Breaking News

Lady Queen । লেডি কুইন । পর্ব -০৫

স্যার বলে উঠলো
-তোমরা না সবাই ভার্সিটিতে ২য় কে হয়েছিলো তাকে দেখতে চাইতে এ হলো সে মেহেরাব যে এই ভার্সিটির একটা স্বপ্ন। আরোহী উঠে দাঁড়াও মামনি
আরোহী উঠে দাড়ালো। স্যার বলে উঠলো
-এবারের পরীক্ষায় ও হবে ১ম এটা তোমার সাথে চ্যালেন্জ থাকলো।
নেহা উঠে দাঁড়িয়ে
-ও কিভাবে স্যার
-আজকে সবাইকে একটা গল্প শোনাই। মেহেরাব চশমাটা খুলে যাও বসো।
মেহেরাব চশমাটা খুলে শুভ্রর পাশে যেয়ে বসলো। স্যার বলতে শুরু করলো
-ভার্সিটিতে যখন এডমিশন শুরু হয় এই এডমিশন এ কারা বেশি চান্স পায় বলতে পারো।
একজন উঠে দাঁড়িয়ে
-যাদের লাক ভালো তাঁরাই
-হ্যা ঠিক বলছো। যদি লাকটা ভালো না করে নেওয়া হয় তাহলে কি পাওয়া সম্ভব।
কখনো না। আচ্ছা বেশির ভাগ ছেলেমেয়েরা চান্স পায় অধিকাংশ বেশি গ্রামের।
কোটিপতি লাখোপতি বড় লোকের ছেলেমেয়েরা কম।
গ্রামের থেকে ছেলে মেয়েরা ভার্সিটিতে এসে স্মার্ট হয়।
নিজের ভেতর অহংকার বোধ করে। তারা ভূলে যায় আগে সে কি রকম ছিলো।
তারা তো এখন গরীব ময়লা পোশাকের লোকজনদের দেখলে ঘৃণার চোখে দেখে।
নাক ছিটকায়। অনেক ছেলেমেয়ে আছে মিথ্যা কথা বলে গরীব মা বাবার থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের ইচ্ছা মতো চলে। আচ্ছা টাকাটা নেওয়ার সময় কি মনে পড়ে না এই মিথ্যে কথা বলে টাকাটা নিচ্ছি তারা কি এই মাসে চলতে পারবে নাকি তিন বেলা খেতে পারবে।
একজন দাঁড়িয়ে বললো
-স্যার মা বাবা ঠিকি চলতে পারে।
-আচ্ছা চলতে পারে বুঝলাম কিন্তু কিভাবে। খেয়ে নাকি না খেয়ে। ” তোমরা বলো সবাই। “
সবাই একে একে মন্তব্য করে যাচ্ছে। মেহেরাবের কাছে এসে থামলো। স্যার মেহেরাবকে বলতে বললো। মেহেরাব উঠে দাঁড়িয়ে
-স্যার আমি তো এতকিছু বুঝি না জানি না।
তবে হ্যা একবার গ্রামে গেছিলাম তখন বুঝেছি মা বাবা ঠিক কতটা কষ্ট করে ছেলেমেয়েকে বড় করার জন্য।
স্যার আপনি ঠিকি বলছেন বিভিন্ন অজুহাতে গ্রাম থেকে মা বাবার উপর চাপ সৃষ্টি করে টাকা আদায় করে থাকে। এতে কি হয় মিথ্যা বলে আমি পেয়ে অনেক খুশি কারণ সবার গায়ের সাথে মিলে চলতে হবে। অথচ অন্যদিকে মা বাবা গাধার মতো দিন নেই দুপুর নেই কাজ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধার দেনা করে টাকাটা জোগাড় করে। তাদের মাথায় নেমে দুঃচিন্তা ।
হ্যা তারা দু বেলা না খেয়ে এক বেলা খেয়ে থাকে।
এতে মা বাবা অসুস্থ বেশি হয়।
ছেলে মেয়ে বড় হবে তারপর তারা রেস্ট নিবে কত স্বপ্ন দেখে৷
ছেলে বড় হয়ে ইনকাম করবে আর তারা শেষ বয়সে আরাম আয়েশ করবে
কিন্তু তাদের দেখা স্বপ্নগুলো পূরণ হয় না।
হয়তো কেউ আগে চলে যায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে৷
আর কেউ আছে বেচে থাকে তাদের স্থান হয় বিদ্যাশ্রম এ।
যাদের নেই তারা আফসোস করে৷
তখন উপলব্ধি করে মা বাবার ছায়াটা কতটা প্রয়োজন ছিলো।
কথায় আছে না “হারিয়ে ফেলার পর সেই জিনিস খুজতে থাকি।
কাছে থাকলে তা খোঁজার কোন গুরুত্ব থাকে না।
স্যার চোখের পানি মুছে
-বসো। ঠিক বলেছো কিন্তু এই ঙ্গান টুকু সবার ভেতরে নেই।
আমরা একটু পেলে আরো বেশি পেতে চাই।
ক্লাসের ভেতর নিরবতা বিরাজ করলো৷ কারো মুখে কোন কথা নেই।
নেহা উঠে দাঁড়িয়ে
-আচ্ছা স্যার এই যে বড়লোকের ছেলেমেয়েরা চান্স পায় না কেন?
গ্রামের ছেলেমেয়েদের থেকে তো ওদে কোনো কিছুতে অভাব থাকে না।
না বই না ভালো কোনো শিক্ষক৷
-ভালো প্রশ্ন করেছো শোনো গ্রামের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনায় ভালো হয়।
ওরা মনযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে। বড়লোকের অনেক ছেলেমেয়েরা পড়ায় মন দেয় না৷
ওরা ঘোড়াঘুড়ি ইচ্ছা স্বাধীন মতো চলতে ভালোবাসে৷ তবে সবাই না।
এডমিশনের নাম করে ওরা সব জায়হগায় ঘুরে আসে।
বাবার টাকা আছে খরচ করলে ও অসুবিধা নেই।
ভার্সিটিতে চান্স না পেলে তো কি হয়েছে৷ বাবার অনেক টাকা পয়সা আছে প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে যায়।
স্যারের ক্লাস নেওয়ার টাইমটা ওভার হয়ে যায়। স্যার ক্লাস থেকে চলে যায়।
শুভ্র মেহেরাবকে
-তোর কি বুদ্ধি হবে না।
-কেন?
-এভাবে কেউ ভার্সিটি আসে।
আশফা পাশ থেকে বললো
-আপনাকে এই বুদ্ধিটা কে দিলো?
কুহু আরোহীকে বললো
-ক্ষ্যাত ছেলেটার জন্য কত কথা শোনা লাগলো।
-ওর ব্যবস্থা করছি। ওর জন্য স্যার আমাকে চ্যালেন্জ করলো।
আমিও দেখবো ও পরীক্ষা কিভাবে দেয়।
-কি করবি?
-সময়ে সব হবে।
নেহা হৃদয়ের দিকে চেয়ে আছে রাগি দৃষ্টিতে । হৃদয় মাথা নিচু করে আছে। নেহা বলে উঠলো
-তুই জানতি ঐ ছেলে এই ভার্সিটিতে পড়ে।
-না। জানলে তো তোমাকে বলতাম।
-চুপ থাক তুই। তুই ওকে চিনিস।।
-না৷ আমি চিনবো কই থেকে।
নেহা হৃদয়ের গালে চড় বসিয়ে দিয়ে
-তুই আসলে একটা খারাপ। তুই তোর বন্ধুকে আমার জন্য চিনতে পারিসনি।
তাহলে আমার বিপদে তুই আমাকে চিনবি কি করে?
-দেখো তুমি আমাকে ভূল বুঝছো৷ তোমাকে আমি হারাতে পারবো না বলেই না চেনার ভান করছি।
তুমি তো বলছিলা ব্রেকআপ করবা। তুৃৃমি তো গরীবদের চোখে দেখতে পারো না। “
নেহা রাগে
-তুই আমাকে কতটুকু চিনিস। তুই তোর বন্ধুকে চিনতে পারিসনি ।
তোর সাথে অন্য কোনো মেয়ে থাকলে তো আমাকেই চিনতে পারবি না।
যে যার বন্ধুকে চিনতে পারে না তার সাথে আমার কোনো রিলেশন নেই। ব্রেকআপ।
নেহা চলে যায়। হৃদয় বোকার মতো চেয়ে আছে।
শুভ্র মেহেরাবের ঘাড়ে হাত দিয়ে
-কাল থেকে ড্রেস চেঞ্জ করে আসবি।
-না। আমার যা আছে তাই পড়ে আসবো।
-আরে বদল ভার্সিটিতে এসব পোশাক পড়ে আসলে সবাই হাসাহাসি বাজে কথা বলবে।
-তো বলুক
-বলুক মানে। তুই আমার ফ্রেন্ড তুই সবসময় অপমান হ আমি চায় না। এভাবে কখনো আসবি না ওকে।
-কিন্তু
আশফা মেহেরাবকে থামিয়ে দিয়ে
-কোনো কিন্তু না। শুভ্র যা বলছে তাই। চলেন আমাদের সাথে।
-কোথায়।
-যেখানে যাবো ওখানে। ।
মেহেরাবকে নিয়ে বেরিয়ে এসে গাড়িতে উঠে চলে গেলো।
শুভ্র মেহেরাবকে নিয়ে বেরিয়ে যেতেই আরোহী অবাক হয়ে গেলো।
কুহু বলে উঠলো
-ক্ষ্যাত ছেলেকে নিয়ে গেলো কোথায়। ওর সাথে সম্পর্ক কি?
লিমন বলে উঠলো
-ওর বন্ধু। বাল্যকালের৷
আরোহী অবাক হয়ে গেলো।
পরেরদিন,
আরোহী বাইক চালিয়ে আসছিলো ৷
তখন মেহেরাবকে দেখে মেহেরাবের সামনে ব্রেক করলো৷
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com