Breaking News

Lady Queen । লেডি কুইন । পর্ব -০২

মেহেরাব এক ডুব দিয়ে উঠে তাকিয়ে দেখলো সবাই হাসছে জোড়ে। সবাই হেলমেট পড়া।কিন্তু সবার হাসির আওয়াজ হাতের নাচানি দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। মেহেরাবের নাকে দুগদ্ধ ভেসে আসছে। মেহেরাব পানির দিকে তাকালো মাত্র। গা শিরশির করে উঠলো। কোনভাবে ময়লা পানি থেকে উঠে আসলো। এসেই সাইকেলটা তুললো। সবার দিকে অসহায়ভাবে তাকালো ।
-কি চান্দু নতুন ভার্সিটিতে।
মেহেরাব হা করে তাকিয়ে পড়লো কথাটা শুনে। কারণ এটা মেয়েলি গলা। সবাই যে যার হেলমেট খুলে ফেললো। “মেহেরাব ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। ৬টা মেয়ে ২টা ছেলে মাত্র। মেহেরাব চুপ করে আছে চোখ বড় বড় করে দিয়ে। ” একটা মেয়ে বেত দিয়ে মেহেরাবকে ডাক্কা মেয়ে
-কি রে কথা বলিস না কেন? বোবা নাকি।
এর ভেতর আরেকটা বাইক গেইট দিয়ে ঢুকলো। বাইকটা মেহেরাবের সামনে স্টার্ন করে বাইকের উপর বসে সবার সাথে হাত মিলিয়ে হেলমেট টা খুললো। মেহেরাবের চোখ খাড়া খাড়া হয়ে গেলো। এক পলকে মেহেরাব তাকিয়ে থাকলো। হেলমেট খোলা মেয়েটা হচ্ছে আরোহী। তাসনিম আরোহী। আরোহী বলে উঠলো
-আমাকে রেখেই তোরা শুরু করে দিলি।
-আরে এটা তো এন্টারটেইনমেন্ট ছিলো এখন তো হবে শুরু
আরোহী মেহেরাবের মুখের কাছে ট্রুরি বাজালো। মেহেরাব স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ফিরলো।
-কি মামা নবীন নাকি। এই ভার্সিটিতে তোমার কেউ পড়ে না।
-না।
-এই জন্যই তো তুমি আমাদের ফানে পা দিয়ে ধরা খেলে।
-ফানে পা না দিলে তো এমন অপরুপ সুন্দরীকে তো দেখতে পেতাম না (মনে মনে)
-কি বিড়বিড় করছো। এই লিমন আমাদের নেক্সট ধাপটা যেনো কি?
-ব্যাঙ হয়ে লাফ দিতে দিতে পানিতে নামতে হবে।
মেহেরাব হাত জোড় করে
– দেখুন এমনটা করবেন না। আমি এখানে নতুন। প্লিজ।
-কুহু কথা না শুনলে জানো কি হবে
-বেতের বারি ১০ টা সাথে রৌদ্রে এক পা ভাজ করে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। “
-না না এমনটা করবেন না আমি হচ্ছি।
লিমন বলে উঠলো
-এই তো ভালো ছেলে। হও হও হও।
মেহেরাব ব্যাঙের মতো হয়ে লাফ দিয়ে দিয়ে ময়লা পানিতে নেমে গেলো। সবাই অট্ট হাসিতে মেটে উঠলো।
ভার্সিটির সামনে দুটো গেইট। একটা বড়। তার পাশেই ছোট একটা গেইট। নবীনদের র্যাগ করবে বলে ছোট গেইট এ কাগজে লেখা নবীনদের প্রবেশ পথ। যারা জানে না তারা র্যাগের শিকার হয়। যারা জানে তারা মেইন গেইট দিয়ে ঢুকে। আরোহী হচ্ছে কুইন ওর উপরে কেউ কথা বলতে পারে না। সিনিয়ররা ভয় পায় আরোহীকে। কারণ
চলুন ঘুরে আসি আরোহীর প্রথম ভার্সিটিতে আসার কাহিনি থেকে।
চোখে স্টুডেন্ট চশমা পরনে সাদা ড্রেস চুলগুলো সুন্দর করে বাঁধা। বলতে গেলে এক কথায় ডানা কাটা পরি। যে কেউ দেখলে ক্রাশ খেয়ে যাবে। ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢুকতেই সিনিয়রদের চোখে পড়ে যায় আরোহী। সিনিয়র ভাইরা অনেকে ক্রাশ খেয়ে যায়। নবীনদের র্যাগ করছিলো৷ সবাইকে ছেড়ে দিয়ে আরোহীকে ডাকলো। আরোহী এগিয়ে যেতেই একজন আরোহীর সাদা উড়নায় হাত মুছলো। একজন বলে উঠলো
-নাম কি?
-তাসনিম আরোহী
-তুমি কি জানো এখানে নতুন যারা আসে তাদের কি করতে হয়। “
আরোহী মাথা নেড়ে না বললো।
-ঐ যে দেখছো ছেলেটা ওকে প্রপোজ করে কিস করবা।
আরোহী চোখ বড় বড় করে দিয়ে সিনিয়র ভাইয়ের গালে চড় বসিয়ে দিলো। আরোহীর রাগে চোখমুখ লাল টকটকে করছে। আরোহীর এমন সাহস দেখে সিনিয়র ভাই আপুরা রেগে যায়। যাকে চড় মারে সে আরোহীর চুলের মুটি ধরে
-তুই বড় ভূল করে ফেলছিস। তোর কি হাল শুধু চেয়ে দেখবি।
-আমার চুল ছাড় নাই তোকে পস্তাতে হবে।
-কে পস্তায় দেখ শুধু। ওর কাছে ওর কাজটা করিয়ে এখানেই তোকে সবার সামনে তোর জামাকাপড় খুলে তোকে
-থেমে যা।
আরোহীর এমন ব্যবহারে সবাই হা হয়ে রয়েছে। আরোহীর চুল মুটি ধরে মাটিতে জয়ের সামনে ফেললো। আরোহীর সামনে ফুল ছুড়ে ফেললো
-সবার সামনে প্রপোজ করবি আর জয় প্রপোজের পর বাকীটুকু তুই করবি তারপর আমার হাতে তুলে দিবি। আমাকে চড় মারার সাধ মিটিয়ে দিবো।
-কুল মামা এই পরীটাকে আগে আমি তো পায় তারপর তোরা নিস। বেবি কাম। না হলে সবার সামনেই বুঝো তো সম্মান নিয়ে ফিরতে পারবে না।
(জয় ভার্সিটিতে যা বলবে তাই হবে। জয়ের বিরুদ্ধে যে যাবে তাকে পস্তাতে হয়। তাই তো সবাই এসব দেখে চুপচাপ। অনেক মেয়ের সম্মান ও গেছে। কেউ কিছু বলতে পারে না।)
আরোহী ফুলটা তুলে দাড়ালো। জয় পিছনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়েই সামনে তাকাতেই নাক চেপে বসে পড়ে। সবাই দৌড়ে আসে।
(কি বুঝতেই পারছেন কেন বসে পড়লো। নাকি ভাঙ্গিয়ে দিতে হবে।। আরোহী পা দিয়ে সোজা মেইন সুইচের উপর লাঠি মেরে দেয় আর জয় মাটিতে পড়ে যায়)
আরোহী হাসতে থাকে। কয়েকজন জয়কে বলতে লাগলো কি হয়েছে কি হয়েছে। আরেকজন এসে আরোহীর চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ঠেলে ফেলে দেয়। আরোহী মাটিতে পড়ে ব্যথায় উহ্ করে উঠলো। হাতের উপর ছিলে গেছে। আরেকজন আরোহীকে মারতে আসবে এমন সময় ভার্সিটিতে ৮টা বাইক ঢুকে পড়ে। সবার মাথায় হেলমেট পড়। এক হাতে হকি, এস এস পাইপ আর শর্টগান। বাইক থামিয়ে সবগুলোকে মারা শুরু করে দিলো। আরোহীকে একজন তুললো। জয় ফোন বের কাকে কল দিবে তখনি হাতের উপর হকি দিয়ে বারি মারে। জয়ের সব লোকজন মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। ব্যথায় ছটফট করছে। আরোহী ওদের সামনে যেয়ে
-কে কি করবি জানি। বল বল আমি সামনে দাঁড়িয়ে কর কি করবি৷
একজন বলে উঠলো
-আমাদের ভূল হয়ে গেছেমাফ করে দেন বোন প্লিজ। আর কখনো কিছু করবো না।
সবাই মাথা থেকে হেলমেট খুলে ফেললো। এরা যে সবাই মেয়ে। সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। আরোহী শর্টগান হাতে নিয়ে
– দি চান্দি টা ফুটো করে। কই দিবেো এখানে নাকি মেইন সুইচ এ।
আরোহীর কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো। জয় বলে উঠলো
-কে তুই? তুই কিন্তু আমাকে চিনিস না।
-আরে রাখ তো তুই তো জাস্ট চুনোপুঁটি। এই লেডি কুইনকে এমন কেউ নেই যে চিনে না।
সবাই ধোক গিলতে লাগলো।
-ভদ্র বেশে আসছিলাম দেখে ভালো লাগেনি আমাকে। ভদ্র কাউকে দেখলে মুরগি করতে সুবিধা হয়। তোর নামে অনেক রিপোর্ট পেয়েছি তাই তো আসলাম আমি।
-আমার ভূল হয়ে গেছে আর কখনো হবে না৷
এর ভেতর প্রিন্সিপাল এসে হাজির হয়ে গেলো
-কি হয়েছে আরোহী মামনি।
-তেমন কিছু না। বান্দরগুলো বেশি বাড়ছিলো তাই একটু
-থাক মামনি ওরা বুঝতে পারিনি। ওদের ভালো শিক্ষা হয়েছে। লজ্জা থাকলে এমন কিছু আর করবে না।
-ওকে।
কি ব্যাপার অতিতে থাকবেন নাকি বাস্তবতায় ফিরুন এখন
মেহেরাব পানি থেকে উপরে আসতেই
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com