Breaking News

কালো বউ । পর্ব -০৯



তমসাঃ(হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লেগে পরে গেলাম,,,, সামনে তাকিয়ে দেখি কালকের সেই ভয়ংকর সুন্দর লোকটা,,,, কপাল কুঁচকে বিরক্তির সাথে তাকিয়ে আছে,,,) I am extremely sorry,,,.
রুপকঃ আপনি কী কখনো ভাবনার জগতের বাইরে থাকেন,,,??
তমসাঃ আসলে,,,,(উঠে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে,,,,)
রুপকঃ হুম,,, বলতে হবে না,,, বুঝতে পারছি একটু কল্পনার জগতে বিচরণ করছিলেন,,, সেটা নিজের বাসায় বসে করবেন,,, মানুষের মাঝে চলাফেরা করার সময় কল্পনার জগতে থেকে অন্যের প্রবলেম তৈরি করবেন না,,,(রেগে)
তমসাঃ সরি,,,(মাথা নিচু করে)
রুপকঃ ইডিয়ট,,,,,,
তমসাঃ(ইডিয়ট বলে গটগট করে হেটে চলে গেলো,,,, লোকটা কে,,, এতো সুন্দর আর এতো রাগ,,,মুচকি হেঁসে সামনের দিকে পা বাড়ালাম,,,,)
★★★
সিনহাঃ মনে আছে তো আজ তোদের বাসায় যাবো,,,
বৃষ্টিঃ হুম মনে আছে,,,, বাট এতো রিকুয়েষ্ট করার পরও আমাদের বাসায় যাওয়ার জন্য রাজি হইতিস না,,, আজ নিজে থেকে যেতে চাইছিস,,,??
সিনহাঃ কেনো তোর কোনো প্রবলেম আছে,,,(হালকা রেগে)
বৃষ্টিঃ আরে প্রবলেম থাকবে কেনো,,, জানিস আজ আমি কতো খুশি,,, এতোদিন নিতে চেয়েও নিতে পারিনি,,, আজ যাবি,,,। তুই রেগে যাচ্ছিস কেনো,,,?? আমি তো শুধু জানতে চাইছি এই অসম্ভব সম্ভব হলো কীভাবে,,,??
সিনহাঃ আজকে আপুকে দেখতে আসবে,,, আমার বাসায় যাওয়া বারণ,,, আমার স্কুল ফ্রেন্ড সাথী ওর আত্মীয় বাড়ি গেছে আর আমি নানা বাড়ি যেতে চাই না,,, তাই তোদের বাড়ি ছাড়া আর অপশন নেই,,,
বৃষ্টিঃ ওহ্ তারমানে মহারানী বিপদে পরে আমাদের বাড়ি যাচ্ছে,,,,
সিনহাঃ হুম,,,,(মাথা নিচু করে)
বৃষ্টিঃ আজ বাধ্য হয়ে যাচ্ছিস,,, দেখিস কোনোদিন না আবার এমন হয় আমাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য চোখের পানি ফেলিস,,,,।।
সিনহাঃ আমার তো আর খেয়ে দেয়ে কাজ নেই,,,,
বৃষ্টিঃ দেখা যাবে,,, এখন চল তো,,, ক্ষুধা পেয়েছে,,, গাড়ি আসছে নাকি দেখি,,,,
সিনহাঃ হুম চল,,,(গেইট থেকে বের হয়ে দেখি আজও বৃষ্টির ভাইয়া গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,)
রোদঃ (বৃষ্টির সাথে সিনহাকে দেখে মুচকি হাসলাম,,, সাথে সাথেই আবার মুখ গম্ভীর করে নিলাম,,, এর সাথে আমি কথাই বলবো না,,, আমাকে কিনা ভাইয়া বলে,,,)
বৃষ্টিঃ কী ব্যাপার ভাইয়া তুই,,,??
রোদঃ কেনো এসে ভুল করেছি,,,??(রেগে)
বৃষ্টিঃ আরে তা না,,,,
সিনহাঃ কেমন আছেন ভাইয়া,,,??
রোদঃ (সিনহার দিকে একবার কড়া চোখে তাকিয়ে বৃষ্টিকে বললাম) বৃষ্টি গাড়িতে উঠে বস,,,
বৃষ্টিঃ সিনহাও যাবে আমাদের সাথে,,,,
রোদঃ কেনো,,, তোর বান্ধবীতো একাই যেতে পারে,,(ব্যাঙ্গ করে)
বৃষ্টিঃ ও আজ আমাদের বাসায় যাবে,,,
রোদঃ বাসায় যাবে মা,,,,,নে,,,, ওকে ওকে দুজনেই উঠে বস,,,(দুজনেই পিছনের সিটে বসতে গেলে বলে উঠলাম,,,)আমাকে কী ড্রাইভার মনে হচ্ছে,,,?? (ধমক দিয়ে) একজন সামনে বস,,,
বৃষ্টিঃ সিনহা আজ তুই একটু সামনে বস,,, আমার মাথাটা ভিষণ ধরেছে,,,, বাসায় গিয়ে আগে শাওয়ার নিবো,,,
সিনহাঃ কিন্তু,,,,,
বৃষ্টিঃ প্লিজ বাবুটা যা,,,,
সিনহাঃ যাচ্ছি যাচ্ছি আর বাটার লাগাতে হবে না,,,,
বৃষ্টিঃ ওকে যা,,,,
সিনহাঃ(উঠে বসার পরেও গাড়ি ছাড়ছে না কেনো,,,??)
রোদঃ সিট বেলটা কে লাগাবে,,,??
সিনহাঃ (খেয়াল করে দেখি আমি সিটবেল লাগাইনি,,, জিহ্বা কেটে তাড়াতাড়ি সিটবেল লাগালাম আর রোদ ভাইয়া গাড়ি চালাতে শুরু করলো,,, আচ্ছা রোদ ভাইয়া আমার সাথে রেগে আছে কেনো,,, জিজ্ঞেস করবো,,, যদি কিছু বলে,,, জিজ্ঞেস করে তো দেখি,,) ভাইয়া আপনি কী আমার ওপর রেগে আছেন,,??
রোদঃ (রাগি চোখে তাকালাম,,,, ভাইয়া ভাইয়া বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলে,,, আর আমার রক্ত মাথায় তুলে,,,,)
সিনহাঃ আচ্ছা আপনি কী সেদিনের জন্য রেগে আছেন,,,, তাহলে সরি,,, আসলে সেদিন আপনার থেকে দোষ আমারই বেশি ছিলো,,,তাও আপনাকে কথা শুনিয়েছি,,, আসলে সেদিন লেট হয়ে গিয়েছিলো,,, ভাইয়া,,,, না মানে স্যারের বকা খাওয়ার চিন্তায় মাথা ঠিক ছিলো না,,,,। তাই সেদিনের জন্য সরি ভাইয়া,,,, প্লিজ রাগ করে থাকবেন না,,,,
রোদঃ আমি তোমার কোনো জন্মের ভাই শুনি,,,,?? নাকি আমার মুখে কোথাও লেখা আছে যে আমি তোমার ভাইয়া,,,??(রেগে অনেকটা জোরে,,,)
সিনহাঃ(ভয়ে আমার মুখ কালো হয়ে গেছে,,, ভাইয়া ডাক কী খারাপ,,,?? ভাইয়া ডাকার জন্য কেউ এভাবে রিয়াক্ট করে,,,??)
বৃষ্টিঃ কী হয়েছে ভাইয়া,,,,?? চিৎকার করছিস কেনো,,??
রোদঃ তোর বান্ধবীকে ভাইয়া ভাইয়া করে আমার মাথা খেতে মানা কর,,,
বৃষ্টিঃ সিনহা,,, আমি জানি তুই চুপ করে থাকতে পারিস না,,, বোন আমার,,, দয়া করে একটু মুখটা বন্ধ রাখ,,, এই খবিশের সাথে তাও কথা বলিস না,,
রোদঃ এবার কিন্তু দুটোকেই মাঝ রাস্তায় নামিয়ে দিবো,,,
বৃষ্টিঃ চুপ কর তো,,, তোদের দুজনের জন্য আমার ঘুমটাও ভেঙে গেছে,,,,
রোদঃ গাড়িতে উঠতে না উঠতেই ঘুম,,,, এতো ঘুম কই থাকে তোর,,,, রাতে কী করেছিস,,, এখন ঘুম পাচ্ছে,,,,
বৃষ্টিঃ (রাতের কথা মনে পড়তেই মুখ কালো হয়ে গেলো,,,,)
★রাতে★
আকাশঃ তানভীরকে কী তুমি ভালোবাসো,,,??
বৃষ্টিঃ(চমকে বাবার দিকে তাকালাম,,,) ক,,কী বলছো বাবা,,,??
আকাশঃ আমার যেটা মনে হচ্ছে সেটাই বলছি,,,, আশা করি সত্যি কথাই বলবে,,,,
বৃষ্টিঃ (বাবার কথা শুনে মাথা নিচু করে ফেললাম,,, কী বলবো এখন,,??)
আকাশঃ (বৃষ্টির পাশে বসে ওর মাথায় হাত রাখলাম,,,,,) ভালোবাসা খারাপ না,,,, কিন্তু ভুল সময়ে ভুল মানুষকে ভালোবাসা খারাপ,,, তোমার কী মনে হয় তানভীর ভুল মানুষ,,,??
বৃষ্টিঃ কখনো না,,,, (কথাটা বলেও অবাক হয়ে গেলাম,,, কী বললাম,,, ?? এখন যদি বাবা কিছু বলে,,,,)
আকাশঃ তার মানে আমি যা বলেছি তাই সত্যি,,,??
বৃষ্টিঃ হুম,,, (মাথা নিচু করে)
আকাশঃ তানভীরের সাথে আমি কথা বলেছি,, সে তোমাকে পড়াবে না,,, কারণ তুমি তাকে ভালোবাসো সে সেটা বুঝতে পেরেছে আর আমাকেও সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়েছে,,, তার কথা শুনে যতটা বুঝেছি সে এসব নিয়ে ভাবে না,,, না তোমাকে নিয়ে ভাবে,,,, একটা কথা মনে রেখো সব কিছু জোর করে পাওয়া গেলেও ভালোবাসা জোর করে পাওয়া যায় না,,, তানভীরও তোমার মতো কিছু ফিল করলে আমি মেনে নিতাম,,,, যদিও তানভীরের সাথে তোমার এইজ ডিফারেন্ট অনেক,,, তবু তোমার দিকে তাকিয়ে সব মেনে নিতাম,,,, কিন্তু যেখানে তানভীরের দিক থেকে কিছু নেই,,, আমি আশা করবো তুমি তার থেকে দুরত্ব বজায় রাখবে,,, আমি তোমার জন্য অন্য টিচার ঠিক করে দিবো,,,,, বুঝতে পেরেছো আমি কী বলেছি,,,??
বৃষ্টিঃ হুম,,,,
আকাশঃ(বৃষ্টি মাথা নিচু করে বসে আছে,, এখান থেকেই বুঝতে পারছি কান্না করছে,,, দু’হাতে মুখটা তোলে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে চোখ মুছে দিলাম,,,, কপালে একটা কিস করলাম) আমার মায়ের চোখের পানি আমি সয্য করতে পারি না,,, আমি চাইলেই তানভীরকে তোমার কাছে এনে দিতে পারবো,,, তাতে হয়তো এখন তোমার মুখে হাঁসি ফুটবে কিন্তু তানভীর তোমাকে ভালোবাসতে না পারলে সারাজীবন তোমার চোখে পানি থাকবে,,, যেটা আমি হতে দিতে পারি না,,,, সারাজীবন কাঁদার চাইতে এই ক্ষণিকের কান্না অনেক ভালো,,,,
বৃষ্টিঃ আর যদি কোনো দিন তানভীরও আমাকে ভালোবাসে,,,??
আকাশঃ আমি নিজে তানভীরকে তোমার কাছে এনে দিবো,,,, এটা তোমার কাছে তোমার বাবার প্রমিস,,, তবে,,,
বৃষ্টিঃ তবে কী,,,??
আকাশঃ তানভীরকে তুমি জোর করতে পারবে না বা ওর উপর কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারবে না,,,,
বৃষ্টিঃ ঠিক আছে,,,,
★★★
রোদঃ তুই কী আজ গাড়িতেই থাকার প্লান করেছিস,,,??
বৃষ্টিঃ(ভাইয়ার কথায় হুশ ফিরলো,,,) চলে এসেছি,,,??
রোদঃ কী ভাবছিলি বল তো,,,??(ভ্রু কুঁচকে)
বৃষ্টিঃ কিছু না,,, সিনহা কই,,,??
রোদঃ গার্ডেনে তাকা,,,(এই মেয়ের ওপর রাগ করে থাকা পসিবল না,,, ফুলের মতোই পবিত্র লাগছে,,, আবার প্রেমে পড়ে গেলাম এই মেয়ের)
বৃষ্টিঃ(গার্ডেনে তাকিয়ে দেখি সিনহা গার্ডেনের ফুলগুলোকে ছুয়ে দেখছে,,,,,)
সিনহাঃ (ওদের বাড়িটা অনেক সুন্দর,,,,(বাড়ির বর্ণনা সিজন ওয়ানে দিয়েছি তাই আর কিছু বললাম না) গার্ডেনটা আরো বেশী সুন্দর,,, আর ফুলগুলোর কথা নাই বললাম,,,, কিন্তু কালো ড্রেস পড়া গার্ডগুলোকে ভালো লাগছে না,,,, বড় বড় গান হাতে দাঁড়িয়ে আছে,,, বাড়ির সৌন্দর্য নষ্ট করে দিয়েছে এরা,,, হুম এর থেকে আমরাই ভালো,,, কতো স্বাধীন)
বৃষ্টিঃ কী ভাবছিস,,,??
সিনহাঃ গার্ডগুলো ভালো লাগছে না,,,
বৃষ্টিঃ বাবা টাকার সাথে শত্রুও জোগাড় করেছে অনেক,,,, তাই এসব,,,, আর তাইতো বাবা আমাকে আর ভাইয়াকে সবার আড়ালে রেখেছে,,, খুব কম মানুষই আমাদের চিনে,,,,, ভার্সিটিতে শুধু তুই আর কিছু টিচার আমার বাবার পরিচয় জানে,,,
সিনহাঃ কী সুখ রে এই টাকার পাহাড়ে বন্দী জীবন,,,??
বৃষ্টিঃ জানি না,,,(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে) ভেতরে চল,,,
সিনহাঃ ( বৃষ্টির পিছু পিছু বাসার ভেতরে যেতে লাগলাম,,,,,, বৃষ্টির ভাইয়া গাড়িতে হেলান দিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে,,, এভাবে কেনো তাকিয়ে আছে এই চিলিসস,,,)
★★★
তমসাঃ আবার শাড়ী পরে জোকার সেজে বসে আছি আয়নার সামনে,,,, জানি না আবার কী শুনতে হবে,,,,
মাঃ চল,,,, উনারা অনেক সময় ধরে বসে আছেন,,,
তমসাঃ(একবার মার দিকে তাকিয়ে বড় একটা ঘোমটা দিয়ে মার সাথে গেলাম,,, মা হাতে চায়ের ট্রে ধরিয়ে দিলো,,,, ধীরে ধীরে গিয়ে ড্রয়িংরুমে টি-টেবিলের ওপর চায়ের ট্রে রাখলাম,,,, তাদের মধ্যে একজন বসতে বললে পাশে সোফায় বসে পড়লাম,,, তারা নিজেদের মধ্যে কিছু বলছে,,, গলাটা চেনা চেনা লাগলো তাই হালকা মাথা উচু করে সামনে তাকালাম,,,, সামনে তাকিয়ে আমি অবাকের চরম সীমায়,,,)
চলবে,,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com