নাটোর জেলার ভ্রমন গাইড
নাটোর জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এই জেলার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলাে হলাে: রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া এবং সিবাজগঞ্জ। এই জেলার উত্তরে নওগাঁ ও বগুড়া, দক্ষিণে পাবনা ও কুষ্টিয়া, পূর্বে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এবং পশ্চিমে রাজশাহী জেলা অবস্থিত। জেলাটি ১৮৯৬.০৫ বর্গ কিলােমিটার আয়তন। নাটোরসহ এর পার্শ্বর্তী বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে অবস্থিত চলন বিল হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল। সড়ক পথে ঢাকা থেকে এর দুরত্ব ২২০ কিমি।
জেলার উপজেলাভিত্তিক দর্শনীয় স্থান
উত্তরা গণভবন, নাটোর রাজবাড়ী, পাটুল হাপানিয়া মিনি বীচ, ঔষধি গ্রাম, জোয়াড়ী বিশি বাড়ী, বনপাড়া লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী, সেন্ট যােসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয়, মারীয়াবাদ ধর্মপল্লী, বাগাতিপাড়া, শ্রীযুক্ত বাবু শরৎচন্দ্র রায়ের জমিদার বাড়ী, বড়বাঘা মাজার শরীফ, ইউএনও পার্ক, ভেল্লাবাড়ীয়া মাজার, চাপিলা শাহী মসজিদ, চলন বিল, চলন বিল জাদুঘর, বিল হালতি (দ্বিতীয় কক্স বাজার), মাধনগর রথ বাড়ী। উত্তরা গণভবন দিঘাপাতিয়া রাজবাড়ি বা উত্তরা গণভবন বাংলাদেশের নাটোর শহর থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে এককালের দিঘাপাতিয়া মহারাজাদের বাসস্থান এবং বর্তমান উত্তরা গণভবন বা উত্তরাঞ্চলের গভর্মেন্ট হাউস। প্রাসাদের মূল অংশ এবং সংলগ্ন কিছু ভবন নির্মাণ করেছিলেন রাজা দয়ারাম রায়। রাজবংশের ষষ্ঠ রাজা প্রমদানাথ রায়ের আমলে ১৮৯৭ সালের ১০ জুন নাটোরের ডােমপাড়া মাঠে তিনদিনব্যাপী বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের এক অধিবেশন আয়াোজন করেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অনেক বরেণ্য ব্যক্তি এ অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যােগ দেন। অধিবেশনের শেষ দিন ১২ জুন প্রায় ১৮ মিনিটব্যাপী এক প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পে রাজপ্রাসাদটি ধ্বংসন্তুপে পরিণত হয়। পরে রাজা প্রমদানাথ রায় ১৮৯৭ সাল থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত ১১ বছর সময় ধরে বিদেশি বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী ও চিত্রকর্ম শিল্পী আর দেশি মিস্ত্রিদের সহায়তায় সাড়ে ৪১ একর জমির উপর এই রাজবাড়িটি পুনঃনির্মাণ করেন।
যাতায়াত : উত্তরা গণভবনের অবস্থান নাটোর শহরে হওয়ার কারণে শহরের যেকোনাে জায়গা থেকে সরাসরি রিক্সা বা সিএনজি যােগে যাওয়া যায়।
নাটোর রাজবাড়ী
অষ্টাদশ শতকের শুরুতে নাটোর রাজবংশের উৎপত্তি হয়। ১৭০৬ সালে পরগণা বানগাছির জমিদার গণেশ রায় ও ভবানী চরণ চৌধুরী রাজস্ব প্রদানে ব্যর্থ হয়ে চাকরিচ্যুত হন। দেওয়ান রঘুনন্দন জমিদারিটি তার ভাই রাম জীবনের নামে বন্দোবস্ত নেন। এভাবে নাটোর রাজবংশের পত্তন হয়। রাজা রাম জীবন নাটোর রাজবংশের প্রথম রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন ১৭০৬ সালে, মতান্তরে ১৭১০ সালে। ১৭৩৪ সালে তিনি মারা যান। ১৭৩০ সালে রাণী ভবানীর সাথে রাজা রাম জীবনের দত্তক পুত্র রামকান্তের বিয়ে হয়। রাজা রাম জীবনের মৃত্যুর পরে রামকান্ত নাটোরের রাজা হন। ১৭৪৮ সালে রাজা রামকান্তের মৃত্যুর পরে নবাব আলীবর্দী খাঁ রাণী ভবানীর ওপর জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। রাণী ভবানীর রাজত্বকালে তার জমিদারি বর্তমান রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া, যশাের, রংপুর, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদহ জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
যাতায়াত : নাটোর শহর থেকে সরাসরি রিক্সা বা টেম্পু যােগে যাওয়া যায়।
চলন বিল
চলন বিল বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি বৃহৎ বিল। এটি রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, এবং পাবনা জেলা জুড়ে বিস্তৃত। সাতচল্লিশটি নদী ও অন্যান্য জলপথ চলনবিলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিলটিতে পলিমাটি জমে, এর আকার সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। রাজশাহী বিভাগের চারটি জেলা, আটটি উপজেলা, ৬০টি ইউনিয়ন, ১৬০০ গ্রাম এবং ১৪টি নদী নিয়ে এর বিস্তৃতি। প্রাকৃতিক দূশ্যের জন্য এই বিল আশেপাশের এলাকায় বেশ বিখ্যাত। ফলে অনেকেই এই বিল দেখতে আসেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে।
নাটোরে থাকার হােটেল
নাটোরে থাকার জন্য নিম্নের হােটেলগুলাতে খোঁজ নিতে পারেনঃ
১। হােটেল ভিআইপি
বড় হরিশপুর, ফোন : ০৭৭-১৬৬০৯, +৮৮০১৭১৮৬৭৩৭৩৫
২। হােটেল মিল্লাত
মাদ্রাসা মােড়, নাটোর সদর
৩। হােটেল প্রিন্স
রেলওয়ে স্টেশন বাজার, ফোন : ০৭৭১-৬১৩৫৬, ০১৭৪৬০২৯৪২৯
৪। হােটেল রাজ
মাদ্রাসা মােড়, নাটোর সদর
ফোন : ০৭৭১-৬৬৬৬০, ০১৭২৭৩৭১৫০০
৫। হােটেল রুকসানা
ঠিকানা : কানাইখালী, পুরাতন বাস স্ট্যান্ড, নাটোর সদর
ফোন : ০৭৭১-৬২৪৩১, ০১৭৩৯৯৮৭০১৭
৬। নাটোর বাের্ডিং
ঠিকানা : নিচাবাজার, হাসপাতাল রােড, নাটোর সদর
ফোন : ০৭৭১-৬২০০১
এছাড়াও রয়েছে ঘুরে দেখার জন্য দর্শনীয় স্থানঃ
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com