ডিভোর্স । শেষ-পর্ব । লেখিকা - তাহমিনা তমা
মাঃ এখানে কী করছো বৌমা,,,,??
অন্তরাঃ সিয়াম ঘুমিয়েছে কিনা দেখতে এসেছিলাম,,,।
মাঃ রিয়াদকে দেখে দাঁড়িয়ে গেছো,,,??
অন্তরাঃ হুম,,,,, ভাইয়া ভালো নেই মা,,,,
মাঃ এর থেকে ভালো রাখার উপায় আমার জানা নেই,,,, ওর সাথে জোর করে কোনো মেয়ের জীবন জড়ালে মেয়েটার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে,,,,, এভাবেই থাকতে দাও ওকে,,,,,। যাও ঘুমিয়ে পড়ো গিয়ে,,, অনেক রাত হয়েছে,,,
অন্তরাঃ(মা চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলেন,,, আমি আবার ভাইয়ার দিকে তাকালাম,,,, একটা মানুষ কীভাবে পারে কাউকে এতটা ভালোবাসতে,,,, একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজের রুমের দিকে যেতে লাগলাম,,,,)
হৃদয়ঃ কোথায় গিয়েছিলে,,,,??
অন্তরাঃ সিয়ামের রুমে,,,, ভাইয়া আছে তাই চলে এলাম,,,, (রুমের দরজা অফ করে ঘুরে তাকাতেই দেখি হৃদয় খাবার নিয়ে বসে আছে) আপনি না বললেন ক্ষিদে নেই,,,, আমাকে বলতেন আমি খাবার এনে দিতাম,,,,
হৃদয়ঃ (অন্তরার হাত ধরে টান দিয়ে কোলে বসিয়ে দিলাম,,,,) পাঁচটা বছর চলে গেলো এখনো তোমার বিশ্বাস অর্জন করতে পারলাম না,,,,,।।।
অন্তরাঃ কী বলছেন এসব,,,,?? আমি এমন কিছু কখন বললাম,,,??
হৃদয়ঃ আমি বললাম বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি আর তুমি বিশ্বাস করে নিলে,,,?? আমি কখনো বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি,,,??
অন্তরাঃ(উনার কথা শুনে মাথা নিচু করে ফেললাম,,, সত্যি তো আজ পর্যন্ত কোনোদিন বাইরে থেকে খেয়ে বাসায় ফিরেনি,,,)
হৃদয়ঃ আমি জানি আমার লক্ষী বউটা আমার জন্য না খেয়ে বসে আছে,,,,, তাকে ছেড়ে আমি কীভাবে বাইরে থেকে খেয়ে আসতে পারি,,,,(এক লোকমা খাবার অন্তরার মুখের সামনে ধরলাম) নাও হা করো এখন,,,,
অন্তরাঃ,,,,,,,,,,, (চোখ টলমল করছে পানিতে,,, না না কষ্টের পানি নয় এটা,,,, অতি সুখের,,,, এই পাঁচ বছরে সুখের পানি অনেকবার গড়িয়েছে চোখ থেকে,,,,কষ্টের নয়,,,)
হৃদয়ঃ ক,,,কী হয়েছে তোমার,,,?? কাদছো কেন,,? কেউ কিছু বলেছে,,,?? আমার কোনো কথায় কষ্ট পেয়েছো,,,?? (ব্যস্ত হয়ে)
অন্তরাঃ সরি,,, আমি আপনাকে কষ্ট দিলাম,,,
হৃদয়ঃ( বামহাত দিয়ে চোখের পানি মুছে দিলাম) ধূর পাগলি,,, আমিতো এমনই বলেছি,,,এখন চটপট খাবার মুখে নাও,,, আমারও ক্ষিদে পেয়েছে,,, (অসহায় মুখ করে,,)
অন্তরাঃ (উনার মুখ দেখে ফিক করে হেঁসে দিলাম,,, তারপর খাবারটা মুখে নিয়ে আমিও হাত ধুয়ে এসে উনাকে খাইয়ে দিতে লাগলাম,,,,,। উনিও তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছে,,,। উনার দিকে তাকিয়ে আছি,,,,। এই মানুষটা আমার দ্বিতীয় স্বামী ঠিকই,,, তবে প্রথম আর শেষ ভালোবাসা,,,, সারা যখন আমার পেটে ছিলো প্রতিটা মুহূর্তে উনি আমার খেয়াল রেখেছে,, উনার দিকে তাকিয়ে অতীতে হারিয়ে গেলাম,,,)
মাঃ কী হয়েছে অন্তরার,,,,??
অন্তরাঃ(বাড়ি ঢুকতেই মা ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,,,, উনি চুপচাপ হাতের রিপোর্ট মায়ের দিকে এগিয়ে দিলেন
মা ভ্রু কুঁচকে রিপোর্ট হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো
আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি
মাঃ এ,,,এটা সত্যি,,,??
হৃদয়ঃ হ্যাঁ মা,,, এটা একদম সত্যি,,, (চিৎকার করে,,, মাকে জড়িয়ে ধরে) আমিও বাবা হবো,,,,
অন্তরাঃ(উনার এই আনন্দ দেখে যেমন ভালো লাগছে তেমন অপরাধবোধ হচ্ছে,, আজ যদি সত্যি আমি মা হতে না পারতাম লাগলে উনি এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতো শুধু আমার জন্য,,,
চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো)
মাঃ এখন থেকে সবসময় সাবধানে থাকবে,,,(হৃদয়কে ছাড়িয়ে অন্তরার কাছে গিয়ে)
অন্তরাঃ হুম,,,,,,
মাঃ কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব,,,?? সেটা বুঝতে পারছি না,,,,
হৃদয়ঃ অন্তরার আগের রিপোর্ট ভুল ছিলো,,, হয়তো বানানো,,,, (চোখ মুখ শক্ত করে)
মাঃ একজন ডক্টর এমন একটা কাজ কী করে করতে পারে,,??
হৃদয়ঃ তার উত্তর উনি আগামীকাল নিজের মুখেই দিবে,,,
মাঃ ঠিক আছে,,, ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে,,,, সিয়াম ঘুমিয়ে পড়েছে,,,
হৃদয়ঃ হুম,,,,, অন্তরা চলো,,,,,
অন্তরাঃ(সিঁড়ির কাছে যেতেই উনি আমাকে থামিয়ে দাড় করালেন,,,)
হৃদয়ঃ মা,,,,
মাঃ হ্যাঁ বল,,,,
হৃদয়ঃ আগামীকাল থেকে আমরা নিজের রুমে থাকবো,,, অন্তরার ডেলিভারির আগে পর্যন্ত,,,, আমার রুমের সব নিচের রুমে সিফট করার ব্যবস্থা করো,,,,
মাঃ ঠিক আছে,,, আমি সকালেই সব করার ব্যবস্থা করছি,,,,
অন্তরাঃ(অবাক হয়ে উনার দিকে তাকালাম,,,,,, এরপর উনি আমাকে কোলে নিয়ে উপরে উঠতে লাগলেন,,) কী করেছেন,,,,?? আমি পারবো,,,?? মা দেখছে তো,,,
হৃদয়ঃ আজ থেকে আগামী একবছর তুমি আমার কথা মতো চলবে,,,
অন্তরাঃ এক বছর কেন,,,?? আর ছয় মাস,,,,??
হৃদয়ঃ আমি যা বলছি তাই হবে,,,,
অন্তরাঃ(কিছু না বলে উনার দিকে তাকিয়ে থাকলাম,,,)
★পরেরদিন★
হৃদয়ঃ কী হলো এখন চুপ করে আছেন কেন,,?? উত্তর দিন আমার প্রশ্নের,,,??
অন্তরাঃ(সেই ডক্টরের কেবিনে দাড়িয়ে আছি,,,, প্রথমে সে আমাদের সাথে কথা বলতে না চাইলেও হৃদয়ের পরিচয় জানার পর চুপ করে আছে,,,,। আমাকে হৃদয় আনতে চাইছিলো না,,, আমি জোর করে এসেছি,,, কারণ আমিও জানতে চাই আমার সাথে এমন কেন করেছেন,,,,??)
হৃদয়ঃ কী হলো বলুন,,,,??
ডক্টরঃ,,,,,,
হৃদয়ঃ আপনি কিছু বলবেন,,,,?? নাকি আমি পুলিশকে ইনফর্ম করবো,,,,। মেয়ে বলে আপনি এখনো নিজের পায়ে দাড়িয়ে আছেন,,, নাহলে এতক্ষণে এই হসপিটালের বেডে থাকতেন,,, (রেগে ধমক দিয়ে)
ডক্টরঃ আ,,আমার ভুল হয়ে গেছে,,,, এমন কাজ আর করবো না কখনো,,,।
হৃদয়ঃ সেটা আমি পরে দেখে নিচ্ছি,,,, আগে বলুন কেন করেছেন এসব,,,??
ডক্টরঃ অ,,,অনেকগুলো টাকার অফার ছিলো তাই,,,,
আর এতে উনার কোনো ক্ষতি করতে হয়নি তাই আমি রাজি,,,,
হৃদয়ঃ টাকা দেখে লোভ সামলাতে পারেননি,,,,। একটা মেয়ে হয়ে অন্য একটা মেয়েকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলতে একবার বিবেকে বাঁধলো না,,??(ধিক্কার দিয়ে)
ডক্টরঃ,,,,,,,
হৃদয়ঃ কে টাকা দিয়েছিলো আপনাকে,,,,,??(রেগে)
ডক্টরঃ এ,,,,এ,,এটা আমি বলতে পারবো না,,,,
হৃদয়ঃ ওকে,,,, বলতে হবে না,,, পুলিশকে বলতে এমনই বাধ্য হবেন,,,,।
ডক্টরঃ ন,,না ন,,না পুলিশকে ইনফর্ম করবেন না,,,আ,,আমি সব বলছি,,,
হৃদয়ঃ হুম,,, বলেন,,,
ডক্টরঃ মিস ন,,নিলা টাকা দিয়েছিলো,,,, ভুল রিপোর্ট দেওয়ার জন্য,,,,।
হৃদয়ঃ ন,,,নিলা,,,,,,,,,??
ডক্টরঃ হুম নিলা,,,, উনি ভুল রিপোর্ট বানানোর জন্য টাকা দিয়েছিলো,,,, আর মিসেস অন্তরার যেন কোনো সন্দেহ না হয় তাই একটা মেডিসিন দেওয়া হয়েছিলো,,,,। মেডিসিনটা উনাকে প্রায় দুবছর খাওয়ানো হয়েছে,,,,,
হৃদয়ঃ ও মাই গড,,,,, মানুষ এতটা নিচে নামতে পারে কীভাবে,,,??
অন্তরাঃ(উনার কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,,, উনার একটা ভুল রিপোর্ট আমাকে প্রতিটা মুহুর্তে তিলেতিলে মেরেছে,,,, হৃদয় না থাকলে হয়তো এভাবেই এক সময় শেষ হয়ে যেতাম,,,)
হৃদয়ঃ এই মেডিসিনের জন্য ওর কোনো ক্ষতি হবে নাতো,,,??(ব্যস্ত হয়ে)
ডক্টরঃ না,,, মেডিসিনের এফেক্ট শেষ হয়ে গেছে,,, তাই উনি কনসিভ করেছেন,,,,
হৃদয়ঃ এই নিলাকে তো আমি ,,,,। তার আগে আপনার ব্যবস্থা করছি,,,,
ডক্টরঃ প্লিজ আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে,,, এমন কাজ আর কখনো করবো না আমি,,, এবারের মতো ছেড়ে দিন,,,,
হৃদয়ঃ আপনাদের মতো কিছু ডক্টরের জন্য মানুষ ডক্টরকে ডাকাত মনে করে,,, জীবন বাঁচানোর জন্য মানুষ আল্লাহর পরে ডক্টরদের উপর ভরসা করে,,, কিন্তু আপনারা বাঁচানোর বদলে মানুষ খুন করেন,,, শুধুমাত্র কিছু টাকার জন্য,,,
ডক্টরঃ,,,,,,(মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে,,)
অন্তরাঃ উ,,উনাকে ছেড়ে দিন,,,,
হৃদয়ঃ চুপ,,,,(অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে) একদম চুপ,,, জোর করে এসেছো,,, তাই চুপচাপ শুধু দেখবে,,, এদের কিছু না বলে ছেড়ে দিলে আরো মানুষের ক্ষতি করবে,,,
অন্তরাঃ(উনি আমার কথা না শুনে এই ডক্টরকে পুলিশের কাছে দিয়ে দিলেন,,, এরপর আরিয়ানদের বাড়ির দিকে যেতে লাগলেন গাড়ি নিয়ে,,,) একটা কথা বলবো,,,??
হৃদয়ঃ হুম বলো,,(গম্ভীর গলায়)
অন্তরাঃ নিলা এসব না করলে হয়তো আমার কষ্টটা কম হতো এই তিন বছরে,,, কিন্তু আপনাকে পেতাম না,,,, তাই আমি নিলার কাছে কৃতজ্ঞ,,,,। নিলা আমাকে দোযখ থেকে বের করে বেহেশতে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে,,,,,
হৃদয়ঃ (অন্তরার কথা শুনে,,, অন্তরার দিকে তাকালাম,,, সত্যি তো এসব না করলে আরিয়ান হয়তো ডিভোর্স দিতো না,,, আর আমিও অন্তরাকে পেতাম না,,,,। যা হয় ভালোর জন্যই হয়,,,)
অন্তরাঃ বাদ দিন না,,, যেটা চলে গেছে সেটা নিয়ে ঘাটাঘাটি না করি,,,, আমি আর তাদের ফেস করতে চাই না,,,,(উনি কিছু না বলে গাড়ি ঘুরিয়ে নিলেন,,)
★বর্তমান★
হৃদয়ঃ এই কী এতো ভাবছো,,,?? এখনো এভাবেই বসে আছো,,,(খাবারের প্লেট নিচে রেখে এসে)
অন্তরাঃ কিছু না,,,,, ঘুমাবেন তো,,,,??
হৃদয়ঃ না,,, ছাদে চলো,,, অনেক সুন্দর চাঁদ উঠেছে আজ,,,,,
অন্তরাঃ সারা রুমে একটা থাকবে,,,?? ওঠে গেলে ভয় পাবে তো,,,,
হৃদয়ঃ ওকে আপাতত সিয়ামের পাশে শুইয়ে দিয়ে যাই,,,, পরে নিয়ে আসবো,,,,
অন্তরাঃ কিন্তু,,,,
হৃদয়ঃ চলোতো,,,,,
অন্তরাঃ(উনি সারাকে কোলে তুলে সিয়ামের পাশে শুইয়ে দিলো,,,, ছাদের সিঁড়ির কাছে যেতেই উনি আমাকে কোলে তুলে নিলেন,,,) এখনো কী সারা আমার পেটে,,,, তবে সারার ভাইবোন খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবে এখানে তাই না,,,,।
হৃদয়ঃ আমার আর কাউকে লাগবে না,,,,,
অন্তরাঃ আমার লাগবে,,,,
হৃদয়ঃ তোমার কষ্ট হয় এমন কিছু আর হবে না,,,,।
অন্তরাঃ কিন্তু,,,,
হৃদয়ঃ চুপ,,, সিয়াম আর সারা আছে না,,??
অন্তরাঃ(উনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলাম,,, তারপর বুকে মাথা রাখলাম,,,, সারা যখন আমার পেটে ছিলো প্রতিটা মুহূর্তে উনি খুব ভয় পেতেন,,, যদি ভাবির মতো আমিও চলে যাই উনাকে ছেড়ে,,,,, এক মুহুর্ত একা ছাড়তো না,,,, ডেলিভারির দিন আমার কান্না দেখে নিজেও কান্না করে দিয়েছিলো,,,,, এতটা সুখ ছিলো ভাগ্যে কল্পনাও করিনি কখনো,,,,)
রিয়াদঃ সিয়া,,,,,
সিয়াঃ হুম,,,,,,
রিয়াদঃ কেমন আছো,,,,??
সিয়াঃ ভালো,,,, তোমাকে ছাড়া ভালো লাগে না,,,,
রিয়াদঃ অপেক্ষা তো করতেই হবে,,,, আবার একসাথে থাকার জন্য,,,,
সিয়াঃ হুম,,,, তোমার অপেক্ষায় আছি,,,, ভালোবাসি,,,
রিয়াদঃ আমিও ভালোবাসি অনেকটা বেশি,,,,,,(সিয়া ধীরে ধীরে কুয়াশায় মিলিয়ে গেলো,,,,। ঘুম ভেঙে গেলো,,,। উঠে বসে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লাম,,,। ডাইরি বের করে লিখতে বসলাম,,,, আমিও ভালো আছি,,, আমার সিয়ার সাথে কাটানো সুখের স্মৃতি বুকে আগলে,,,, বাকিটা জীবন সেই স্মৃতি নিয়েই কাটিয়ে দেবো,,,)
অন্তরাঃ(ছাদে এসে উনার কাঁধে মাথা রেখে চাঁদ দেখছি আর উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,)
হৃদয়ঃ ভালোবাসি,,,,,,,,
অন্তরাঃ,,,,,,,,,,,
হৃদয়ঃ এখনো কী সেই জায়গাটা নিতে পারিনি,,?? বলতে ভয় পাও এখনো,,,,??
অন্তরাঃ ভালোবাসি,, (কানের কাছে ফিসফিস করে,,,,,
উনি আমার কপালে একটা কিস করে বুকে জড়িয়ে নিলেন,,,,, বাকিটা জীবন এভাবেই কাটাতে চাই,,,,
শেষ নিশ্বাসটাও যেন এই বুকেই ত্যাগ করতে পারি,,,,)
<>সমাপ্ত<>
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com