Breaking News

মুখে ব্রণ । লিখা- মেহেরাব কাব্য

-মেয়েটা কে রে
– আমাদের ক্লাসেই পড়ে নাম জিম
– শুধুই কি জিম নাকি আগে পড়ে আর কিছু আছে
-জান্নাতুন নাহার জিম
-ও কি সবসময় বোরকায় পড়ে আসে?
-হ্যা। বোরকা ছাড়া তো কখনো দেখিনি
– চোখ দুটো খুব মায়াবি রে (বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে)
– কি হলো তোর হঠাৎ
-জানি না
– আরে বল আমাকে এত খোজ নিচ্ছিস কেন? (অবাক হয়ে)
– নাহ কিছু না। চল ক্লাসে যায়। এখানে ভালো লাগছে না।
– আজ হঠাৎ ক্লাসে এতদিন তো ক্লাসের কাছেই ঘেষলি না।
– আমার মনের মানুষকে পেয়ে গেছি ( ক্লাসের দিকে হাটা দিলো)
ওহ সরি পরিচয়টা তো দেওয়া হলো না। এতক্ষণ যে মেয়েটার বিষয়ে কথা বলছিলো সে হলো ইমরান আর যে মেয়েটার সম্পর্কে বলছিলো সে হচ্ছে লিমন। আর মেয়েটার নামটা তো বলছি আপনাদের শুরুতেই।কলেজে ইন্টার ফাস্ট ইয়ার পড়ে। চলুন গল্পে ফেরা যাক।
ইমরা ক্লাসে ঢুকে জিমের পাশের বেঞ্চে বসলো যাতে করে ওকে দেখতে পারে। লিমন হাবার মতো তাকিয়ে আছে ইমরানের দিকে।
জিমের চোখটা একবার ইমরানের দিকে পড়লো আবার সরিয়ে নিলো। ইমরান জিমের দিকে তাকিয়ে আছে।
জিমঃ দেখ ছেলেটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
অবন্তীঃ তোকে মনে হয় পছন্দ করে। প্রেমটা তবে করে ফেল?
জিমঃ কিসব বলছিস তুই
অবন্তীঃ হ্যা তুই যদি ওর সাথে রিলেশনে যাস তবে আমার একটা উপকার হবে
জিমঃ মানে । পাগল হলি নাকি
অবন্তীঃ প্লিজ দোস্ত আমার উপকারটা কর।
জিমঃ কিন্তু তুই আমার ব্যাপারটা জানিস।
অবন্তীঃ হুম দেখ ছেলেটা কতো হ্যান্ডসাম
জিমঃ তোর পছন্দ হলে তুই প্রেম কর যা।
অবন্তিঃ আমি তো লিমনকে পছন্দ করি। আর আমি এটা জানি ইমরান তোকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করে ভালবাসে।
জিমঃ মানে কি ।
——–ময়মনসিংহ—-
– তোর কলেজের টাইম হয়ে গেছে যাবি না।
– না আমি যাবো না। ঘুমাতে দাও মা
– তোর ঘুম আমি বের করছি। ( কম্বল টেনে নিয়ে)
– মা এই ঠান্ডায় তুমি কেন কম্বল নিলে উফ মা ( উঠে বসে চোখ ধলতে ধলতে)
– আন্টি আন্টি বান্দরটা কি উঠছে নাকি আজ ও বাহানা করছে।
– এসে গেছে কুত্তাটা। আমার বারটা বাজিয়ে ছাড়বে।
– হ্যা ওর জন্যই তো টাইট আসিছ।
– মা যাও তো।
চলুন এনাদের পরিচয়টা জেনে আসি?
যে ঘুমাচ্ছে সে হচ্ছে তানজিল আর যে আন্টি বলে ডাকলো ও হচ্ছে বন্যা। আর মার পরিচয়টা দিয়েই দিছি।
বন্যাঃ কই ও
মাঃ শুয়ে পড়ছে।
বন্যাঃ ওকে দু মিনিটও
মাঃ তোরা পারিস ও বটে
বন্যা ভেতরে ঢুকে
বন্যাঃ এই তানজিল উঠ
তানজিলঃ ডিস্টার্ব করিস না ঘুমাতে দে।
বন্যাঃ তুই সে মানকি টুপি পড়েই আছিস।
তানজিলঃ হ্যা তো। যা তুই ।
বন্যাঃ তোর রাগ বের করছি
এদিকে সেদিক তাকালো। বাইরে গেলো বন্যা হেটে
অবন্তীঃ আমি যখন ক্লাসে আসতেছিলাম তখন লিমন আমাকে ডাক দেয়
লিমনঃ এই অবন্তি শোনো
অবন্তীঃ আমাকে তুমি করে বলছো ( অবাক হয়ে ও খুশি হয়ে)
লিমনঃ হুম। এত অবাক হওয়ার কিছু নেই একটা কাজ করতে হবে
অবন্তীঃ কি?
লিমনঃ যদি করতে পারো তাহলে তোমার সাথে রিলেশন এ যেতে পারি
অবন্তীঃ তুমি যা বলবে তাই করে দিবো ।
লিমনঃ তোমার ফ্রেন্ড জিম আছে না ওর সাথে আমার বন্ধু ইমরানের সাথে সেটিং করিয়ে দিতে হবে। ইমরান অনেক আগে থেকে ওকে ভালবেস আসছে কিন্তু বলতে পারছে না।
অবন্তীঃ ঠিক আছে । ।
জিমঃ তোর নিজের ভালবাসার জন্য।
অবন্তীঃ হুম প্লিজ।
জিমঃ ওকে কিন্তু আমি আগে ওকে যাচাই করবো তারপর রিলেশনে যাবো এর আগে না।
অবন্তীঃ ওকে।
ইমরানঃ আমার দিকে তাকিয়ে হাসছিস কেন?
লিমনঃ না এমনি। কতটা রোমান্টিক হয়ে গেলি তুই।
ইমরানঃ কিসের রোমান্টিক কি যা তা বলছিস ( থুতলিয়ে)
লিমনঃ আরে বুঝি তো।
তানজিলঃ কি করলি তুই এটা বন্যা। মা ও মা কই তুমি ( চিল্লিয়ে)
বন্যাঃ আন্টি আন্টি দেখে যাব আপনার ছেলে বিছনায় মুতে দিছে ।
তানজিলঃ কি বললি তুই। আমি মুতেছি তুই তো পানি ঢেলে দিলি।
বন্যাঃ কখন। তুই এত বড় হয়ে বিছানায় মুতে দিলি ছিঃ ছিঃ ছিঃ। কি গন্ধ। আমি সবাইকে বলে দিবো।
তানজিলঃ কুত্তা তোকে
বন্যাঃ যাবি নাকি ভিডি করে ভাইরাল করবো। আমার কথা সবাই বিশ্বাস করবে জানিস তো।
তানজিলঃ হ্যা যাচ্ছি।
তানজিল উঠে ফ্রেশ হতে গেলো।
মাঃ তানজিল চিল্লালো কেন?
বন্যাঃ গায়ে পানি পড়ছে দেখে।
মাঃ তুই পারিস ও বটে। কিন্তু দেখ ছেলেটাকে কিছুতেই বুঝাতে পারি না ( মন খারাপ করে)
বন্যাঃ আপনি কোন চিন্তা করবেন না আমি সব ঠিক করে নিবো।
মাঃ তাই কর রে মা। ওকে নিয়ে আয় নাস্তা করবি।
বন্যাঃ হুম আমি আপনাদের বাসায় প্রতিদিন সকালেই নাস্তা করতে চলে আসি।
তানজিলঃ তুই তো শুশো। তাই তো আমার ভাগে ভাগ বসাতে আসিছ ( ওয়াশরুম থেকে বেরোতে বেরোতে)
বন্যাঃ কি বললি ।
মাঃ তানজিল বন্য আমার মেয়ে ও তোর ভাগ কেন নিবে? ( চোখ রাঙ্গিয়ে)
তানজিলঃ তাহলে মেয়ে করে ঘরে রেখে দাও হয়ে যাবে তো।
মাঃ হুম তাই করবো। খেতে আয়।
কলেজ ছুটির পর ইমরান জিমের পিছু নিলো। জিমকে ফলো করতে লাগলো। জিম সবটা জানে তবুও ইমরানকে খুটিয়ে নিতে চাই।
এভাবে কেটে গেলো ৭ দিন। তানজিল বন্যার ভেতর শুধুই ঝগড়া হয়। ঝগড়া হলে ও দুজনে খুব দুষ্টুমি করে।
একদিন
জিমঃ কি সমস্যা আমার পিছু নিচ্ছেন কেন? কি চাই
ইমরানঃ না মানে ইয়ে
জিমঃ দেখুন সোজা সাপটা কথা পছন্দ করি আমি। কি সমস্যা ( রাগি ভাবে)
তানজিলঃ আমি আর কলেজে যাবো না
মাঃ কেন বাবা কি হয়েছে
তানজিলঃ আমি সারাদিন কেন মানকিটুপি পড়ে বের হয় জানো না।
মাঃ বাবা ব্রণ তো কিছু না ঠিক হয়ে যাবে ব্রণ। এটা নিয়ে মন খারাপ করলে হবে।
তানজিলঃ হ্যা এই ব্রণের জন্য সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। আমাকে দেখলে নাকি সবার বমি পায়। কেন মা বলো তো ব্রণ কি খুব খারাপ যে বমি পাবে।
মাঃ তুই অন্যের কথায় কান দিস না। ওরা একটু আকটু বলে।
তানজিলঃ একটা জিনিস কি জানো মা। এই সমাজে যেমন কালো মানুষেরা অবহেলিত তাদের নিয়ে উপহাস হয় বেশি ঠিক তেমনি মুখে ব্রণ থাকা মানুষ গুলো অবহেলিত । সবার উপহাসের কারণ।
মাঃ মাথা গরম করিস না। যে যায় বলুক। কালো মানুষদের নিয়ে উপহাস হলে ও কিন্তু তারা থেমে নেই৷ তুই কেন থেমে থাকবি।
তানজিলঃ আমার ভালো লাগে না আর ।
***
ইমরানঃ আমি আপনাকে ভালবাসি ( কাপা কাপা গলায়)
জিমঃ কি বললেন আবার বলুন তো
ইমরানঃ না মানে আমি তোমাকে সত্যি ভালবাসি।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com