Breaking News

ফিরে আয় | পর্ব -০৫

মাহফুজ, আচ্ছা ঠিক আছে বাবা,তারপর নিচের ঘরের দিকে গেলাম,দরজা খুলতে গিয়ে দেখি ভিতরে থেকে লক করা, কি ব্যাপার..!

আমার রুমে আবার কে আসলো..? আমার রুমে তো কাউকে থাকতে দিই না আমি,তাহলে আমার রুমে ঢুকলো কে..? আমার পরিবারের সবাই তো বাইরেই আছে,বেশ রাগ হয়ে গেলো,দরজা আবার টান দিতেই আমার শরীরের উপর কেউ এসে পরে গেলো……

ভালো করে তাকাতেই দেখি একটা মেয়ে,মেয়েটাকে দেখেই চমকে উঠলাম,ওর চেহারাটা একদম পরীর মতো,ফর্সা শরীরের সাথে মিলিয়ে নীল কালারের ড্রেস পরেছে,দেখতে কোনো অংশের কম নয়,বিশ্ব সুন্দরী প্রিযোগীতা হলে নিশ্চয় ফার্স হয়ে যেতো,

যাই হোক এসব কিছু চিন্তা করতে করতে মেয়েটা আমার শরীরের উপর থেকে তাড়াতাড়ি উঠে গেলো, আমি একধ্যানে ওর দিকে তাকিয়েই আছি,
মেয়েটা, সরি সরি আমি আসলে বুঝতে পারি নাই যে আপনি এভাবে চলে আসবেন,আপনি নিশ্চয় খুব ব্যাতা পেয়েছেন তাই না..?

মাহফুজ, মনে মনে আরে মেয়েটার মাথা খারাপ নাকি..? ওর শরীর যে আটার বস্তার মতো নরম,তাতে ওর মতো ৫টা এসে পরলেও তো আমার কিছুই হবে না,
মেয়েটা, আপনি চুপ করে আছেন কেন..? বলুন ব্যাথা লেগেছে কিনা..?
মাহফুজ, আরে নাহহহ একটুও ব্যাথা লাগে নাই,তো তোমাকে তো চিনলাম না,
আর তুমি আমার রুমে কি করছো..?

মেয়েটা, আসলে সজীব আংকেল (মাহফুজের বাবা) আমাকে এই বাড়িতে নিয়ে এসেছেন,
আংকেল হলেন আমার বাবার একমাত্র বেষ্টফ্রেন্ড,
আসলে আমাকে আমি বাড়িতে একা ছিলাম,তাই আংকেল এখানে নিয়ে এসেছে,
যাতে তার মেয়ে সেফার সাথে থাকতে পারি। আমি আজকে বিকালেই আসছি,
তাই একটু সব ঘরগুলো দেখছিলাম,কিন্তু হঠাৎ করেই বাইরে বের হতে গিয়ে আপনার উপরে গিয়ে পরি।
মাহফুজ, ওহহ বুঝলাম,আচ্ছা তুমি গিয়ে সেফার সাথে গল্প লরো,
আর আমাকে তুমি করে বলতে পারো,ওহহহ তোমার নামটাই তো জানা হলো না,কি নাম তোমার..?
মেয়েটা, আমার নাম নীলা,আর তোমার নাম..?

মাহফুজ, বাহহহ খুব সুন্দর নাম তোমার,আর আমার নাম মাহফুজ,
এখন যাও সেফার কাছে, আমি কিছু কাজ করবো রুমে।
নীলা, ওকে ঠিক আছে বলে চলে গেলো,
মাহফুজ, মেয়েটা চলে গেলেও ওর যাওয়ার দিকে চোখ করে থাকলাম,
আজ পর্যন্ত কোনো মেয়েকে দেখে আমার এইরকম ফিল হয় নাই,
কিন্তু এই নীলাকে দেখেই ভালোবেসে ফেলেছি,
আমি এই কথাটা ওকে না বলে থাকতে পারবো না,
সত্যিই ওকে এইটুকু সময়তে ভালোবেসে ফেলেছি।
তারপর নিজের রুমে গিয়ে প্রয়োজনীয় কিছু কাজ করলাম,
রাতের খাবার সময় সেফা এসে ডেকে গেলো,

আমার আগেই ক্ষুধা লেগেছিলো,কিন্তু সেফা এসে খাবার কথা বলার পর মনে হলো আরো বেশি ক্ষুধা লাগছে,তাই তাড়াতাড়ি চলে গেলাম খাওয়ার জন্য,
ডাইনিং রুমে গিয়ে দেখি সবাই আমার জন্য বসে আছে,
আমি নীলার দিকে একবারে তাকিয়ে আছি, আব্বুও আমার অবস্থা বুঝতে পারলো,
আব্বু, কিরে মাহফুজ তুই আবার দাড়িয়ে থাকলি কেন..? খেতে চলে আয়,
মাহফুজ, বাবা মেয়েটা কে..? ওকে তো আমি চিনতে পারি নাই,
আব্বু, ওহহহ আমি তোকে বলতে ভুলে গেছি,তোর কি লাবিব আংকেলের কথা মনে আছে..? ওই যে তোকে একবার হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলো..?

মাহফুজ, ওহহহ হ্যা আমার আংকেলের কথা অনেক ভালো করে মনে আছে,সেদিন আংকেল না থাকলে তো আমি মনে হয় পৃথিবী ছেড়ে চলেই যেতাম,
নীলা, এই তুমি আর এসব কথা বলবে না,আমার আর কারো মৃত্যুর কথা শুনতে ভালো লাগে না,
ছোটবেলায় আমার আম্মু মারা দুর্ঘটনায় মারা যায়,
তারপর থেকে কারো কোনো বিপদের কথা শুনলেই আমি থাকতে পারি না,
প্লিজ আমার সামনে আর বলো না,

মাহফুজ, ওহহ সরি,আর বলবো না,
আচ্ছা আব্বু তাহলে কি এটাই সেই লাবিব আংকেলের বজ্জাত মেয়ে..?
নীরা, এই তুমি কি বললে আমাকে,আমি বজ্জাত তাই না..?
তোমার অবস্থা আমি খারাপ করে দিবো,
মাহফুজ, আমাকে তুমি কিছুই করতে পারবে না,হা হা হা
আব্বু, এই মাহফুজ কি শুরু করলি বলতো..?
মেয়েটা কেবল আজকেই বাসায় আসলো,আর ওর সাথে ঝগড়া শুরু করে দিয়েছিস..?
তোকে কে বললো যে নীরা বজ্জাত একটা মেয়ে,ও খুব ভালো মেয়ে,
আচ্ছা মা তুমি খাওয়া শুরু করো,ওর কথায় কান দিও না তো

মাহফুজ, আব্বুর কথা শুনে হেসে দিলাম,বাহহহ মেয়েটাকে রাগাতে তো ভালোই লাগলো,
তবে হা বেশি টাগানো যাবে না,গাড়ির ব্রেক ফেইল করলেই আবার বিপদ আছে,এখন চুপচাপ খেয়ে নিই,
খাওয়া শেষ করে সবাই জাপটে ধরলো আড্ডা দেওয়ার জন্য,তখন আর কি করার,
সবাইকে নিয়ে আড্ডা দিতে বসে গেলাম,রাহাত আজকেও আড্ডাটাকে জমিয়ে ফেললো,
আসলেই একটা জিনিস হলো রাহাত,
কিন্তু আজকে আড্ডায় গল্প করার সমস্ত দায়িত্ব পরলো আব্বুর উপরে,

আব্বুও তার সমস্ত স্মৃতি আমাদের সামনে তুলে ধরলো,
আমরা সবাই কিছুক্ষনের জন্য অন্য কোনো কল্পনাতে হারিয়ে গিয়েছিলাম,
তারপর আমাদের আড্ডা শেষ হয়ে গেলে সবাই নিজের ঘরে চলে যাওয়ার জন্য উঠলো,
আব্বু তখন আমাকে ডাক দিলো,
আব্বু, মাহফুজ তোর তো এখন কিছু কাজ করতে হবে নীলার সাথে,
মাহফুজ, আব্বুর দিকে অবাক হয়ে তাকালাম,কি হয়েছে আব্বু..?
আমাকে আবার নীলার জন্য কি করতে হবে..?

আব্বু, তুই জানিস যে নীলা আজকেই হুট করে চলে এসেছে,
তাই ওর জন্য স্পেশাল করে কোনে ঘরের ব্যবস্থা করতে পারি নাই,
তুই গিয়ে তোর পাশের রুমে ওকে থাকার ব্যবস্থা করে দে,
কিছু জিনিসপত্র ঐ জায়গা থেকে সরাতে হবে,আজলে রাহাতের শরীরটা বেশি ভালো না,
তুই গিয়ে সবকিছু ঠিক করে দে নীলার সাথে করে,
মাহফুজ, ওহহহ তাহলে এই ব্যাপার..?
এইটা তো খুবই সামান্য একটা কাজ,আচ্ছা তোমরা রুমে যাও,আমি নীলাকে নিয়ে যাচ্ছি,
তারপর নীলার সাথে করে রুমে চলে আসলাম,দেখলাম বেশ কিছু জিনিসপত্র সরাতে হবে,
নীলা, তোমাকে আমি সাহায্য করছি এসব জিনিসগুলো সরাতে,
তাহলে তোমার কাছে অনেকটা ইজি হয়ে যাবে,

আসো দেরি না করে আমরা কাজে লেগে যায়,
মাহফুজ, বাব্বাহহ..! তোমাকে দেখে তো মনেই হয় না যে তুমি এতোটা কাজ করতে পারো,
এখন তো দেখছি মুখ দিয়ে আগুন ছুটছে..
নীলা, এই যে মিস্টার আমাকে এখনো চিনতে পারো নাই,তাড়াতাড়ি করে কাজগুলো করো,
আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে,

মাহফুজ, জি আজ্ঞে মহারানী করে দিচ্ছি বলে দুজনেই হেসে উঠলাম,
আস্তে আস্তে সব কাজ গুলো শেষ করে ফেললাম,এই সময়ের মধ্যে দুজন বেশ কাছাকাছি চলে এসেছি,
কিছুক্ষন পর কাজগুলো শেষ হলো,
নীলা, আজকে সব কাজগুলো কেমন করে জানি তারাতারি শেষ হয়ে গেলো,
মনে হলো কোনো কাজই করলাম না,আমাকে এভাবে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ।
মাহফুজ, ই আর ওয়েলকাম,আচ্ছা আমি এখন যায়,
দরজা থেকে বের হতে যাবো তখনই একটা কতা মনে পরলো,
ওহহহ নীলা তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো,
নীলা, হা বলো কি বলবে..?

মাহফুজ, দেখো আমি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কোনো কথা বলি না,
তোমাকে প্রথম দেখেই আমি ভালোবেসে ফেলেছি,আই লাভ ইউ,
তোমাকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি,
বিশ্বাস করো জীবনে অনেক মেয়েকে দেখেছি,
কিন্তু তোমার মতো কাউকেউ আমার মনে জায়গা দিতে পারি নি,

কিন্তু তোমাকে দেখে কি হলো জানি না,তোমাকে এখন না দেখলেই মনটা উথালপাথাল হয়ে যায়,
নীলা, মাহফুজের কথা শুনে একদম চুপ হয়ে গেলো,অনেক সময় মাথা নিচু করে রাখলো,
কি ঢ়েনো একটা ভেবে আবার মাথা তুললো,
দেখো মাহফুজ তুমি যে হঠাৎ করে এভাবে কতাটা বলে ফেলবে,আমি জানতাম না,
সব ছেলেদেরকেই দেখেছি এই কথাটা বলতে কিছুটা সময় নেয়,
কিন্তু তুমি একবারেই বলে ফেললে,আমাকে একটু ভাবতে দাও,
আমি সিদ্ধান্ত নিবো। নীলা মুচকি হাসি দিয়ে মাহফুজকে বিদায় জানালো,
মাহফুজ, আচ্ছা তাহলে থাকো আমি যায়,
নীলার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঘরে চলে আসলাম,তারপর আমিও বিছানা তৈরি করে শুয়ে পরলাম,
সকালে ঘুম থেকে উঠে বাইরে গেলাম,আব্বু তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিতে বললো,
আমি কিছুই বুজলাম না,

আব্বু, আরে সেফাকে কলেজে দিয়ে নীলাকে নিয়ে শহরটা দেখিয়ে নিয়ে আয়,
মাহফুজ, ওহহ আগে বললেই তো পারো,
আচ্ছা ঠিক আছে,তারপর তৈরি হয়ে দুইজনকে নিয়ে বের হলাম,
সেফাকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে নীলাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম,
কিছুক্ষন পরে নীলা বললো বাদাম খাবে,রাস্তার ওপাশে দেখি একজন বাদাম বিক্রি করছে,
গাড়ি থেকে নেমে গেলাম,
আমার সাথে নীলাও নেমে পরলো,
এই নীলা তুমি এখানেই দাড়িয়ে থাকো,
নীলা, আচ্ছা ঠিক আছে,

মাহফুজ, রাস্তায় এপাশে চলে আসলাম বাদাম নিতে,
দোকানী বাদাম দিতে একটু দেরি করলো,বাদাম নিয়ে আবার নীলার কাছে চলে আসলাম,
এই নীলা এবার চলো,তোমার বাদাম নিয়ে এসেছি,
নীলা, মাহফুজের কথায় কোনো উত্তর দিচ্ছে না,
মাহফুজ, কি হলো নীলা কথা বলছো না কেন..?
নীলা, আস্তে করে মাহফুজকে জড়িয়ে ধরলো,
মাহফুজ, নীলার কান্ড দেখে তো আমি অবাক..! মেয়েটা করছে কি..?
নীলা, কাপা কন্ঠে মাহফুজ আমাকে একটু জড়িয়ে ধরো প্লিজ..?
একটা কথাও বলবে না,
মাহফুজ, কি আর করবো,কোনো উপায় না পেয়ে ওকে জরিয়ে ধরতে হলো,
কিন্তু পিচনে হাত দিতেই ভেজা ভেজা লাগলো,কিছু বুঝলাম না,ভিজে গেলো কিভাবে..?
হাতটা পিছন থেকে সামনে নিয়ে আসতেই দেখি নীলার রক্তে আমার পুরো হাত ভিজে গেছে।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com