প্রতিশোধের ভালোবাসা । পর্ব -০২
মেঘা ওর কাজিনকে বললো,কোথায় ছিলি তুই? এতো দেঁড়ি করলি কেনো?
আচ্ছা থাক বাদ দে পরিচিত হয়ে নে। ও হচ্ছে রবি যাকে দেখতে চেয়েছিলি তোরা।
আর রবি এ হচ্ছে আমার কাজিন।
আমার মুখ দিয়ে তো কোনো কথা বের হচ্ছে না। ভাবতেছি এখন কি করবো।
যত তাড়াতাড়ি এখান থেকে যেতে পারবো ততই আমার জন্য ভালো হবে।
মেঘা যদি এটা জানতে পারে তাহলে আমাকে পুলিশে দিবে সেটা নিশ্চিত আর ওর বাবাও পুলিশ সারাজিবন জেল খানায় কাঁটাতে হবে।
এরকম পরিস্থিতিতে এর আগে কখনও পরিনি।
মেঘার কাজিনও কিছু বলছে না তবে মেঘাকে যে বলবে সেটা নিশ্চিন্তে থাকতে পারি।
আমাকে চুপ থাকতে দেখে মেঘা বললো,
কি হলো চুপ করে আছো কেনো? একটু আগেও তো অনেক কথা বলছিলে
রবিঃ না মানে কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না।
আচ্ছা আমার একটা কাজ আছে আমি এখন যাই পরে কথা হবে
মেঘাঃ কোথাও যাবে না তুমি। আর তুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেনো?
মনে হচ্ছে তোমায় কেও তাঁড়া করছে।
রবিঃ ( কেনো যে ভয় পাচ্ছি তা যদি তুমি জানতে তাহলে এতখনে আমার হাসপাতালে থাকতে হতো)
আরে ভয় পাবো কেনো?
এমনি কথা বলছি না। আচ্ছা তোমরা কথা বলো আমি শুনতেছি।
হঠাৎ মেঘার কাজিন মানে আমার এক্স- গার্লফ্রেন্ড বলে উঠলো,
আচ্ছা আপনাদের পরিচয়টা কিভাবে হয়েছিলো? আর প্রেম ই বা কিভাবে হলো?
রবিঃ সে এক ইতিহাস।
অনেক সময় লাগবে বলতে। আপনার কাজিনের কাছ থেকে পরে শুনে নিয়েন।
— আচ্ছা আপনিই বুঝি আগে প্রপোজ করছিলেন
মেঘাঃ হ্যা। প্রথম প্রথম তো আমি ওকে সয্যই করতে পারতাম না।
তারপর ঠিকই ওকে ভালোবেসে ফেলি।
রবিঃ বুঝতে পারতেছি না মেঘার কাজিন কি করতে চাইতেছে
এমনিতেই তো ভয়ে আছি ও কথা বললে আরও ভয়ে থাকি।
মনে হচ্ছে যেনো এই বুঝি মেঘাকে সব সত্তি বলে দিচ্ছে।
যেনো জেলখানায় বন্দী আছি। কখন যে এখান থেকে ছাড়া পাবো বুঝতেছি না।
আর মেঘা আজকে এতো কথা বলছে মনে হচ্ছে আমাকে জোর করে আটকে রাখবে।
মেঘা ওর কাজিনদের সাথে কথা বলতেছে আর আমি চুপচাপ ওদের কথা শুনছি।
হঠাৎ মোবাইলে কল আসলো ,
— হ্যা বাবা আমি আসছি।
মেঘাঃ কি হয়েছে?
রবিঃ বাবা কল দিয়েছে জরুরি যেতে হবে আমাকে।
মেঘাঃ আচ্ছা যাও।
কিছুখন পর
অবশেষে ওদের কাছ থেকে ছাড়া পেলাম ভয়ে তো আমার হাত- পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো।
এমন সময় সাকিব কল দিলো মনে হচ্ছিলো যেনো প্রান ফিরে পেলাম।
সাকিবঃ তোর মাথা ঠিক আছে তো? ফোনে কিসব ফালতু কথা বলতেছিলি।
রবিঃ মাথা ঠিকই আছে তবে আর একটু হলে খারাপ হয়ে যেতো।
তোকে ধন্যবাদ ভাই ওই সময় কল দেওয়ার জন্য।
মনে হচ্ছে যেনো বাঘের গুহা থেকে বেঁচে ফিরেছি।
সাকিবঃ মানে? কি সব উল্টা- পাল্টা বলছিস?
রবিঃ দিশার সাথে দেখা হয়েছিলো আর তার থেকেও বড় কথা হলো দিশা হচ্ছে মেঘার কাজিন।
একটু আগে মেঘা আমার সাথে ওর পরিচয় করিয়ে দিলো।
ভাই ভয়ে তো আমার হাত- পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো।
দিশা যদি মেঘাকে সবকিছু বলে দেয় তাহলে কি হবে ভেবে দেখেছিস?
ওখানে থাকা প্রতিটা মুহুর্ত আমার ভয়ে কেঁটেছে।
এমন সময় তুই কল দিলো কোনো রকমে বেঁচে ফিরলাম।
সাকিবঃ কি আর হতো মেঘা তোর সাথে ব্রেকআপ করে দিতো আর পুলিশে দিয়ে দিতো।
রবিঃ ধুরো ভয় দেখাস না তো। এখন বল কি করবো?
আচ্ছা মেঘাকে কি সত্তিটা বলে দিবো তারপর যা হবার হবে।
ভাই আমি মেঘাকে সত্তিই ভালোবেসে ফেলেছি।
তোর কথাগুলো ভেবেছি কিন্তু তার কোনোটাই না।
আসলে আমি মেঘাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।
সবসময় ওকে হারানোর ভয় কাজ করে।
সাকিবঃ আচ্ছা তুই গিয়ে মেঘাকে বল,
মেঘা দিশা আমার এক্স- গার্লফ্রেন্ড ছিলো আর ওর সাথে আমার সবকিছু হয়ে গেছে
কিন্তু বিশ্বাস করো আমি তোমাকে সত্তিই অনেক ভালোবাসি।
তোর এসব কথা শুনার পর
মেঘা তো অনেক ইমোশনাল হয়ে তোকে জড়িয়ে ধরবে
সরি দু- গালে ইচ্ছামত থাপ্পর মারবে তারপর মোবাইল বের করে ওর বাবাকে কল দিবে
আর ওর বাবা পুলিশ পাঠিয়ে তোকে গ্রেফতার করবে।
তারপর তোর বিরুদ্ধে মেয়েদের সাথে প্রতারনা করার জন্য মামলা দিয়ে দিবে বেশি না ৫ বছরের জেল হবে এটা নিশ্চিত থাকতে পারিস।
রবিঃ ওরে ভাই তোর সিনেমার কাহিনী শুনানো বাদ দে ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।
ফাইজলামি করিস না ভাই আমি কতটা টেনশনে আছি বুঝতে পারছিস
সাকিবঃ আপাতত কোনো কিছু বলা যাবে না।
আগে দেখ মেঘার দিক থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসে কিনা মানে দিশা মেঘাকে সবকিছু বলে কিনা।
যদি মেঘা তোকে কিছু না বলে তাহলে তোর চুপচাপ থাকাই ভালো।
রাতে তাড়াতাড়িই শুয়ে পড়লাম। অন্যদিন হলে তো মেঘাকে কল দিতাম কিন্তু আজকে কল দিতেও ইচ্ছা করতেছে না। যখনই মেঘাকে কল দিতে যাই তখনই মনে হয় দিশা বুঝি মেঘাকে সবকিছু বলে দিচ্ছে।
ঘুমানোর চেষ্টায় আছি কিন্তু আজকে ঘুমও আসছে না। এতো টেনশনে থাকলে কি আর ঘুম আসে। হঠাৎ মোবাইলে কল আসলো। লাফিয়ে উঠলাম মনে হচ্ছে যেনো মেঘা কল দিচ্ছে সত্তিটা যেনে। কিন্তু না অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে কল আসলো। রিসিভ করে বললাম, জ্বী কে বলছিলেন?
— এতো তাড়াতাড়িই ভুলে গেলে? অবশ্য ভুলে যাওয়ারই কথা তুমি তো এখন নতুন রিলেশনে আছো। তুমি আমার সাথে টাইমপাস করলেও আমি তোমাকে সত্তিই ভালোবেসে ছিলাম এখনও ভালোবাসি আর সামনেও বাসবো।
রবিঃ তুমি এতো রাতে কেনো কল দিয়েছো?
দিশাঃ চিন্তা করো না আমি এখনও মেঘাকে কিছু বলিনি। আমার সাথে তো টাইমপাস করলে এখন আবার মেঘার সাথে। তুমি আসলে কি চাও বলোতো?
রবিঃ আমি মেঘাকে সত্তিই ভালোবাসি। ওর সাথে কোনো টাইমপাস করছি না।
দিশাঃ তাহলে আমার সাথে কেনো করলে?
রবিঃ কি চাও তুমি?
দিশাঃ তোমার কাছে চাওয়ার কিছু নেই। তবে একটা কথা যেনে রাখো তুমি আমার সাথে যা করেছো মেঘার সাথে তা কখনই পারবে না। আর খুব তাড়াতাড়ি মেঘা সত্তিটা জানতে পারবে আমার কিছু বলতে হবে না
এটা বলেই দিশা কল কেঁটে দিলো। ওর কথায় টেনশন আরও বেড়ে গেলো। খুব তাড়াতাড়ি মেঘা সত্তিটা কি ভাবে জানতে পারবে ও না বললে। তাহলে কি ও নিজেই মেঘাকে সব সত্তি বলে দিবে। উফ! কিছু ভাবতে পারছি না।
কিছুখন পর মেঘা কল দিলো। রিসিভ করার সাথে সাথেই মেঘা বললো, তুই আমার সাথে এটা কিভাবে করতে পারলি? কতটা ভালোবেসে ছিলাম আমি তোকে আর তুই তার এই প্রতিদান দিলি। তোর সাথে কথা বলতেই আমার ঘৃনা হচ্ছে।
চলবে—
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com