অবহেলার সংসার । পর্ব -১০
ঠিক আছে আমি তাই করবো তার কাছে ক্ষমা চাবো।যতদিন না ক্ষমা করে আমাকে, ততোদিন চেষ্ট করেই যাবো।
হুম এটাই করা ঠিক হবে।
কফি তো ঠান্ডা হয়ে গেলো রে কথা বলতে বলতে।
ঠান্ডা হয়েছে তো কি হয়েছে ঠান্ডা কফি খেতে আমার ভালো লাগে।
তাই আগে তো তোর এই অভ্যাস ছিলো না।তা এই ঠান্ডা কফি খাওয়া কবে থেকে ভালো লাগা শুরু করলো রে।
এই তো,দেশের বাহিরে যাওয়ার পরে।
তুই তো দেখতেছি অনেক চেন্জ হয়ে গেছেস তিন বছর দেশের বাহিরে থেকে।
হয়েছে তোকে আর বানায় বানায় বলতে হবে না আমি আগে যেমন ছিলাম তেমনে আছি বুঝলি।আমি বাদে তুই চেন্জ হয়ে গেছিস এটা কখনো লক্ষ্য করেছিস রে।
আমি আবার কিভাবে চেন্জ হলাম রে?
এই তো তুই বাড়িতে তাড়াতাড়ি যেথে চাচ্ছিস।আগে আমি যখন তোর সাথে কোথাও যেতাম তখন একবারো বাসার যাওয়ার নাম মুখ থেকে বাহির করতি না এখন সন্ধ্যা না লাগতে বাসায় যেথে চাচ্ছিস।
আরে তুই তো দেখতেছি পাগলী হয়ে গেছিস রে হ্যা। আমি কি আর আগের ঈমান আছি?আগে বউ ছিলো না আগে,এখন বউ আছে আবার সংসার সামলাতে হচ্ছে।
এই জন্য তো বলতেছি তোকে যে, তুই আর আগের ঈমান নাই।আমার সামনে এখন যে ঈমান আছে আগের ঈমানের সাথে কোন মিল নাই বুঝলী।
মনি রে যেকোন মেয়ে-ছেলে বিয়ের পরে চেন্জ হয়ে যায়।চেন্জ হওয়ার প্রথম কারন হচ্ছে তাদের বিয়ের পরে দায়িত্ব বেড়ে যায়,তাই বাস্তবতায় চেন্জ করে দেয় তাদের।তেমনী আমিও ব্যতিক্রম নয় বুঝলী।তুইও বিয়ে কর তাহলে তুইও চেন্জ হয়ে যাবি।
আমি কখনো বিয়ের পরে চেন্জ হবো না বুঝলী। আচ্ছা সবেই তো বুঝলাম এখন কি করবি বল কফি তো খেয়ে ফেললাম আরো কী এখানে আড্ডা দিবি, নাকি বাসায় বউ এর কাছে চলে যাবি?
মনি তুই বারবার বাসায় যাওয়ার কথা বলে আমাকে লজ্জা আর দেশ না তো,আমার বুঝি লজ্জা লাগে না ।
তাই তোর লজ্জাও আছে নাকি আমি তো জানতাম শুধু মেয়েদের লজ্জা আছে।মেয়েদের লজ্জা আছে দেখে তো মেয়েদের বলা হয়েছে ” লজ্জা নারীর ভূষণ “
কেনো রে ছেলেদের লজ্জা বুঝি থাকে না।
আমি এটা জানি না ছেলের লজ্জা থাকে কি না?
তাহলে অজাথা ঝগড়া না করে চল নিজ নিজ বাসায় চলে যাই এটাই ভালো হবে।এমনিতে খুব টেনশনে আছি তুই বুঝতেছিস তাও মজা করতেছিস।
আচ্ছা চল আর মজা করবো না নিজ নিজ বাসায় চলে যাবো।
হুম চল।তারপর আমি কফির বিলটা দিয়ে দুইজনে রেস্টুরেন্টের বাহিরে এসে সোজা গাড়ির সামনে চলে আসলাম।তারপর দুইজনে গাড়ির ভিতরে ঢুকলাম।গাড়ির ভিতরে ঢুকে আমি গাড়িটা স্টাট দিয়ে গাড়িটা চালাতে শুরু করলাম,
মনি তুই কি ওই আগের বাসায় থাকিস নাকি বাসা চেন্জ করেছিস?
না রে, ওই বাসায় আছি!বাসাটার মায়া ছাড়তেই পাড়ি না,তাই বাসাটা চেন্জ করা হয় নিই।শুনেছিলাম বাসাটা নাকি আমার দাদা তৈরি করেছিলো।
ও তাই।
হুম।আচ্ছা শুন তোকে একটা সুন্দর আইডিয়া দেই।
কি আইডিয়া রে মনি?
শুন তাহলে,যেকোন মেয়ে ফুলকে অনেক ভালোবাসে আবার অনেক মেয়ে শপিং করতে ভালোবাসে তাই আমি বলি কি তুই প্রতিদিন অফিস থেকে আসার সময় ফুল কিনে নিয়ে গিয়ে তোর বউকে দিবো আবার মাঝে মাঝে শপিং করা নিয়ে যাবি তাহলে দেখবি এগুলো করার কারনে তোর জন্য আবার ভাবির মনে ভালোবাসা সৃষ্টি হতে পারে।
তাহলে তোর আইডিয়াটা কাজে লাগাতে হবে।কিন্তু কি ফুল দিবো প্রতিদিন?
আচ্ছা এটা আগে বল তোর বউ এর পছন্দের ফুল কোনটা?
এটা তো কখনো জানায় হয় নাই।
গাঁধা একটা তুই রে।বউ এর পছন্দ অপছন্দের বিষয় গুলো কিছুই জানিস না।তোকে যে কেনো আংকেল-আন্টি বিয়ে দিয়েছে আমি বুঝতেই পারতেছি না।
মনি এভাবে বলিস না রে কষ্ট হয় বুঝলী।
চূপ গাঁধা কিছুই জানে না, আবার কষ্ট হয় বলে।ভালো আইডিয়া দিলাম যা তোকে আর কোন আইডিয়া দিবোই না।
এমন করিস না রে,আমি মরে যাবো।তুই শুধু এটা বল যে কি কি ফুল নিয়ে গিয়ে দিবো?
আচ্ছা শুধু একটাই বলবো আর কোন কিছুই বলবো না তোর সাথে বেশি কথা বললে আমি পাগলী হয়ে যাবো।
তুই আমাকে ফুলগুলোর নাম বলেই পাগলী হয়ে যা, তখন আমার আর কোন সমস্যা হবে না কিন্তু না বলে ভূলেও পাগলী হবি না তুই ওকে।
তুই তো দেখতেছিস আমাকে পাগলী করে ছাড়বি।আচ্ছা তুই এক কাজ কর একটা মার্কেটে গাড়িটা দাড় করা।
এতো রাতে মার্কেটে কি করবো রে?
তোকে যেটা বলতেছি ওটাই কর এতো প্রশ্ন করিস কেনো রে।
ওকে আর কোন প্রশ্ন করবো না।আমি মনির কথায় একটা মার্কেটের সামনে গাড়ি দাড় করলাম।তারপর ও গাড়ি থেকে বাহির হয়ে হন হন করে হেটে কোথায় জেনো যাচ্ছে।
এই মনি তুই আমাকে একা রেখে কই যাচ্ছি।
প্রশ্ন না করে সোজা আমার পিছনে পিছনে আয় আমি যেখানে যাচ্ছি।
আমি ওর কথা শুনে গাড়ি থেকে নেমে ওর পিছনে পিছনে যাচ্ছি।হেটে যেথে যেথে ও একটা শাড়ির দোকানে গিয়ে বসলো।
এই মনি এখানে আসলি কেনো রে (কানে কানে বলতেছি )
প্রশ্ন করতে তোকে মানা করছি না।
ওকে যা আর কোন প্রশ্ন করবো না,এই তো আমি চূপ হলাম।
ম্যাডাম কি লাগবে বলেন?
আপনি ভালো শাড়ি দেখান তো,
ওকে ম্যাডাম,
তারপর দোকানদার শাড়ি দেখাচ্ছে আর মনি ওগুলো দেখতেছে।আমি তার পাশে চূপ করে বসে আছি।
আপনি এই নীল শাড়িটা প্যাক করে দিন।
ওকে ম্যাড়াম।
তারপর দোকানদার শাড়িটা প্যাক করে দিলো আর মনি
শাড়ির ব্যাগটা হাতে নিয়ে বলতেছে।শাড়িটার দাম কতো,
ম্যাডাম শাড়িটার দাম 1000 হাজার টাকা।
ওকে এই নিন টাকা।
তারপর মনি দোকানদারকে টাকা দিয়ে শাড়ির ব্যাগটা নিয়ে আবার হাটা ধরলো আমি তো এই মেয়ের হাবভাব কিছুই বুঝতেছি না।
এই মনি আবার কই যাচ্ছি আমাকে বাসায় যেথে হবে আর তুই এগুলো কি শুরু করে দিয়েছিস?
তোর ভালোর জন্য করতেছি কথা বেশি না বলে আমার পিছনে পিছনে আয়।
ধূর বাল কিছুই বুঝতেছি না।মনি পিছনে পিছনে আবার মার্কেটের বাহিরে আসলাম।
তারপর আবার দেখতেছি একটা ফুলের দোকানে যাচ্ছে।
আমিও ওর পিছনে পিছনে গেলাম।গিয়ে দেখে ও ফুল নিতেছে।
ফুল নিয়ে আবার গাড়ির দিকে যাচ্ছে।ও এমন ভাব করতেছে মনে হয় আমাকে চিনেয় না।
এখানে দাড়িয়ে থেকে আমায় দেখবি নাকি গাড়ির ভিতরে ঢুকে গাড়ি চালাবি।
ছরি ছরি রে আমি চালাচ্ছি।
হয়েছে আর ছরি বলতে হবে না তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাতে শুরু কর।
ওকে।তারপর আমি গাড়ি চালাতে শুরু করলাম।কিন্তু তখন থেকে ভেবে পাচ্ছি না শাড়িটা আর ফুলগুলো কার জন্য কিনলো?
প্রায় পাঁচ মিনিট পরে মনি বাসার সামনে চলে আসলাম।আগে থেকে ওর বাসা চিনি তো তাই।
মনি তোর বাসার সামনে চলে আসছি তো এবার নাম।আমাকেও তো বাসা যেথে হবে এমনিতে তাড়াতাড়ি বাসায় যেথে চাইলাম তোর জন্য যেথেই পারলাম না।
ঠিক আছে আমার জন্য আর তোর দেড়ি হবে না,আমি এখন যা বলবো ভালোভাবে শুন,
আচ্ছা বল,
এই নীল শাড়িটা আর ফুলগুলো তোর বউকে দিবো আর বলবি আমি ভূল করেছি আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আর বলবি আগের কথাগুলো ভূলে গিয়ে চলো নতুন করে সংসার শুরু করি।
আর যদি বাচ্চা নষ্ট করার কথা বলে তখন বলবি,
আমি বাচ্চাটা নষ্ট করে ভূল করেছি তাই চাইলে আমরা আবার সন্তান নিতে পাড়ি।
মেয়ে মানুষের মন গলে যেথেও পারে এই কথাগুলোতে তুই চেষ্টা করে দেখতে পারিস।
ওকে রে।(মনি আমাকে শাড়িটা আর ফুলগুলো হাতে দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে সোজা ওর বাসার ভিতরে ঢুকে গেলো।তারপর আমি গাড়িটা স্টাট দিয়ে চালাতে শুরু করলাম )
(একটা কথা বলতে চাই সেটা হচ্ছে, গল্পের মধ্যে যদি মনি ভিলেন হয় তাহলে কেমন হবে বলেন তো )
চলবে,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com