক আনুমানিক ৩ কি.মি. কোর্ট এর দিকে, প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বে। রিক্সা, অটোতে যাওয়া যায়।
বরেন্দ্র জাদুঘর
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী মহানগরের কেন্দ্রস্থল হেতেম খাঁ-তে অবস্থিত।
এটি বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহের দিক থেকে এটি দক্ষিণ এশিয়ার
অন্যতম সংগ্রহশালা। বরেন্দ্র জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় নাটোরের দিঘাপাতিয়া রাজপরিবারের
জমিদার শরৎ কুমার রায়, আইনজীবী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় এবং রাজশাহী কলেজিয়েট
স্কুল এর শিক্ষক রামপ্রসাদ চন্দ্রের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।
যাতায়াত : বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী মহানগরের কেন্দ্রস্থল হেতেম খাঁ-তে
অবস্থিত। শহরের মূল কেন্দ্র রাজশাহী কলেজের পাশেই এটি অবস্থিত।
সুতরাং রাজশাহী শহরের যেখানেই অবস্থান করুন না কেন- সেখান থেকে রিক্সা বা আটোযােগে।
কিংবা আপনার সুবিধাজনক যানবাহনে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে আসতে পারবেন।
শনিবার থেকে বুধবার বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা
পর্যন্ত খােলা থাকে। বৃহস্পতি, শুক্র ও বিশ্ববিদ্যালয় ঘােষিত ছুটির দিনগলা ল
জাদুঘর বন্ধ থাকে।
ঐতিহ্যবাহী বাঘা শাহী মসজিদ
রাজশাহীর বাঘা প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন সমৃদ্ধ অন্যতম দশনীয় স্থান।
প্রায় বছরের পুরনাে এ দেশের ৫০ টাকার নােটে ও জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত শাহী মসজি
সবিশাল দীঘি, মহিলাদের প্রাচীন আব্দরমহল পুকুরের ধ্বংসতুপ, হযরত আব্দুল হামিদ
দানিশ মান্দ এবং তত্ব্ীয় হযরত মুয়াজ্জেম দানিশ মান্দ শাহেদীলা ও ৫ জন সঙ্গীর মাজার
ঐতিহাসিক ভ্রমণপ্রিয় ও ধর্মানুরাগীর জন্য এখনাে এক আকর্ষণীয় স্থান। পরার তার
ঘেঁষে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন ও স্থাপত্য কীর্তির প্রাচীন নিদর্শনটি দেশের
অন্যান্য পর্যটন শিল্পের চেয়ে কোনাে অশেই কম সবনাময় নয়।
এছাড়াও রাজশাহীর দর্শণীয় স্থান সূমহের লিস্ট দেয়া হলোঃ
জায়গার নাম ও কিভাবে যাওয়া যায়
০১। পুঠিয়া শিবমন্দিরঃ রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলায় অবস্থিত স্থাপনাটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে অবস্থিত। রাজশাহী শহর থেকে বাস ও অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।
০২। হাওয়াখানাঃ ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কে তারাপুর মোড় হতে দক্ষিণ দিকে ১ কিলোমিটার হেঁটে অথবা রিক্সা ভ্যানে করে যাওয়া যায়।
০৩। পুঠিয়া রাজবাড়ীঃ রাজশাহী জেলা সদর হতে ৩২ কিঃমিঃ উত্তর- পূর্বে নাটোর মহাসড়ক অভিমুখে পুঠিয়া অবস্থিত। বাসে করে দেশের যে কোন স্থান হতে পুঠিয়া আসা যায় এবং ট্রেনে করে নাটোর অথবা রাজশাহী নেমেও সড়কপথে সহজে আসা যায়।
০৪। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরঃ রাজশাহী জিরোপয়েন্ট থেকে আনুমানিক ৮০০ মিটার পশ্চিমদিকে প্রধান সরকের উত্তরে অবস্থিত রিক্সাতে,অটোতে যাওয়াযায়।
০৫। শহীদ কামরুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানাঃ জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিমদিকে আনুমানিক ৩ কি.মি. কোর্ট এর দিকে, প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বে, রিক্সা, অটোতে যাওয়াযায়।
০৬। পদ্মার পাড়ঃ জিরোপয়েন্ট থেকে পশ্চিমদিকে আনুমানিক ৩ কি.মি. কোর্ট এর দিকে, প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বে, রিক্সা, অটোতে যাওয়া যায়।
০৭। শাহ্ মখদুমের মাজারঃ জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিমদিকে আনুমানিক ১ কি.মি. রিক্সা, অটোতে যাওয়া যায়।
০৮। রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগারঃ রাজশাহী জিরো পয়েন্ট থেকে রিক্সা বা অটোতে যাওয়া যায়।
০৯। রাজশাহী কলেজঃ রাজশাহী জিরো পয়েন্ট থেকে রিক্সা বা অটোতে যাওয়া যায়।
১০। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ঃ রাজশাহী জিরো পয়েন্ট থেকে রিক্সা বা অটোতে যাওয়া যায়।
১১। বাঘা মসজিদঃ রাজশাহী শিরইল বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com