Breaking News

সাইবার ক্রাইম

নাহহ এটা কোনো ভাবেই হতে পারে না,আমাদের সিস্টেমে কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কেন..? এটা কোনো ভাবেই পসিবল না,আমাদের সিকিউরিটি সিস্টেমে এমন সমস্যা কখনো দেখা দেয় নাই,
সিহাব খুব চিন্তায় পরে গেলো,সিহাব কম্পিউটারে কাজ করছিলো,হঠাৎ করেই কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে,
কি মনে হচ্ছে সিহাব একা শুধু কম্পিউটারে বসে আছে..? নাহহহ সিহাবের আশেপাশে আরো ৫০ জন মতো কম্পিটার নিয়ে দেশের ওয়েব সাইট নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত,
UID — আন্ডারগ্রাউন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট, দেশের একমাত্র সংস্থা যাকে সরকার গোপনে পরিচালনা করে আসছে,দেশের যতো রকম নিরাপত্তা আছে,সবকিছুই এই সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে,সেখানে একটা কম্পিউটার কাজ করা বন্ধ করে দিলে সেটা স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়,
সিহাব দ্রুত হাসান সাহেবের কেবিনে চলে যায়,
হাসান সাহেব, UID ডিপার্টমেন্টের প্রধান,
সিহাব, স্যার আমার কম্পিউটার হ্যাং করে রয়েছে,কোনো কাজই করতে পারছি না,
হাসান সাহেব, সিহাবের কথায় চমকে উঠলেন,তুমি কি বলছো সিহাব..? এটা কিভাবে হতে পারে..?
একটা কম্পিউটারে প্রবলেম হওয়া মানে খুব বড় সমস্যা,আমাদের তো এমন হওয়ার কথা নয়,দেশের সমস্ত তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে,আমাদের পিছনে তো সীমাহিন হ্যাকার গ্রুপ লেগে আছে,যেজোনো সময়ে তারা সব তথ্য পেয়ে যেতে পারে,চলো দ্রুত দেখি কি হয়েছে..?
হাসান সাহেব সিহাবকে নিয়ে হলরুমে চলে আসে,কিন্তু এসে যা দেখে সেটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না,UID টিমের সবার কম্পিউটারেরই এক অবস্থা, সবকিছু কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে,এমনকি তাদের সব ডেটা অন্য কোথাও ট্রান্সফার হওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে,এটা দেখে হাসান সাহেবের অজ্ঞান হয়ে যাবার পালা,যেটা ভেবেছিলো,ঠিক সেটাই হলো,একটা হ্যাকার গ্রুপ সবগুলো কম্পিউটার হ্যাক করে তথ্যগুলো নিয়ে নিচ্ছে,সবার মাথায় বাজ পরতে লাগলো,
হাসান সাহেব, অফিসার’স…!
আপনারা সবাই কি করছেন..? এখানে আমাদের সবকিছু হ্যাক হয়ে যাচ্ছে,আর আপনারা সবাই কিছুই করতে পারছেন না..? হাত গুটিয়ে সবাই বসে আছেন,দেশের তো খুব বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে,
টিম মেম্বার’স, সরি স্যার আমাদের কিছুই করার নাই,এদের টিমটা অনেক বড়,আমাদের কাছে ভাইরাস দিয়ে কম্পিউটারগুলোর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে,এখন আমাদের সবকিছু ওদের হাতের মধ্যে,আমাদের আর কিছুই করার নাই,আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি,
হাসান সাহেব, নাহহহহ এটা কোনো ভাবেই হতে পারে না,আমার এক্ষুনি মাহফুজকে চায়,মাহফুজের উপর আমার পুরোপুরি বিশ্বাস আছে,ওই আমাদের সবকিছু ঠিক করে দিতে পারবে,আমাদের সংস্থার জন্য মাহফুজ একাই পুরো একটা টিমের মতো,সিহাব আমি এক্ষুনি মাহফুজকে এখানে দেখতে চায়,
সিহাব, ওকে স্যার,,,,
সিহাব তাড়াতাড়ি করে মাহফুজকে ফোন করে,তারপর এখানের সবকিছু খুলে বলে,
–মাহফুজ তুই তাড়াতাড়ি এখানে চলে আয়,আমি জানি তুই আমাদের টিমের সমান,এখানে না আসলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে,
মাহফুজ, কথা বলা শেষ করে অফিসের দিকে রওনা দেয়,একটু পরেই পৌছে যায়,
রিসিভ করার জন্য আগে থেকেই হাসান সাহেবের পার্সোনাল এ্যাসিস্টেন্ট রাকিব দাড়িয়ে ছিলো,
মাহফুজ, রাকিব এখানে কি হয়েছে আমাকে বলো তো..?
রাকিব, বস এখানে আমরা কাজ করতেছিলাম,হঠাৎ করেই একদল হ্যাকার আমাদের সিস্টেম হ্যাক করে ফেলে,আমরা তাদের আইপি এ্যাড্রেস হ্যাক করার চেষ্টা করলাম,কিন্তু সেখানে প্রচুর আইপি এ্যাড্রেস দেখলাম,যা এখন হ্যাক করা সম্ভব নয়,
মাহফুজ, ওকে চলো কি হয়েছে দেখে নিই,
দুজন মিলে ভিতরে যেতেই হাসান সাহেব মাহফুজের কাছে চলে আসে,
হাসান সাহেব, মাহফুজ তাড়াতাড়ি আসো,এখন একমাত্র তুমিই আমাদের ভরসা,সব কিছুই তো আমাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে,এদের হ্যাকিং কোডগুলো কিছুই বুঝতে পারছি না,
মাহফুজ, ওকে কোনো চিন্তা করবেন না,আমি দেখছি কি করা যায়, আমার ঠিক সামনের কম্পিউটারে বসে পরলাম,হ্যাকার গ্রুপের কোডগুলো খুবই সিক্রেট,মনে হয় অনেকদিন ধরে আমাদেরকে হ্যাক করার চেষ্টা করছে,সবগুলো কম্পিউটারের দিকে চোখটা বুলিয়ে নিলাম,
গ্রুপটার দুর্বল জায়গার খোজ করতে লাগলাম,পিছনের বড় স্ক্রীনটার দিকে তাকিয়ে ওদের কোনো একটা দুর্বল কোড খুজে বের করার চেষ্টা করতে থাকলাম।
কিন্তু অন্যদিকে হাসান সাহেব মাহফুজের কাজ দেখেখুব বিরক্ত হলো,
হাসান হাসেব, মাহফুজ তুমি এটা কি শুরু করেছো..? যেখানে আমরা সবাই পরে আছি যে কিভাবে সবকিছু ঠিক করবো,সেখানে তুমি কোনো কাজ না করে একদিকে তাকিয়ে আছো,
মাহফুজ, হাসান সাহেবের কথায় কোনো রেসপন্স দেয় না,নিজের মতো কাজ করে যাচ্ছে,বেশ কিছুক্ষণ পরে হুট করেই কম্পিউটারে বসে যায়,এই সিহাব এক গ্লাস ঠান্ডা মিল্কসেক নিয়ে আয় তো…..
সিহাব, হ্যা তুই ওয়েট কর,আমি এক্ষুনি নিয়ে আসছি,
মাহফুজ, নিজের কাজে বসে যায়,কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসি দেয়,কারন হ্যাকারদের দূর্বল আইপি পেয়ে গেছে,মাহফুজ পকেট থেকে একটা পেন ড্রাইভ বের করে কম্পিউটারে প্লাগ ইন করে দেয়,আর কয়েক সেকেন্ড পরেই পুরো টিমের কম্পিউটারগুলোর স্ক্রীণ হঠাৎ কালো হয়ে গেলো,
এটা দেখে তো হাসান সাহেব তো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেলো,চোখ বড় বড় করে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে আছেন,তাহলে কি সব শেষ হয়ে গেলো..?
এতো দিনের পরিশ্রম সব কেড়ে নিলো কোন হ্যাকার গ্রুপ এসে…!
হাসান সাহেব, মাহফুজ আমার সব শেষ হয়ে গেলো..!
তাহলে কি এখানে তোমাকে ঘোড়ার ঘাস কাটার জন্য নিয়ে এসেছি..? যাষ্ট স্টুপিড একটা,কিছুই করতে পারলে না,তুমি বলে এতো কিছু পারো,আজকে কি দেখালে..?
এটা তার প্রমাণ..? আমার এতো দিনের পরিশ্রম সব এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো,
মাহফুজ, চুপ করে চেয়ারে বসে আছি,আর মিচকি মুচকি হাসছি,হঠাৎ করেই চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালাম, আর তখনই সবাই আনন্দে চিৎকার করে উঠলো,
রাকিব, হাসান স্যার আমাদের কম্পিউটার গুলো অন হয়ে গেছে,সব তথ্য আবার ব্যাক হতে শুরু করেছে,হ্যাকারদের কাছেও কোনো কপি ফাইল যেতে পারে নাই,
আবার সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে,
হাসান সাহেব মাহফুজের দিকে অবাক হয়ে তাকালো,
মাহফুজও মুচকি একটা হাসি দিয়ে বসে পরলো,
হাসান সাহেব, কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব..?
মাহফুজ তুমি এটা কি করে সম্ভব করলে..?
যেখনে হ্যাকার রা আমাদের সবকিছই তাদওর নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নিয়েছিলো,
সেখানে কি করে সবকিছু ঠিক করলে..?
মাহফুজ, কেনো স্যার সবকিছু ঠিক করা খুব কঠিন কাজ..?
আপনার চিন্তিতো হওয়ার কারন তো আমি বুঝতেই পারছি,
কিন্তু সবকিছুই যদি এতো তাড়াতাড়ি করলে হয়ে যেতো,
তাহলে এই পৃথিবীতে সবাই সফল হয়ে যেতো,
দেখুন স্যার আমি প্রথমে ওদের হ্যাকিং কোডগুলো দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম,
ওদেরকে এখন হ্যাক করে ফেলা পসিবল না,কারন এতে অনেক সময় চলে যাবে,
আর সাথে আমাদের তথ্যগুলোও,
তাই প্রথমে ওদের দুর্বল কোডগুলোর দিকে নজর দিলাম,
যাতে করে সেটা ধরেই ওদের ঘায়েল করতে পারি,
অবশেষ পেয়েও গেলাম,তখন পকেট থেকে একটা পেন ড্রাইভ বের করলাম,
যেখানে আমার তৈরি করা একটা ভাইরাস ছিলো,
সো পেন ড্রাইভ প্লাগ ইন করতেই ভাইরাসটা তাদের কাছে চলে যায়,
ওদের সিস্টেম ভাইরাসে নস্ট হয়ে তথ্যগুলো আবার আমাদের কাছেই ব্যাক করলো,,,যাষ্ট সিম্পল?
হাসান সাহেব, মাহফুজকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন,
মাহফুজ তুমি আমাকে মাফ করে দাও,তোমাকে তখন অনেক খারাপ লথা বলেছি,
আসলে মাথা কাজ করছিলো না তখন।
মাহফুজ, আরে নাহহ আমি কিছু মনে করি নাই,আমি বুঝেছি আপনার অবস্থা,
রাকিব, মাহফুজ বস এই যে আপনার কোল্ড মিল্কসেক,
মাহফুজ, আরে এটা হাসান স্যারকে দাও,আমার জন্য নিয়ে আসতে বলি নাই তো,,,
রাকিব, অবাক হয়ে- হাসান স্যারের জন্য মানে..?
মাহফুজ, হ্যা স্যার যেভাবে রাগ করেছিলেন তাতে তো মাথায় মনে হয় আগুন জ্বলছে,
কোল্ড মিল্কসেক খেলে মাথাটা ঠান্ডা হবে। মাহফুজের কথা শুনে সবাই হেসে দেয়,
আর হাসান সাহেবও হাসতে হাসতে মিল্কসেকটা হাতে নেয়……
চলবে…..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com