মিঃ ডেভিল লাভার | পর্ব -০৫
পরের দিন……………….
এতো মানুষের ভিড় যে শান্তিতে দম ফেলার ও উপায় নেই। নীলিমা বাগানের দিকে এলো। এখানেই বেশ লাগছে। হঠাৎ খেয়াল করলো আরহাম নীলিমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। নীলিমা তেড়ে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়!
— আপনার সমস্যা টা কোথায় আমাকে বলেন তো!
— কই কোনো সমস্যা তো আমি দেখছি না। সকাল সকাল রাগ করছেন কেন। রাগ ছাড়ুন শুভ সকাল।
— (রেগে তাকিয়ে আছে)
— আচ্ছা বাবা সমস্ত কিছুর জন্য আই এম রিয়েলি ভেরি সরি।
নীলিমা কিছু বলছে না।
— মাফ করা যায় না? কেঁদে দেবো কিন্তু!
আরহামের মুখ টা দেখার মতো হয়েছে। নীলিমা হাসি চেপে রাখতে না পেরে হেসে দেয়। আরহাম মুগ্ধ নয়নে তা অবলোকন করতে ব্যস্ত। নীলিমা হাসতে হাসতে কিছু না বলে যায়। আচমকা আরহামের হাত বুকের বা পাশে চলে যায়। চোখ বন্ধ কোনো এক অজানা অনুভূতি হচ্ছে তার। এটা সে ভালোই বুঝতে পারছে। সায়মা নীলিমা কে খুঁজতে বাগানে এসেই দেখে আরহাম সেখানে!
— তুমি এখানে কি করছো?
— না কিছু না!
— নাস্তা করেছো?
— উহুঁম!
— জলদি আসো!
সাফওয়ানের সারাটা রাত কত শত কল্পনা জল্পনার মধ্যে দিয়েই কেটে গেলো। একটা অচেনা মেয়ে কে নিয়ে সে কেন এতো ভাবছে সে নিজে ও জানে না। কখন খুঁজে বের করবে কখন আবার একটি বার তাকে দেখবে এল ভেবে তার মন ভীষণ অস্থির হয়ে আছে। পুরো রাত ছটফট করতে করতেই কেটে গেছে।
বাহিরে শোরগোল শোনা যাচ্ছে। বর আসছে কথা টা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে। সায়মা নীলিমা আর সায়মার কাজিন রা মিলে ফিতা ধরবে। এবং বর কে টাকা দিতে হবে। ওরা প্ল্যান করে নিয়েছে কমপক্ষে ১৫০০০ টাকা দিতেই হবে মাস্ট। সায়মা তাড়াহুড়ো করে এসে বললো,
— কিরে তোর হলো?
— হুম শেষ!
সায়মা চোখ বড় বড় করে নীলিমার দিকে তাকিয়ে আছে এটা নীলিমা খেয়াল করলো।
— হুতুম পেঁচার মতো চোখ করে এভাবে তাকিয়ে কি দেখছিস?
— ওখানে সব ছেলেরা তোকে দেখে বেহুঁশ হয়ে যাবে আমি নিশ্চিত!
— এতো টা বাজে লাগছে?[মুখ ফুলিয়ে]
— বাজে না বাজে না। নায়িকাদের মতো লাগছে!
— আমি তো নায়িকা ই সুন্দ্রী![মুড নিয়া]
— ইশ আসছে। এখন চল তো!
— হুম চল!
নীলিমা গোল্ডেন কালারের মধ্যে একটা গাউন পড়েছে। মুখে হালকা সাজ। চোখে কাজল আর চুল খোঁপা করে বাঁধা। ব্যাস এতেই তাকে দারুন লাগছে। এদিকে গেটের সামনে ওয়েট করতে করতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে সবাই। অবশেষেরা এলো। সায়মা দুষ্টুমি করে শরবতের গ্লাসে হলুদ গুঁড়া মিশিয়েছে এটা তাকে বলে নি। সব ছেলে পুরা হা হয়ে আছে। সাফওয়ান তার চোখ সামনে মেয়েগুলোে উপর দিতেই থ হয়ে যায়। কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। নীলিমা ও খেয়াল করলো। চোখ দুটো বড় বড় করে মনে মনে বললো,
— এটা সেই শপিংমলের কালো বাঁদর টা?? এ এখানে কিভাবে এলো!
সাফওয়ান ততক্ষনে বিষয় টা বুঝতে পারলো। নীলিমার দিকে তাকিয়ে একটা ডেভিল স্মাইল দেয় সে। সায়মা আফিকের দিকে শরবতের গ্লাস এগিয়ে দেয়। পাশাপাশি ওরা ৩ নীলিমারা ৩ জন। সাফওয়ানের সোজাসুজি নীলিমা পড়েছে। সায়মার সেই স্পেশাল করে বানানো শরবত টা ভুল বশত নীলিমার কাছে যায়। ৩ জন ই তুলে খাইয়ে দিতে নিবে সাফওয়ান থমকে গেলো। খাওয়া অসম্ভব এই শরবত। কোনো ভাবে নিজেকে সামলিয়ে নীলিমার মুখে ধরতেই নীলিমার চোখ বড় বড় করে সাফওয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে। সাফওয়ান বেশি হয়ে যাচ্ছে দেখে গ্লাস টা সরায়। নীলিমা বহু কষ্টে সেখানে নিজেকে সামলিয়ে নেয়। এবার আসলো ফিতা কাটার পালা। পাপড়ি ভর্তি একটা বাটি থেকে একটা পেপার ই তুলতে হবে এবং সেখানে যা উঠবে তাই দিতে হবে। আফিক একটা তুললো। ২০০০০ টাকা উঠেছে। সবাই উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আফিক সাফওয়ান কে দিতে যাবে নীলিমা নিয়ে নেয় এবং দেখে ফেলে।
— জলদি ২০০০০ টাকা দিন। কোনো কিপ্টামি চলবে না।
সাফওয়ান পাশ থেকে বলে উঠলো,
— আমাদের কি আপনাদের মতো কিপ্টা মনে হয়?
এতো রিতিমত অপমান হয়ে যাচ্ছে। নীলিমা দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
— আপবাকের মন খুব উদার আমরা সেটা ভালোই বুঝেছি। এখন আমাদের হিসাব আমাদের বুঝিয়ে দিন!
না কেউ মানছেই না। বিশ হাজার টাকা ই দিতে হলো অবশেষে। সায়মা কে কানে কানে দুমিনিটের কথা বলে জলদি হাঁটা ধরে নীলিমা। মুখের পুরো অবস্থা খারাপ। আর একটু হলে এক্ষুনি বমি করে দিবে। একটা রুমে গিয়ে ঢকঢক করে কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে পিছন ফিরতেই দেখে……
চলবে….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com