মুগ্ধতা
জীবনে পারি দিতে হলে আমাদের অনেক কিছুই করতে হয়.।
অনেক সময় নিজের প্রিয় প্রিয় মানুষদের কেও ছেড়ে দিতে হয়.।
হয়তো সেটা ইচ্ছেই বা অনিচ্ছেই।
ভালোবাসা টা ও ঠিক এমনই. ভালোবাসলেই যে শুধু ভালোবাসার মানুষ টা কে পেতে হবে. তা কিন্তু না।
কখনো কখনো ভালোবাসার মানুষটাকে না পেলে ও সুখী হওয়া যায়..।
যাই হোক. মূল গল্পে আসা যাক।
মামা উত্তরা যাবেন? ।
হ্যাঁ যাবো.. উইঠা পড়েন।
নিশি আর কিছু না বলে রিকশায় উঠে পড়লো.।
কারণ নিশির এখন উত্তরা যাওয়া টা খুবই জুরুরি।
অহহ হ্যাঁ নিশি..উনাকে নিয়েই আমাদের গল্প… ।
রিকশায় উঠে পড়লাম.. রিকশাওয়ালা মামা রিকশা চালাচ্ছে.. হঠাৎ আমার চোখ আটকে গেলো…
কিছুতেই চোখ সরাতে পারছি না..খুব চেনা চেনা লাগছে. হ্যাঁ এটাই তো রিশি.।
মামা মামা এখানে রাখেন.?
আপা মনি আপনি না কইলেন উত্তরা যাবেন?
হ্যাঁ মামা যাবো. তবে এখন না একটা কাজ পড়ে গেছে তো.
তাই একটু দেড়ি হবে. আপনি চলে যান. আমি আপনার বাড়া দিয়ে দিচ্ছি।
তারপর নিশি রিকশাওয়ালার বাড়া মিঠিয়ে, দৌড়ে চলে গেলো রিশির কাছে..।
রিশি.. (নিশি রিশি বলে ডাক দিলো. কিন্তু কেউ কোনো উত্তর দিচ্ছে না. নিশি আবার ডাক দিলো.
এবার রিশি পিছন ঘুড়ে তাকালো।)।
জ্বি বলেন. কে আপনি.? আর আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে, আমি রিশি না.
আমার নাম তফহিম. আর এই যে বাচ্চাদের দেখছেন. ওরা আমার এনজিও.।
রিশি পাগল হয়ে গেছো না কি? । কি বলতাছো এসব. আর তফহিম মানে.
কেনো আমার সাথে এমন করতেছো. তুমি জানো তোমাকে আমি কতো টা খুজতেছি..
আজ ৩ সাপ্তাহ ধরে তুমি বাসায় আসতেছো না.।
সবাই কে জিজ্ঞেস করলাম কেউ তোমার কোনো খুজ দিচ্ছে না.।
তুমি অফিসে যাচ্ছো বলে বেড় হলা, কিন্তু তুমি অফিসে যাও নাই। এই ২ সাপ্তাহ ধরে তুমি কই ছিলা।
আর এই এনজিও মানে. এসব কি রিশি. সত্যি আমার মাথায় ঢুকতেছে না।
শুনেন আপু.আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে, আমি রিশি না. আমি তফহিম।
(এ কথা বলেই তফহিম চলে যাচ্ছে)।
রিশি এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে.কেনো এমন করতেছো। কি করেছি আমি,
আমার কি দোষ বলো. ওই দিকে সবাই আমাকে দোষারোপ করতেছে,
যে আমার জন্য তুমি বাসা থেকে বেড় হয়ে আসছো.।
আর আজ খবর পেয়েছি. তুমি না কি উত্তরায়.কেনো এমন করো বলো তো.
প্লিজ রিশি চলো।
আজিব তো আর কতো বার বলবো আপনাকে আমি রিশি না, আমি তফহিম. ফালতু লোকজন কোথাকার.
(এই কথা বলেই তফহিম চলে গেলো)।
রিশির কি হইছে যে,এমন করতেছে। না আর ভাবতে পারছি না।
তারপর নিশি বাসায় চলে আসলো, এসে সবাই কে জানালো। সবাই অবাক হয়ে গেলো।
কারণ রিশি এমন করার কথা না।
তুমি কি পাগল হয়ে গেছো বউ মা, আমার ছেলেটা কে পাওয়া যাচ্ছে না আর তুনি এসে এসব বলতেছো।
আমি আগেই বলেছিলাম রিশির বাবা ওই মেয়েকে আমার ঘরের বউ করে এনো না,
দেখছো এখন কি হইছে।
আহা তুমি চুপ করবে, ছেলেটা কে পাওয়া যাচ্ছে না, আর তুমি এসব শুরু করছো।
আর বউ মা তুমি রিশি কে কোথায় দেখছো।
বাবা আমি উত্তরায় যাচ্ছিলাম উনাকে খুজতে,
রিকশায় উঠি আর উনাকে দেখি, আমি গিয়ে বললাম কিন্তু উনি আমাকে চিনেনই না।
আর বলেন উনি না কি তফহিম। রিশি না।
আচ্ছা তুমি চলো তো আমার সাথে।
(তারপর নিশি আর রিশির বাবা চলে গেলেন)।
তফহিম ভাইয়া উনি কে ছিলেন। (মায়া)
আরে জানি না, হঠাৎ এসে এসব বলা শুরু করছে। (তফহিম)।
আমার মনে হয় উনি আপনাকে চিনেন। (মায়া)।
তুই ও এখন শুরু করলি, যা তো এখান থেকে,। ভালো লাগছে না। (তফহিম)।
বাবা এখানে ছিলো, এই বাচ্চাদের পড়াচ্ছিলো। (নিশি)।
আচ্ছা বাবারা এই ছেলেটা কে দেখেছো। রিশির বাবা)।
হ্যাঁ উনি তো আমাদের তফহিম ভাইয়া,উনি এখানে শিক্ষা দেন,চকলেট দেন আমাদের অনেক অনেক ভালোবাসেন।
এখন উনি কোথায়. (নিশি)।
আপনি তো আফা একটু আগে আসছিলেন,
তফহিম ভাইয়ারে কি যেনো বলছিলেন,তারপর থেকে ভাইয়া রাগ করে চলে যায়,
উনি কখন কোথায় যান উনি নিজেও জানেন না।
কিন্তু প্রতিদিন দুপুর বেলায় এখানে আসেন, এসে আমাদের পড়ান,
তারপর আবার চলে যান। আমরা কেউ আর উনাকে খুজে পাই না। এই একটা সময় ছাড়া।
বাচ্চাদের কথা শুনে, রিশির বাবা আর নিশি একদম হতাশ হয়ে গেলেন, আর এটা বুঝতেছেন না, যে হঠাৎ কেন রিশি, তফহিম হয়ে গেলো, আর কাউকে চিনতেই পারছে না কেনো।
বাবা আমরা কি থানায় জিডি করবো। (নিশি)
না থাক, আগে দেখি কি হয়। আর বউ মা তোমার শাশুড়ীর কথায় কিছু মনে করো না,
তুমি জানোই ও এমন,
ওর বোনের মেয়েকে বিয়ে দিতে চায় আমি রাজি হই নি,তাই তোমার সাথে এমন ব্যাবহার করে,
তোমার শাশুড়ীর মন টা কিন্তু অনেক ভালো। (রিশির বাবা)।
বাবা আমি কিছু মনে করি নি,উনি তো আমার মা,
আর মা যদি নিজের সন্তানের উপর রাগ, অভিমান,বকাবকি না করে তাইলে কে করবে বলোন,।
দেখবেন একদিন ঠিকিই আমাকে আপন করে নিবে,। (নিশি)।
তাই যেনো হয় মা। (বাবা)।
আমি তফহিম ভাইয়ার জন্য খাবার নিতে আসলাম,
খাবার নিয়ে উনার রুমে গিয়েই আমি অপলক ভাবে উনার দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
চোখের পলক ফেলতে পারছি না। ঘুমের মধ্যে তফহিম ভাইয়া কে এতো সুন্দর লাগবে,
তা আমি কখনো কল্পনাও করতে পারি নি।
উনি এমনি অনেক ফর্সা..তার মধ্যে কোচা কোচা দাঁড়ি উনাকে আরোও আকর্ষণ করছে.
একটা ছেলের মধ্যেও যে এতো মায়া লুকিয়ে তাকে,
তা আমি আগে জানতাম না। মন চায় উনার বুকে মাথা রেখে সারাজীবন বেচে থাকি।
কি হলো আমার ছেলে কে পাইছো। (রিশির মা)।
বউ মা সব সত্যি বলেছে,এখন কি করবো বুঝতে পারছি না। আমাদের কারোও কথা শুনলো না,। রিশি এমন করতেছে কেন? ওর তো কোনো রোগও ছিলো না যে, এমন করবে।
আমি এতো সব কিছু বুঝি না, আমি আমার ছেলে কে চাই,
(বলেই রিশির মা অঝোরে কান্না শুরু করলেন)।
মা, মা, শান্ত হোন, এখন এমন করলে চলবে না।
উনাকে যখন বেড় করতে পেরেছি, তাই কথা দিলাম আমি,
খুব তারাতাড়ি উনাকে আমি বাসায় নিয়ে আসবো।
নিশির কথা শুনে রিশির মা একটু শান্ত হলেন।
আমি আস্তে আস্তে তফহিম ভাইয়ার একদম কাছে চলে গেলাম,
তফহিন ভাইয়ার কাছে গিয়ে, উনার মাথায় হাত দিলাম। উনার চুলে বিলি কাটতে লাগলাম।
নিজের অজান্তেই আমি তফহিম ভাইয়ার, কপাকে একটা চুমু দিয়ে বসলাম।
তফহিম ভাইয়া কিছুই বলতে পারে নি. কারণ তিনি এখনও ঘুমে,।
আমি আর বসে থাকলাম না,তফহিন ভাইয়া খাবার টা উনার টেবিলে রেখে চলে আসলাম। (মায়া)।
আমি জানি মায়া তুই আমাকে অনেক অনেক ভালোবাসিস,
আমিও তোকে অনেক ভালোবাসি,।
কিন্তু কি যেনো একটা বাধা এসে বার বার আমাকে বারণ করে দেয়।
খোলা বাতাসে যখন তোর চুল গুলা এলোমেলো হয়ে যায়,
তখন আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে তাকি তোর দেখি।
তখন আমার মনে হয় এই পৃথিবীতে আল্লাহ তোকে আমার জন্যই পাঠিয়েছেন৷
তোর মুগ্ধতা যে, আমাকে পাগল করে দেয় রে।
কিছুটা দিন অপেক্ষা কর তোকে আমার এই বুকে সারা জীবনের জন্য নিয়ে আসবো।
চলবে….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com