Lady Queen । লেডি কুইন । লিখা-মেহরাব কাব্য
-আরে দোস্ত তুই। কেমন আছিস
-কে এটা হৃদয় তোমার। তোমাকে দোস্ত বলছে
-আরে আমি তো চিনি না। কে তুমি?
-আরে আমাকে চিনতে পারছিস না। আমি মেহেরাব।
-এই ছেলে তোর সমস্যা কি? ফুতপাতে বসে হকারি করছিস আবার ওকে তুই করে বলছিস। জানিস ও কে?
-সরি আপু। কে ওনি।
-ও ভার্সিটির স্টুডেন্ট। আর তোর মতো টুকায় পোলার সাথে ওর কিসের বন্ধুত্ব থাকবে। তুই কই আর ও কই। ও স্মার্ট আর তুই তো টোকায়৷ “
-আরে নেহা বাদ দাও তো।
-হৃদয় তুই আমাকে চিনতে পারছিস না।
-এই তুমি কি ওকে চেনো সত্যি করে বলবা। যদি চিনে থাকো তাহলে তোমার সাথে আমার এখানেই ব্রেকআপ।
-আরে জান তুমি কি বলছো আমি ওকে চিনবো কিভাবে৷ দেখো না ওর ড্রেস কেমন। চলো তো এখান থেকে।
-সরি ভাইয়া আপু আমি ভাবছিলাম ও আমার বন্ধু কিন্তু না। ভূল হয়ে গেছে। মাফ করে দেন।
-ঠিক আছে। এই ক্লিপগুলো কতো।
-না মানে ইয়ে আসলে
মেহেরাবের চোখটা রাস্তার ওপাশে গেলো।
-আরে ভাই দাম কত বলতে পারছো না। এই তুমি চলো তো।
হৃদয় আর নেহা ক্লিপের প্যাকেটটা রেখে চলে গেলো।
(চলুন পরিচয় পর্বটা দিয়ে দি। হৃদয় আর নেহা দুজনেই ভার্সিটির স্টুডেন্ট। নেহার ডেমাগ অহংকারটা বেশি। গরীবদের চোখে দেখতে পারে না। হৃদয় ও মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। কিন্তু ভার্সিটিতে উঠে স্মার্ট বেশি হয়ে গেছে। পড়াশোনায় মেধা খুব ভালো৷ তাই তো নেহার খুব পছন্দ হৃদয়কে। ওদের ভেতর রিলেশনটা হয়। মেহেরাব যখন যা মন চায় তাই করে। খুব সাদাসিধা।)
-বাবা তোমাকে একটু বেশি কষ্ট দিয়ে ফেললাম।
-আরে না আঙ্কেল ঠিক আছে। আপনার কাজটা কি হয়েছে৷
-হ্যা বাবা। তুমি চা খাবে এনে দি।
-না না আঙ্কেল। আমি নিজে যেয়ে খেয়ে নিবো। টং দোকানের চা।
-ঠিক আছে। খেয়ে টাকা দিয়ো না। আর কিছু খাবে।
-না আঙ্কেল। চা হলেই হবে। “
মেহেরাব কথা বলা শেষ করে টং দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে চা নিলো।
*
নেহা হৃদয়কে জিঙ্গেস করলো
-আচ্ছা তুমি আমাকে ঐটা কবে এনে দিবে। “
-দিবো দিবো। চলো না টং দোকানের চা খায়।
-ছিঃ তুমি কি বলছো হ্যা। আমরা রেস্টুরেন্টে কফি খাবো৷ টং দোকান আমাদের জন্য না।
-আসলে
-বুঝছি তো। আমি খাওয়াবো। এত চিন্তা করো কেন? তুমি কাল নোটগুলো লিখে দিয়ো।
-ঠিক আছে।
**
মেহেরাব হাতে চা নিয়ে খাচ্ছিলো হঠাৎ করে
-আরে মেহেরাব তুই এখানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিস।
মেহেরাব পাশে তাকালো ছেলেটার সাথে একটা মেয়ে রয়েছে। মেহেরাব চোখটা বড় বড় করে দিয়ে
-কে ভাই আপনি।
-আরে আমি শুভ্র। হাই স্কুলে একসাথে পড়তাম। তারপর তো তোর কলেজ আর আমার কলেজ আলাদা হয়ে যায়। কতদিন পর দেখা।
-সরি ভাইয়া আপনাকে চিনতে পারলাম না। “
পাশ থেকে মেয়েটা বলে উঠলো
-এই শুভ্র তোমাকে যে চিনে না তার সাথে এত কিসের কথা। কেমন বন্ধু তোমার হ্যা। এই মামা দুটো চা দেন।
মেহেরাব হা হয়ে গেলো। মাথাটা নিচু করে
-সরি রে শুভ্র। আমি ভাবছিলাম।
-কি?
-আমার মতো ক্ষ্যাত ছেলের সাথে বন্ধুত্ব আছে শুনলে যদি তোর গার্লফ্রেন্ড যদি ব্রেকআপ করে দেয়।
শুভ্র আর আশফা দুজনে হাসতে শুরু করলো।
-আশফা কি বলছে ও শুনছো।
-হুম। আমার মনে হয় কি জানো।
-কি?
-তোমার বন্ধু আমাকে সবার মতো ভাবছে। তাই তোমার রিলেশন রাখবে দেখে না চেনার নাটক করলো।
মেহেরাব খুব বেশি লজ্জা পেলো। তিন জনে চা খেতে লাগলো আর গল্প করতে লাগলো।
(চলুন এবার শুভ্র আর আশফার পরিচয়টা জেনে নিন। শুভ্র আর আশফার ভালোবাসাটা কলেজ থেকে৷ অনেক কষ্টেই দুজন দুজনের মনের কথা বলতে পারছে। আশফা ফ্রি মাইন্ডের। সবার সাথে মিশে যায় নিমিশেই। শুভ্র যেখানে যার সাথে দেখা হোক না কেন কথা বলে। শুভ্র আর আশফা দুজনে একই ভার্সিটিতে পড়ে)
আপনাদের পরিচয়টা দিতে যেয়ে এদিকে যে কখন গাড়িটা এসে দাড়িয়ে হরেন দিয়ে যাচ্ছে খেয়াল নাই।
শুভ্র আর আশফা দুজনে মেহেরাবের থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেলো৷ মেহেরাব রীতিমতো শকড্ খেলো। বেশ অবাক হয়ে গেলো৷ বড় লোকরা টং দোকানের চা খেতে আসছে। আজব দুনিয়ার আজব মানুষগুলো।
মেহেরাব চলে গেলো ।
১৫ দিন পর
মেহেরাব বাইসাইকেল চালিয়ে ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢুকতে যাবে
তখনি সামনে বাইকের সাথে ডাক্কা লাগলো৷
পিছন থেকে এসে পিছনের চাকায় আরেকটা বাইক এসে ডাক্কা মারে।
মেহেরাব সাইকেল রেখে ছিটকে পড়ে পচা পুকুর পানিতে৷ সবাই হো হো হো করে হেসে উঠলো।
চলবে..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com