কালো বউ । পর্ব- ৩৫
তুমি ঠিক আছো ?
কেনো আপনার কাছে কী আমাকে অস্বাভাবিক লাগছে ? মনে হচ্ছে আমি ঠিক নেই ?
একটু বেশি ঠিক আছো মনে হচ্ছে আর সেটা আমার কাছে স্বাভাবিক হয় বরং অস্বাভাবিক লাগছে।
একদম শান্ত গলায় তমসা বললো, কী করবো বলুন তো ? আমার কী করা উচিত,
কী রিয়াকশন দেওয়া উচিত সেটাই বুঝতে পারছি না।
হারাতে হারাতে নিঃস্ব হয়ে গেছি আর অপমানিত হতে হতে আত্মবিশ্বাস তলানিতে এসে পড়েছে।
এখন আর নিজেকে মানুষ মনে হয় না।
রুপক তমসার মুখের দিকে ভাবতে লাগলো,
তোমাকে কীভাবে সান্ত্বনা দিবো জানি না আর না জানি কীভাবে পাশে দাঁড়াবো।
কথায় আছে অল্প আঘাতে কাতর আর অধিক আঘাতে পাথর।
তুমিও পাথর হয়ে গেছো।
আর দেখুন না আমার জন্য আপনাকেও কত অপমান সয্য করতে হলো।
এতে তোমার দোষ নেই।
তমসা চাপা অভিমান নিয়ে বললো,
যে আপনার সার্ভেন্ট হওয়ার যোগ্য নয় আজ না চাইতেও সে আপনার ওয়াইফ হয়ে গেছে সমাজের চোখে।
সেটা তো আমারই দোষ।
এ কথা শুনে চমকে তমসার দিকে তাকালো রুপক আর বললো, আমি…
রুপকের কথা শেষ করতে না দিয়েই তমসা বললো, নিচে আসুন ব্রেকফাস্ট দিচ্ছি।
তমসা আর এক মুহুর্ত না দাঁড়িয়ে নিচে চলে গেলো আর রুপক বেডে বসে পড়লো।
তার নিজের ওপর রাগ হচ্ছে কেনো সেদিন তমসাকে সেসব কথা বলেছিলো।
পাশ টেবিল থেকে কাপ নিয়ে চুমুক দিলো। তমসার হাতের কফি এইফাস্ট খেলো,
জাস্ট অসাধারণ হয়েছে। একদম রেডি হয়ে নিচে নামলো রুপক।
রবিন আগে থেকেই ডাইনিং টেবিলে বসে আছে আর তমসা খাবার সার্ভ করছে।
রুপককে ফর্মাল ড্রেসে দেখে রবিন বললো, তুমি কোথায় যাচ্ছো রুপক ?
অফিস ছাড়া আর কোথায় যাবো ?
মাত্র গতকাল বিয়ে হয়েছে আর আজ তুমি যাচ্ছো অফিসে ?
বাবা তুমি সব জানো তারপরও ?
হ্যাঁ আমি সব জানি আর তাই বলছি বৌমাকে নিয়ে কোথাও থেকে ঘুরে আসো দুজনেরই মন ভালো হয়ে যাবে।
তুমি অসুস্থ আর আমি তোমাকে রেখে বাইরে যাবো ?
দূরে কোথাও তো আর যেতে বলছি না।
কাছেই কোথাও যাও যাতে প্রয়োজন হলে চলে আসতে পারো।
কিন্তু…
আমি কোনো কিন্তু শুনতে চাই না।
বাবা ছেলের কথা শুনে তমসা বললো, স্যার যখন যেতে চাইছে না জোড় করেন না বাবা।
ভ্রু কুঁচকে রবিন বললো, এখানে তোমার স্যার আসলো কোথা থেকে ?
তমসা রবিনের কথা শুনে রুপকের দিকে তাকালো। রুপক সেটা দেখে বললো,
বাবা অনেকদিনের অভ্যাস তো ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।
রবিন বললো, অনেকদিনের অভ্যাস কোথায় ? মাত্র তো এক মাসের অভ্যাস।
রুপক বললো, তাও একটু সময় লাগবে।
রবিন বললো, থাক সেটা তবে কোথায় যাচ্ছো সেটা বলো ?
রুপক বললো, বিকেলে নিয়ে যাবো কোথাও আমি এখন অফিস থেকে আসছি।
কিন্তু
তোমার কথা রেখেছি তো বাবা এখন আর কথা বাড়িয়ো না।
রবিন মনে মনে ভাবলো, কীভাবে বাড়াবো না বলো ?
আমি তোমার জীবনটাকে নিজের চোখে গুছানো দেখে যেতে চাই।
বিয়েটা যেভাবেই হোক আমি চাই তোমরা সেটা মেনে নাও
আর বাকি সবার মতো একটা হাসিখুশি জীবন কাটাও।
আমার সময় ফুরিয়ে আসছে সেটা আমি বুঝতে পারছি।
আর মৃত্যুর আগে অন্তত একবার নিজের ছেলেকে প্রাণ খোলে হাসতে দেখতে চাই।
একান্তে দুজন কিছু সময় কাটালে একটু হলেও স্বাভাবিক হতে পারবে দুজন।
রবিনকে চুপ থাকতে দেখে রুপক বললো, কী হলো তুমি আবার চুপ করে গেলে কেনো ?
তুই যদি আমার কথা মতো কোথাও না যাস আমি একটা মেডিসিনও নিবো না।
আর যদি তুই বৌমাকে দিয়ে ঘুরতে যাস ডক্টরের সব কথা শুনবো আমি।
রুপক একটু বিরক্ত হয়ে বললো, এটা কী ধরনের বাচ্চামি বাবা ?
আমি কিছু জানি না, আমি যেটা বলেছি সেটাই হবে। আর তুমি আজ অফিসে যাচ্ছো না।
রুপক চেয়ার থেকে উঠে নিজের রুমের দিকে যেতে যেতে বললো,
ঠিক আছে তুমি যা বলছো তাই হবে।
রবিন তা দেখে মুচকি হেসে বললো,
আজ বিকেলেই কক্সবাজার যাবে আর এখন বৌমাকে নিয়ে শপিংয়ে যাও।
তমসা পাশে দাঁড়িয়ে নিরব শ্রোতার মতো সব শুনছে তার বলার কিছু নেই।
আর না আছে নিজের কোনো ইচ্ছে।
তমসা যাও রেডি হয়ে নাও।
তমসা বললো, আপনাকে রুমে দিয়ে আসি ?
না আমি এখন ড্রয়িংরুমে বসে একটু নিউজ দেখবো।
ঠিক আছে।
তমসা রুমে গিয়ে দেখে রুপক অফিসের ড্রেস পরেই বেডে শুয়ে আছে।
তমসার বড্ড ঘুম পাচ্ছে কিন্তু কী আর করার ?
এখন কী পরে রেডি হবে সেটাও বুঝতে পারছে না।
বাসায় থেকে এক কাপড়ে বের হয়ে এসেছে। ওর কাছে কিছুই নেই, নিজের ফোনটাও না।
কী হলো দাঁড়িয়ে কী ভাবছো ? যাও রেডি হয়ে নাও শপিংয়ে যাবে না ?
না মানে কী পরে রেডি হবো বুঝতে পারছি না ?
রুপক সাইড টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা চাবি বের করে তমসার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
এটা বৃষ্টির রুমের চাবি। একদম কর্ণারের রুম।
যেটা ভালো লাগে সেটা পরে রেডি হয়ে নাও এখন। যা যা লাগে সব শপিং করে নিয়ো আজ।
চাবিটা নিয়ে তমসা বললো, ঠিক আছে।
তমসা বৃষ্টির রুমে গিয়ে হালকা গোলাপি রঙের একটা ড্রেস পরে নিলো আর সাথে হিজাব।
রেডি হয়ে রুপকের রুমে চলে এলো।
কারো আসার শব্দ শুনে রুপক দরজার দিকে তাকালো। তমসা তখন দরজা দিয়ে ঢুকলো।
ভালোই লাগছে এই ড্রেসে।
রুপক বুঝতে পারছে না কাল থেকে তমসাকে সে যেভাবেই দেখে সেভাবেই ভালো লাগে।
তবে আগে কেনো এমন লাগেনি।
হয়তো আগে একজন বসের দৃষ্টিতে দেখতো আর এখন হাসবেন্ডের দৃষ্টিতে দেখছে তাই।
দুটো দৃষ্টিতে আকাশ পাতাল ব্যবধান সেটা রুপক নিজেকে দিয়ে বুঝতে পারছে।
রুপক মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তমসার দিকে।
তমসা সেটা খেয়াল না করে বললো, আমার হয়ে গেছে চলুন।
তমসার কথায় রুপকের হুশ ফিরলো আর খানিকটা গলা পরিষ্কার করে বললো, চলো।
আজ ড্রাইভার নেয়নি রুপক।
নিজে ড্রাইভ করছে আর পাশে তমসা বসে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।
তমসাকে কেনো জানি রুপকের কাছে রোবটের মতো মনে হচ্ছে।
যে যেটা বলছে রোবটের মতো করে যাচ্ছে।
সেটা সে করতে চায় নাকি চায় না সেটাও বুঝা যাচ্ছে না।
তমসাকে চুপচাপ থাকতে দেখে রুপক বললো, কোন মলে যাবে ?
আপনার যেখানে ইচ্ছে।
আসলে তমসার সাথে কথা বলার জন্য রুপক এটা জিজ্ঞেস করেছিলো
কিন্তু তমসা উত্তর দিয়ে আবার চুপ করে গেলো।
রুপক সবসময় চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে
তবে আজ কেনো জানি তমসার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে।
সয্য হচ্ছে না তমসার এই গম্ভীর হয়ে যাওয়া। কিন্তু কী করবে সেটাও বুঝতে পারছে না।
কারণ সে কারো সাথে তেমন কথা বলে না। কী দিয়ে শুরু করবে বুঝতে পারছে না।
গতরাতে কয়টার সময় আরাফাত বাসায় এসেছে কেউ বলতে পারবে না।
সকালে আয়রা ব্রেকফাস্টের জন্য ডাকতে গিয়ে রুমে ঢুকেই নাক চেপে ধরলো।
সারারুম সিগারেট আর এলকোহলের গন্ধে ম-ম করছে।
আরাফাতকে দেখে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে আর বেডের পাশে ফ্লোরে এলকোহলের বোতল।
সেটা দেখে আয়রা চমকে গেলো কারণ আরাফাতের ড্রিংক করার অভ্যাস নেই
তাহলে এটা কোথা থেকে এলো ? আয়রা আরাফাতের হাত ধরে টান দিয়ে
নিজের দিকে ঘুরাইতেই এলকোহলের গন্ধে তার দম বন্ধ হয়ে এলো।
আরাফাত একটু নড়েচড়ে আবার আরাম করে ঘুমাতে লাগলো
আর আয়রা চিৎকার করে তার মাকে ডাকতে লাগলো।
মম তাড়াতাড়ি আসো, দেখে যাও তোমার ছেলের কতো উন্নতি হয়েছে।
আরাফাতের মা চিৎকার শুনে বিরক্তি নিয়ে বললো,
কী হয়েছে সকালবেলা এমন চিৎকার শুরু করেছিস কেনো ?
আরাফাতের মা আরাফাতের রুমে এসে ঢুকতেই নাক চেপে ধরলো।
এসব কী আয়রা ?
সেটা তো আমিও বুঝতে পারছি না।
তোমার ছেলে শেষমেশ কিনা একটা কয়লার ড্রামের জন্য দেবদাস হয়ে গেলো।
এটাকে তো আরাফাতের জীবন থেকে বিদায় করেও শান্তি হচ্ছে না দেখছি।
আমার সোনার টুকরো ছেলে আরো বিগড়ে যাবে।
এখন কী করবে মম ?
কিছু একটা চিন্তা করে আরাফাতের মা বললো, কিছু একটা তো করতেই হবে।
এভাবে তো আমার ছেলের জীবন নষ্ট হতে দিবো না আমি।
আমি এসব বিশ্বাস করি না মা। আপু এমন কিছু কখনোই করতে পারে না।
আপু আমার কাছে কখনো লুকাতো না তেমন কোনো বিষয় হলে।
চোখে মুখে বিস্ময় নিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে সিনহা।
কিছুতেই সে মানতে রাজি নয় তমসা এসব করেছে। সে তার বোনকে ভালো করেই চেনে।
সিনহার মা মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললো, আমিও বিশ্বাস করতে পারছি না এখনো।
আমার মেয়েকে কী আমি চিনি না ?
সিনহা বলে উঠলো, তাহলে বাবা আপুকে এতো কিছু বলেছে তুমি কিছু বলোনি কেনো ?
এতো অপমানিত তোদের বাবা কখনো হয়নি।
তার আদরের মেয়ের জন্য সেই অপমান সয্য করতে হয়েছে সেটা তোদের বাবা মানতে পারেনি৷
যে মেয়ে নিয়ে সবার সামনে গর্ব করতো সেই মেয়ের জন্য এমন মানুষের কথা শুনতে হয়েছে,
যেসব মানুষ কখনো তোদের বাবার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সহস পায়নি।
এটা তোদের বাবা কিছুতেই মানতে পারেনি। আর সব রাগ ঝেড়েছে মেয়ের উপর।
আমি আপুকে এখনই কল দিচ্ছি।
কান্না ভেজা গলায় সিনহার মা বলে উঠলো, খবরদার না,
তোদের বাবা বলেছে যদি কেউ তমসার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাহলে উনার মরা মুখ দেখবে।
এভাবে কতদিন চলবে মা।
জানি না, তানভীরটা সেই গতকাল থেকে কিছু মুখে দেয়নি।
তমসা কেমন আছে সেটা জানতে না পেরে ছটফট করছে।
তোদের বাবার জন্য কিছু করতেও পারছে না ছেলেটা।
কথাগুলো বলে কান্না করতে লাগলেন সিনহার মা আর সিনহা উঠে গিয়ে মাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।
মা রুপক ভাইয়া বিয়ে করেছে।
ব্রেকফাস্ট টেবিলে মেঘলা, আকাশ, রোদ আর বৃষ্টি সবাই একসাথে নাস্তা করছে।
হঠাৎ বৃষ্টি একথা বলে উঠলে সবাই চমকে ওর দিকে তাকালো।
রোদ স্যান্ডউইচ কামড় দিতে গিয়ে সেভাবেই হা করে আছে।
মেঘলা চমকে বললো, কীহ ?
হ্যাঁ গতকাল রাতে তমসা আপুর সাথে আরাফাত ভাইয়ার নয় রুপক ভাইয়ার বিয়ে হয়েছে।
মেঘলা বিরক্ত হয়ে বললো, কী বলছো এসব আবোলতাবোল ?
আবোলতাবোল কিছু বলছি না। যেটা সত্যি সেটাই বলছি।
হঠাৎ রোদ বলে উঠলো, কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব ?
এরপর বৃষ্টি সব খোলে বললো গতকাল রাতে সিনহাদের বাড়িতে কী কী হয়েছে ?
শেষে বললো, আয়রা সব মিথ্যা বলেছে। ভাইয়া আর আপুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে।
তেমন কিছু হলে ভাইয়া কাউকে না বললেও আমাকে অন্তত বলতো কারণ আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম।
মেঘলা বললো, মেয়েটাকে অনেক বাজে কিছু ফেস করতে হয়েছে তাই না বৃষ্টি।
হুম আর সবচেয়ে বড় কথা আঙ্কেল আপুকে ভুল বুঝে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
আর স্যারও কিছু করতে পারছে না কারণ আঙ্কেল বলেছে কেউ
আপুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মরা মুখ দেখবে।
রোদ বলে উঠলো, কিন্তু এভাবে কেউ কিছু না করলে উনার ভুল কোনোদিন ভাঙবে না।
বৃষ্টি বললো, হুম আমিও সেটাই ভাবছি, কিছু একটা করতে হবে।
এর আসল কাহিনি সবার সামনে আসলে উনার বাবার ভুল অন্তত ভাঙবে
আর এই আয়রার একটা শিক্ষা হবে।
সিনহা বলেছিলো আয়রা আর তার মা নাকি প্রথম থেকেই আপুকে পছন্দ করতো না।
রোদ বললো, কিন্তু তুই কী করবি ?
সেটাই ভাবছি।
মেঘলা অবাক হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। আজ বৃষ্টির মধ্যে সে চাঁদকে দেখতে পাচ্ছে।
চাঁদও সবসময় এভাবে মেঘলার হয়ে সবার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো।
মেঘলা আল্লাহকে শুকরিয়া জানায় তার ছেলেমেয়ে তার মতো হয়নি।
ওরা মুখ বুজে সব সয্য না, প্রতিবাদ করতে পারে।
বৃষ্টি মনে মনে ঠিক করে নিলো সেই কিছু একটা করবে
আর তার ভাইয়া আর আপুর ওপর থেকে মিথ্যা অপবাদ তুলে দিবে।
আর আয়রার একটা ব্যবস্থা করবে।
অনেক সময় ধরে সেলসম্যান তমসাকে এটা ওটা দেখিয়ে যাচ্ছে
কিন্তু তমসা কিছুই বলছে না আর পছন্দও করছে না কিছু।
সেসব দেখে রুপক বললো, কী হলো পছন্দ হচ্ছে না কিছু ?
তমসা কিছু বলছে না কারণ সে কিছু খেয়ালই করেনি
সে জুয়েলারির শপের দিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ বলে উঠলো, আরাফাতের দেওয়া জুয়েলারি
আর ড্রেসগুলো ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন ?
এভাবে তমসার মুখে হঠাৎ আরাফাতের নাম শুনে কেনো জানি রুপকের রাগ হলো।
তাই বললো,
চলবে,,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com