Breaking News

ফিরে আয় | শেষ পর্ব

নীলা, কাপা কন্ঠে মাহফুজ আমাকে একটু জড়িয়ে ধরো প্লিজ..? একটা কথাও বলবে না,
মাহফুজ, কি আর করবো,কোনো উপায় না পেয়ে ওকে জরিয়ে ধরতে হলো,কিন্তু পিচনে হাত দিতেই ভেজা ভেজা লাগলো,কিছু বুঝলাম না,ভিজে গেলো কিভাবে..? হাতটা পিছন থেকে সামনে নিয়ে আসতেই দেখি নীলার রক্তে আমার পুরো হাত ভিজে গেছে……!
ওহহ মাই গড নীলা,কি করে হলো এটা…!
নীলা, কোনো কথা না বলে মাহফুজের শরীরের উপর ঢুলে পরলো…
মাহফুজ, নীলার কোনো শ্বাস চলছে না,নীলা তুই আমাকে ছেড়ে চলে যেতো পারিস না,নীলা তুই ফিরে আয়…
আমি আর সহ্য করতে না পেরে নীলা বলে চিৎকার দিয়ে উঠলাম,আর তখনই আমার ঘুমটা ভেঙে গেলো,তারপাশে তাকিয়ে দেখি আমার আমার বিছানার পরেই আছি,কিহহহ তার মানে এতোক্ষণ ধরে স্বপ্ন দেখছিলাম..?
স্নপ্নই যদি এতোটা পরিমান বাজে হয়,তাহলে রিয়েল লাইফে ঘটলে কি হতো..?
পুরো শরীর ঘামে ভিজে গেছে,আমি প্রচুর পরিমান ভয় পেয়েছি স্বপ্নের মধ্যে,বিছানায় বসে নিজেকে একটু শান্ত করার চেষ্টা করলাম,একটু পরেই ফজরের আযান দিয়ে দিলো,তারপর ওজু করে নামাজটা আদায় করে নিলাম,আল্লাহর কাছে দুয়া করলাম যেন আমি নীলাকে আমার অর্ধাঙ্গীনি বানাতে পারি,
সকালে ব্রেকফাস্টের জন্য আম্মু ডাক দিলো,গিয়ে দেখি নীলা বসে সোর সাথে গল্প করছে,তখন নীলাকে ডাক দিলাম,
এই নীলা এদিকে আসো তো..?
নীলা, মাহফুজের কাছে চলে আসে,হা বলো কি হয়েছে..?
মাহফুজ, নীলা তোমাকে গতকালই বলেছিলাম যে খুব ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে,রাতে গোমার কথা ভেবে ঘুমানোর পরে ঘুম বাজে একটা স্বপ্ন দেখেছি,আমার এখন খুব ভয় হচ্ছে,তোমাকে আবার হারিয়ে না ফেলি,তুমি আমার জীবন থেকে চলে যেও না প্লিজ,
নীলা, এই তুমি একটু শান্ত হও তো..! তুমি গতকালই আমাকে দেখলে,আর আজকে খারাপ স্বপ্ন দেখে নিলে,তো মিস্টার কি স্বপ্ন দেখেছো আমাকে নিয়ে..?
মাহফুজ, তারপর নীলার কাছে পুরো স্বপ্নের কথা বললাম,
নীলা, এই রে কি করেছো তুমি..? আমাকে শেষ পর্যন্ত মেরেই ফেলেছো..?
মাহফুজ, এই নীলা দেখো তুমি মন খারাপ করো না,এটা শুধু একটা স্বপ্ন ছিলো,আর তুমি তো সত্যি সত্যি মারা যাওনি,দেখো রেগে যেও না..!
নীলা, মাহফুজের কথা শুনে জোরে হেসে দেয়,মাহফুজ আসলেই তুমি একটা পাগল,আমি তোমার কাছে এমনিতেই জিজ্ঞাসা করেছিলাম,আর তুমি এরকম করে বলছো..? আবার হাসতে থাকে,
মাহফুজ, নীলার হাসির দিকে একধ্যানে তাকিয়ে আছি,ওর হাসি দিয়ে যেন মুক্তা ঝড়ছে,এমন হাসির নেশায় ডুবে থেকে তো আমি আজীবন কাটিয়ে দিতে পারবো?
নীলা, আসলে মাহফুজ আমি তোমাকে আগে থেকেই ভালোবেসে ফেলেছি,কিন্তু তোমাকে কথাটা বলার সাহস হয়ে উঠে নাই,আমি এই বাসায় আসার আগেই তোমাকে চিনতাম,তোমাকে অনেকবার দূর থেকে দেখেছি,কিন্তু সামবে এসে কথা বলার সাহস হয় নাই,বাবা প্রায়ই তোমাদের বাসায় আমাকে নিয়ে আসে,কিন্তু অিকাংশ সময় তুমি থাকতে না,আমি তোমার ঘরে গিয়ে সমস্ত জিনিস দেখে আসতাম,তোমাকে আমি খুব ভালো করেই চিনি।
মাহফুজ,ওরে ফাজিল তাহলে তুমি আমার বায়োডাটা আগেই জানো..? এতোক্ষন আমার সাথে কাহিনী করতেছো তাইলে..?
নীলা, নাহহহ কাহীনি তো করছি না,তবে একটু সমস্যা আছে,আব্বু আমার জন্য পাত্র দেখতে শুরু করেছে,ছেলেও মনে হয় ঠিক করে ফেলতে পারে,তাই আংকেল আমাকে সেফটি রাখার জন্য এইখানে নিয়ে এসেছে,যাতে কোনো ছেলে আমাকে ডিস্টার্ব করতে না পারে,কিন্তু আংকেল আর আব্বু তো আর জানে না যে তাদের ছেলেকে ভালোবেসে আমি বসে আছি,হি হি হি
মাহফুজ, তাহলে তোমার বিয়ের জন্য ছেলে ঠিক করা হয়ে গেছে..? আমাকে আগে বললেই পারতে,আমি তোমার দিকে আর আগাতাম না,মন খারাপ করো চলে আসতে লাগলাম,
নীলা, পিছন থেকে গিয়ে মাহফুজকে জরিয়ে ধরে,এই মাহফুজ তুমি এমনভাবে চলে যাচ্ছো কেন..? আরে আব্বু ছেলে দেখা শুরু করেছে,তা বলে কি আমার বিয়ে হয়ে গেছে নাকি..? আব্বুকে বলার সাথে সাথেই তোমার আর আমার সম্পর্ক মেনে নিবে,কারন আব্বু সবসময় তোমার কথাই বলতে থাকে,
এখন তোমার কথাটা বললেই সবাই তোমাকে আর আমাকে মেনে নিবে,
মাহফুজ, নীলার কথা শুনে ওর দিকে ঘুরে গেলাম,আর তখনই আব্বু আমাদের সামনে চলে আসে,আমি নীলাকে একটা ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দিলাম,
আব্বু, এই তোরা কি শুরু করেছিস..? নীলার বাবা একটা ছেলেকে ঠিক করে ফেলেচে,নীলার সামনে বিয়ে,আর কোনো কিছুই না জেনে মাহফুজ তুই নীলার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে গেলি..?
মাহফুজ, আসলে বাবা আমি জানতাম না যে নীলার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,আমি ওকে প্রথম দেখাতেই ভালেবেসে ফেলেছি,কিন্তু নীলা ওর সম্পর্কে আমাকে কিছুই বলে নাই,আর আমি যখন ওকে ভালোবাসি বলেছিলাম,তখন আমাকে কিছুই বলে নাই,
নীলা, আংকেল আমি মাহফুজকে অনেক ভালোবাসি,আমি ওকেই আমার জীবনসঙ্গী করবো,
আব্বু, তোরা কি শুরু করলি বলতো..?
নীলা মা এখন তোর বাবাকে আমি কি জবাব দিবো তুই বল..!
তোর বাবাকে আমি কথা দিয়ে তোকে এখানে নিয়ে এসেছি,
যেন অন্য কোনো ছেলে তোর দিকে নজর না দিতে পারে,
তুই যাতে আমাদের কাছে সেফ থাকিস,
কিন্তু তুই সেই আমার ঘরের ইদুর টাকে নিজের কব্জায় নিয়ে আসলি,
এখন আমি তোর বাবাকে কি জবাব দিবো…?
–আমাকে কোনো জবাব দেওয়া লাগবে না,আমি ওদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছি,
আমার মেয়ের চয়েস আছে বলতে হবে,আমি যে ছেলেকে সবতেকে বেশি ভালোবাসি,
তাকেই আমার জামাই বাবাজি করার জন্য তৈরি করে নিয়েছে,
মাহফুজ, কথাটা শুনে সবাই সামনের দিকে তাকালাম,নীলার বাবা এসেছে,
নীলা ওর বাবাকে দেকে দৌরে চলে গেলো,
আব্বু, কিন্তু লাবিব তুই তো তোর মেয়ের জন্য ছেলে দেকে ফেলেছিস,
তাহলে কিভাবে আমার ছেলেকে নীলার সাথে বিয়ে দিবি..?
লাবিব আংকেল, আরে ভাই বাদ দেতো ওই চেলের কা,
ওই ছেলের খোজ অনেক ভালো করে নিয়েছি,ছেলেটা আস্তো একটা ফ্রড,
অনেক গুলো মেয়ের জীবনকে নষ্ট করেছে,
আমি কি অমন ছেলে আমার মেয়ের সাথে বিয়ে দিতে পারি নাকি..?
আমার মেয়ের জন্য তোর ছেলেই বেষ্ট,তাই মাহফুজকেই আমার জামাই বানাবো,
তাহলে তুইও আমার সবথেকে কাছের মানুষ হয়ে যাবি,
নীলার বাবার কতাটা শুনে সবার মাঝে খুশির ঝলক বয়ে যায়,
তাড়াতাড়ি সবাই বসে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে ফেলে…
সবাই মাহফুজ আর নীলার বিয়েতে অনেক খুশি….
এক সপ্তাহ পরেই ওদের বিয়ে।
পাঠকদের সবাইকে ওদের বিয়েতে আসার দাওয়াত থাকলো।
*সমাপ্ত*

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com