Breaking News

কালো বউ । পর্ব -০৩



রুপকঃ পি.এ পোস্টের জন্য আবার নিয়োগ দিন,,, মনে রাখবেন আমার কোন মডেলের প্রয়োজন নেই,,, I need a highly educated , sincere and intelligent employee,,,,understand,,??
ম্যানেজারঃ yes sir,,,,
সিনহাঃ তোর কেন লেট হয়েছে,,,??
বৃষ্টিঃ ভাইয়ার জন্যই তো,,, যার জন্য ওর সাথে এলাম,,, ও তার উল্টো করে দিলো,,, তাড়াতাড়ি আসবো বলে ভাইয়ার বাইকে আসলাম আর ও এখানে এসে আমার সাথে ঝগড়া শুরু করে দিলো,,, তাই তো লেট হয়ে গেলো,,,, তোর কেন লেট হয়েছে???
সিনহাঃ যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়,,, একেই বলে,,, এমনই বাসা থেকে বের হতে লেট হয়েছে,,, যাও আসলাম,,, রিকশা থেকে নেমে দৌড় দিতেই এক আবুল মার্কার বাইকের সাথে ধাক্কা খেলাম,,,,
বৃষ্টিঃ কী বলিস,,, লাগেনি তো কোথাও,,,??
সিনহাঃ পায়ে একটু লেগেছে,,, তবে বেশি না,,,
বৃষ্টিঃ ছেলেটা দেখতে কেমন,,,?? (দুষ্টুমি করে)
সিনহাঃ এখানে দাঁড়িয়েও এখন তোর মজা লাগছে,,, এমন কথা মাথায় আসছে,,,??
বৃষ্টিঃ আরে বল না,,, ছেলেটা কেমন আর পরে তোকে কী বললো,,,?? প্লিজ,,,,
সিনহাঃ ওকে ওকে বলছি,,,
রোদঃ সরি সরি,,, আমি খেয়াল করিনি,,,,
সিনহাঃ রাখেন মিয়া আপনার সরি,,,, আমার ঠ্যাঙ ভাইঙ্গা সরি বলতে আইছে,,,(রেগে তাকিয়ে)
রোদঃ (আল্লাহ এসব কী ল্যাংগুয়েজ,,,?? অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি,,,, রেগে যাওয়ায় আরো সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে,,,)
সিনহাঃ চোখ কী পকেটে নিয়ে ঘুরেন,,,?? নাকি বাইকে উঠলে মনে করেন এটা রাস্তা না মহাকাশ,,,, আর আপনি বাইক না রকেট চালাচ্ছেন,,,,??
রোদঃ হ্যালো মিস,,, আমি সরি বলেছি,,, যেখানে দোষ আমার একার না আপনারও আছে,,,, তাও তখন থেকে যা ইচ্ছে বলে যাচ্ছেন,,,,
সিনহাঃ আমার দোষ আছে মানে,,, আমার কিসের দোষ আছে হ্যাঁ,,,,??
রোদঃ চোখ তো আপনারও আছে,,, আপনি দেখেননি সামনে বাইক আছে,,,??
সিনহাঃ (এখন কী বলবো,,,?? সত্যি তো আমি তারাহুরো করে যাচ্ছিলাম,,,, উনার থেকে আমার দোষ বেশি,,,, না না তাই বলে হেরে যাবো নাকি,,,??) আপনার সাথে ফালতু বকবক করার সময় নেই আমার,,, আপনার জন্য কতো লেট হয়ে গেলো,,,, আজ যদি স্যারের কাছে কথা শুনি আপনার খবর আছে,,,
রোদঃ আরে এখানে আমি কী করলাম,,,??
সিনহাঃ (কোন কথা না বলে তাড়াতারি ওঠে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই,,, পায়ের ব্যাথায় পড়ে যেতে নিলাম,,,) আহ্
রোদঃ (তাড়াতাড়ি ধরে ফেললাম পরে যেতে নিলে,,,,) কোথায় লেগেছে,,,, (ব্যস্ত হয়ে)
সিনহাঃ (তাড়াতাড়ি ছাড়িয়ে নিলাম,,,,) থাক আমারটা আমি বুঝে নিবো,,, জুতো মেরে গরু দান করতে হবে না,,,,
রোদঃ মানে,,,,
সিনহাঃ আপনার মাথা,,,(খুড়িয়ে খুড়িয়ে যেতে যেতে)
রোদঃ what,,,,???
সিনহাঃ ঘোড়ার ডিম,,,,
রোদঃ (হায় আল্লাহ এর আচরণে মনে হচ্ছে ক্লাস ওয়ানের বাচ্চা,,,) বাই দা ওয়ে,,, মিস,,, নামটা,,,
সিনহাঃ নামটা দিয়ে কামটা কী,,,??(সরু চোখে ঘুরে তাকিয়ে)
রোদঃ নামতো মানুষকে ডাকার কাজেই লাগে,,,??
সিনহাঃ বাবা-মা আকিকা করে নাম রাখতে ভুলে গেছে,,,, (বলে গেইটের ভেতরে চলে এলাম)
রোদঃ ঝাল আর মিষ্টি দুটোই,,, (মুচকি হেঁসে) দেখতে মিষ্টি,,, কথায় ঝাল,,, নামটা কী রাখা যায়,,??
বৃষ্টিঃ হুম,,, বুঝলাম,,, সবই বুঝলাম,, কিন্তু দেখতে কেমন সেটাতে বললি না,,,,
সিনহাঃ দেখতে বানরের মতো,,, হয়েছে,,,,??
তানভীরঃ ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকেও তোমাদের শিক্ষা হয়নি,,, এখানে দাঁড়িয়েও বকবক করছো,,,??
(বৃষ্টি আর সিনহা দুজনেই চুপ,,,, তানভীর ইসলাম,,, বয়স ৩১ বছর,,,, ৫ ফিট ১১” লম্বা,,,, জিম করা বডি,,, গায়ের রং ফর্সা,,, গালে খোঁচা খোঁচা চাপদাড়ি,,,, লাল ঠোঁট,,,, ভার্সিটির সব মেয়ের ক্রাশ স্যার,,,, একমাত্র সিনহা ছাড়া,,,,কারণ সিনহা আর তমসার বড় ভাই তানভীর,,, ম্যাথ টিচার সিনহা আর বৃষ্টির,,,,,, বৃষ্টি মুগ্ধ হয়ে তানভীরের দিকে তাকিয়ে আছে,,,, ঠোঁটের কোণে হাসি থাকলে তানভীরকে কতটা কিউট লাগবে সেটা ভাবতে ব্যস্ত বৃষ্টি,,,,, তানভীরকে হাসতে দেখা ভার্সিটির মেয়েরা ভাগ্য মনে করে,,,, অনেক বেশি গম্ভীর টাইপের মানুষ তানভীর,,,, সব কাজ ঠান্ডা মাথায় করে তবে রেগে গেলে তখন আর মানুষ থাকে না মনে হয়,,,, বৃষ্টির তাকিয়ে থাকা দেখে তানভীর একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলো,,,, সব মেয়েই ওকে পছন্দ করে সেটা ও জানে তবে বৃষ্টির পছন্দটা একটু অন্যরকম লাগে তানভীরের কাছে)
তানভীরঃ মিস বৃষ্টি,,,, (একটু কেশে গলা পরিষ্কার করে)
বৃষ্টিঃ,,,,,,
সিনহাঃ(এ উত্তর না নিয়ে এমন হা করে তাকিয়ে আছে কেন,,,?? হালকা ধাক্কা দিলাম)
বৃষ্টিঃ কী হলো ধাক্কা দিচ্ছিস কেন,,,?? দেখতে,,,,,,,(বলতে গিয়েও থেমে গেলাম,,,, এখনই কী বলে ফেলছিলাম,,,??)
তানভীরঃ হুম,,, দেখতে,,, তারপর কী,,??
বৃষ্টিঃ ক,,,ক,,,,কিছু না স্যার,,,,, আপনি কিছু বলছিলেন,,,??
তানভীরঃ তোমার লেট কেন হয়েছে,,,,??
বৃষ্টিঃ স্যার ঘুম থেকে ওঠতে লেট হয়েছে,,,,
তানভীরঃ Good,,,,,, no excuses,,, i like it,,,, মিস সিনহা তোমার কেন লেট হয়েছে,,,??
সিনহাঃ আসলে ভাইয়া,,,,,,
তানভীরঃ এখানে তোমার কোনো ভাইয়া নেই,,,, যে আছে সে তোমার স্যার,,,, So call me sir,,,,,
সিনহাঃ আসলে স্যার,,, আসার সময় ছোট্ট একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে,,,,
তানভীরঃ What,,,,,,?? কোথায় লেগেছে তোর,,,?? একটু দেখে চলতে পারিস না,,,, আগামীকাল থেকে আমার সাথে আসবি(রেগে),,,, এখন দেখি কোথায় ব্যাথা পেয়েছিস,,, (ব্যস্ত হয়ে,,,)??
(তানভীর তার দুবোন কে-ই অনেক ভালোবাসে,,,, বোনদের কিছু হলে তখন আর সেই গম্ভীর খোলসটা থাকে না,,,, বেড়িয়ে আসে সেনসেটিভ আর দ্বায়িত্বশীল বড় ভাই)
বৃষ্টিঃ (অবাক হয়ে দেখছি উনাকে,,,, এটুকুতেই কেমন অস্থির হয়ে গেছে,,, ভাইয়ারা হয়তো এমনই হয়,,, নিজে বোনের সাথে ঝগড়া করবে আর অন্যকেউ কিছু বললে তার খবর আছে,,, বোনের গায়ে একটা ফুলের টোকাও সয্য করতে পারবে না,,,, কথাগুলো ভাবতেই ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফোটে ওঠলো)
সিনহাঃ বেশি লাগেনি,,,, একটু লেগেছে পায়ে,,, আর স্যার এখানে আপনার কোনো বোন নয় ছাত্রী দাঁড়িয়ে আছে তাই এতো সেনসিটিভ হওয়ার কিছু নেই,,,,, (অভিমান করে)
তানভীরঃ একটা থাপ্পড় দিয়ে বড় বড় কথা বের করে দিবো,,,, চল আমার সাথে,,,, স্টুডেন্টস আমার ক্লাসটা সেকেন্ড পিরিয়ডে নিচ্ছি,,,, আর সেকেন্ড পিরিয়ডের ম্যামকে এখন পাঠাচ্ছি,,,,,
স্টুডেন্টসঃ ওকে স্যার,,,,
বৃষ্টিঃ (আজকে সেকেন্ড পিরিয়ডে তো ইতি ম্যামের ক্লাস,,,, ইতির ম্যামের কথা মনে পড়তেই কপাল কুঁচকে গেলো,,,, কেন জানি না উনাকে আমার সয্য হয়না,,,, সবসময় তানভীর স্যারের সাথে হেঁসে কথা বলবে,,, বিয়ে হয়েছে তবু স্যারের সাথে এতো লেগে থাকা কেন বুঝি না,,,,, মুডটাই নষ্ট হয়ে গেছে)
তানভীরঃ বৃষ্টি ক্লাসে যাও,,,, আর লেট করবে না,,, আমি যেমন এক্সকিউজ দেওয়া পছন্দ করি না,,, তেমন টাইম মেইনটেইন না করাও পছন্দ করি না,,,, সিনহা চল,,,,
বৃষ্টিঃ (সিনহা খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছে আর স্যার ওকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে,,, ইচ্ছে না থাকা সত্বেও ক্লাসে গিয়ে বসলাম,,,,)
সিনহাঃ(ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাইয়া আমার পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে)
তানভীরঃ বড় হবি করে একটু বলতো,,,, কতটা ছিলে গেছে,,,, একটু দেখে শুনে চলা যায় না,,, সবসময় দোয়েল পাখির মতো নাচতে হবে,,,,??
সিনহাঃ আমার কী দোষ,,,?? এই ছেলেই তো,,,,,
তানভীরঃ কোন ছেলে,,,,(ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে)
সিনহাঃ এভাবে তাকিয়ো না,,,, গেটের সামনে একটা ছেলে বাইক ঘুরাচ্ছিলো আর আমি রিকশা থেকে নেমে তাড়াতাড়ি আসছিলাম,,, ব্যাস,,,
তানভীরঃ ব্যাস তুই গিয়ে বাইকের ওপর পরলি,,,,
সিনহাঃ হুম,,,,(মন খারাপ করে)
তানভীরঃ আগামীকাল থেকে আমার সাথে আসবি আর আমার সাথে যাবি,,,
সিনহাঃ কিন্তু ভাইয়া,,,,
তানভীরঃ আমি আর কিছু শুনছি না,,,,
সিনহাঃ(ধূর ভালো লাগে না,,,, ভাইয়ার সাথে যাওয়া আসা মানে ভাইয়ার মতো রোবট হয়ে যাওয়া,,,, বসে বসে ভাবছি কীভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়,,,, পেয়েছি,,, একমাত্র আপু পারবে,,, ভাবতেই মুখে হাঁসি ফোটে ওঠলো)
আরাফাতঃ তমসা,,,,, তুই এখানে বসে আছিস কেন এই সময়ে,,,,??
তমসাঃ এ,,এমনই,,,,, তুই এখন এখানে,,,?? (অবাক হয়ে)
আরাফাতঃ একটা মিটিং আছে,,,, সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম,,, তোকে দেখে আসলাম,,, কিন্তু তুই এখানে,,,, (তমসার পাশে বসতে বসতে)
তমসাঃ ইন্টারভিউ দিতে গেছিলাম,,,,
আরাফাতঃ আর তারা ফালতু কিছু কথা বলে তোকে রিজেক্ট করেছে,,,,
তমসাঃ ফালতু কিছু তো বলেনি,,, ঠিকই তো বলেছে,,,
আরাফাতঃ আমার মাথা ঠিক বলেছে,,,, তোকে কতবার বললাম আমার অফিসে জয়েন কর,,, তোর মতো এমপ্লয়ি পেলে আমার কপাল খোলে যাবে,,,
তমসাঃ বাটার লাগানো অফ কর,,,, আর তোর অফিসে জয়েন করার হলে তো অনেক আগেই জয়েন করতাম,,,, আমি নিজের যোগ্যতায় জব নিতে চাই,,,, কারো সহায়তায় না,,,,। চাইলে তো বাবা অথবা ভাইয়ার হেল্পই নিতে পারতাম,,, আর আমার ফ্যামেলি ব্যাকগ্রাউন্ড এতটাও খারাপ না যে আমার জব করতেই হবে,,, আমি জব করতে চাই নিজের যোগ্যতাকে কাজে লাগাতে,,,,
আরাফাতঃ ওকে ম্যাডাম আমার ভুল হয়েছে,,, এখন চলুন আপনাকে ড্রপ করে দেই,,,
তমসাঃ তোর মিটিং,,,??
আরাফাতঃ আগে তুই তারপর বাকি সব,,,,
তমসাঃ মানে,,,??
আরাফাতঃ মানে তোকে আগে ড্রপ করে দিয়ে তারপর যাবো,,,,, সময় আছে এখনো,,,
তমসাঃ ওকে চল,,,(জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি,,,, আরাফাত ড্রাইভ করছে,,, আরাফাত আমার স্কুল ফ্রেন্ড,,,, এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর বিদেশে চলে গিয়েছিলো পড়াশোনার জন্য,,, ১৫ দিন আগে হঠাৎ আবার দেখা হয় ওর সাথে,,, ওদের নিজেদের বিজনেস আছে,,, আমাদের ওদের মতো অতো বড় বিজনেস না থাকলেও বাবার ছোটখাটো একটা বিজনেস আছে আর ভাইয়া ভার্সিটির টিচার,,,, চাইলে অনায়াসে যৌতুক দিয়ে বিয়ে দিতে পারে বাবা,,, কিন্তু ভাইয়া আর আমার জন্য সেটা সম্ভব হয়নি,,, আর নিজের যোগ্যতায় জব করতে চেয়ে সেটাও জোটাতে পারছি না,,,,। ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি আমি নাকি নিজের যোগ্যতায় কিন্তু করতে পারবো না,,, তবে বাবার টাকায় সব হয়ে যাবে,,,, তাই জেদ ধরে বসে আছি,,, এখন ধীরে ধীরে মানুষের কথাগুলোই সত্যি মনে হচ্ছে,,, তবু একটা কথা মনে করে নিজেকে শক্ত রেখেছি,,,
“তোমাকে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ হারাতে পারবে না,,, যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি নিজের কাছে হেরে যাচ্ছো,,,,”
একটা দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে এলো বুক চিঁড়ে,,,,)
আরাফাতঃ( তোর মাঝের সৌন্দর্যটা মানুষের চোখে কেনো পরে না বলতে পারিস,,,, তোর টানা টানা হরিণী চোখ,,,, ঠোঁটের কোণে মায়াবী হাসি এতগুলো বছরেও ভুলতে পারিনি আমি ,,,, এতো সাদা চামড়ার ফরেনারের ভীরে থেকেও,,,, আল্লাহ হয়তো তোকে আমার জন্যই বানিয়েছে তাই আমি ছাড়া কেউ তোর সৌন্দর্য খোঁজে পায়নি,,,, যা হয় ভালোর জন্যই হয়,,, কেউ পায়নি বলেই আমি তোকে আবার পাওয়ার চান্স পেলাম,,,, এবার তাড়াতাড়ি তোকে একদম আপন করে নিবো,,,,, ভাবতেই মুখে হাসি ফোটে ওঠলো)
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com