Lady Queen । লেডি কুইন । পর্ব -০৬
মেহেরাব রিকশাটা থামিয়ে দিলো৷ রিকশার সামনের চাকা আরোহীর বাইকের চাকায় যেয়ে লাগলো।
আরোহী হেলমেট খুলেই
-আর কত বেশ ধরবি তুই।
মেহেরাব মাথা নিচু করে নেয়
-তা এখন রিকশা চালালে ক্লাসে আসবি কখন৷ অবশ্য তুই ক্লাসে আসলে ক্লাসটা নোংরা হয়ে যায়।
তুই কি করে যে চান্স পেলি মাথায় আসছে না৷
মেহপরাব রিকশার সিট থেকে নেমে। রিকশাটা পিছনের দিকে ঠেলে দিয়ে আরোহীর পাশ কাটিয়ে চলে যায় কিছু না বলে। আরোহী ক্ষিপ্ত হয়ে যায়৷ আর বলতে লাগে, তুই আজ ক্যাম্পাসে আয়৷ আমার প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার ফল বোঝাবো। আরোহী বাইক টেনে ক্যাম্পাসে চলে আছে।
শুভ্র আশফা রাস্তা দিয়ে আসার টাইম এ মেহেরাবকে রিকশা চালাতে দেখে আশফা বলে উঠলো
-তোমার বন্ধু রিকশা চালায়।
-ওর হলে টা কি? ও কেন রিকশা চালাবে।
-তোমার বন্ধুর মাথায় সমস্যা আছে৷” এক এক দিন এক একটা কাজ করে৷
-ওর কাছে জিঙ্গেস করতে হবে ও এগুলো কেন করছে।
-হুম ঠিক বলেছো।
মেহেরাব রিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলো কিছুদূরে তাকিয়ে দেখলো একটা মেয়ে কানে ফোন ধরে আছে আর পাশে একটা কার দাঁড়ানো। তবুও মেয়েটা হাত বাড়িয়ে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করছে৷ হাইওয়ে রাস্তায় গাড়ি চলে দ্রুত গতিতে কেউ কারো দিকে তাকায় না।
মেহেরাব দ্রুত গতিতে রিকশা চালিয়ে রিকশাটা থামিয়ে মেয়েটাকে দেখে অবাক হয়ে গেলো৷ মেয়েটা ও মেহেরাবকে দেখে অবাক হয়ে গেলো৷
আরোহী ক্যাম্পাসের ভেতর পায়চারি করছে আর গেইটের দিকে বার বার তাকাচ্ছে। কুহু জিঙ্গেস
-এত রেগে আছিস কেন? কি হয়েছে।
-ঐ ছোটলোক ক্ষ্যাত মার্কা ছেলে আমার সাথে ভাব নেয়৷ ওর ভাব আমি বের করবো।
কুহু অবাক হয়ে
-কি ভাব নিলো৷ তাও তোর সাথে।
-ও দেখি আজ রিকশা চালাচ্ছে। আমি কথা বলে গেলাম ও আমার কথার জবাব না দিয়ে ভাব দেখিয়ে পাশ কেটে চলে গেলো।
কুহু হা হয়ে
-ছিঃ ছিঃ ঐ ছেলের জন্য আমাদের ভার্সিটির বদনাম হবে৷ আর তোর সাথে ভাব নিছে খুব অন্যায় হয়েছে৷ শাস্তি ওকে পেতে হবে।
-শোন আমি ওখানে বসছি ওকে দেখা মাত্রই আমাকে বলবি। ভূল জেনো না হয়।
-ওকে শান্ত হ। বলবো তোকে।”
মেহেরাব রিকশা থেকে নেমেই
-নেহা আপু কি হয়েছে। কান্না করছেন কেন?
-আম্মু।
মেহেরাব গাড়ির ভেতরে তাকিয়ে
– ওহ মাই গড। শান্ত হোন। আপনি রিকশায় উঠে বসেন৷
মেহেরাব নেহার আম্মুকে গাড়ি থেকে বের করে রিকশায় বসালো। নেহা তার আম্মুকে ধরে রাখছে। মেহেটাব দ্রুত গতিতে রিকশা চালিয়ে হাসপাতালের সামনে যেয়ে থামলো৷ হাসপাতালের সামনে থামতেই নেহা অবাক হয়ে গেলো। বেড নার্স ডাক্তার সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে৷ নেহার আম্মুকে বেডে শুয়ে নিয়ে চলে গেলো৷
নেহা পিছুপিছু চলে গেলো৷ মেহেরাব রিক্সা নিয়ে চলে আসলো। নেহার আম্মুকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকানো হলো। নার্স ডাক্তার বের হচ্ছে আর ঢুকছে।
একটা মেয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিলো৷ কিছু বখাটে ছেলে মেয়েটার পথ আগলে ধরে। মেয়েটা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চায় তখন একটা ছেলে মেয়েটার হাত টেনে ধরে
-কই যাও সোনা তুমি। আমাদের কি চোখে পড়ে না।
-মামা পুরাই হট মাল। ।
মেয়েটা হাত ছাড়িয়ে কষে ছেলেটার গালে চড় বসিয়ে দিয়ে
-কু***বা****। তোর ঘরে মা বোন নেই। কিভাবে মেয়েদের রেসপেক্ট করতে হয় জানিস না।
-মামা পুরোই ডেমাগি মাল৷ খেয়ে ভালই স্বাদ পাওয়া যাবে। তোল গাড়িতে। একজন মেয়েটার হাত ধরে টানতে থাকে। মেয়েটাও জোড় খাটায় আর বলতে লাগে
-ছাড় বলছি।
-ঐ গাড়িটা নিয়ে আয় ব্যস্ত।
মেহেরাব তখন যাচ্ছিলো রাস্তার দৃশ্যটা দেখে এগিয়ে গেলো। যেয়ে ওদের সামনে দাঁড়িয়ে
-ভাইয়ারা মেয়েটাকে এভাবে হেনস্তা করছেন কেন?
-এই তোকে কইফিয়ত দিতে হবে।
-আমি কিন্তু পুলিশকে ফোন দিবো মেয়েটাকে ছেড়ে দেন।
মেহেরাবের কথায় সবাই হো হো করে হেসে উঠলো ।
আরোহী কুহুকে বললো
-ক্ষ্যাতটা মনে হয় আজকে আর আসবে না। চল বের হই। কাল দেখে নেওয়া যাবে।
লিমন এসে বললো
-কি রে যাবি না তোরা। চল।ঘুরে আসি। ।
-ঠিকি বলছিস আসবে না। কাল দেখা যাবে।
লিমন ভ্রু টা কুচকে
-কাকে রে। কে কি করছে?
আরোহী বলে উঠলো
-যেতে পথে বলি।
আরোহীরা বাইকে নিয়ে চলে গেলো।
আশফা শুভ্রকে বললো
-মেহেরাব ভাইয়াকে কল দাও আজ তার রিক্সায় ঘুরবো আমরা।
-তুমি কি পাগল হলে নাকি। আমার বন্ধুকে।
-হুম হয়েছি। ফোন দাও৷ আমি রিক্সায় ঘুরবো।
-এটা ঠিক হবে না।
-হবে। মেহেরাব কিছুদূর চালাবে। তারপর তুমি তারপর আমি। পুরো শহরটা রিক্সায় মজা করে ঘোড়াও হয়ে যাবে।
আশফার কথায় শুভ্র হা হয়ে পড়লো।
অপারেশন থিয়েটারের লাল বাতি নিভে গেলো৷ ডাক্তার বাইরে বেরিয়ে এলো। নেহা ডাক্তারের সামনে যেয়ে
-মাম্মা কেমন আছে এখন?
-চিন্তার কিছু নেই সে এখন সুস্থ। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আর হ্যা তাকে কোন প্রকার উত্তেজনা বা টেনশন হতে দেওয়া যাবে না। ওকে।
-ঠিক আছে।
-একটু পরেই আমরা বেডে শিফট্ করবো।
নেহা মেহেরাবকে খুজলো কিন্তু কোথা ও পেলো না।
মেহেরাবকে ডাক্কা মেরে
– কে রে তুই। আর পুলিশের কথা বলছিস ওরা আমাদের কিছু করতে পারবে না।
আর তোর সামনে ওকে নিয়ে যাবো পারলে ঠেকা।
-ভাই ভাই মেয়েটাকে ছেড়ে দেন। এভাবে ওর সর্বনাশ করবেন না।
-এই এটাকে মেরে মেয়েটাকে নিয়ে চল। আমার আর দেরি সহ্য হচ্ছে না।
মেহেরাব ছেলেটার পা জরিয়ে ধরলো
-ভাই আপনার ঘরে ও মা বোন আছে। আজ যদি এটা আপনার বোনের সাথে হতো।
ছেলেটা মেহেরাবকে লাঠি মেরে
– এটাকে সরা তো। মার।
যেই মেহেরাবকে একজন এসে মারতে তখনি সে দাঁড়িয়ে যায় নিস্তব্ধ হয়ে।
সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা সরে যেয়ে পিছনে যেয়ে দাঁড়ালো “
চলবে….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com