Breaking News

মুখে ব্রণ । পর্ব- ০৪

নিরা যেতে লাগলো আর আসফিকে বলতে লাগলো
-এতদিন ভার্সিটিতে ছিলো না বেশ ভালই ছিলাম। সবাইকে মুরগি বানানো যেতো এখন আমাদের হতে হবে”।
-তোকে আমি আগেই বলেছিলাম শুনলি না তো বোঝ কেমন লাগে”
-আসফি কাব্য ভাইয়াকে কিভাবে লাইনে আনা যায় বলতো।”
– তা তোকে ভেবে পড়ে জানাই। “
কাব্য জিমের কপালের ব্রণটা পেকে গেছে দেখে তা ফাটিয়ে শাল বের করে দিয়ে
-আয়নার নিজের চেহারাটা দেখে আসতে হয়। ব্রণটা তো পেকে গেছে বাসা থেকে ফাটিয়ে আসলে হতো।
জিম কাব্যের এমন ব্যবহার দেখে হা হয়ে গেলো। কাব্য চলে গেলো সেদিকে তাকিয়ে আছে জিম। কি হলো এটা জিমের যেনো মাথা ঘুরাচ্ছে ভাবতেই।” জিম ক্লাসে চলে গেলো। কাব্য এতদিন পর ভার্সিটিতে আসলো সবাই অবাক। সবাই মনে করছে কাব্য ভার্সিটিতে আর আসবে না। সবাই কত না প্ল্যান করছিলো কিন্তু সব বেহেস্তে চলে গেলো।
কাব্য বাইকের উপর বসে আছে হঠাৎ চোখ গেলো গেইটের দিকে। মানকি টুপি পড়ে একটা ছেলে প্রবেশ করছে তখন কাব্য ইমনকে বললো

ঐ ছেলেটাকে ডেকে আন যা। “
-ওকে। “
ইমন যেয়ে ছেলেটাকে ডেকে কাব্যের সামনে দাঁড়ালো
-নাম কি আর মুখে মানকিটুপি লাগিয়ে আছিস কেন? কোন কু পতলব। “
-না ভাইয়া আমার এমন কোন মতলব নেই। “
-নাম কি তোর আর এখানে কি? “
-তানজিল। আমি এই ভার্সিটিতেই ১ম সেমিস্টার
কাব্য ভ্রু কুচকে
-ভার্সিটিতে কি কেউ এভাবে আছে মানকি টুপি পড়ে হ্যা।
তানজিল থ ম খেয়ে মনটা খারাপ করে
– আসলে ভাইয়া”
– ভনিতা না করে বল। “
তানজিল মানকি টুপি খুলে ফেললো। ইমন মুখটা ঘুরিয়ে নিলো। কাব্য তানজিলের মন খারাপ দেখে
গালে হালকা ভাবে চড় মেরে
-আরে বোকা এটার জন্য এসব পড়ার কি দরকার। প্রকৃতির আলো বাতাস লাগুক সব ঠিক হয়ে যাবে। আর শোন আর কখনো যদি ভার্সিটিতে মানকিটুপি পড়ে আসিছ তাহলে আর মুখে বলবো না কাজে দেখাবো। যা ক্লাসে।
তানজিল গালে হাত দিয়ে চলে গেলো।
-ভাই দেখছেন কি অবস্থা ছেলেটার মুখে।
-হুম। কেন?
-কেমন দেখতে না। “
কাব্য একটু হেসে

শোন এইসবকে ঘৃণা করা ঠিক না। বরং ওদের উৎসাহিত করা ঠিক যাতে ভেঙ্গে না পড়ে। “
-হুম ভাই বুঝছি । এরা কিন্তু এক প্রকার কালোদের থেকে বেশি অবহেলিত। “
-হুম বেশিই অবহেলিত। যা হয় তার নিজের কাছের মানুষের ধারে। অপমানিত হতে হয় বেশি
পাড়াপ্রতিবেশি আত্নীয় স্বজনদের কাছে। তারা ব্রণ নিয়ে সমলোচনা বেশি করে। ওমুকের ছেলের মুখের কি অবস্থা৷ তার থেকে আমার ছেলে মেয়ে ভালো আছে আরো অনেক সমলোচনা হয় কালোদের নিয়ে ঠিক যেমনটা করা হয়।
-ভাই এটা তো এই সমাজের প্রতিদিনের রীতি।
-হুম তবে এদের নিয়ে পরিহাস করা ঠিক না। ব্রণ জিনিসটা চলে যাবে একদিন যদি মুখের যত্ন নেয়।কিন্তু কালোদের চেহারা সুন্দর হয় না। কালোই থাকে।”
ইমন একটু হেসে
-ভাই এখন কিন্তু অধিকাংশ মানুষেরা সুন্দর হওয়ার জন্য ক্রীম ব্যবহার করে। তাই তো বর্তমান সময়ে সবাই আগে তার পায়ের দিকে লক্ষ্য করে।পা দেখলেই বোঝা যায়।
-আরে বোকা এমনটা ও আছে অনেক তাদের পা সুন্দর কিন্তু মুখ কালো তারা কি পায়ে ক্রিম মাখে। শোন যারা ক্রীম মেখে ফর্সা হচ্ছে বয়সকালে বুঝতে পারবে। “
-ভাই অনেকে তো ক্রীম মেখে সুন্দর চেহারাটা কিভাবে জ্বলছে যাচ্ছে দেখলে বোঝা যায়।
তানজিল ক্লাসে মাথা নিচু করে ঢুকলো। তানজিলকে দেখে সবাই হেসে দিলো অনেকে অনেক কিছু বলতে লাগলো। “

দেখ দেখ ছেলেটার মুখে কিসে যেনো ডিম পাড়ছে।
-আরে মশার ডিম হবে। মশা চাষী হবে।
তানজিল কথাগুলো সহ্য করতে না পেরে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলো
ইমন ভার্সিসিটির গেইটে চোখ দিতেই চোখ বড় বড় করে কাব্যকে খোচা মেরে দেখালো। কাব্য তো অবাক হয়ে গেলো। একটা মেয়ে সিগারেট খেতে খেতে ভার্সিটিতে প্রবেশ করছে। কাব্য উঠে যেয়ে মেয়েটির সামনে দাঁড়ালো। রাগি গলায়
-এই মেয়ে দাঁড়াও
-who are you?
কাব্য ইমনের দিকে তাকিয়ে ইমনের গালে চড় মারলো মেয়েটি ভয় পেয়ে গেলো আর হাতের সিগারেট টা পিছে ফেলে দিলো। ইমন গালে হাত দিয়ে হা করে আছে। কাব্য মেয়েটির দিকে মুচকি হেসে
-বাসা কই তোমার? ভার্সিটিতে কি নতুন। “
মেয়েটি মাথা নিচু করে
-বাসা ময়মনসিংহ। হ্যা নতুন
-নাম কি তোমার?”
-তাবাচ্ছুম

নামটা তো কিউট তা সিগারেট খেতে খেতে ভার্সিটিতে ঢোকার সাহস কোথা থেকে পেলে বাসায় জানে। পুরো ঠিকানা বলো তোমার ফ্যামিলিকে বলতে হবে।
-প্লিজ ভাইয়া আমার ফ্যামিলিকে জানাবেন না। তাহলে আমার পড়াশোনা অফ হয়ে যাবে।
-সিগারেট খাও কেন? ছেকা খেয়েছো নাকি মনে বেশি কষ্ট?
তাবাচ্ছুম মাথাটা নিচু করে ফেললো। “
-কান ধরো আর ১০ বার উঠবস করো। আর কখনো জেনো সিগারেট খেতে দেখি না তোমাকে।
তাবাচ্ছুম ভ্রু কুচকে
-আমি কখনো কান ধরিনি। আমি কখনো খাবো না আর। প্লিজ ভাইয়া বিশ্বাস করেন। “
-আচ্ছা। ইমন এই মেয়ের ছবি তোল আর প্রিন্সিপালের পিয়নের কাছ থেকে ঠিকানা জেনে এসে বল
-না না না ভাইয়া আমি কান ধরছি
তাবাচ্ছুম চারপাশ তাকালো ছেলেমেয়েরা চলাফেরা করছে। সবার ভেতর কান ধরবে ভাবতেই কেমন গা শিউরে উঠলো৷ কোন উপায় না পেয়ে কান ধরে উঠবস শুরু করে দিলো। “
কাব্যের চোখটা তাবাচ্ছুমের কিছুটা পিছনে তাকিয়ে
-এই ছেলে তুই কান ধরে উঠবস করছিস কেন? এদিকে আয়।
তানজিল কাব্যের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। তাবাচ্ছুম তানজিলকে দেখে। “
ইমন আর কাব্য হা হয়ে গেলো

চলবে..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com