Breaking News

কালো বউ | পর্ব - ২২



রুপকঃ (এদের সাথে লাগতে গেলে এখন মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে,,,, কিছু না ভেবে কোলে তোলে নিলাম,,, গার্ডকে বললাম ফাইল আর বাকি জিনিস নিয়ে আসতে,,, গাড়িতে গিয়ে পেছনের সিটে শুইয়ে দিলাম,,, তারপর কাছের হসপিটালে নিয়ে গেলাম,,,, ডক্টর ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গেলো,,,,, আমি বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম,,,,, এর আবার কী হলো বুঝতে পারছি না,,, একটু পর ডক্টর বের হয়ে আসলো,,,,) কী হয়েছে ডক্টর,,,?

ডক্টরঃ তেমন কিছু নয়,,,, কিছু নিয়ে হয়তো একটু টেনশনে আছে,,, খাওয়াদাওয়া ঠিক মতো করে না আর ঘুমও হয়তো ঠিক সময়ে ঘুমায় না,,,, এগুলোর দিকে একটু খেয়াল রাখলেই হবে,,,
রুপকঃ ঠিক আছে,,,,
ডক্টরঃ উনি কী হয় আপনার,,,, ওয়াইফ,,,?
রুপকঃ No, no, she’s not my wife, she’s my personal assistant,,,,
ডক্টরঃ Oh sorry ,,,,
রুপকঃ It’s ok,,,
ডক্টরঃ আপনি আমার সাথে একটু আসুন,,, কিছু মেডিসিন লিখে দিচ্ছি,,,
রুপকঃ ওকে এখন নিয়ে যাওয়া যাবে,,, নাকি হসপিটালে রাখতে হবে,,,
ডক্টরঃ রাখতে চাইলে রাখতে পারেন,,,, তবে নিয়ে গেলেও কোনো প্রবলেম নেই,,, উনার জ্ঞান ফিরে গেছে,,,
রুপকঃ ঠিক আছে,,,, (ডক্টরের থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে মেডিসিন আনতে গেলাম,,,, মেডিসিন নিয়ে তমসার কাছে চলে গেলাম,,,,) এখন ঠিক আছো,,,?
তমসাঃ জী স্যার,,,,,(উঠার চেষ্টা করে)
রুপকঃ উঠতে হবে না,,,, তুমি একটা ইডিয়েট,,,, খারাপ লাগছে সেটা না বলে কথা পেটে রেখে দিয়েছো,,,

তমসাঃ ভেবেছিলাম সামলে নিতে পারবো,,,,, কিন্তু,,,
রুপকঃ টেনশনে আছো কী নিয়ে,,,?
তমসাঃ ক,,,কই না তো,,,,
রুপকঃ তাহলে খাওয়াদাওয়া করছো না কেনো ঠিক মতো,,,? ঘুমাও না সময় মতো,,,। এগুলো আমার কথা নয়,,,, ডক্টরের কথা,,,
তমসাঃ,,,,,,,,
রুপকঃ বাসায় যেতে পারবে নাকি এখানে থাকবে,,,
তমসাঃ আমি এখানে থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবো,,, আমার ফোনটা একটু দিন,,,, বাসায় কাউকে বলছি এসে নিয়ে যেতে,,৷
রুপকঃ তার দরকার নেই,,,, আমি ড্রপ করে দিচ্ছি,,, আর তিন দিন অফিসে আসতে হবে না,,,, বাসায় রেস্ট করো,,, আর এই মেডিসিন গুলো টাইমলি নিও,,,
তমসাঃ কিন্তু অফিসের কাজ,,,
রুপকঃ আমি দেখে নেবো,,,,
তমসাঃ ঠিক আছে,,,
রুপকঃ একা যেতে পারবে নাকি হেল্প লাগবে,,,
তমসাঃ একাই যেতে পারবো,,,
রুপকঃ ঠিক আছে চলো,,,,

তমসাঃ(বেড থেকে নামতেই আবার মাথা চক্কর দিয়ে উঠলে স্যার ধরে ফেলেন,,, আমি কিছুটা কেঁপে ওঠলাম,,,, এই প্রথম কোনো ছেলের স্পর্শ পেলাম,,,, এতো কাছে থেকে,,,, কেমন অজানা অনুভূতি নাড়া দিচ্ছে,,,,) আ,,,আমি ঠিক আছি,,,
রুপকঃ সেটা দেখতেই পাচ্ছি,,,, এটা ধরো,,,(মেডিসিনের প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে,,)
তমসাঃ (কী করতে চাইছেন বুঝতে পারছি না,,, স্যারের কথা মতো মেডিসিনের প্যাকেট হাতে নিলাম,,,,)
রুপকঃ(মেডিসিন নিতেই তমসাকে কোলে তোলে নিলাম,,,)
তমসাঃ আ,,,আরে কী করছেন স্যার,,,? আমি একা যেতে পারবো,,,,।
রুপকঃ সেটা তো দেখতেই পেলাম,,,।
তমসাঃ স্যার,,,, মানুষ কী বলবে,,,?
রুপকঃ আমার কোলে উঠেই হসপিটালে এসেছো,,, এখন প্রবলেম হচ্ছে,,,,?
তমসাঃ ক,,,কোলে,,,,?
রুপকঃ ইয়েস,,,, সেন্সলেস ছিলে তাই মনে নেই,,,,।
তমসাঃ(স্যার কথা বলতে বলতেই কেবিন থেকে বের হয়ে এলেন,,, আশেপাশের মানুষ কেমন করে তাকাচ্ছে,,,, লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে,,,, স্যার আমাকে গাড়ির সামনের সিটে বসিয়ে সিট বেল লাগিয়ে দিলেন,,,,)

রুপকঃ আমি এখনই আসছি,,, তুমি একটু অপেক্ষা করো,,,(তমসার উত্তরের অপেক্ষা না করে আবার হসপিটালের ভেতরে চলে গেলাম,,,, বিল দেওয়ার কথা মনেই ছিলো না,,, আবার গিয়ে বিল মিটিয়ে চলে এলাম,, গাড়িতে উঠে বসলাম,,,) এড্রেস,,,?
তমসাঃ জী,,,,?
রুপকঃ তোমার বাসার এড্রেস নিশ্চয়ই আমার জানা নেই,,,?
তমসাঃ ওহ্ সরি,,, আপনি জান আমি বলে দিচ্ছি,,,
রুপকঃ ওকে,,,,,
তমসাঃ (স্যার গাড়ি চালাতে লাগলেন,,, আমি এড্রেস বলে দিতে লাগলাম,,,, একটু পরপর অবাক চোখে স্যারের দিকে তাকাচ্ছি,,,, এ কোন স্যারকে আমি দেখছি,,,? এতো কথা স্যার মনে হয় আমার সাথে সারা মাসেও বলেনি আজ যতটা বলেছে,,, আর নিজেই সব করলো,,,)
রুপকঃ এরপর,,,,,?
তমসাঃ ডানে গিয়ে সোজা যান,,,,
রুপকঃ(রাস্তাটা চেনাচেনা লাগছে,,, মনে হচ্ছে এর আগে অনেকবার এসেছি এই রাস্তায়,,,, তবে মনে পড়ছে না,,,,)
তমসাঃ স্যার সামনের ২১ নাম্বার বাসায় আমাদের,,,,
রুপকঃ ২,,,,,, ২১ নাম্বার,,,,?
তমসাঃ জী স্যার,,,,

রুপকঃ(ত,,,তানভীর,,,, হ্যাঁ এটা তো তানভীরের বাড়ির রাস্তা,,,, আর ২১ নাম্বার বাড়িতে তো তানভীর থাকতো আর সেই মেয়েটা,,,, অবাক চোখে তমসার দিকে তাকালাম,,,, হঠাৎ তমসার কপালের কাটা দাগে চোখ গেলো,,,) ত,,,তোমার কপালে এই কাটা দাগ,,,,?
তমসাঃ (চমকে উঠে স্যারের দিকে তাকালাম,,, আমি সবসময় হিজাব পড়ি,,, আজ সেন্সলেস হয়ে যাওয়ার পর নার্স হয়তো খোলে দিয়েছে এটা এখন খেয়াল করলাম আমি,,, সাথে সাথে কাটা দাগে হাত চলে গেলো,,,,,) কারো দেওয়া ভালোবাসার উপহার,,,,, আমার বাসা চলে এসেছে স্যার,,,,,
রুপকঃ (অবাক চোখে তাকিয়ে আছি তমসার দিকে,,,, ভালোবাসার উপহার,,,,? মুহুর্তেই পুরানো ক্ষত তাজা হয়ে উঠলো,,,, এই সেই মেয়ে যার জন্য আমি একদম একা হয়ে গিয়েছি,,, আমার জীবনের একমাত্র বন্ধুকে আমার থেকে আলাদা করে দিয়েছে,,,, রাগে শক্ত করে গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে আছি,,,)
তমসাঃ আমি আসছি স্যার,,,, আপনি চলুন এক কাপ কফি খেয়ে যাবেন,,,,।
রুপকঃ(রাগে আগুন জ্বলা চোখে তাকালাম তমসার দিকে,,,,)
তমসাঃ(স্যারের চোখ দেখে ভয় পেয়ে গেলাম,,,, এখনই তো ঠিক ছিলো,,, আবার হঠাৎ কী হলো,,,? এতো রেগে গেলেন কেনো,,,,) স্যার,,,,,
রুপকঃ No thanks,,,,
তমসাঃ এতোটুকু বলেই স্যার আবার চলে গেলেন গাড়ি নিয়ে,,,, সব এতো তাড়াতাড়ি হলো আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না,,,, ধীরে ধীরে বাড়ির ভেতরে যেতে লাগলাম,,,)
রুপকঃ (একটু সামনে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম,,,, মাথায় কিছু ঢুকছে না,,,, এমনও তো হতে পারে তানভীর এখন ওই বাসায় থাকে না,,, অন্য কোথাও থাকে,,, তার তমসা তানভীরের সেই বোন নয়,,,, কিছু ভাবতে পারছি না,,,,তখন মেয়েটার নামও জানতাম না,,, ড্যামিট )
ক্রিংক্রিংক্রিং

রুপকঃ হ্যালো,,,,,
তাহেরঃ বস,,, কাজ হয়ে গেছে,,, ছেলের নাম তানভীর হোসেন,,,,
রুপকঃ(নাম শুনেই হাতে ধরে রাখা ফোন আলগা হয়ে গেলো,,,,)
তাহেরঃ ভার্সিটির ম্যাথ টিচার,,,, আপনার বোন যে ভার্সিটিতে পড়ে,,, আর আপনার বোন ছেলেটাকে নাকি ভালোবাসে,,,,, পরিবারে বাবা-মা আর ছোট দুই বোন,,, বাবা বিজনেস করে,,,, একদম ছোটবোন আপনার বোনের বেস্টফ্রেন্ড,,,, আর সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো বড় বোনটা আপনারই পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট মিস তমসা,,, উনার নাকি কয়েকদিন আগে বিয়ে ঠিক হয়েছে উনার বেস্টফ্রেন্ড আরাফাতের সাথে,,,
রুপকঃ(অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম,,,) ঠ,,ঠিক আছে,,, আবার দরকার হলে বলবো,,, এখন রাখছি,,।
তাহেরঃ ওকে বস,,, আল্লাহ হাফেজ,,,।
রুপকঃ হুম,,,,,,,,(গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে নিচে রাস্তায় বসে পড়লাম,,, এতো বছর পর প্রিয় বন্ধুটা এভাবে সামনে আসবে ভাবতে পারিনি,,, মিস তমসা,,,,, এবার তোমাকে আমি ছাড়বো না,,, আমার জীবন থেকে কতটা ইম্পরট্যান্ট জিনিস তখন তুমি কেড়ে নিয়েছিলে তুমি জানো না,,,, তানভীর ছিলো আমার একাকী জীবনের একমাত্র বন্ধু,,,,, যার সাথে আমি প্রাণ খোলে কথা বলতে পারতাম,,,,, একাকী জীবন কতটা কষ্টের হয় এটা এবার তোমাকে আমি বুঝাবো,,,।)
 
মাঃ কী রে তমসা,,,? আজ এতো তাড়াতাড়ি চলে এলি যে,,,? আর তোকে দেখতে এমন লাগছে কেনো,,,?
তমসাঃ একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম তাই স্যার বাসায় দিয়ে গেলেন,,,, আর তিন দিনের ছুটিও দিয়েছেন,,,
মাঃ তোর স্যারকে বাসায় আসতে বললি না,,,?
তমসাঃ স্যারের অনেক কাজ আছে মা,,, চলে গেছে,,, আমি রুমে যাচ্ছি,,, (মাকে হসপিটালের কথা বললাম না,,, আবার সবাইকে কল দিয়ে পাগল করে দিবে,,, রুমে আসতেই ফোন বেজে ওঠলো,,,, স্যারের ফোন দেখে তাড়াতাড়ি রিসিভ করলাম,,,)
রুপকঃ অফিসে জরুরি কাজ আছে,,, আগামীকাল ঠিক সময়ে চলে এসো,,,,(কঠিন গলায়,,,)
তমসাঃ ক,,( যাহ্,,,, কিছু না শুনেই কেটে দিলো,,, কিন্তু হঠাৎ করে স্যারের হলোটা কী,,, নিজেই ছুটি দিলো আবার নিজেই অফিস যেতে বলছে,,, আজব,,,)

রুপকঃ এটা তো কেবল শুরু,,, আমি তোমার জীবন নরক করে দিবো,,, নিজের মনের কথা বলার জন্য কাউকে পাবে না,,,চারদিকে তাকিয়ে দেখবে তুমি একা,,, তোমার পাশে কেউ নেই,,, একা একা গুমরে মরবে আমার মতো,,, সেদিন শুধু তোমার জন্য তানভীর আমার মুখ দেখতে চায় না বলেছিলো,,, তানভীর তুইও আর তোর বন্ধুকে দেখতে পাবি না,,, এই রুপক মির্জাকে তুই চিনবি অন্য পরিচয়ে,,, যে তোর বন্ধু নয়,,, তুই তোর বন্ধুর মুখ দেখবি না বলেছিলি না,,,,? কথা দিচ্ছি দেখবি না তুই তোর বন্ধুর মুখ,,,।)

আয়রা(আরাফাতের বোন) ভাইয়া তুই আমার কথা বিশ্বাস করছিলি না তাই না,,,, ঐ মেয়ের চরিত্র ভালো না,,, আর আজ তোকে বিশ্বাস করানোর জন্য আমি প্রমাণ নিয়ে এসেছি,,, এই দেখ,,,,
(আয়রার ফোনের স্কিনে ভাসছে তমসা আর রুপকের ছবি যাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তমসা রুপকের কোলে ক্যাফে থেকে বের হচ্ছে)
চলবে,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com