Breaking News

কালো বউ । পর্ব -১১



সিনহাঃ আ,,,,,,,,,,,,,
রোদঃ (দৌড়ে গিয়ে সিনহার মুখ চেপে ধরলাম,,,) এই মেয়ে এভাবে চেঁচাচ্ছো কেন,,,,?? কী হয়েছে,,,??
সিনহাঃ উম,,,,,,,
রোদঃ উম কী হ্যাঁ,,,?? এমনভাবে চিৎকার করেছো কেউ আসলে,,,, মনে করবে আমি না জানি কী করে ফেলেছি,,,,। এভাবে কেউ চিৎকার করে,,,
সিনহাঃ উম,,,,,(চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে মুখের দিকে ইশারা করলাম,,,,)
রোদঃ ওপস,,,ওকে ওকে,,,,, (মুখ ছেড়ে দিতেই সিনহা আমাকে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলো,,,,)
সিনহাঃ একটা মেয়ের রুমে কেউ নক ছাড়া ঢোকে,,,,?? জানি এটা আপনার বোনের রুম,,,, সেই জন্যই আরো বেশী প্রয়োজন ছিলো নক করে ঢোকার,,,,,। সামান্য কমনসেন্স নেই আপনার,,, (হালকা রেগে তাকিয়ে,,,,)
রোদঃ সাট আপ,,,,,, (জোরে ধমক দিয়ে,,,,) তুমি জানো আমি নক করিনি,,,,, পাঁচ মিনিট বাইরে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিকে ডেকেছি,,,,, কোনো সাড়াশব্দ নেই,,,, তাই এমন করে রুমে ঢুকেছি,,,
সিনহাঃ(আমি তো ওয়াশরুমে ছিলাম,,,, কেবল রুমে এসে আয়নার সামনে দাঁড়ালাম,,, তাই হয়তো শুনতে পাইনি,,, উনার কী দোষ,,,??)
রোদঃ আর এমন করে চিৎকার করলে কেনো,,,,?? তুমি তো শাড়ি পরেই আছো,,, সরি পড়ে না পেঁচিয়ে,,,, চিৎকার এমনভাবে করেছো,,,, As if I saw you without clothes,,,,
সিনহাঃ(চোখ বড়বড় করে তাকালাম উনার দিকে,,, আসলে আমি কাপড়টা কোনো রকম পেচিয়ে পরে আছি,,, তাই হঠাৎ উনাকে দেখে চিৎকার করেছি,,,) ম,,মুখ সামলে কথা বলুন,,,,
রোদঃ যাই বলো,,, এই শাড়ি,,, ভেজা চুল,,, মুখে বিন্দু বিন্দু পানি,,,, কাঁপা গোলাপি ঠোঁট,,,, গভীর কালো চোখ,,,,অসম্ভব লাগছে কিন্তু,,,,, (ফিসফিস করে কানের কাছে,,,)
সিনহাঃ (উনার এই ফিসফিস কথা যেনো বুকে গিয়ে লাগছে,,,,, হার্টবিট অসম্ভব পরিমাণ বেড়ে গেছে,,,, জীবনে কখনো এমন অবস্থা হয়নি,,,,, জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি,,,,) ব,,,বাজে বকছেন কেনো,,,,??
রোদঃ তুমি এতো নার্ভাস কেনো হচ্ছো,,,?? (সরাসরি মুখের দিকে তাকিয়ে,,,) Do you feel anything?
সিনহাঃ No,,,, What will I feel,,,?? I don’t think so,,,,, you go now from here,,,,
রোদঃ আমার বাড়ি,,, আমি যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাবো,,, থাকবো,,,,।(ভাব নিয়ে)
সিনহাঃ ওকে,,, আই এম সরি,,,, আপনি থাকুন,,, আমি বরং চলে যাচ্ছি,,,, (যেতে গিয়ে শাড়ীতে টান লেগে পড়ে যেতে নিলাম আর উনি আমাকে ধরে ফেললেন,,,, মনেই ছিলো না আমি শাড়িটা পেঁচিয়ে পড়েছি,,, ওয়াশরুম থেকে অনেক সাবধানে বের হয়েছি,,,, এখন তাড়াতাড়ি হাঁটতে গিয়ে টান লেগেছে,,,, উনার দুহাত আমার কোমরে আর আমার দুহাত উনার বুকে,,,, উনার চোখের দিকে তাকালাম,,, কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে,,, আমি এই দৃষ্টির সাথে পরিচিত নই,,, একদমই পরিচিত নই,,, দুজনের হার্টবিট অনেক ফাস্ট হয়ে গেছে,,,)
রোদঃ you are the colours in a sunset
the constellation in the sky
the waves of the ocean,,,,
Beautiful,,,,, you are so beautiful,,,,
সিনহাঃ (উনার কথায় হুশ ফিরলো,,,, তাড়াতাড়ি উনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম,,,,একটু দূরে সরে দাড়ালাম,,,)
বৃষ্টিঃ দেখ তো সিনহা আমি শাড়ী সিলেক্ট করতে পারছি না,,, মাথা হ্যাং হয়ে গেছে,,,, এখন তুই সিলেক্ট কর,,,,(রুমে ঢুকতে ঢুকতে)
সিনহাঃ(বৃষ্টির গলা শুনে ওর দিকে তাকালাম,,, উনিও ঘুরে তাকালেন ওর দিকে,,,,বৃষ্টি দু’হাতে শাড়ি নিয়ে শাড়ীর দিকে তাকিয়ে আছে,,, এবার মুখ তোলে সামনে তাকালো,,,,,)
বৃষ্টিঃ ভাইয়া,,,, তুই এখানে (অবাক হয়ে)
রোদঃ তোকে খোঁজতে এসেছিলাম,,,,
বৃষ্টিঃ যেহেতু আমি নেই তাহলে চলে কেনো যাসনি,,, এখানে দাঁড়িয়ে কী করছিলি,,,(সন্দেহের চোখে তাকিয়ে)
রোদঃ এভাবে তাকানোর কিছু হয়নি,,,, এখনই এসেছি,,,,(চলে যেতে যেতে)
বৃষ্টিঃ ভাইয়া দাঁড়া,,,, প্লিজ,,,
রোদঃ কী হয়েছে,,,? (ভ্রু কুঁচকে,,,)
বৃষ্টিঃ তোর চয়েজ অনেক ভালো,,,, দুটো শাড়ি সিলেক্ট করে দে না,,, প্লিজ,,,,,
রোদঃ আমি কেনো করবো,,,?? নিজের টা নিজে কর,,,
বৃষ্টিঃ প্লিজ ভাইয়া,,,, (ইনোসেন্ট মুখ করে,,,)
রোদঃ ওকে ওকে দিচ্ছি,,,(কয়েকটা শাড়ি নেড়েচেড়ে একটা কালো শাড়ি চোখে পড়লো,,,, মাকে এটা কখনো পড়তে দেখিনি,,, হয়তো নতুন,,,, সিনহাকে এটায় ভালো মানাবে,,,, মায়ের মতো আমারও কালো রং অনেক প্রিয়,,,) এটা তোর বান্ধবীকে দিতে পারিস,,, আর এই নীল কালারটা তুই ট্রাই করতে পারিস,,,,
বৃষ্টিঃ থেংকু ভাইয়া,,,, আমার লক্ষী ভাইয়া,,,
রোদঃ হুম দরকার হলে লক্ষী ভাইয়া আর কাজ শেষ হলে শয়তান,,,ফাজলামি,,, এসব তাই না,,, এখন বাটার না লাগিয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়,,, মা তোদের ছাড়া একা খেতে দিচ্ছে না,,,,
বৃষ্টিঃ মাকে একটু আসতে বল প্লিজ,,,, আমরা তো শাড়ী পড়তে পারি না,,,,
রোদঃ পারিস না তো পরতে হবে কেনো,,, নেকামো সব,,,,
বৃষ্টিঃ ভাইয়া,,,,,
রোদঃ ওকে ওকে,,,, মাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি,,,
সিনহাঃ(একটু পর বৃষ্টির মা এসে আমাদের শাড়ী পড়িয়ে দিলো,,,,একজন শাড়ী পড়ার সময় অন্যজন হালকা সেজেও নিলাম,,,,, আমি আগে শাড়ী পরেছি,,, সাজাও শেষ,,, এখন বৃষ্টি আর ওর মাকে দেখছি,,,, ওর মাকে দেখে আমি প্রথমে অবাক হয়েছিলাম,,,, ওর মাও আমার আপুর মতো কালো,,,, রোদ ভাইয়া আর বৃষ্টিকে দেখে বুঝা যায় না ওর মা কালো হতে পারে,,,, আঙ্কেলের ছবি দেখে বুঝতে পারলাম রোদ ভাইয়া আর বৃষ্টি দেখতে আঙ্কেলের মতো হয়েছে,,,,)
মেঘলাঃ মাশাআল্লাহ,,,, আমার দুই মেয়েকেই অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে,,, (বৃষ্টির কপালে একটা কিস করে সিনহাকেও কপালে কিস করলাম,,,) মিষ্টি লাগছে,,,(মুচকি হেঁসে)
সিনহাঃ(আমিও মুচকি হাসলাম,,,, উনার মনটা অনেক ভালো ব্যবহার দেখলেই বুঝা যায়,,,)
মেঘলাঃ এখন চলো,,,, রোদ মনে হয় রেগে গেলো,,, সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছে তোমাদের জন্য,,,,
বৃষ্টিঃ মা তুমি যাও আমি আর সিনহা এখনই আসছি,,,,
মেঘলাঃ দেরি করো না কিন্তু,,,,
বৃষ্টিঃ একদম না,,,,,
সিনহাঃ (আন্টি চলে গেলেন,,,, আমি নিজের শাড়ী একটু দেখে নিচ্ছি,,,)
বৃষ্টিঃ আমার মাকে দেখে অবাক হয়েছিস,,,,??
সিনহাঃ(চমকে তাকালাম বৃষ্টির দিকে,,,, ও বুঝলো কীভাবে,,,??)
বৃষ্টিঃ আমার মা জীবনে অনেক কিছু সয্য করেছে,,,, লড়াইটা সহজ ছিলো না,,, তবে জিতে গেছে মা,,,, বাবা মাকে এখনো এতোটা ভালোবাসে সেটা কল্পনাও করতে পারবি না,,,, খাওয়া শেষে বাগানে বসে সব বলবো,,,, এখন চল,,,,
সিনহাঃ(বৃষ্টি আর আমি নিচে যেতে লাগলাম,,,, রোদ ভাইয়া আর আন্টি টেবিলে বসে অপেক্ষা করছে,,,,)
রোদঃ (অপেক্ষা করতে করতে মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে,,,, আসছে নাকি দেখার জন্য ওপরে তাকাতেই চোখ আঁটকে গেলো,,,, এতো হালকা সাজে কাউকে এতোটা স্পেশাল কীভাবে লাগতে পারে,,, এই মুহূর্তে ওর রুপ বর্ণনা করার মতো ভাষাও খোঁজে পাচ্ছি না,,,,, কালো শাড়ি ফর্সা গায়ে একদম ফোটে উঠেছে,,,, লম্বা চুলগুলো ছাড়া,,,, গলায় একটা চেইন আর কানে ছোট দুল,,, চোখে কাজল,,, ঠোঁট খালি,,,, ব্যস এটুকুই,,,, তাতেই চোখ ফেরানো দায় হয়ে গেছে,,,)
বৃষ্টিঃ ভাইয়া এভাবে হা করে তাকিয়ে কী দেখছিস,,,,??
রোদঃ আ,,,আমি দেখছিলাম তোরা কী মানুষ নাকি পেত্নী,,,,
বৃষ্টিঃ ভাইয়া,,,,,,
মেঘলাঃ এখন কথা বন্ধ করে খাওয়া শুরু করো,,, অনেক দেরি হয়ে গেছে,,,,
সিনহাঃ(রোদ ভাইয়ার দিকে তাকাতেও লজ্জা করছে,,, তখনকার সব চোখে ভাসছে,,,, খেতেও পারছি না লজ্জায়)
মেঘলাঃ কোনো সমস্যা সিনহা,,,??
সিনহাঃ না আন্টি,,, আমি ঠিক আছি,,,,
রোদঃ (বারবার আড়চোখে সিনহার দিকে তাকাচ্ছি,,,, চেয়েও নিজেকে আটকাতে পারছি না,,)
★★★
তমসাঃ (রাত ৯টা বেজে গেছে এখনো সিনহা বাড়ি ফেরেনি,,,, ফোন দিয়েছিলাম বললো আসছি,,, বেলকনিতে বসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি,,,, ভাইয়া অনেক রাগারাগি করেছে,,,, ও এখনো বাড়ির বাইরে তাই,,, বান্ধবীর বাসায় গেছে বলে ম্যানেজ করেছি,,,, বৃষ্টির সাথে গেছে শুনে কেমন শান্ত হয়ে গেছে,,,)
ক্রিংক্রিংক্রিং
তমসাঃ(আননোন নাম্বার,,,, আমাকে আবার আননোন নাম্বার থেকে কে কল দিবে,,,, সিনহা নয়তো,,, কোনো বিপদে পড়েছে নাকি,,,?? তাড়াতাড়ি রিসিভ করলাম) আসসালামু আলাইকুম,,,, কে বলছেন,,,??
আরাফাতঃ ছি ছি তমসা,,,, এতোদিনের বন্ধু আমরা নাম্বারটাও সেভ করিসনি,,,,??
তমসাঃ তোর নাম্বার তো সেভ করাই আছে,,, এটা অন্য নাম্বার,,,,
আরাফাতঃ ওহ্ ,,,, কী জানি,,,, হতে পারে,,,, কী করছিস,,,,??
তমসাঃ সিনহার জন্য ওয়েট করছি,,,, তুই কী করছিলি,,,,??
আরাফাতঃ আমি তো তোর কথাই ভাবছিলাম,,, আচ্ছা বিয়েটা আরো ছয়মাস পিছিয়ে দেওয়ার কী দরকার ছিলো বলতো,,,,??
তমসাঃ তুই কেবল কিছুদিন অফিস জয়েন করেছিস,,,, আমিও জব পেলাম মাত্র,,,, একটু সামলে নেই সব,,,, নিজেদেরও একটু সময় দেওয়া যাবে,,,,
আরাফাতঃ তা ঠিক বলেছিস,,,, এই ছয়মাসে প্রেম করার শখটাও পূরণ হয়ে যাবে,,,, আচ্ছা এসব রাখ,, তোর বোনের কথা জিজ্ঞেস করতে ভুলেই গেছি,,, তোর সেই কিউট পিচ্চিকে তো দেখলাম না,,,
তমসাঃ সে আর পিচ্চি নেই,,, অনেক বড় হয়ে গেছে,,,, আজ বাসায় ছিলো না,,,
আরাফাতঃ ওহ্ ,,, এই এক মিনিট,,, আমি না তোর হ্যাসবেন্ড,,,
তমসাঃ would be,,,,,
আরাফাতঃ সে যায় হোক,,, তুই আমার সাথে সম্মান দিয়ে কথা বলবি,,, আজ থেকে আপনি করে কথা বলবি,,,
তমসাঃ ওহ্,,, শখ কতো,,,,, শখ দেখে বাঁচি না,,,
আরাফাতঃ শখের কী আছে,,,?? এটাই তো সত্যি,,, হাসব্যান্ডকে তুই করে বললে মানসম্মান থাকবে,,,?
তমসাঃ যখন হবি দেখা যাবে,,,,
আরাফাতঃ কেনো তোর কী সন্দেহ আছে,,,?? হবো কী না,,,??
তমসাঃ জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতার ইচ্ছে,,,
আরাফাতঃ (তমসার কথা শুনে কেনো যেনো হঠাৎ করে ওকে হারানোর ভয় মনে জেঁকে বসলো,,, শেষ পর্যন্ত ও আমার হবে তো,,,,??)
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com