Breaking News

মুখে ব্রণ । পর্ব- ০৩

আশরাফ চৌধুরীঃ দাঁড়াও (ধমক সুরে)
কাব্য বাসায় ঢুকে নিজের রুমে যাচ্ছিলো তখন আশরাফ চৌধুরী ধমক শুনে দাঁড়িয়ে গেলো। ভ্রু কুচকে কাব্য তাকালো।
আশরাফ চৌধুরীঃ আমার মান সম্মান আর কত খাবি তুই হ্যা। তোর পড়াশোনা সব বন্ধ আজ থেকে ( রাগে)
কাব্যঃ আব্বু কি করছি আমি যার জন্য আপনি আমার সব বন্ধ করে দিলেন। ( ন্যাকা সুরে)
আশরাফ চৌধুরীঃ কি করছিস। তোকে তো আজ ।
কাব্যঃ আব্বু ভূল হয়ে গেছে আর করবো না কখনো। ( এক দৌড়ে রুমে)
তানজিলের মাঃ কি রে কি হয়েছে। বন্যা এভাবে চলে গেলো কেন?
তানজিলঃ কই কিছু না তো।
মাঃ সত্যি করে বল মেয়েটাকে তুই কি বলছিস ( রাগে)
তানজিলঃ সত্যি কিছু বলিনি। (অবাক হয়ে)
জিমের মুখটা দেখার সাথে সাথে
ইমরানঃ ওয়াক থু । আমার বমি আসছে ঢাক ঢাক।
জিমের চোখে পানি টলমল করছে ইমরানের কথা শুনে।
ইমরানঃ আমি শেষ এ কি না তোর মতো মেয়ের প্রেমের পড়ছি ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
জিমঃ কি বলছো তুমি এসব।
ইমরানঃ চুপ। তোর পুরো মুখে ব্রণ এ ভরা। সাদা হয়ে আছে। দেখলেই তো বমি পায়। সামনে থেকে যা। আর কখনো আমার সামনে আসবি না। তোর সাথে আজ থেকে ব্রেকআপ।
জিমঃ কি বলছো ইমরান তুমি এসব ( কাঁদো গলায়)
ইমরানঃ তোর সাথে আমার রিলেশন রাখা সম্ভব না। আগে যদি জানতাম তবে কখনো রিলেশন এ যেতাম না।
জিমঃ তুমি না বলছো আমার চেহারাকে নয় আমার মনকে ভালবাসো তাহলে।
ইমরানঃ ঐটা তো আমি আবেগে বলছি। কিন্তু তোর এই মুখটা এত বিশ্রী ওয়াক। তোর সাথে আমার কোন রিলেশন নেই।
জিমঃ প্লিজ। তুমি এমনটা করো না। আমি যে তোমাকে বড্ড ভালবাসি ( কেদে কেঁদে হাতটা ধরতে গেলো)
ইমরানঃ একদম টাচ করবি না আমাকে। তোর টাচ্ এ আমার ও ব্রণ উঠবে। ( হাতটা ঝটকা মারলো জিমের)
জিমঃ বোঝার চেষ্টা করো ইমরান আমার সাথে এটা করো না প্লিজ( হাত জোড় করে কেঁদে কেঁদে)
ইমরান চলে গেলো। জিম হাটু মুড়ে বসে পড়লো আর কান্না করতে লাগলো
আর বলতে লাগলো আমাকে ছেড়ে যেয়ো না। আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।
-যে তোকে মন থেকে ভালইবাসলো না তার জন্য কান্না করে কি করবি জিম
জিম ভেজা চোখ নিয়ে উপরে র দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো
-নীলা তুই
-তোকে বলছিলাম না যতই নিজেকে লুকাস না কেন? আমি তোর কষ্টের সময় পাশে থাকবো। “
জিম কান্না বাড়িয়ে দিয়ে নিজের মুখ নিজ হাতের নখ দিয়ে আঁচড়ালো
-কেন হলো আমার সাথে নীলা।”
-তুই তো মানুষ চিনতে ভূল করলি। আমাদের কলেজ ছেড়ে এই কলেজে আসলি এই মুখের ব্রণের কারণে। সবাই তোকে দুচোখে ঘৃণ্যা করলে ও আমি তোকে নিজের বোনের মতো করে দেখি। যখন শুনলাম তুই রিলেশনে জড়াইছিস ছেলেটাকে খুজে সবকিছু বললাম তারপর তোর এই পরণতি।”
জিম চোখ বড় বড় করে দিয়ে
-তুই করলি এসব। কেন? করলি এমনটা তুই””
নীলা মুচকি হেসে
-যেটা দেরিতে হতো তা আগে হওয়াই ভালো। ইমরান তোর মনকে ভালবাসলে তাহলে তোর থাকতো কখনো তোর এই রুপ দেখে চলে যেতো না। মানুষ চিনতে শেখ। ভালো থাকিস। “”
নীলা চলে গেলো। জিমের মুখ থেকে রক্ত বেয়ে বেয়ে পড়ছে কারণ জিমের হাতের নখের আঘাতে ব্রণগুলো উঠে যেয়ে রক্ত বের হচ্ছে। অবন্তি পেছন থেকে
-জিম কি হয়েছে
জিম অবন্তির দিকে ফিরতেই অবন্তি এক চিৎকার দিয়ে বললো
– এটা তুই কি করছিস। রক্ত পড়ছে তো পাগল হয়ে গেলি
-আমাকে এভাবে ছেড়ে চলে গেলো। আমি তো কম ভালবাসিনি। “
অবন্তি টিস্যু বের করে জিমের মুখ মুছে দিলো
-কাঁদিস না। যে কষ্টটা আরো পরে পেতিস তা এখন পেয়ে গেলি। আমি জানতাম না রে এমনটা করবে ইমরান মাফ করে দিস।
জিম কান্না করতে করতে চলে গেলো। অবন্তি মন খারাপ করে ফেললো। কিছুক্ষণপর লিমন আসলো
-কি হয়েছে মন খারাপ কেনো তোমার? “
অবন্তি রাগি চোখে তাকিয়ে
-কিছু না। তোমার সাথে আমার এই সম্পর্কটা রাখা সম্ভব না। “
অবন্তির কথা শুনে লিমন থ হয়ে গেলো
-কি বলছো তুমি এসব? “
-যা বলছি সাফ সাফ। এই সম্পর্ক আমি রাখবো না। “
লিমনের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো
-কেন?
– তুমি আমার থেকে সুন্দরী মেয়ে পেলে চলে যাবা। শুধু শুধু ক্ষণিকের ভালবাসায় বেশি কষ্ট পেতে চায় না। তোমার বন্ধু ইমরান যেটা জিমের সাথে করছে তা তুমি ও করতে পারো। তাই আজ থেকে ব্রেকআপ। না আমি তোমাকে চিনি না তুমি আমাকে। “
অবন্তি চলে গেলো। লিমনের চোখ বেয়ে পানি ঝড়ে পড়লো।
১বছর পর
-দেখ দেখ ভার্সিটিতে বোরকা পড়ে আসছে এই মেয়ে এদিকে এসো।
বোরকা পড়া মেয়েটি এগিয়ে গেলো মেয়েগুলোর ভেতর
-নাম কি?
-জিম
মেয়েগুলো হেসে দিয়ে
-কোন জিম ব্যায়াম করা।”
-না জান্নাতুন নাহার জিম
-কত কিউট নাম। তা মামনি বোরকা পড়ে আসছো কেন ভার্সিটিতে।
-পড়ে আসা নিষেধ এখানে আপু। “
-হ্যা। তোমার বোরকা খুলো
জিম ঘাবড়ে গেলো কাঁপতে শুরু করে দিলো
-না আপু আমি খুলতে পারবো না প্লিজ। “
একটা মেয়ে বলে উঠলো
– আমাদের কথা অমান্য করলে বড় শাস্তি আছে কপালে
অন্য একটা মেয়ে বলে উঠলো
-এই চুপ চুপ ঐদিকে দেখ
সবাই গেইটের দিকে তাকালো আর হা হয়ে গেলো। ১বছর পর কাব্য ভার্সিটিতে আসলো। এতোদিনে কোন খোজ ছিলো না কাব্যের। কাব্য হেটে যাচ্ছিলো
-এই নিরা কি হয়েছে এখানে। “
-কিছু না ভাইয়া। ভালো আছেন? “
-হ্যা আছি। এই বোরকা পড়া মেয়েটা কে?
নিরা হাসি দিয়ে বললো
-আমাদের আজকের মুরগি
কাব্য অবাক হয়ে ধমক দিয়ে
-বেশি বড় হয়ে গেছিস। যাহ ক্লাসে একে আমি দেখতাছি।
সবাই ক্লাসের দিকে চলে গেলো। কাব্য জিমের সামনে দাড়িয়ে জিমের দুগালে দু হাত দিয়ে কপালে দুটো আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরলো
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com