সত্য ঘটনা অবলম্বনে গল্পঃ খেলাঘর । ৫ম -পর্ব
প্রতিটা মেয়েরই আত্মনির্ভরশীল
হওয়া খুব জরুরি…কখনো কারোর
কাছে ছোট হতে না
হয়…এই সমাজে মেয়েদের ছোট করার
লোকের অভাব নেই..
আজ মনটা ভীষণ খারাপ..খুব খারাপ…
মাঝে মধ্যে একাকিত্ব একদম
জেঁকে বসে…
কারো সাথে কষ্ট ভাগ করে নেয়ার
অবকাশ নেই.বাবা মা আমাকে খুব সাপোর্ট করার
চেষ্টা করে…তবুও তাদের সাথে সব কথা
খুলে বলতে পারি না…
ঐদিন কাকলির সাথে দেখা করে আসার পর
থেকেই মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে…
আজ সব কিছু ঠিক থাকলে আমার ও একটা
হাসি খুশি ভরা সংসার থাকতো..
জানিনা রাসেল আমাকে ঠকিয়ে ঠিক কতটা
সুখে আছে….ভালোই আছে হয়তো….
কারণ প্রতারকরা ভালোই থাকে..দিন
শেষে প্রতারকরা জিতে যায়….
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর কাছে অশেষ
শুকরিয়া…হয়তো এর চেয়ে বেশি ক্ষত
বিক্ষত হতে পারতাম..আমার রব আমাকে
রক্ষা করেছন…
ভাবনার মাঝেই মা পাশে বসলেন..আমি
জানি মা কি বলতে এসেছে…
কিন্তু আমার এইসব শুনার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই…
আর একবার ভেবে দেখা যেত না…আমরা
আর কতদিনইবা বাঁচবো…তোর কি কোনো
ভবিষ্যত নেই…এইভাবে তো চলতে দেয়া যায়
না.. সবাই প্রতারক হয় না রে মা…তাহলে
পৃথিবী টিকে থাকতো না..
মা প্লিজ..এইসব বলা বন্ধ করো…
কাউকে বিশ্বাস করার মতো মন এখন
আর আমার মধ্যে নেই..সম্পর্কের
নির্মমতা খুব কাছ থেকে দেখেছি
আমি..আমার মধ্যে আর সহ্য করার
এবিলিটি নেই..
আমার সময় দরকার…আশা করি সেই
সময়টা তোমাদের থেকে পাবো..
মা আর কিছু না বলে চলে গেলো…
তার দীর্ঘশাস শুনতে পেলেও কিছু করার নেই…
আমি নিজেকে একটু গুছিয়ে নিতে চাই…
আমি নারী,,,,আমি মাইয়া মানুষ না
মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই..
যেখানে আল্লাহ তায়ালা আমাকে
এতো সম্মান দিয়েছে সেহেতু নিজেকে
ছোট করার অবকাশ আমি কাউকে দিবো না…
আজ স্কুলের ক্রীড়া দিবস….সকল বাচ্চারা
পার্টিসিপেন্ট করবে…
রোদে দাঁড়িয়ে থেকে খুব মাথা ধরেছে..
আমার এই এক সমস্যা..গরম সহ্য করতে পারিনা
একদম…
তার উপর বাচ্চাদের সামলাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি..ধুর…
সব কিছু অসহ্য লাগছে…
এই সব চিৎকার চেঁচামেচি আমার একদম
পছন্দ না…
মাথা ধরে যায়…
কিছু করার নেই…
দায়িত্ব যখন নিয়েছি পালন তো
করতেই হবে….
হাহ…
অনুষ্ঠান ভালো ভাবেই শেষ হলো…কয়েকদিন
হচ্ছে কাজের খুব প্রেসার হচ্ছে…কোনো দিকে
নজর দিতে পারছি না…
অফিস রুমে যেতেই মা এর কল এলো….
রিসিভ করতেই কান্না মাখা গলায় হসপিটালে
পৌঁছাতে বললো…
আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে…আল্লাহ ভালো জানে
কোন বিপদের মুখে পড়ছি…
দুআ দুরুদ পড়তে পড়তে এক প্রকার দৌড়ে বেরিয়ে এলাম….পেছনে পাখিও আসলো..হয়তো বুঝতে পেরেছে কোনো বিপদ হয়েছে…
হসপিটালে পৌঁছেই বরফ হয়ে গেলাম…পা আর চলছে না….
এই রকম দৃশ্য দুঃসপ্নেও দেখতে চাইনি আমি….
সামনেই কাকলির নিথর দেহ পরে আছে….কিভাবে
কি হলো কিছু জানি না…শুধু জানি আমার কলিজা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে….
পরে যেতে নিলেই পাখি ধরে ফেললো…ওর চোখেও পানি..
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com